জ্বীনের গল্প
আচমকা শব্দটা ভেসে আসে।কোথা থেকে ছুটে আসে কেউ জানেনা।তারপর দেখা যায় পুবের রাস্তা দিয়ে ভয়ানক বড় এক দানবী এলোমেলো চুল উড়িয়ে আসছে।চিৎকার দি্তে দিতে আসছে ।যেন সামনে যাকে পাবে তাকে খেয়ে ফেলবে।
রহিমুদ্দীন এখন রাতে ঘুমাতে পারেনা।ঘুমালে ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখে।তার মনে হয় এই বুঝি ও পাড়ার পাগলী দানবীটা তাকে ধরে খেয়ে ফেলছে।দাদা-দাদীর মৃত্যুর পর ৩ দিন গিয়েছিল যিয়ারত করতে।চাচাগণ আদেশ করেন।কিন্তু তারা যেতে অক্ষম।সে দায়িত্ব ভাতিজার উপর ভর্তাইয়া দেন।যেসময় মওলানা চাচার মনে হলো ,'আহ! মায়ের জন্য কইলজাটা মোচড় দিয়া উঠছে।'তখনই রহিমুদ্দীনের ডাক পড়ে যায়।মওলানা চাচা বলেন,যা তো রহিম গিয়া কবর যিয়ারত কইরা আয়,তোর চাচীর সাথে গল্প আছে।''
একদিন সন্ধ্যা হয়ে যায় আসতে আসতে।সে সময় রহিমুদ্দীন কবরস্থানের পাশে প্রস্রাব করে।বাড়ীতে আসে লাল চোখ নিয়ে।চুলগুলো উষ্কুখুষ্কু।মওলানা চাচা জিজ্ঞেস করলেন,''বাছাধন কি হইয়াছে?'' রহিমুদ্দীনের কন্ঠটা হঠাৎ বড় হয়ে উঠল,বলল,''এই তুই কে রে? থাপ্পড় দিয়ে বত্রিশটা দাঁত ফেলে দেব।''মওলানা চাচা গিয়ে রহিমকে ঝাপটে ধরেন।ওর সাথে জ্বিন লাগছে,ছাড়াইতে অইব।'গোঁ গোঁ শব্দ করছে রহিমুদ্দীন।মুখ দিয়ে ক্রমাগত ফেনা বেরোচ্ছে।শুধু ফুসছে।
মওলানা চাচা একটু সরিষার তেল মাখিয়ে দিতেই এমন জোরে এক থাপ্পড় মারল,মওলানা চাচা উড়ে গিয়ে পড়লেন স্ত্রীর কোলে।লজ্জা পেয়ে গেলেন।
রহিমকে চার-পাঁচজন ধরে আছে।ঘরের জিনিসপত্র সে ভাঙচুর করছে।মসজিদের ইমাম সাহেব এলেন জবাব নিতে। হুজুর আসতেই লম্বা একটা সালাম দিল রহিমুদ্দীন।রহিমুদ্দীন এখন পুরো ভালো।ইমাম সাহেব বললেন,'দেখছেন আমার পাওয়ার?আসতেই নাদানের বাচ্চারা চলে গেল।আমি চলি।চা খাওয়াইতে চাইলে পারেন।''
ইমাম সাহেব মাঝপথে চলে এসেছেন।আবার ফোন এল। রহিমুদ্দীন তার চাচাকে মেরে অজ্ঞান করে ফেলেছে।ঘরের ভাঙা জিনিস দিয়ে ভর্তা বানিয়ে ইমাম সাহেবকে খাওয়ানো যাবে।
ইমাম সাহেব এলেন।আসতেই আবার ভালো হয়ে গেল রহিমুদ্দীন।ইমাম সাহেব পেটে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,'বাছাধন,এবার ছাড় পাচ্ছনা।''রহিমুদ্দীনও হাসে ইমাম সাহেবও হাসেন।ইমাম সাহেব জিজ্ঞেস করলেন,''নাম কি তোর?''
রহিমুদ্দীন বলল,''দাদার গুরু''
''কয়জন আছিস তোরা?''
