একটা অ-সমাপ্ত প্রেমের গল্প
১.
মনিকে দেখলে আমার নাটোরের বনলতার কথা মনে হতো ।মনির পুরো নাম আমার জানা ছিল না ।সবে মাএ কলেজে ভর্তি হয়েছি ।তেমন কারো সাথেই পরিচিত হয়ে ওঠেনি ।যখন ক্লাস শেষে ছেলে মেয়েরা আড্ডায় মাতে তখন আমার কোন কাজ থাকে না ।আমি হোষ্টেলে ফিরে যাই ।মাঝে মাঝে শহরটা একটু ঘুরে দেখি ।এভাবেই আমার দিন গুলি কাটে ।হঠাৎ একদিন লক্ষ করলাম ক্লাসের সবারই কেউ না কেউ একজন আছে ।বিষয়টা দেখে আমার নিজেকে কিছুটা ব্যর্থ মনে হতে লাগলো ।বিষয়টা নিয়ে কিছুদিন ভাবতে লাগলাম ক্লাস শেষেতো কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষায় থাকতে পারে ।এসব নিয়ে যখন আমার ভিতরে তোলপাড় হচ্ছিল,ঠিক তখনই মনির কথা মনে পড়লো ।ওকে প্রথম দিন থেকেই লক্ষ্য করছিলাম ।ও দেখতে মোটেও সুন্দরি নয় ।আবার আমার দৃষ্টিতে অসুন্দর ও নয় ।ওর মুখের আকর্ষন আমি এড়াতে পারতাম না ।আমি ক্লাসে এসে একবার হলেও ওর মুখের দিকে তাকাতাম ।কতদিন ক্লাসে যাওয়ার আগে ভাবতাম কথা বলি ।কিন্তু ওর সামনে যেয়ে কিছুই বলা হতো না ।একদিন ক্লাস না হওয়ার জন্য আমি লাইব্রেরীতে বসেছিলাম ।হঠাৎ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি মনি বাইরে একা দাড়িয়ে আছে ।আমি ওকে দেখে বাইরে বেরুতেই ও আমাকে ডাকলো ।আমি একেবারে অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম ।কোন মতে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম ।
: আমাকে বলছেন?
মনি সরাসরি আমার চোঁখের দিকে তাকালো ।আমি চোঁখ নামিয়ে ফেললাম ।
ও কিছুটা ক্ষীন স্বরে বললো ।
: আপনি কি হোষ্টেল এ থাকেন?
আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম ।এরপর অনেক কথা হলো ।দু’জনের নাম্বার বিনিময় হলো ।
এরপর থেকে প্রতিদিন আমাদের মাঝে কথা হতে থাকে ।আপনি থেকে তুমিতে নেমে আসা হয় ।হঠাৎ একদিন রাতে ফোন দিয়ে বললো কাল একটু দেখা করতে পারবো কিনা ।আমার সাথে নাকি অনেক কথা আছে ।আমি বুঝতে পারলাম না আমার সাথে কি কথা বলবে ।
২.
