অজীতা
জন বসে আছে উদ্দীপ্ত আকাশের নিচে, কিন্তু এ আকাশ তো আর সে আকাশ নয়। খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে যতদূর চোখ যায় যত দূর দেখা যায় মনোরম দেখায়, সুন্দর দেখায় , কখনো চৈত্রের কাঠফাটা দিনেও পাখি উড়ে যায়। এই আকাশ ও তেমন কিন্তু পার্থক্য একটা- প্রাকৃতিক আর কৃত্রিম। এ আকাশ ভিন্ন কম্পাঙ্কের রশ্মী দ্বারা বেষ্টিত ত্রিমাত্রিক প্রতিমুর্তি মাত্র। এই আকাশেও দশমীর ভাঙ্গা চাঁদ আছে, তারা আছে, এখানে নক্ষত্রের আলোর রং পরিবর্তন করা যায় , পরিবর্তন করা যায় জোসনার তৃব্যতাকে। তুমি ইচ্ছে করলো অপরূপ সুন্দরী রমণীকে পাশে পেতে পারো। যে কিনা তোমার সাথে বসে জোসনা দেখার সঙ্গিনী হবে। মাঝে মাঝে মধুর স্বরে প্রেমের কবিতা শুনাবে। কখনো মায়াবিনী চোখে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকবে। তবে সেটা কোন মানবী নয়। বরং একটা প্রতিমূর্তি। আজকাল প্রযুক্তি এমন হয়েছে অন্য গ্রহে বেড়াতে যাওয়া সঙ্গিনীর সাথে থ্রিডি হলো গ্রাফিক্স ইমেজ এর মাধ্যমে এক জায়গায় বসে গল্প করা যাবে। একসাথে হিমালয়ের গলানো বরফের উপর দিয়ে হাটা যাবে। মানুষের তৈরি নভযান প্রতি সেকেন্ডে 10 light-years পথ অতিক্রম করতে পারে। এখন এই পৃথিবীতে আর শুধুমাত্র মানব রাজত্ব করে না। মানুষ, এইচএম রোবট আর অন্য গ্রহের প্রাণী এলিয়েন। এরা কোন প্রাণী নয়। তবে প্রাণীর প্রতিকৃতি। এরা জীবন ধারণ করে, অক্সিজেন গ্রহণ করে, এদের শরীরে রক্ত প্রবাহ আছে, এমনকি সন্তান প্রসব করতে পারে। তবে এদের মাঝে আরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে- অন্ধকারে দেখতে পাওয়া, মস্তিষ্কে অটোমেটিক নেটওয়ার্ক সংযোগ দেওয়া ইত্যাদি। আর এলিয়েনরা এসেছে অন্য সব গ্যালাক্সি থেকে। এরা নাইট্রোজেন গ্রহণ করে। এদের গ্যালাক্সি 2205G5-এর AP0G5 গ্রহের তৃতীয় চাঁদ E25 থেকে। এদের মাথায় কোনো চুল নেই। মানুষের মত দুটি হাত ও দুটি পা তবে প্রতিটা হাতের ছয়টা করে আঙ্গুল। কিন্তু পায়ের আঙ্গুল চারটা করে। মাথাটা শরীরের তুলনায় বড়। কানের এত বড় লতি নেই, তবে ছোট ছিদ্র আছে। আর এইসব নিয়ন্ত্রণ করছে কিছু সংখ্যক রোবট তবে এইচ এম রোবট নয় বরং যান্ত্রিক রোবট। শহরের সব কাজ রোবটেরা করে থাকে। মানুষের তেমন কোন কাজ নেই। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল জীবজগতের বসবাসের জন্য আর ভারসাম্য রাখতে পারছে না। ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি অবস্থান করছে। মানুষের বসবাসের শহরগুলো এখন ভূ পৃষ্ঠের নিচে তৈরি করা হয়েছে। মানুষ আর পুরোপুরিভাবে মৃত্যুবরণ করে না। মানুষের সকল স্মৃতি স্ক্যান করে একটা এইচ এম রোবটের মাঝে দেওয়া হয়। ফলে সে আগের মত মানুষ অনুভব করে। মানুষের আয়ু হাজার বছর পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে। তারপর দেহ ক্ষতিগ্রস্ত হলে স্মৃতি স্ক্যান করে এইচ এম রোবটের মাথায় দেওয়া হয়।