''আজ্ঞে ২০-২৫ জন হবে।'
'রহিমুদ্দীনের সাথে কেন লাগছিস? চলে যা নাহলে বোতল রেডি।''
''ও আমাদের উপর পিশাব করেছে।আমরা যাইতে পারুমনা।ওর রক্তের সাথে মিশে গেছি।'বলেই রহিমুদ্দীন অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিল।তৎক্ষণাৎ সারাঘরের আলো নিভে গেল।ইমাম সাহেব দৌড়ে গিয়ে ধপাস করে দরজাটা লাগিয়ে নিলেন।ঘরে আবার আলো জ্বলল।
ইমাম সাহেব বললেন,''সবকটা হারামজাদা এক্ষুণি বের হয়ে যেত।আবার ফিরে আসত।তাই দরজা বন্ধ করলাম।কিছু মনে কইরেন না। একটা বড় বোতল আনেন।''
বোতল আনা হলো।ইমাম সাহেব জ্বিনদের বোতলে ভরলেন।রহিমুদ্দীন ভালো হয়ে গেল। বোতলের ভেতর থেকে জ্বিনরা এসএমএস দিল তাদের স্ত্রীদের,আমরা আসামী হয়ে গেছি।কারাগারে যাবজ্জীবন দন্ড।তোমরা এক কাজ করো ইমাম সাহেবের সাথে লাগো,উনাকে পাগল করে ছাড়ো।
স্ত্রীরা বলল,'উনার শরীর তো বন্ধ থাকে।''
''তাহলে এক কাজ কর মসজিদের ক্যাশিয়ারের সাথে লাগো।তাঁকে মাতাল করে দাও।ইমাম সাহেবের বেতন দিতে অসুবিধা সৃষ্টি করাও।''
''আচ্ছা।''
ইমাম সাহেব পান খেতে খেতে বোতলটা নিয়ে দুলেদুলে হাঁটতে লাগলেন।এরপর বোতলটাকে একটা গোবরের গর্তে গেড়ে দিলেন।মাস শেষে ইমাম সাহেব বেতন চাইতে গেছেন।ক্যাশিয়ার বিছানায় শোয়া।শুনেছেন অসুস্থ।তাই তিনি দেখতে গিয়েছেন আর সাথে টাকাটাও নিয়ে আসবেন।
ক্যাশিয়ার সাহেব ইমাম সাহেবকে বসতে বললেন।জিজ্ঞেস করলেন,'নামাজ পড়াচ্ছেন তো ঠিকমতো?'
ইমাম সাহেব বললেন,'জ্বি সাব।'
ক্যাশিয়ার বললেন,আপনাকে কষ্ট দিলাম।'
''না ভাই, কিসের কষ্ট?
''এই যে আমি নামাজটা পড়াতে পারছিনা।আপনি পড়াচ্ছেন।অনেক ধন্যবাদ।
ইমাম সাহেব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,কি বলছেন ভাই!'
ক্যাশিয়ার সাহেব আবারো বললেন,' ভাই কষ্ট নিয়েন না,ইমামতির টাকাটা আমার স্ত্রীর হাতে দিয়ে যান।''
ইমাম সাহেব বললেন,ক্যাশিয়ার ভাই,চোখ মেলে ভালো করে তাকিয়ে দেখেন আমি ইমাম কুতুবুদ্দীন।''
''তুই কুতুবুদ্দীন না আমি কুতুবুদ্দীন।তুই তো ক্যাশিয়ার মোতাহির আলী না?।''
ইমাম সাহেবের মাথা খারাপ হয়ে গেল।উনার স্ত্রীকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন,''ভাবী দেখেন তো আপনি।আপনার স্বামীর কি হয়েছে?কি সব আবুল তাবুল বকতেছেন?''
উনার স্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন,' কি বলতেছে?'
