www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

আমার চোখে পুরুষ (2টি পর্বে শেষ করা হল )



সমাজের ঘৃণ্য প্রথা থেকে,তা সত্তেও যৌথ সমাজব্যবস্থা নারীর শ্রমকে পরিণত করেছিল সম্পূর্ণ গৃহাঙ্গনে-বাল্যবিবাহ,সতীদাহ প্রথা ইত্যাদির দ্বারা সমাজে নারীদের অবস্থাণ করে দেওয়া হয়েছিল দাসীপ্রথায়,অতঃপর বালিকার বিবাহ সম্পন্ন হত ৭থেকে ১৩র মধ্যে এবং খুব স্বাভাবিক কারণেই ব্রাম্মণ পুরুষের ৮০।৯০বছর বয়স্ক পর্যন্ত অধিকার ছিল নারীকে বিবাহ করার।
যদিও সেকালে জাতিভেদ প্রথা চরমতম অরাজগতা সৃষ্টি হলে মাতা-পিতা উচ্চ্ জাতে উন্নতির জন্যে বালিকা কন্যার এরুপ বিবাহে সম্মত হতেন ও সৃষ্টি হত দেবদাসী প্রথা যা পরবর্তীকালে সতিদাহ প্রথার পর নারীর জীবনে বৃদ্ধ স্বামী ছাড়া অবধারিত অধ্যায়ে পরিণত হয়েছিল।বস্তুত এও ছিল এক ধরণের বেশ্যাবৃত্তি...অর্থাত্ সমাজের দায় চাপিয়ে অথর্ব করে রেখে তাদের উপর চাপানো সমাজের অন্যান্য সদস্য কতৃক এক চরমতম প্রথা।
বৈদিক যুগ থেকেই পুরুষ নারীকে ভোগযন্ত্র ও উৎপাদনের যন্ত্ররুপে চিহ্নিত করে এসেছে এবং এই একবিংশ শতকে এসেও সেই চিন্তা-ভাবনার আমূল কোন পরিবর্তণ দেখা যায় নি। সেই যুগে যদিও কিছু উল্লিখিত নারীর নাম পাওয়া যায় ইতিহাসে যেমন-গার্গী,মৈত্রেয়ী,অপালা ইত্যাদি,এরা সেযুগের কোন বিশেষ পর্যায়ের সাথে জড়িত ছিলেন।আসলে ভারতবর্ষ হল সনাতন ধর্ম অর্থাত্ সর্বধর্ম সমন্ময়ের এক পীঠস্থাণ,এখানে বিভিন্ন ধর্ম ও মতাবলম্বীর মানুষজনের একত্র সহবস্থাণের ফলে গড়ে উঠেছে এক মিলনক্ষেত্র যা পরবর্তীকালে সমাজ বিবর্তনের সহায়ক রুপে পরিগণিত হয়েছে।

