চোখের জল
রফিকের বাবা মারা গেছেন ২ দিন হলো।ঘরে নীরব নিস্তব্ধতা।মা কাজ থেকে ছুটি নিয়েছে ৩ দিনের জন্য।যে বাসায় কাজ করেন তারা বলল,''মরা-বাঁচা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নাই।আমাদের বাসার কাজ করতে হবে।তাড়াতাড়ি না আসলে তুমি বিদায় হয়ে যাবে।''মা অনেক মিনতি করে ৩ দিনের ছুটি নিয়েছে।আত্নীয়স্বজন তেমন কেউ নেই।বস্তির মাঝে থাকে তারা।বস্তির এরা আসল, শ্বান্তনা দিয়ে চলে গেল। বাবার কবর দেওয়া শেষ।রফিক বারান্দায় বসে আছে।তার মা ঘরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।রাস্তার পাশে একটা ফুটপাথে কাপড়ের দোকান দিত রফিকের বাবা শামছু। ভালোই চলছিল।রফিক ক্লাস এইটে পড়ে। রফিকের বাবা অনেক ভালো মানুষ ছিলেন।সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলতেন। কিন্তু একদিন তার ঠেলার সাথে একটা কারের ধাক্কা লাগে।গাড়ির কিছু অংশ ছড়ে যায়।গাড়ি থেকে নেমে এক ভদ্রলোক কষে একটা থাপ্পড় মারলেন।অথচ দোষ উনার ছিল।হয়তো নেশা জাতীয় কিছু খেয়ে উলটাপালটা গাড়ী চালাচ্ছে।আর শামছুর ঠেলার সাথে ধাক্কা লাগে।কিন্তু বেচারা শামছুকে থাপ্পড় খেতে হল। লোকজন ভীড় জমাতে থাকে।শামছু সবাইকে সরে যেতে বলে।কারণ,সামছু জানে লোকটা কে?
লোকটা হচ্ছে শামছুর বড় ছেলে শফিক।আজ অনেক বড়লোক.৩ বছর আগের কথা ।শামছু মিয়া এলাকার সবচে ধনী ব্যাক্তি ছিলেন।শফিক যখন আট বছরের তখন তার ক্যান্সার ধরা পড়ে।ছেলেকে বাঁচাতে সব সম্পত্তি খুইয়ে ফেলেন।শফিক সুস্থ হওয়ার পর তাকে লেখাপড়া করানোর জন্য আমেরিকা পাঠান।এরপর তার কাছে টাকার পরিমাণ কমতে লাগল।কোনোরকমে চলতে লাগল শামছুর পরিবার।শফিক বিদেশ থেকে এল।কিন্তু কিছুই করতে পারেনি।একদম ফকির অবস্থা।উল্টো সেখানে মদ-গাঁজা নেশা করে শরীরে প্রচুর রোগ বাঁধাল।দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে।ওদিকে শামছু মিয়ার কাছে এত টাকা নেই চিকিৎসা করানোর জন্য।অগত্যা নিজের একটা কিডনি ছেলেকে দিলেন।শফিক সুস্থ হলো।পরে এলাকার ড্রাগ স্মাগলিং,হিউম্যান ট্র্যাফিকিংইয়ে জড়িয়ে পড়ল।ছেড়ে দিল তার পরিবার।টাকার কাছে বিক্রি হয়ে ভূলে গেল তার পরিবারের কথা।শামছু মিয়ার অবস্থা শোচনীয়।পরে বস্তিতে চলে এলেন।অথচ এতদিন ধরে তিনি ক্যান্সারে ভূগছেন ।কাউকে বলেননি এ কথা।তার মনে কোনো দুঃখ নেই। কিন্তু এই ছোট্র রফিকের চোখের জল কে মুছবে।অনবরত কাঁদছে বারান্দায় বসে।আমি রফিককে জিজ্ঞেস করলাম,''বাবা বেঁচে থাকলে বাবার কাছে কি চাইতে? সে হাউমাউ করে কেঁদে বলল,''আমি বাবাকেই চাইতাম''।তার কান্না দেখে আমি আর চোখের পানি আটকাতে পারলাম না।হাঁটতে হাঁটতে আল্লাহর কাছে একটাই দোয়া করতে লাগলাম,পৃথিবীর সব বাবা যেন চিরকাল বেঁচে থাকে সন্তানের হৃদয়ে।
লোকটা হচ্ছে শামছুর বড় ছেলে শফিক।আজ অনেক বড়লোক.৩ বছর আগের কথা ।শামছু মিয়া এলাকার সবচে ধনী ব্যাক্তি ছিলেন।শফিক যখন আট বছরের তখন তার ক্যান্সার ধরা পড়ে।ছেলেকে বাঁচাতে সব সম্পত্তি খুইয়ে ফেলেন।শফিক সুস্থ হওয়ার পর তাকে লেখাপড়া করানোর জন্য আমেরিকা পাঠান।এরপর তার কাছে টাকার পরিমাণ কমতে লাগল।কোনোরকমে চলতে লাগল শামছুর পরিবার।শফিক বিদেশ থেকে এল।কিন্তু কিছুই করতে পারেনি।একদম ফকির অবস্থা।উল্টো সেখানে মদ-গাঁজা নেশা করে শরীরে প্রচুর রোগ বাঁধাল।দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে।ওদিকে শামছু মিয়ার কাছে এত টাকা নেই চিকিৎসা করানোর জন্য।অগত্যা নিজের একটা কিডনি ছেলেকে দিলেন।শফিক সুস্থ হলো।পরে এলাকার ড্রাগ স্মাগলিং,হিউম্যান ট্র্যাফিকিংইয়ে জড়িয়ে পড়ল।ছেড়ে দিল তার পরিবার।টাকার কাছে বিক্রি হয়ে ভূলে গেল তার পরিবারের কথা।শামছু মিয়ার অবস্থা শোচনীয়।পরে বস্তিতে চলে এলেন।অথচ এতদিন ধরে তিনি ক্যান্সারে ভূগছেন ।কাউকে বলেননি এ কথা।তার মনে কোনো দুঃখ নেই। কিন্তু এই ছোট্র রফিকের চোখের জল কে মুছবে।অনবরত কাঁদছে বারান্দায় বসে।আমি রফিককে জিজ্ঞেস করলাম,''বাবা বেঁচে থাকলে বাবার কাছে কি চাইতে? সে হাউমাউ করে কেঁদে বলল,''আমি বাবাকেই চাইতাম''।তার কান্না দেখে আমি আর চোখের পানি আটকাতে পারলাম না।হাঁটতে হাঁটতে আল্লাহর কাছে একটাই দোয়া করতে লাগলাম,পৃথিবীর সব বাবা যেন চিরকাল বেঁচে থাকে সন্তানের হৃদয়ে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মোহন দাস (বিষাক্ত কবি) ৩০/০১/২০২০খুব ভালো গল্পটি
-
ফয়জুল মহী ৩০/০১/২০২০সহজ,সরল, সুন্দর লেখনী।I
-
মোঃআব্দুল্লাহ্ আল মামুন ৩০/০১/২০২০সুন্দর উপস্থাপন