এখন কথা হল জন বসে ভাবছে যে তার প্রিয়তম চলে গেছে দশদিন হলো। প্লানেট G3299-এ তার এক বান্ধবীর বাড়িতে। এখন রাত ৯ টা। সকালে পৃথিবীতে ল্যান্ড করবে। তাদের দাম্পত্য জীবন ৫০ বছর অতিবাহিত হল। তবে এতদিন জনকে ছাড়া থাকে নি অজীতা। এই হলো পুরো ১০ দিন তাকে ছেড়ে চলে গেছে। তার স্ত্রীর নাম অপরাজিতা। জন সংক্ষেপে অজীতা বলে ডাকে। অজীতা স্বামীর জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছে। অনেক আগেই চলে আসার কথা ভাগ্য তার আসতে দেয়নি। ইউনিভার্স এর আবহাওয়া খারাপ। তাই মহাকাশযান লঞ্চ করতে পারেনি। গ্যালাক্সি G2991-এর ক্ষুদ্রতম একটি গ্রহের কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটেছে। তারপর পৃষ্ঠদেশ কেটে পুরো সোলার সিস্টেম ধূলিকণায় ভরে গেছে। আর তার একমাত্র চাঁদ নিজের কক্ষপথে হারিয়ে অসাভাবীকভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কি হয় কে জানে, মহাকাশযানের কাছে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তাই লঞ্চ করা বন্ধ করে দিয়েছিল চার দিন।
এখন জনের আনন্দ আর দেখে কে? তার প্রিয়তমাকে কাল সে দেখতা পাচ্ছে। এখন একটু ভার্চুয়াল লাইফে দেখা করলে কেমন হয়? রাতের খাবার খেয়েছে? নাকি এখনো ম্যাকের কবিতা নিয়ে পড়ে আছে।ইদানিং যখন সময় পায়, ম্যাকের কবিতা নিয়ে পড়ে থাকে। এমন সময় কুক আসলো- খাবেন না, স্যার? তুমি কী রান্না করেছো? আমার আজকে খেতে মন চায় সেটা তো তোমাকে বলিনি আজ বৃহস্পতিবার, তুমি আমার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করনি কেন? স্যার, আমাকে মেসেজ করে আপনার এখনকার মেন্যু বলে দিয়েছিলেন ম্যাম। তবে কী রান্না করেছো? স্কাউন লীফ ও ভেড়ার মাংস দিয়ে তৈরি করা স্টিম। ভালোই তো এখন এটাই খেতে মনে চাচ্ছিল। সপ্তাহে বৃহস্পতিবার জন নিজের পছন্দের খাবার খায়। আর অন্যদিনের তার তৈরি করা মেন্যু অনুসারে কুক রান্না করে রাখে। কুক হলো আসলে একটা যান্ত্রিক রোবট। তাদের পরিবারের রান্নার কাজের জন্য তাকে রাখা হয়েছে। হ্যাঁ, তুমি এখন এক কাপ কফি নিয়ে আসো, আর এক ঘণ্টা পরে খেয়ে নিব।
অজীতা কি করে জানল তার এখন স্টিম খেতে মনে চাচ্ছে? তাও আবার স্কাউন লিভ স্টিম। ভালোবাসার মানুষ মনে হয় দূরে থেকেও মনের অবস্থা বুঝতে পারে। কিন্তু আমার এখন মনে যে একটা শূন্যতা অনুভব করছে, সেটাও কি অজীতা বুঝতে পারছে? না কি সে আমার মত শূন্যতা অনুভব করছে। এটা নিয়ে মগজ আতি-পাতি করতে লাগলো। কাল্পনিক সম্ভাব্য একটা সমাধান বের করতে হবে। এজন্য তার জিনিয়াসের সাহায্য নিতে হবে। জিনিয়াস আসলে তাদের কাজের সহায়তার জন্য রাখা আর একটা রোবট। এর বিশেষত্ব হচ্ছে টুকটাক কাজ থেকে ছোটখাট জটিল বিষয়ের সমাধান করতে পারে। এমনকি টুকটাক গবেষণা করতে পারে। ডাকার সাথে সাথে জিনিয়াস চলে আসল। তার প্রশ্ন করার সাথে সাথে সে এক চোটে বলে দিল- ম্যামের মনে আপনার মত শূন্যতা বিরাজ করছে, স্যার।
অজীতা সকাল ছয়টায় পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। সে তার স্বামীর জন্য কিছু তার পছন্দের পোশাক কিনলো, আর সাথে নিলো একতোড়া সুন্দর করে সাজানো ফুল। হ্যাঁ, গিফট আছে। তার স্বামীকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য। সাড়ে আটটায় সে তাদের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। জন নতুন একটা ম্যাকের কবিতার বই নিয়ে বসে আছে। এখনো নাস্তা করেনি। এমন সময় রুমে প্রবেশ করল অজীতা.......