একেক ধর্মের ও বর্ণের সংস্কারের ভিত্তিতে এখানে গড়ে ওঠে নানা ধর্মীয় পীঠস্থাণ,মন্দির,মসজিদ্ ইত্যাদি। প্রত্যেক ধর্মের মত হিন্দুধর্মের নানান সংস্কারের মূলে নৈতিক বাস্তবতার বদলে প্রভূত অসামঞ্জস্য নিরর্থক বাহানা পরিলক্ষিত হয় যা থেকে সহযেই অনুমান করা যায় হিন্দুদের যাবতীয় সংস্কার ধর্মের আড়ালে প্রগতি ,উন্নতির কোন সূত্র পাওয়া যায় না।৩৩ কোটি দেব-দেবীর পূজার্চ্চনার দোহাই দিয়ে সমাজের নারী-পুরুষদের অন্তরে একধরণের অমূলক ভক্তি ও সংসার ধর্ম প্রতিপালনে অহেতুক অশুভ কোন শক্তির প্রভাবমুক্ত হওয়া থেকে একধরণের ভীতির উদ্রেক করাই ছিল ব্রাম্মণ্য ধর্মের একমাত্র উদ্দেশ্য। এবং এই পূজার্চ্চনার অজুহাতে নারীদের দিনের বহুলাংশ সময়টুক বন্দী হয়ে যেত সংসারের ঠাকুরঘরে।সকাল-সন্ধ্যায় নিয়মিত ঠাকুরসেবা তাদের দৈনন্দিন জীবনের এক বৃহত্তর অংশ হয়ে রয়ে গেল আজও,এর ফলে একাংশ নারীর সৃজনশীলতার ধ্বংস সাধন করা হল যা পরবর্তী পর্যায়ে তার নিজের ও সমাজের প্রগতির ধারক ও বাহক হতে পারতো।
এইভাবে নারীদের স্বত্তা বিসর্জিত হতে থাকল পিতা,স্বামী তথা পুত্র এবং অন্যান্য পুরুষ প্রজাতির দ্বারা,সকলের অবস্থা সমান না হলেও তৃতীয়াংশ নারীর জীবনধারা সমান পর্যায়ে পরিগণিত হল ফলে নারী প্রগতি বা নারী স্বাধীনতা প্রহসন হয়েই রয়ে গেল সমাজ এবং রাজ্য রাজনীতির গননায়।সর্বাপেক্ষা উল্লিখিত বিষয় হল দীর্ঘকাল স্বেচ্ছাবাসের অন্তরালে থেকে নারীরা যে একপ্রকার স্বতন্ত্র আব্রুর পর্দায় থাকার অভ্যাস তৈরী করেছিল তা থেকে তারা নিজেদের মুক্ত করতে পারল না----- কোনমতে,সমাজের,সংসারের দোহাই দিয়ে তারা নিজেরাও নিজেদের ধ্বংসসাধনে প্রবৃত্ত হয়--যদিও অর্থনৈতিক কাঠামোয় ভারতীয় নারীরা অনেকটাই নির্ভরশীল ছিল পিতা,পুত্র ও স্বামীর কাছে আর এই দুর্বলতাই তাদের সহযোগিতা করলো স্বেচ্ছাবাসে।ভারতীয় নারীর কাছে এ এক গভীর সমস্যা।বস্তুত শিশুকাল থেকেই তাদের শিক্ষা দেওয়া হয় তারা শুধুমাত্র বিবাহের এবং পুরুষ ও সংসারের সকলের মনোরঞ্জনের জন্যই সৃষ্টি অতএব বাল্যকাল থেকেই চলে সেই অর্থে তাদের লালন পালন প্রথা। সুখী গৃহকোন সৃষ্টির অর্থে বলিদান দেওয়া হয় নারীর,সেখানে যদিও আর্থিক সমস্যা পূরণের দায় থাকে পুরুষের কিন্তু নারী অনেকটা পিছিয়ে যায় এই অর্থে।

এমন নয় যে সংসারে নারী পুরুষ উভয়েই কর্মব্যস্ত সেখানে সংসার প্রতিপালন সঠিক হয় না,এ এক ভ্রান্ত ধারণা বরং উভয়েই আর্থিক রোজগারে সক্ষম হলে একটি সুষ্ঠ সংসার গড়ে ওঠা সম্ভব,আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রও নারী প্রগতিকে সঠিক মূল্যায়ণ করে না এক্ষেত্রেও সংরক্ষণ চাকুরী পদ সৃষ্টি ইত্যাদিতে পুরুষ প্রাধান্যের সহযোগিতাই পরিলক্ষিত হয়।এই একবিংশ শতকে এসেও সাধারণ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত ঘরের নারীরা কোনমতে কলেজের দোরগোড়ায় পৌঁছে অপেক্ষা করে একটি যোগ্য পাত্রের ও উপযুক্ত ঘরের এবং যতখানি প্রচেষ্টা করা হয় তার সেই বর ও ঘর খোঁজবার কাজে ততখানি সময় বা শ্রম ব্যায় করা হয় না মেয়েটির যোগ্যতা অবলম্বনে তাকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার কাজে।কারণ সে কন্যাসন্তান তাকে পরের বাড়ী  পাঠাতে হবে অতএব সাবধানে তার লালন-পালন করে কোনমতে গোত্রান্তর করে দিয়েই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন অভিভাবকেরা,আর সংসারের পুত্র সন্তানটির জন্য যত আয়োজন অব্যাহত থাকল।আর এই ভাবনা থেকেই নারী ভাবতে শিখল নিজের দুর্বলতার কথা,এবং সেই থেকে চলল তার লক্ষী মেয়ে,সংসারের যোগ্য গৃহিনী ও লজ্জাশীলা নারীর মর্যাদা পাবার ধারণা যা নাকি তার একান্ত ভূষণ-

