বাবলী (পর্ব ৪)
এত যে বৃষ্টি হবে তা বের হবার সময় বোঝা যায় নি। ছাতা দিয়ে মাথা বাঁচানো গেলেও শরীর বেশ ভিজছে। এদিকে একটা রেনকোট পরে বাবলী রাস্তা পর্যন্ত আসার আগেই ওর বাস বেরিয়ে গেছে। এখন রেনকোটের উপরে একটা ছাতা ডানা মেলেছে। এখানে কোন আড়াল নেই। একটা পাঁকুড় গাছে আছে কিন্তু বৃষ্টির সময় গাছের নীচে না কি দাঁড়াতে নেই।
দেখলেন, আজও বাসটা পেলাম না।
আবার এসে যাবে। যা-বৃষ্টি একটু আড়াল দরকার।
আপনার কি সরকারী না বেসরকারী।
সরকারী।
তাহলে আজ নাও আসতে পারতেন।
তুমি আজ বের হও কি না ওটা দেখতেই এলাম।
তার মানে? বাবলী আবার কাঠিন্যের বর্ম পরে।
না, না, মানে আবার কি, এমনি বললাম।
আপনি কোথায় থাকেন?
আমি এখানে এক কোয়ার্টারে ভাড়া থাকি।
একা, না ফ্যামিলি আছে?
একা।
আপনার ফ্যামিলিতে কে কে আছে?
মা। দিদিরা আছে, বাবা মারা গেছে।
ও! বিয়ে করেন নি?
জানতাম বাবলী ওটাই জিজ্ঞাসা করবে।
না। তোমার জানা শোনা ভাল পাত্রী আছে? বিয়েটা এইবার সেরে ফেলব।
আমাকে দেখে কি মনে হয় যে আমি ঘটকালী করি?
না, না, তোমাকে দেখে উপযুক্ত পাত্রীর কথাই মনে আসে।
কি?
কিছু না, এমনি বললাম।
আপনি কি সবকিছু এমনি এমনিই বলেন?
সব নয়। এত বৃষ্টি না হলে জিজ্ঞাসা করতাম তোমার ফ্যামিলিতে কে কে আছে?
বৃষ্টির সঙ্গে জিজ্ঞাসার কি সম্পর্ক?
মেজাজের সম্পর্ক। তুমি তো এখন বাসের জন্য উদ্বিগ্ন। ঐ যে তোমার বাস আসছে।
বাসটা দেখেই বাবলী হাত নাড়া দিয়ে বিদায় নেয়। ওর চলাফেরা যথেষ্ট ক্ষিপ্র। জীবন সংগ্রামে এরকম মেয়েরাই জয়ী হয়। এইসময় আমার বাসও এসে গেল। অফিসের বাস। উঠে জানালার পাশেই সিট পেলাম। বৃষ্টিটা থেমেছে।
তোমার দিকে যে রেনকোট পরা মেয়েটা হাত নাড়ছিল ওটা কে? ফক্কড় আশীষ জানতে চায়।
এখানেই থাকে। পরিচিত।
তুমি এত লাজুক—মেয়েদের সঙ্গে এত পরিচয় তোমার কবে হল? আশীষ একটা ঘোট পাকাতে চাইছে।
কি করে বুঝলি আমি লাজুক?
অফিসে তো কারো সঙ্গে সহজে পরিচয় করো না। তোমাকে তো আড়ালে সবাই অসামাজিক বলে।
ঠিকই বলে। আগে তো আমি সমাজবিরোধীই ছিলাম।
তাই? এখন তাহলে কি তুমি?
ভেতরে সমাজবিরোধী, বাইরে মানবপ্রেমিক। আমাকে না ঘাঁটানোই ভাল। আগের জীবনে আর আমাকে ফেরাস না।
আশীষ এবার গুরু! গুরু! বলে অট্টহাস্যেফেটে পড়ে। বাসের কয়েকজন ঘাড় ঘুরিয়ে ওকে দেখে। আশীষের স্বভাব সকলেই জানে। ও সারাদিনই মুরগী খুঁজে বেড়ায় অথবা নিজেই মুরগী হয়।
আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। উঁচু উঁচু বাড়ীর ওপর দিয়ে মন খারাপ রঙের মেঘও আমাদের সঙ্গে ছুটছে। সেই মেঘের উপরে বাবলী রেনকোট খুলে মাথা ঝাঁকিয়ে চুল সুবিন্যস্ত করছে। ওর অফিসটা কোথায়?
