দুঃখী ছেলেটি
অনাথ সে।এই সুন্দর পৃথিবীতে তার কেউ নেই। বয়স ১৩।নাম রহিম।প্রথমে একটা মুদি দোকানে কাজ করত।মালিক তাকে দিয়ে সারাদিন কাজ করাত,বিনিময়ে তিনবেলা খাওয়াত।আর দোকানে ঘুমানোর জন্য একটা জায়গা দিয়েছিল। কিন্তু মাস শেষে কোনো বেতন দিতনা।তাকে মারধর করত।সারামাস কাজ করে একটা পয়সাও দিতনা কেননা সেতো এতিম,তার পক্ষে বলার মত কেউ নেই।পরে সেই দোকান ছেড়ে দিল।পেটের ভাত জোগাড় করার জন্য কখনো কামলা খাটে,কুলির কাজ করে।অনেকে তাকে গাঁজা,মদের ব্যবসায়ে যোগদান করার জন্য বলেছিল,কিন্তু সে রাজি হয়নি।সে এসব ঘৃণ্য কাজ কখনো করবেনা।একদিন এক সাহেব তাকে দারোয়ানের চাকরী দিলেন।তখন সে কিছুটা বড় হয়েছে।বাড়ী পাহারার জন্য তাকে ওই সাহেব নিযুক্ত করলেন।রাতের সময় তাকে ডিউটি করতে হয়।ওই সাহেবও তার উপর অত্যাচার করেন।অযথা ধমকান।তার কোনো চিন্তা নেই।তার পৃথিবীতে সে একা।একাকিত্ব তাকে কখনো ব্যথা দেয়না। সে যে বাড়ীতে থাকে সেটি একটু নির্জন জায়গা।একদিন রাতে ডিউটি করছিল রহিম।চোখে আলতো ঘুমের ছোঁয়া।হ্ঠাৎ সে দেখল দেয়াল টপকে চুপিচুপি একদল ডাকাত বাড়ীতে প্রবেশ করছে।রহিম গা ঝাড়া দিয়ে উঠল।এগিয়ে গেল সেদিকে।ডাকাতদের হাতে রামদা,কিরিচ এসব।তবুও রহিম এগিয়ে গেল।সে ঈমানের সাথে কাজ করবে।মালিকের ক্ষতি হতে দিবেনা।ডাকাতরা কালো মুখোশ পরে আছে।রহিম তাদের সামনে গেল।যেই হাত বাড়িয়ে ডাকাতদের আটকাতে চাইল এক ডাকাত রামদা দিয়ে প্রচন্ড জোরে হাতে কোপ দিল।তীব্র চিৎকার দিয়ে উঠল রহিম।তারপর ডাকাতরা তার মুখ চেপে ধরে অনবরত পেটে চাকু চালাতে থাকল।চিৎকার শুনে বাড়ীর সবাই জেগে উঠল।রহিমের সারা শরীর রক্তে ভেজা।হাত লটকে রয়েছে। বাড়ীর সবাই বেরিয়ে এলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।রহিমের মৃত দেহ পড়ে আছে মাটির উপর।বাড়ীর মালিক রহিমের লাশ দেখে বললেন,কি বিচ্ছিরি,যাও একটা বস্তা এনে লাশটাকে ভরে নদীতে ফেলে দিয়ে এসো।আর কাল থেকে নতুন একজন দারোয়ানের ব্যবস্থা কর।'' তারা তাই করল।রহিমের লাশটা নদীতে ফেলে দিয়ে আসল।তার রক্ত মুছে ফেলল।কিন্তু মাটির গভীরে এখনো সেই রক্তের দাগ লেগে আছে।এই অনাথের সাক্ষী শুধু পৃথিবীর বুকে অসহায় আর্তনাদ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোহন দাস (বিষাক্ত কবি) ০৫/০২/২০২০ভালো লাগলো বটে ।
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ০২/০২/২০২০খুব সুন্দর পোস্ট
-
ফয়জুল মহী ০২/০২/২০২০দারুণ এক অনুভুতি ,বেশ ভালো লাগলো ।