একটি অযাচিত জুতাপেটা দৃশ্য অবলোকন ।
প্রায়শ সন্ধায় কাঁটাবন যাই এক কবির সহিত সময় ব্যায় করিতে । সেদিন ২০ চৈত্র বৃহস্পতিবার, কবির সহিত আড্ডা শেষে বাসার দিকে রওনা হইলাম । রাত্রি তখন ৯টার কাছাকাছি । কাঁটাবন থেকে শাহবাগ মোরে গিয়া বাসে উঠিব তাই পায়ে হাঁটিয়া শাহবাগ এর দিকে যাইতেছিলাম । কাঁটাবন থেকে শাহবাগ যাওয়ার পথে ঠিক মাঝ বরাবর জায়গাটা তুলনামূলক একটু নির্জন । আর সেই ক্ষেত্রে রাত্রি হলে তো নির্জনতা আরো ঘনিভুত হইয়া যায় । যাক সে কথা , হাঁটছিলাম আপন মনে, হাতে একটি ক্ষুদ্র চুরূট । হঠাৎ চোক্ষুগোচর হইল তিন-চার জনের একটি জটলা । আমার স্বভাবজাত বৈশিষ্ট হইল জটলা ছোট বা বড় যাহাই হোক না কেন তাহার ধারেকাছে ঘেঁষিতে যাইনা । দূরে দাঁড়িয়েই প্রত্যক্ষ করা আমার স্বভাব । এই তিন-চার জনের জটলায় লক্ষ্য করিলাম ২৮ থেকে ৩০ উর্ধ্ব এক যুবক ( বয়সটা অবয়ব দেখিয়া বুঝিয়া নিলাম) ২২ থেকে ২৪ বয়স্ক এক যুবকের নাকে-মুখে-গালে অনবরত জুতা চালন করিতেছে । পরক্ষনেই এক নারী , বয়সটা ২৫ উর্ধ্ব হইবে বোধহয় ২৮ উর্ধ্ব যুবকের হাত হইতে জুতাটি নিয়ে প্রহৃত যুবকের নাকে-মুখে-পিঠে কিয়ৎক্ষন তীব্র বেগে জুতা চালন করিল । দূর থেকে দেখিয়া কৌতুহল আর মজা পাইতেছিলাম । মজা আর কৌতুহল পাইতেছিলাম বলিতেছি কারন প্রহৃত যুবকটি শুধু জুতারবাড়ি খাইয়াই যাইতেছে কোন প্রতিবাদ বা এরুপ কোন প্রবনতা তাহার কাছ থেকে আসিতেছে না । জটলা আরো ঘনিভূত হইতেছিল এরই মধ্যে যুবক-যুবতী জুতা চালন থেকে সেই যুবকটিকে মুক্তি দিয়া স্থান ত্যাগ করিবার পথ করিয়া দিল । মুক্তি পাইয়া জুতা প্রহৃত যুবকটি অতিশয় ভদ্র বালকের মত হাঁটিয়া হাঁটিয়া চলিয়া গেল , তাঁর পিঠে ঝুলানো একটি কলেজ ব্যাগ । ভাবিলাম সে হয়তো কোন কলেজ – বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হইব । ইতিমধ্যে যুবক-যুবতীর কাছে আরো লোক আসিয়া উপস্তিত হইয়া ঘটনা জানিতে চাইল । আমি দূর থেকেই দেখিতেছিলাম আর অন্য লোকদের চিৎকার চেঁচামেচি ‘মার আরো মার’ এরুপ শব্দাচ্চারন শুনেতেছিলাম । নিরীক্ষণে যাহা ধরা পড়িল – প্রহৃত যুবকটি যুবতীটিকে উত্যক্ত জাতীয় কিছু একটা করিয়াছে এবং তাহা একটু অতিমাত্রায় । ফলশ্রুতিতে যুবতী সাথে সাথেই প্রতিবাদী হইয়া সাথে থাকা যুবকটিকে শক্তি করিয়া উত্যক্তকারী যুবাটিকে জুতাপেঠা করিয়া দিল । জটলায় যুক্ত হইয়া অন্যান্য কিছু জনতা হাঁটিতে থাকা যুবকটিকে পূনরায় ডাকিয়া আনিতে চাইল ( হইত আরো কিছু উত্তমমাধ্যম দেবার জন্য) । কিন্তু প্রতিবাদী যুবা-যুবতীটি কাহিনী আর বাড়াইতে চাইল না । সমাপ্তি ঘটিল জটলার ।
মনে মনে ধন্যবাদ দিতে চাইলাম প্রতিবাদী যুবক-যুবতীটিকে । আর নিজেও স্বিদ্ধান্ত নিলাম কোন কারনে কোন দিন যাচিয়া কোন নারীকে উত্যক্ত করা দূরের কথা ভাল-মন্দ কথাটি কহিতে যাইব না । আর ভাবিলাম এরুপ প্রতিবাদ যদি প্রত্যেক জায়গাতেই দেখা যাইত তাহা হইলে উত্যক্ত নামক শব্দটি বহুলাংশে কমিয়া যাইত । সমাজ হইত সুন্দর শৃঙ্খল ।
মনে মনে ধন্যবাদ দিতে চাইলাম প্রতিবাদী যুবক-যুবতীটিকে । আর নিজেও স্বিদ্ধান্ত নিলাম কোন কারনে কোন দিন যাচিয়া কোন নারীকে উত্যক্ত করা দূরের কথা ভাল-মন্দ কথাটি কহিতে যাইব না । আর ভাবিলাম এরুপ প্রতিবাদ যদি প্রত্যেক জায়গাতেই দেখা যাইত তাহা হইলে উত্যক্ত নামক শব্দটি বহুলাংশে কমিয়া যাইত । সমাজ হইত সুন্দর শৃঙ্খল ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
এস ইসলাম ০৬/০৬/২০১৪প্রতিশোধ নয়,ক্ষমাই উত্তম।
-
ফজলে আদনান ০৬/০৬/২০১৪আপনি শুধু দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলেন....! কিছু বলবেন না...?
-
অনিত্য ০৬/০৬/২০১৪ছেলেটা যে বিনা প্রতিবাদে জুতাপেটা খেয়ে গেলো তাতেই বেশি অবাক হয়েছি। সাধারণতঃ রাস্তাঘাটে মেয়েদের উত্যক্তকারীরা থাকে ষন্ডা প্রকৃতির। ওদের কিছু বলতে গেলেই বরং সমস্যা হয়ে যায় অন্যদের। তবে মেয়েটাকে উত্যক্ত করে থাকলে ছেলেটার উচিত শাস্তিই হয়েছে।
-
কবি মোঃ ইকবাল ০৫/০৬/২০১৪উচিত শিক্ষা হয়েছে।