(ক্রমশঃ)
দেখলেন, আজও বাসটা পেলাম না।
আবার এসে যাবে। যা-বৃষ্টি একটু আড়াল দরকার।
আপনার কি সরকারী না বেসরকারী।
সরকারী।
তাহলে আজ নাও আসতে পারতেন।
তুমি আজ বের হও কি না ওটা দেখতেই এলাম।
তার মানে? বাবলী আবার কাঠিন্যের বর্ম পরে।
না, না, মানে আবার কি, এমনি বললাম।
আপনি কোথায় থাকেন?
আমি এখানে এক কোয়ার্টারে ভাড়া থাকি।
একা, না ফ্যামিলি আছে?
একা।
আপনার ফ্যামিলিতে কে কে আছে?
মা। দিদিরা আছে, বাবা মারা গেছে।
ও! বিয়ে করেন নি?
জানতাম বাবলী ওটাই জিজ্ঞাসা করবে।
না। তোমার জানা শোনা ভাল পাত্রী আছে? বিয়েটা এইবার সেরে ফেলব।
আমাকে দেখে কি মনে হয় যে আমি ঘটকালী করি?
না, না, তোমাকে দেখে উপযুক্ত পাত্রীর কথাই মনে আসে।
কি?
কিছু না, এমনি বললাম।
আপনি কি সবকিছু এমনি এমনিই বলেন?
সব নয়। এত বৃষ্টি না হলে জিজ্ঞাসা করতাম তোমার ফ্যামিলিতে কে কে আছে?
বৃষ্টির সঙ্গে জিজ্ঞাসার কি সম্পর্ক?
মেজাজের সম্পর্ক। তুমি তো এখন বাসের জন্য উদ্বিগ্ন। ঐ যে তোমার বাস আসছে।
বাসটা দেখেই বাবলী হাত নাড়া দিয়ে বিদায় নেয়। ওর চলাফেরা যথেষ্ট ক্ষিপ্র। জীবন সংগ্রামে এরকম মেয়েরাই জয়ী হয়। এইসময় আমার বাসও এসে গেল। অফিসের বাস। উঠে জানালার পাশেই সিট পেলাম। বৃষ্টিটা থেমেছে।
তোমার দিকে যে রেনকোট পরা মেয়েটা হাত নাড়ছিল ওটা কে? ফক্কড় আশীষ জানতে চায়।
এখানেই থাকে। পরিচিত।
তুমি এত লাজুক—মেয়েদের সঙ্গে এত পরিচয় তোমার কবে হল? আশীষ একটা ঘোট পাকাতে চাইছে।
কি করে বুঝলি আমি লাজুক?
অফিসে তো কারো সঙ্গে সহজে পরিচয় করো না। তোমাকে তো আড়ালে সবাই অসামাজিক বলে।
ঠিকই বলে। আগে তো আমি সমাজবিরোধীই ছিলাম।
তাই? এখন তাহলে কি তুমি?
ভেতরে সমাজবিরোধী, বাইরে মানবপ্রেমিক। আমাকে না ঘাঁটানোই ভাল। আগের জীবনে আর আমাকে ফেরাস না।
আশীষ এবার গুরু! গুরু! বলে অট্টহাস্যেফেটে পড়ে। বাসের কয়েকজন ঘাড় ঘুরিয়ে ওকে দেখে। আশীষের স্বভাব সকলেই জানে। ও সারাদিনই মুরগী খুঁজে বেড়ায় অথবা নিজেই মুরগী হয়।
আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। উঁচু উঁচু বাড়ীর ওপর দিয়ে মন খারাপ রঙের মেঘও আমাদের সঙ্গে ছুটছে। সেই মেঘের উপরে বাবলী রেনকোট খুলে মাথা ঝাঁকিয়ে চুল সুবিন্যস্ত করছে। ওর অফিসটা কোথায়?
(ক্রমশঃ)
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Riktam Ghosh ০২/১২/২০১৭osadharan
-
ফয়জুল মহী ২৯/১১/২০১৭অপূর্ব লেখা
-
Mahbubur Rahman ২৮/১১/২০১৭ভালো