''বলছে সে নাকি ইমাম আর আমি নাকি ক্যাশিয়ার মোতাহির আলী।আসলে জ্বর হয়েছে তো।''
''হ্যাঁ,আমার স্বামী তো ঠিক বলতাছে।কয়েকদিন থেকে মসজিদে নামাজটা পড়াতে পারছেনা।আপনি কষ্ট করে টাকাটা দেন।উনি খুব অসুস্থ।সব টাকা তো আপনার কাছে থাকে।আর হ্যাঁ, মুয়াজ্জিন সাহেবের টাকাটাও দিয়ে দিবেন।কয়েকদিন হলো আমিও মসজিদে যেতে পারছিনা।কারণ মসজিদে আজানটা তো আমিই দেই।''
মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন ইমাম সাহেব।পরে তিনি বোতল থেকে জ্বিনগুলোকে মুক্ত করে বাঁশঝাড়ে রেখে আসলেন।
রহিমুদ্দীন এখন রাতে ঘুমাতে পারেনা।ঘুমালে ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখে।তার মনে হয় এই বুঝি ও পাড়ার পাগলী দানবীটা তাকে ধরে খেয়ে ফেলছে।দাদা-দাদীর মৃত্যুর পর ৩ দিন গিয়েছিল যিয়ারত করতে।চাচাগণ আদেশ করেন।কিন্তু তারা যেতে অক্ষম।সে দায়িত্ব ভাতিজার উপর ভর্তাইয়া দেন।যেসময় মওলানা চাচার মনে হলো ,'আহ! মায়ের জন্য কইলজাটা মোচড় দিয়া উঠছে।'তখনই রহিমুদ্দীনের ডাক পড়ে যায়।মওলানা চাচা বলেন,যা তো রহিম গিয়া কবর যিয়ারত কইরা আয়,তোর চাচীর সাথে গল্প আছে।''
একদিন সন্ধ্যা হয়ে যায় আসতে আসতে।সে সময় রহিমুদ্দীন কবরস্থানের পাশে প্রস্রাব করে।বাড়ীতে আসে লাল চোখ নিয়ে।চুলগুলো উষ্কুখুষ্কু।মওলানা চাচা জিজ্ঞেস করলেন,''বাছাধন কি হইয়াছে?'' রহিমুদ্দীনের কন্ঠটা হঠাৎ বড় হয়ে উঠল,বলল,''এই তুই কে রে? থাপ্পড় দিয়ে বত্রিশটা দাঁত ফেলে দেব।''মওলানা চাচা গিয়ে রহিমকে ঝাপটে ধরেন।ওর সাথে জ্বিন লাগছে,ছাড়াইতে অইব।'গোঁ গোঁ শব্দ করছে রহিমুদ্দীন।মুখ দিয়ে ক্রমাগত ফেনা বেরোচ্ছে।শুধু ফুসছে।
মওলানা চাচা একটু সরিষার তেল মাখিয়ে দিতেই এমন জোরে এক থাপ্পড় মারল,মওলানা চাচা উড়ে গিয়ে পড়লেন স্ত্রীর কোলে।লজ্জা পেয়ে গেলেন।
রহিমকে চার-পাঁচজন ধরে আছে।ঘরের জিনিসপত্র সে ভাঙচুর করছে।মসজিদের ইমাম সাহেব এলেন জবাব নিতে। হুজুর আসতেই লম্বা একটা সালাম দিল রহিমুদ্দীন।রহিমুদ্দীন এখন পুরো ভালো।ইমাম সাহেব বললেন,'দেখছেন আমার পাওয়ার?আসতেই নাদানের বাচ্চারা চলে গেল।আমি চলি।চা খাওয়াইতে চাইলে পারেন।''
ইমাম সাহেব মাঝপথে চলে এসেছেন।আবার ফোন এল। রহিমুদ্দীন তার চাচাকে মেরে অজ্ঞান করে ফেলেছে।ঘরের ভাঙা জিনিস দিয়ে ভর্তা বানিয়ে ইমাম সাহেবকে খাওয়ানো যাবে।
ইমাম সাহেব এলেন।আসতেই আবার ভালো হয়ে গেল রহিমুদ্দীন।ইমাম সাহেব পেটে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,'বাছাধন,এবার ছাড় পাচ্ছনা।''রহিমুদ্দীনও হাসে ইমাম সাহেবও হাসেন।ইমাম সাহেব জিজ্ঞেস করলেন,''নাম কি তোর?''
রহিমুদ্দীন বলল,''দাদার গুরু''
''কয়জন আছিস তোরা?''