অতএব এক্ষেত্রে দেখা যায় নারী নিজেই নিজের বলয় তৈরী করার কাজে প্রবৃত্ত হল বিবাহ নামক চিরবন্ধণের দ্বারা।যদিও সংসার ধর্ম ও সন্তান পালন ভারতীয় ধর্মের প্রধান বিষয় তথাপি এই ধর্ম রক্ষা অর্থ এই নয় যে নারীর যোগ্যতা,মেধা বিসর্জণ দিয়ে এই ধর্মের পালন করতে হবে।অতএব সমাজের প্রত্যেক ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত হয় নারীর পশ্চাত্গতি।যদিও আমাদের এই দেশ যেখানে ইন্দিরা গান্ধীর মতো নারী প্রধানমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করেছেন এবং বর্তমানে প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রীরুপে আমরা পেয়েছি মমতা ব্যানার্জীকে  এছাড়া অতীতে আরও বহু বীরাঙ্গাণা নারীরা কত আন্দোলনের সামিল হয়ে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে প্রাণ বিসর্জণ দিয়ে গেছেন আমারা জেনেছি তাদের ইতিহাসের পৃষ্টায়...কিন্তু এতসব জেনেও আমরা নারীরা সেই তিমিরেই রয়ে গেছিআজও কন্যাসন্তান জন্মালে শাঁখের আওয়াজ শোনা যায়না দেওয়া হয়না উলুদ্ধনী,অন্যান্য সদস্যদের হয়ে যায় মুখ ব্যাজার।

কেউ আবার শিশুর লিঙ্গ নির্ধরণ (কন্যা হলে)করে জন্মের পূর্বেই তাকে শেষ করে ফেলে,যদিও রাষ্ট্র ও রাজ্যের অবস্থাণগত বিভেদ প্রণালীই তাদের মনে এরুপ ভেদ ভাবনার সৃষ্টি করে।আজও কন্যাসন্তানের জন্য সমাজে কোন সুষ্ঠ নির্ভরতা নেই সর্বত্রই ভয়,যদিও নারীর শারীরিক বিন্যাস এক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা দায় বহন করে ঠিকই কিন্তু যে বা যার অথবা যাদের দ্বারা তার এই নিপীড়ণ তাদের অপ-শক্তির সাথে কিভাবে নিজেকে সংরক্ষণ করা অথবা নিজের প্রতিরক্ষা নিজের করার যাবতীয় শিক্ষার কোন সুষ্ঠ প্রণালী বা প্রতিষ্ঠাণ কি শিক্ষাক্ষেত্রে কি সংসার ক্ষেত্রে কোথাও পরিলক্ষিত হয় না।

অথচ নারীদেহকে পণ্য করে সমক্ষে বাণিজ্যিক প্রথার দ্বারা নিত্য উন্মোচিত করা হচ্ছে নারী দেহকে।কি আশ্চর্য একদিকে লোলুপ একদল নারী কিছু স্বাচ্ছন্দ্যের বিনিময়ে নগ্ন শরীরে দাঁড়াচ্ছে ক্যামেরার সামনে আর অপরপক্ষে একদল নিয়ত প্রচেষ্টারত নিজেদের সম্ভ্রম বাচাতে-এই পরিমাণ নেশার প্রলুব্ধীকরণ যুবকমনে সৃষ্টি করছে চরম উন্মাদনার শেষ পর্যন্ত যা নারীভোগের কামনায় ধর্ষণে পরিগনিত হচ্ছে।কাজেই সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে নারীর অসহায়তা কিংবা দুর্বলতা,যা বর্তমানে এক ভয়ংকর অরাজগতায় পরিগনিত হচ্ছে।