সকালে দেখা হওয়ার পর বললো ও নাকি একজনকে ভালোবাসে আর তার জন্য এই কলেজে ভর্তি হয়েছে ।তার নাম ইমন,ইমন আমার সাথে এক রুমে থাকে ।তাই এতো কথা আমার সাথে ।ইমন কেন ওর সাথে কথা বলে না,দেখা করে না এসব বললো ।আমাকে বললো আমি যেন ইমনকে এসব কথা বলি ।যেন সে মনির সাথে দেখা করে ।আমি নীরবে সব কথা শুনলাম ।আমার আর বলা হলো না যে আমার ও কিছু কথা বলার ছিল ।মনি ইমনকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু এখন ইমন মনিকে ভুলে গেছে ।ইমন তমাকে ভালোবাসে ।পরের দিন মনিকে ক্লাসে দেখলাম না ।আমার ও ক্লাস করতে ইচ্ছা হলো না ।বাইরে বেরিয়ে দেখলাম মনি আমার দিকে হেটে আসছে ।কাছে আসার পর বললাম আমি ওর কথা ইমন এর কাছে বলছি ।আমি ওকে মিথ্যা কথা বললাম তবে এর জন্য আমার মাঝে কোন অপরাধ বোধ কাজ করলো না ।কিন্তু সত্যি কথা বলে মনিকে কষ্ট দিতে ইচ্ছা হলো না ।বললাম চলো চা খেয়ে আসি ।চা খাওয়ার পর আমি আর মনি হাটছি ।মনি কোথায় যাবে আমি জানি না ।আমি কোথায় যাব সেটাও জানি না ।শুধু জানি ওর পাশে হাটতে খুব ভালো লাগছে ।দু’একটি রিক্সা আমাদের পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে ।আস্তে আস্তে মনি আমার সাথে হেটেই যাচ্ছে ।আমার ভালোই লাগছে আমি কিছু বলতে পারছি না ।হঠাৎ একটি রিক্সাতে ইমন আর তমাকে দেখতে পেলাম,মনিও দেখলো ।আমাকে বললো মেয়েটিকে আমি চিনি কিনা ?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না ।মনির গোপন কষ্টটা বুঝি আমার কাছে প্রকাশ হয়ে পড়ে ।এই বুঝি ওর চোঁখের পানি আমার কাছে ধরা পড়ে যাবে ।প্রসঙ্গ পালটে বললাম আর কতো হাটবে ?একটা রিক্সা ডেকে দেই ।মনি আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে খুব শান্ত ভাবে বললো মেয়েটার নাম বুঝি তমা ?বুঝলাম আর লুকাবার কিছু নেই ।মনি সবকিছু জানতো ।মনে হয় বিশ্বাস করতে চায়নি ।আমি মনির দিকে তাকালাম ।এ যেন অন্য মনি ।তার দৃষ্টিতে একরাশ ঘৃনা ।এই প্রথম পুরুষ হয়ে জন্মে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো ।মনিকে একটা রিক্সাতে তুলে দিলাম ।আমি হাটছি আজ আমি অনেক হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে মধ্য রাতে হোষ্টেলে ফিরবো ।।
মনিকে দেখলে আমার নাটোরের বনলতার কথা মনে হতো ।মনির পুরো নাম আমার জানা ছিল না ।সবে মাএ কলেজে ভর্তি হয়েছি ।তেমন কারো সাথেই পরিচিত হয়ে ওঠেনি ।যখন ক্লাস শেষে ছেলে মেয়েরা আড্ডায় মাতে তখন আমার কোন কাজ থাকে না ।আমি হোষ্টেলে ফিরে যাই ।মাঝে মাঝে শহরটা একটু ঘুরে দেখি ।এভাবেই আমার দিন গুলি কাটে ।হঠাৎ একদিন লক্ষ করলাম ক্লাসের সবারই কেউ না কেউ একজন আছে ।বিষয়টা দেখে আমার নিজেকে কিছুটা ব্যর্থ মনে হতে লাগলো ।বিষয়টা নিয়ে কিছুদিন ভাবতে লাগলাম ক্লাস শেষেতো কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষায় থাকতে পারে ।এসব নিয়ে যখন আমার ভিতরে তোলপাড় হচ্ছিল,ঠিক তখনই মনির কথা মনে পড়লো ।ওকে প্রথম দিন থেকেই লক্ষ্য করছিলাম ।ও দেখতে মোটেও সুন্দরি নয় ।আবার আমার দৃষ্টিতে অসুন্দর ও নয় ।ওর মুখের আকর্ষন আমি এড়াতে পারতাম না ।আমি ক্লাসে এসে একবার হলেও ওর মুখের দিকে তাকাতাম ।কতদিন ক্লাসে যাওয়ার আগে ভাবতাম কথা বলি ।কিন্তু ওর সামনে যেয়ে কিছুই বলা হতো না ।একদিন ক্লাস না হওয়ার জন্য আমি লাইব্রেরীতে বসেছিলাম ।হঠাৎ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি মনি বাইরে একা দাড়িয়ে আছে ।আমি ওকে দেখে বাইরে বেরুতেই ও আমাকে ডাকলো ।আমি একেবারে অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম ।কোন মতে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম ।
: আমাকে বলছেন?
মনি সরাসরি আমার চোঁখের দিকে তাকালো ।আমি চোঁখ নামিয়ে ফেললাম ।
ও কিছুটা ক্ষীন স্বরে বললো ।
: আপনি কি হোষ্টেল এ থাকেন?
আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম ।এরপর অনেক কথা হলো ।দু’জনের নাম্বার বিনিময় হলো ।
এরপর থেকে প্রতিদিন আমাদের মাঝে কথা হতে থাকে ।আপনি থেকে তুমিতে নেমে আসা হয় ।হঠাৎ একদিন রাতে ফোন দিয়ে বললো কাল একটু দেখা করতে পারবো কিনা ।আমার সাথে নাকি অনেক কথা আছে ।আমি বুঝতে পারলাম না আমার সাথে কি কথা বলবে ।
২.
সকালে দেখা হওয়ার পর বললো ও নাকি একজনকে ভালোবাসে আর তার জন্য এই কলেজে ভর্তি হয়েছে ।তার নাম ইমন,ইমন আমার সাথে এক রুমে থাকে ।তাই এতো কথা আমার সাথে ।ইমন কেন ওর সাথে কথা বলে না,দেখা করে না এসব বললো ।আমাকে বললো আমি যেন ইমনকে এসব কথা বলি ।যেন সে মনির সাথে দেখা করে ।আমি নীরবে সব কথা শুনলাম ।আমার আর বলা হলো না যে আমার ও কিছু কথা বলার ছিল ।মনি ইমনকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু এখন ইমন মনিকে ভুলে গেছে ।ইমন তমাকে ভালোবাসে ।পরের দিন মনিকে ক্লাসে দেখলাম না ।আমার ও ক্লাস করতে ইচ্ছা হলো না ।বাইরে বেরিয়ে দেখলাম মনি আমার দিকে হেটে আসছে ।কাছে আসার পর বললাম আমি ওর কথা ইমন এর কাছে বলছি ।আমি ওকে মিথ্যা কথা বললাম তবে এর জন্য আমার মাঝে কোন অপরাধ বোধ কাজ করলো না ।কিন্তু সত্যি কথা বলে মনিকে কষ্ট দিতে ইচ্ছা হলো না ।বললাম চলো চা খেয়ে আসি ।চা খাওয়ার পর আমি আর মনি হাটছি ।মনি কোথায় যাবে আমি জানি না ।আমি কোথায় যাব সেটাও জানি না ।শুধু জানি ওর পাশে হাটতে খুব ভালো লাগছে ।দু’একটি রিক্সা আমাদের পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে ।আস্তে আস্তে মনি আমার সাথে হেটেই যাচ্ছে ।আমার ভালোই লাগছে আমি কিছু বলতে পারছি না ।হঠাৎ একটি রিক্সাতে ইমন আর তমাকে দেখতে পেলাম,মনিও দেখলো ।আমাকে বললো মেয়েটিকে আমি চিনি কিনা ?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না ।মনির গোপন কষ্টটা বুঝি আমার কাছে প্রকাশ হয়ে পড়ে ।এই বুঝি ওর চোঁখের পানি আমার কাছে ধরা পড়ে যাবে ।প্রসঙ্গ পালটে বললাম আর কতো হাটবে ?একটা রিক্সা ডেকে দেই ।মনি আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে খুব শান্ত ভাবে বললো মেয়েটার নাম বুঝি তমা ?বুঝলাম আর লুকাবার কিছু নেই ।মনি সবকিছু জানতো ।মনে হয় বিশ্বাস করতে চায়নি ।আমি মনির দিকে তাকালাম ।এ যেন অন্য মনি ।তার দৃষ্টিতে একরাশ ঘৃনা ।এই প্রথম পুরুষ হয়ে জন্মে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো ।মনিকে একটা রিক্সাতে তুলে দিলাম ।আমি হাটছি আজ আমি অনেক হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত হয়ে মধ্য রাতে হোষ্টেলে ফিরবো ।।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Înšigniã Āvî ২৯/০৯/২০১৩খুব ভাল লাগলো
-
ইব্রাহীম রাসেল ২৯/০৯/২০১৩ভালই গল্পখানি
-
ডাঃ প্রবীর আচার্য নয়ন ২৯/০৯/২০১৩খুব কমই ভালোবাসা দ্বিপাক্ষিক হয়
একপাক্ষিক ভালোবাসাই বেশী বিশ্বময়
একেবার হৃদয় নিঙড়ানো গল্প। খুব ভালো লেগেছে