''আজ্ঞে ২০-২৫ জন হবে।'
'রহিমুদ্দীনের সাথে কেন লাগছিস? চলে যা নাহলে বোতল রেডি।''
''ও আমাদের উপর পিশাব করেছে।আমরা যাইতে পারুমনা।ওর রক্তের সাথে মিশে গেছি।'বলেই রহিমুদ্দীন অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিল।তৎক্ষণাৎ সারাঘরের আলো নিভে গেল।ইমাম সাহেব দৌড়ে গিয়ে ধপাস করে দরজাটা লাগিয়ে নিলেন।ঘরে আবার আলো জ্বলল।
ইমাম সাহেব বললেন,''সবকটা হারামজাদা এক্ষুণি বের হয়ে যেত।আবার ফিরে আসত।তাই দরজা বন্ধ করলাম।কিছু মনে কইরেন না। একটা বড় বোতল আনেন।''
বোতল আনা হলো।ইমাম সাহেব জ্বিনদের বোতলে ভরলেন।রহিমুদ্দীন ভালো হয়ে গেল। বোতলের ভেতর থেকে জ্বিনরা এসএমএস দিল তাদের স্ত্রীদের,আমরা আসামী হয়ে গেছি।কারাগারে যাবজ্জীবন দন্ড।তোমরা এক কাজ করো ইমাম সাহেবের সাথে লাগো,উনাকে পাগল করে ছাড়ো।
স্ত্রীরা বলল,'উনার শরীর তো বন্ধ থাকে।''
''তাহলে এক কাজ কর মসজিদের ক্যাশিয়ারের সাথে লাগো।তাঁকে মাতাল করে দাও।ইমাম সাহেবের বেতন দিতে অসুবিধা সৃষ্টি করাও।''
''আচ্ছা।''
ইমাম সাহেব পান খেতে খেতে বোতলটা নিয়ে দুলেদুলে হাঁটতে লাগলেন।এরপর বোতলটাকে একটা গোবরের গর্তে গেড়ে দিলেন।মাস শেষে ইমাম সাহেব বেতন চাইতে গেছেন।ক্যাশিয়ার বিছানায় শোয়া।শুনেছেন অসুস্থ।তাই তিনি দেখতে গিয়েছেন আর সাথে টাকাটাও নিয়ে আসবেন।
ক্যাশিয়ার সাহেব ইমাম সাহেবকে বসতে বললেন।জিজ্ঞেস করলেন,'নামাজ পড়াচ্ছেন তো ঠিকমতো?'
ইমাম সাহেব বললেন,'জ্বি সাব।'
ক্যাশিয়ার বললেন,আপনাকে কষ্ট দিলাম।'
''না ভাই, কিসের কষ্ট?
''এই যে আমি নামাজটা পড়াতে পারছিনা।আপনি পড়াচ্ছেন।অনেক ধন্যবাদ।
ইমাম সাহেব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,কি বলছেন ভাই!'
ক্যাশিয়ার সাহেব আবারো বললেন,' ভাই কষ্ট নিয়েন না,ইমামতির টাকাটা আমার স্ত্রীর হাতে দিয়ে যান।''
ইমাম সাহেব বললেন,ক্যাশিয়ার ভাই,চোখ মেলে ভালো করে তাকিয়ে দেখেন আমি ইমাম কুতুবুদ্দীন।''
''তুই কুতুবুদ্দীন না আমি কুতুবুদ্দীন।তুই তো ক্যাশিয়ার মোতাহির আলী না?।''
ইমাম সাহেবের মাথা খারাপ হয়ে গেল।উনার স্ত্রীকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন,''ভাবী দেখেন তো আপনি।আপনার স্বামীর কি হয়েছে?কি সব আবুল তাবুল বকতেছেন?''
উনার স্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন,' কি বলতেছে?'
''বলছে সে নাকি ইমাম আর আমি নাকি ক্যাশিয়ার মোতাহির আলী।আসলে জ্বর হয়েছে তো।''
''হ্যাঁ,আমার স্বামী তো ঠিক বলতাছে।কয়েকদিন থেকে মসজিদে নামাজটা পড়াতে পারছেনা।আপনি কষ্ট করে টাকাটা দেন।উনি খুব অসুস্থ।সব টাকা তো আপনার কাছে থাকে।আর হ্যাঁ, মুয়াজ্জিন সাহেবের টাকাটাও দিয়ে দিবেন।কয়েকদিন হলো আমিও মসজিদে যেতে পারছিনা।কারণ মসজিদে আজানটা তো আমিই দেই।''
মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন ইমাম সাহেব।পরে তিনি বোতল থেকে জ্বিনগুলোকে মুক্ত করে বাঁশঝাড়ে রেখে আসলেন।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোহন দাস (বিষাক্ত কবি) ১৮/০২/২০২০অনন্য ।
-
শাহীন রহমান (রুদ্র) ১৩/০২/২০২০সবাইকে অসংখ্যা ধন্যবাদ।
-
ফয়জুল মহী ১৩/০২/২০২০Excellent
-
আব্দুল হক ১২/০২/২০২০সুন্দর!!