এখন কথা হল জন বসে ভাবছে যে তার প্রিয়তম চলে গেছে দশদিন হলো। প্লানেট G3299-এ তার এক বান্ধবীর বাড়িতে। এখন রাত ৯ টা। সকালে পৃথিবীতে ল্যান্ড করবে। তাদের দাম্পত্য জীবন ৫০ বছর অতিবাহিত হল। তবে এতদিন জনকে ছাড়া থাকে নি অজীতা। এই হলো পুরো ১০ দিন তাকে ছেড়ে চলে গেছে। তার স্ত্রীর নাম অপরাজিতা। জন সংক্ষেপে অজীতা বলে ডাকে। অজীতা স্বামীর জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছে। অনেক আগেই চলে আসার কথা ভাগ্য তার আসতে দেয়নি। ইউনিভার্স এর আবহাওয়া খারাপ। তাই মহাকাশযান লঞ্চ করতে পারেনি। গ্যালাক্সি G2991-এর ক্ষুদ্রতম একটি গ্রহের কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটেছে। তারপর পৃষ্ঠদেশ কেটে পুরো সোলার সিস্টেম ধূলিকণায় ভরে গেছে। আর তার একমাত্র চাঁদ নিজের কক্ষপথে হারিয়ে অসাভাবীকভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কি হয় কে জানে, মহাকাশযানের কাছে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তাই লঞ্চ করা বন্ধ করে দিয়েছিল চার দিন।
এখন জনের আনন্দ আর দেখে কে? তার প্রিয়তমাকে কাল সে দেখতা পাচ্ছে। এখন একটু ভার্চুয়াল লাইফে দেখা করলে কেমন হয়? রাতের খাবার খেয়েছে? নাকি এখনো ম্যাকের কবিতা নিয়ে পড়ে আছে।ইদানিং যখন সময় পায়, ম্যাকের কবিতা নিয়ে পড়ে থাকে। এমন সময় কুক আসলো- খাবেন না, স্যার? তুমি কী রান্না করেছো? আমার আজকে খেতে মন চায় সেটা তো তোমাকে বলিনি আজ বৃহস্পতিবার, তুমি আমার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করনি কেন? স্যার, আমাকে মেসেজ করে আপনার এখনকার মেন্যু বলে দিয়েছিলেন ম্যাম। তবে কী রান্না করেছো? স্কাউন লীফ ও ভেড়ার মাংস দিয়ে তৈরি করা স্টিম। ভালোই তো এখন এটাই খেতে মনে চাচ্ছিল। সপ্তাহে বৃহস্পতিবার জন নিজের পছন্দের খাবার খায়। আর অন্যদিনের তার তৈরি করা মেন্যু অনুসারে কুক রান্না করে রাখে। কুক হলো আসলে একটা যান্ত্রিক রোবট। তাদের পরিবারের রান্নার কাজের জন্য তাকে রাখা হয়েছে। হ্যাঁ, তুমি এখন এক কাপ কফি নিয়ে আসো, আর এক ঘণ্টা পরে খেয়ে নিব।
অজীতা কি করে জানল তার এখন স্টিম খেতে মনে চাচ্ছে? তাও আবার স্কাউন লিভ স্টিম। ভালোবাসার মানুষ মনে হয় দূরে থেকেও মনের অবস্থা বুঝতে পারে। কিন্তু আমার এখন মনে যে একটা শূন্যতা অনুভব করছে, সেটাও কি অজীতা বুঝতে পারছে? না কি সে আমার মত শূন্যতা অনুভব করছে। এটা নিয়ে মগজ আতি-পাতি করতে লাগলো। কাল্পনিক সম্ভাব্য একটা সমাধান বের করতে হবে। এজন্য তার জিনিয়াসের সাহায্য নিতে হবে। জিনিয়াস আসলে তাদের কাজের সহায়তার জন্য রাখা আর একটা রোবট। এর বিশেষত্ব হচ্ছে টুকটাক কাজ থেকে ছোটখাট জটিল বিষয়ের সমাধান করতে পারে। এমনকি টুকটাক গবেষণা করতে পারে। ডাকার সাথে সাথে জিনিয়াস চলে আসল। তার প্রশ্ন করার সাথে সাথে সে এক চোটে বলে দিল- ম্যামের মনে আপনার মত শূন্যতা বিরাজ করছে, স্যার।
অজীতা সকাল ছয়টায় পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। সে তার স্বামীর জন্য কিছু তার পছন্দের পোশাক কিনলো, আর সাথে নিলো একতোড়া সুন্দর করে সাজানো ফুল। হ্যাঁ, গিফট আছে। তার স্বামীকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য। সাড়ে আটটায় সে তাদের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। জন নতুন একটা ম্যাকের কবিতার বই নিয়ে বসে আছে। এখনো নাস্তা করেনি। এমন সময় রুমে প্রবেশ করল অজীতা.......
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।