অতঃপর নারীর স্থাণ কিন্তু পড়ে থাকে একই স্থাণে যতই  তার অবস্থার উন্নতি হোক না কেন কোন এক স্থাণে সমস্ত নারীই সমগোত্রে পরিগনিত হয়,আর এই অবস্থান্তরের জন্য দায়ী থাকে পুরুষ যে কোন রুপে...যে কোন স্থাণে-----
ভারতবর্ষ প্রাচীনকাল থেকেই ঋষিমুনিদের দেশ,স্বভাবতই এদেশের মানুষ ধর্মপ্রবণ।বারো মাসে তেরো পার্বণের মাধ্যমে চলে এদেশের ধর্ম যাপণ।আদৌ ভারতবর্ষে হিন্দুদের নিজস্ব কোন ধর্মের নাম পাওয়া যায় নি,বিভিন্নক্ষেত্রে ঋষি মুনিদের আদেশ অনুশাষণই পরবর্তীকালে ধর্মরুপে পরিগণিত হয়।এদেশের প্রধান উৎসব বিভিন্ন দেবদেবীর পূজার্চনা এবং হিন্দুদের প্রধান উত্সব দুর্গা পূজা,দুর্গা অর্থাৎ শক্তির আরাধ্যা দেবী যিনি সমগ্র দেবতার  দ্বারা সৃষ্ট এক নারী চরিত্র যিনি পৃথিবীর মহা অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়েছিলেন।যদিও সম্পূর্ণ এক কাল্পনিক মহাশক্তি দেবী দুর্গা বাস্তবে যার কোন অবস্থাণ নেই বা কস্মিনকালে সম্ভাবনাও নেই এমন শক্তি আরাধনা করা হয় হিন্দু ধর্মে।আমাদের দেশ নারীকে মাতৃ়্জ্ঞানে পূজা করলেও কোনদিনই তা মূর্তি পূজার বাইরে প্রদর্শিত হয় নি।অর্থাৎ এদেশে লোকমতানুযায়ী দেবী পূজা প্রচলিত হলেও নারীর ক্ষমতা ও শক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় নি কোনদিন।
সরস্বতী হলেন শিক্ষার অধিষ্টাত্রী দেবী, অথচ কি আশ্চর্য অতি প্রাচীন কাল থেকেই এদেশ নারী শিক্ষার পরিপন্থী হয়ে থেকেছে,কতিপয় শিক্ষিত নারী সমাজের প্রহসন রুপে শুধুমাত্র নির্দিস্ট দলে যোগ দিতে পারতেন,সাধারণ নারীদের  কোন অধিকার ছিল না লেখাপড়া শেখবার।তবে অতি উচ্চ বিত্ত মহিলাদের মধ্যে কতিপয় নারী খুব সন্তর্পনে স্কুল,কলেজ পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন।কিন্তু সমাদর পাননি সমাজের।অথচ ধুমধাম সহকারে কি সারস্বত বন্দনার মহিমা।
তবে বর্তমান সমাজব্যবস্থা ভাঙনের ফলে যান্ত্রিক সভ্যতার প্রভূত প্রচলনের কারণে আর্থিক বনিয়াদ ঢেলে সাজানো হলো,উন্নত হল বাণিজ্যিক লেন-দেন প্রথার বানিজ্যিকীকরণ,জীবন হল গতির সম্মখীন এবং বিনোদনের আখড়।
এবং চলল প্রাচীন ধ্যান-ধারণার আধুনীকিকরণ ফলে সৃষ্টি হল বাজারদর এবং চাহিদা,আর্থিক চাহিদা জোগান দেওয়া কষ্টকর হলে সৃষ্টি হল ব্যবসাভিত্তিক পণ্য উৎপাদন প্রনালী। প্রচুর অর্থ চাহিদার পাশাপাশি সমাজের একাংশ নারী সম্ভ্রম পরিত্যাগ করে গ্রহণ করল স্বল্পসময়ে প্রচুর অর্থের যোগানার্ত্থে নানবিধ পদ্ধতি।এবং উন্মুক্ত হল নারী সম্ভ্রম জনসমক্ষে বাড়ল বিনোদন,সিনেমা,টিভি,ইত্যাদিতে এল আধুনীকিকরণ এবং এসবে কিন্তু নারী প্রগতি অর্থে নারীর সম্ভ্রম প্রদর্শিত হল জনসমক্ষে।

