পহেলা বৈশাখের আরেক কিস্তি
প্রথম থেকেই পহেলা বৈশাখের নারী লাঞ্ছিতের ঘটনার পেছনে সরকারী ছাত্রসংগঠনের হাত আছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছিলো। যাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ধারণা আছে তারাই জানেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটে তা সরকারি ছাত্র সংগঠনের প্রশ্রয়ের বাইরে কিছু ঘটতে গেলে নির্ঘাত প্যাদানি।
এতোগুলো মানুষের সামনে, পুলিশের সামনে কার এতো বুকের পাটা এভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা নারীদের লাঞ্ছিত করবেন? এতোদিনতো অভিযোগ ছিলো ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এবার অভিযোগ উঠেছে ওইদিনের ঘটনায় আওয়ামী লীগপন্থি দুই শিক্ষকও এতে যুক্ত ছিলেন। এই দুই শিক্ষকের একজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রভাষক মাহমুদুর রহমান বাহালুল ও অন্যজন হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গিয়াস উদ্দীন মোল্লা। তবে ঘটনা আরো চমকপ্রদ। সেটা হলো নারীদের পহেলা বৈশাখে লাঞ্ছিত করার পরও ওই দুই শিক্ষক আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ব্যনারে টিএসসিতে দাঁড়িয়ে মানবন্ধনও করেছেন!! আর এই দুই শিক্ষকের এমন কুকীর্তি শুধু এবারই নয়। এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে।
নির্যাতনকারী দুই শিক্ষক নির্যাতনবিরোধী মানব বন্ধনে!
পহেলা বৈশাখে টিএসসিতে নারীদের উপর যৌন সহিংসতার প্রতিবাদে জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ব্যানারে গত ২০ এপ্রিল সকাল ১১ টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিবাদী মানব বন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। শিক্ষক সমিতির সভাপতি জনাব ফরিদ উদ্দীন এর সভাপতিত্বে ওই মানবন্ধনে টিএসসির যৌন নিপিড়নে অংশ নেওয়া দুই শিক্ষকও ছিলেন।
নিচের ছবির সর্ব বামে দাড়িয়ে আছেন নারী যৌন সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রভাষক মাহমুদুর রহমান বাহালুল ও বাম থেকে তৃতীয়জন হলে আরেক যৌন সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গিয়াস উদ্দীন মোল্লা।
সেদিন যারা যৌন সন্ত্রাসে অংশ নিয়েছিলো তাদের অন্তত ২৮ জনের ছবি বেরা করা সম্ভব হয়েছে। এই ছবি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। সম্ভবত এ বিষয়টি আওয়ামীপন্থি ভিসি ড. আরেফিন সিদ্দিকী জানেন। এ কারণে তিনি বার বার চেপে যেতে চাচ্ছেন সেদিনকার যৌন সন্ত্রাসী তাণ্ডবের।
ঢাবির দুই যৌন সন্ত্রাসীর অতিত কীর্তিময়!
উপরের ছবির সর্ব বামে দাড়ানো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রভাষক মাহমুদুর রহমান বাহালুলের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পুরানো। ২০১০ সালে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এই কীর্তিমান শিক্ষক দুই ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তবে তাদের কাউকেই তিনি বিয়ে করেননি। এই প্রেমিক পুরুষ ২০১৩ সালে অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। তখন নির্যাতি ছাত্রীরা অভিযোগ করেন লিখিতভাবে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তখন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনে গুনী শিক্ষক মাহমুদুর রহমান বাহালুলকে অভিযুক্ত করা হয় এবং অভিযোগের সত্য রয়েছে বলে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনে মাহমুদুর রহমান বাহালুলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ জানায় কমিটি। তবে সরকারি দলের শিক্ষক নেতা হলেতো আর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। ২০১৩ সালের মে মাস থেকে এক বছরের জন্য বিভাগের সব কর্মকাণ্ড থেকে তাকে অব্যাহতি দেয় যৌন নির্যাতন করার কারণে। এক বছর অতিবাহিত হলেও প্রশাসন থেকে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অপরাধের বিচার না হওয়ায় তিনি এবার প্রকাশ্য এই যৌন সন্ত্রাসে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বলে কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন।
বাম থেকে তৃতীয়জন হলেন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গিয়াস উদ্দীন মোল্লা। তার বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ লিখিতভাবে তোলা হয়। তদন্ত কমিটিতেও এই যৌন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তবে তার বিরুদ্ধে কোন আইনি শাস্তি নেওয়া হয়নি। তাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বছর একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখে। এখন তিনি আবারো স্বপদে বহাল রয়েছেন।
২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে ১৫টিতেই জয় লাভ করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দল।
সৌজন্য:মেইল ট্রেন
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
স্বাতী ভট্টাচার্য্য ১৬/০৬/২০১৫তথ্য ও যুকতি দিয়ে লেখা
-
T s J ১২/০৬/২০১৫সুন্দর হয়েছে
-
শাহাদাত হোসেন রাতুল ১১/০৬/২০১৫
-
আব্দুল মান্নান মল্লিক ১৫/০৫/২০১৫খুব ভাল লিখছেন .ধন্যবাদ
-
সাইদুর রহমান ২৭/০৪/২০১৫সত্যি অবাক হয়েছি।
শুভ কামনা। -
সৈয়দ আলি আকবর, ২৪/০৪/২০১৫অনেক সুন্দর লেখা
-
মোহাম্মদ আমান উল্লাহ আমান ২২/০৪/২০১৫আমি নির্বাক।