এতে হয়তো বাড়ল স্বচ্ছলতা কিন্তু নিম্নমানের এক রুচিহীন বৈচিত্র্যে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল মানুষ,বিকৃত হতে থাকল মেধা প্রকট হল সাময়িক রুচি বিকৃতি,
এবং এক্ষেত্রেও নারী সমাজের শ্রেনীবিভেদ করা হল,অর্থাৎ স্বল্প সময়ে প্রচুর অর্থ উপার্জনের এসব নারীরা সমাজের উচ্চবিত্ত ও শ্রেনীবৈষম্যের মাধ্যমে  প্রথম স্থানের সম্মাণ লাভ করলেন।এভাবে অত্যন্ত কৌশলে নারীকে ঘিরে সৃষ্ট হল ব্যবসায়িক চুক্তি ও নিম্নরুচির বিনোদন...।
অতএব নারী সর্বত্রই দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে রয়ে গেল পুরুষের পাশে অদৃশ্যে একরাশ অসহায়তা নিয়ে,বর্তমান সমাজে নারীর প্রতি এক শ্রেনীর পুরুষের জঘন্য জিঘাংসাসুলভ মনোবৃত্তির ফলে নিত্য লাঞ্ছণা তার জীবনে এক নৈমিত্তিক পর্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভূত পরিমাণ বানিজ্যিক ছবি,সিরিয়াল ইত্যাদি যুবসমাজে এক শ্রেনীর কদর্য লালসার উদ্রেক ঘটায় যা পরবর্তীকালে ধর্ষণ,খুন,যখম ইত্যাদি হিংসাত্মক উন্মাদনার বহিপ্রকাশ রুপে পরিগনিত হয়, বর্তমানে যে সমস্যা প্রধান এবং অতি প্রকটরুপে সমাজের সভ্যতার বিনাশ ঘটাচ্ছে প্রতিনিয়ত,এক্ষেত্রে প্রয়োজন প্রভূত শিক্ষাগত উন্নত মানসিক পরিস্থিতি।শুধুমাত্র নারীরাই কেন ভোগ্যবস্তু?--এই একবিংশের দোরগোড়ায় এসেও নারী প্রগতির এই হাল?-টেনে নামানো হচ্ছে যাবতীয় সভ্যতা ঘাড় ধরে--এবার বোধহয় একটু ভাবা প্রয়োজন।নিম্নে কবিতাটি দেওয়া হল নারী পুরুষের ব্যবধান অর্থে---,

       
প্রগতির গতি আজও যদি পুরুষের বৈষম্যমূলক বশ্যতায় বশীভূতকরণের মাধ্যমেই বপন করে চলে পৌরুষ ধারাকে,যদি আজও নারীর স্থাণ হয় পুরুষের দয়ায় তবে বাস্তবে কখনো কি সম্ভব প্রকৃত সুন্দর এক সহযোগিতামূলক সমাজ গঠন??------আমরা নারীরা পুরুষকে রেখেছি পাশে,পেয়েছি পাশে--বান্ধব রুপে,পিতা রুপে,ভ্রাতা রুপে আরও কতভাবে তাদের সান্নিধ্য আমাদের জীবনে অপরিহার্য্য অধ্যায় শুধু আজ নয় এ সম্পর্ক চিরকালের,চিরজীবনের--কারণ আদম ইভের প্রথম অমৃত ফল কামড়ের মধ্যেই উত্পন্ন ছিল সমাজের বীজমন্ত্র,একত্রে চলার মন্ত্র,পারস্পরিক সহযোগিতার মন্ত্র,ভালোবাসার মন্ত্র--কিন্তু মানুষ সে পথে হাঁটলো না,

বিশেষত পুরুষেরা নারীকে ভাবতে শুরু করল ব্রাত্য রুপে এবং ক্রমে নারীর প্রতি একপ্রকার অধিকার বোধ থেকেই তাদের মনে সৃষ্টি হল,অভিভাবকত্ব বোধ বা প্রভুত্ববাদ--অর্থাৎ এ বোধ এমনই এক মানসিকতা সৃষ্টি করে যা তাদের পৌরুষকে অহংয়ের দাপটে উন্মত্ত করে--ফলে খুব স্বাভাবিক কারণেই নারীরা কোনঠাসা হয়ে পড়ে এবং তাদের উপর আরোপিত হয় নানা সামাজিক ও সাংসারিক বিধি নিষেধ, যা তাদের প্রগতি বা আত্মোন্নতির পথে অন্তরায় হয়ে ওঠে,অতএব এ বোধ যতদিন না পর্যন্ত পুরুষ অনুভব করতে পারবে যে নারী ভোগ্য বা অনাদরের বস্তু নয় বরং প্রেম ও স্নেহের সম্পদ,নারী পুরুষের প্রেম ও ভালোবাসার মধ্য দিয়েই সম্ভব সুন্দর সমাজ,রাষ্ট্র তথা দেশ গঠন অন্যথায় জন্ম জন্মান্তর পার হয়ে গেলেও সমাজ,রাষ্ট্রে নারী জাগরণ সফল হবে না,আর নারী না জাগলে পিছিয়ে থাকবে রাজ্য,দেশ,রাষ্ট্র পৃথিবীর অন্যান্য দেশের কাছে।

কাজেই আমাদের জনসংযোগ ও প্রচার মাধ্যমকে হতে হবে সংবেদনশীল ও গঠনমূলক,কোনরকম আন্তর্জাতিক চক্রের দালাল হয়ে অর্থনৈতিক পুঁজির কারণে রাতারাতি লাভজনক ব্যবসার প্রসার না ঘটিয়ে বরং ধীরে সুস্থ ও স্বাভাবিক উপায়ে চ্যানেলগুলিকে পরিচালনা করা,এবং প্ররোচনামূলক যৌনতা ও হিংস্রতার প্রভাব বিস্তার না করে উদ্দেশ্যমূলক ও শিক্ষা মূলক ও মহিলাদের প্রশিক্ষণমূলক নানা পরিস্থিতি উপস্থাপনা করা হোক্ গঠনমূলক পদ্ধতিতে যা সমাজকে ও সমাজের নারী,পুরুষ ও আগামীর যুবশক্তিকে উদ্বুদ্ধ করবে দেশপ্রেমে ও তারা ছোট থেকেই শিখবে নারী বা মেয়েরা আদরের সম্পদ,প্রেমর সম্পদ,ভালোবাসার সম্পদ-সর্বোপরি শ্রদ্ধার।

শিশুকাল থেকেই একত্রে চলা,সহযোগিতা করা,স্নেহ করা ও নারী সৌন্দর্য্যের রহস্যনুসন্ধাণ যদি তাদের মনে প্রভাব সৃষ্টি করে তবে নারী পুরুষ পারস্পরিক গড়ে ওঠা সম্ভব এক সুষ্ঠ,সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক যা ধ্বংসসাধন করে না,ধর্ষণে উদ্বুদ্ধ তো করেই না বরং নারীকে বুঝতে শেখায়, পুরুষ ও প্রকৃতির প্রকৃত মিলনেই ভালোবাসার সৃষ্টি,যা আমাদের শেখায়,একত্রে চলতে  ও শোনায় সেই আদিম বীজমন্ত্র------"এস পুরষ আমরা একত্রে পথ চলি,এস আমরা একত্রে কাজ করি,এস আমরা সমাজ,সংসারকে সুন্দর করি একত্রে,এস আমরা ভালবাসতে শিখি,ভালোবসার মন্ত্রে দিক্ষীত হয়ে দূষণমুক্ত এক সুন্দর সমাজের জন্ম দেই"।  আসুন আজ থেকেই শুরু করি।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৯৭৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/০৬/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • তোমাকে যে এখানে পাব তা তো জানতাম নাহ। অথচ তুমি যে এখানে আছ তা বলনি। ভাল লাগল।
    • মল্লিকা রায় ২৮/০৬/২০১৪
      এখানে লুকিয়েছিলাম গো।যাক্ এসে ভালোই করেছো।
      • কেন বলতো।
        • তুমি ফ্রেন্ডস ক্লাব না কি যেন নাম সেটায় তো আছো সেখানে অামার একাউন্ট ওপেন হচ্ছেনা মোবাইল নম্বর নাকি ভুল বুঝতে পারছিনা কেন।
          • মল্লিকা রায় ৩০/০৬/২০১৪
            আমি দুটি কবিতা পোস্ট করেছি মব নং ও দিয়েছি কিন্ত কোন কল তো পেলাম না।অথচ নিয়মানুযায়ী পছন্দের কবিতা প্রতি শুক্রবার উক্ত চ্যানেলে পাঠ করা হবে তে কবিকে ফোনের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। আমার দুটি কবিতাই এখানে প্রকাশিত হয়েছে কিন্ত পাঠের ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম না।
            • একাউন্ট খুলে কিভাবে। সটাই তো জানিনা।
              • মল্লিকা রায় ০২/০৭/২০১৪
                কেউ ঠিক জানিয়ে দেবে।
  • আবু সাহেদ সরকার ২৭/০৬/২০১৪
    ভাবনাময় প্রকাশ আপনার লেখাটি। বেশ মাধুর্য, সাবলিল কথামালায় তৈরী লেখাটি। ভালো লাগলো।
  • শিমুল শুভ্র ২৭/০৬/২০১৪
    তুমি আবার গল্প লিখতে শুরু করলে কবে থেকে উপস !!! অসাধারণ সাহিত্যকতা । মনের মাধুরী মিশিয়ে পড়লাম ।
  • কবি মোঃ ইকবাল ২৭/০৬/২০১৪
    দিদি পর্বটিও বেশ লেগেছে। শুভ কামনা রইলো।
    • মল্লিকা রায় ২৮/০৬/২০১৪
      কয়েকটি পর্ব চলবে এখনও। অনেক ধন্যবাদ জানালাম,কবি।
 
Quantcast