www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

তোমার জন্য প্রিয়তা

১.
আমার এক বন্ধু আছে ইমন নামে ।তাকে নিয়ে আজ লিখতে বসা ।শান্ত ও ভদ্র ছেলে হিসাবে আমাদের কলেজ ও হোষ্টেলে পরিচিত ছিল ।খুব বেশি কারো সাথে মিশতো না তাই ওর সম্পর্কে বেশি কিছু জানা ছিল না ।পরিবার সম্পর্কে যতটুকু জানাছিল,জানতাম মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা ছেলে ।লেখাপড়ায় খুব ভালো ছিল ।শিক্ষকদের কাছে খুব প্রিয় ছাএ ছিল ।অন্যদের সাথে বেশি কথা না বললেও আমার সাথে মাঝে মাঝে কথা হতো ।ও খুব চাঁপা সভাবের ছিল যার জন্য সব কিছু বলতে চাইলো না ।জানতাম একটি মেয়েকে খুব ভালোবাসে ।ওর নাম প্রিয়তা ।কোথায় থাকে কি করে এসব কথা কখনো যানা হয়ে ওঠেনি ।কখনো জানতে চাইলেও বলতো না ।বলতো সময় হলে সব কিছু বলতো ।বুঝতে পারতাম মেয়েটিকে খুব ভালোবাসে ।
২.
ইমন হোষ্টেল থেকে খুব একটা বের হতে চাইতো না ।মাঝে মাঝে ছাদে দেখতাম মোবাইলে কার সাথে যেন কথা বলে ।মন খারাপ থাকলে আমার রুমে আসতো,কথা বলতো ।তবে সব কথাই অর্স্পষ্ট,বুঝতে পারতাম না কিছু ।প্রশ্ন করলে অন্য কথার ছলে এড়িয়ে যেত ।মাঝে মধ্যে রশিকতা করে বলতাম তোর প্রিয়তা যদি তোকে ভুলে যায় ।ও আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিত ।বুঝতে পারতাম ও প্রিয়তাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখে ।আমিও আর কোনদিন দুঃখ দিতে প্রিয়তার কথা বলিনি ।এভাবে দেখতে দেখতে আমাদের ফাইনাল পরিক্ষা চলে আসে ।সবাই ব্যাস্ত হয়ে পড়ি পরিক্ষার প্রস্তুতি নিতে ।অনেক দিন ওর সাথে দেখা হয় না ।হঠাৎ একদিন ইমন এর সাথে দেখা ।কেমন জানি অসহায়ের মতো লাগছিল ।বললাম কেমন আছিস ।বললো ভালো আছে ।কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম ও ভালো নেই ।কারন ওকে তো আমি জানি,এতো সহজে ভেঙে পড়ার ছেলে ও না ।
আমাকে বললো আমার সাথে নাকি কথা আছে ।এর আগে যা বললো তা শুনেতো আমি অবাক,ও দু’দিন ধরে না খেয়ে আছে ।তাই বললাম চল –
হোটেলে এসে নাস্তা খাওলাম ।তার পর পাশাপাশি বসে বললাম কি হয়েছে যে না খেয়ে থাকতে হবে ।ও বললো দু’দিন ধরে প্রিয়তার সাথে কথা হয় না ।তাই না খেয়ে আছে,আরো বললো প্রিয়তা নাকি ওর সাথে সম্পর্ক রাখতে চাচ্ছে না ।আমি বুঝতে পারলাম না এতো দিন পর কেন প্রিয়তা ওকে এসব বলছে ।যাকে ভালোবাসার জন্য একটা ছেলে সবার বন্ধুত্বতাকে যেতে ভুলে পারে আর সে কিনা এসব কথা বলতে পারে ।যে কোন দিন প্রিয়তার সম্পর্কে একটি কথাও আমাকে বলেনি সে আমায় ঠিকানা দিয়ে বললো যদি কোনদিন সময় হয় তবে যেন প্রিয়তাকে প্রশ্ন করি ।এসব কেন করলো ।আমি বললাম যদি সময় পাই তবে ওকে সামনা সামনি দাড়িয়ে বললো যাকে ভালোবাস তাকে ফেলে দিও না ।আর মনে মনে বলি ইমন এর এই না খেয়ে থাকা,ওর সাথে কথা না বলতে পারার জন্য এই আকুলতা প্রিয়তা কোনদিন জানতে পারে তাহলে ওর কি অনুভুতি হবে ।এর পর ইমন এর সাথে সামনা সামনি দেখা হয়নি ।পরিক্ষার পর আমি একটু ব্যাস্ত হয়ে পড়ি ।আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি ও ভালো একটা চাকুরি পেয়েছে ।শুনে ভালো লাগলো যে প্রিয়তাকে ভুলে কিছু একটা করতে পারলো ।একদিন কথা হয়েছিল কিন্তু ও ব্যাস্ত থাকার জন্য সবকিছু শোনা হয়নি ।
৩.
হঠাৎ আমার একটা জরুরি কাজে কিছুদিন আমাকে বাইরে থাকতে হয় ।তাই কারো সাথে কথা হয়নি ।অনেক দিন পর ইমন এর নাম্বারে ফোন করি ।কিন্তু একটা মেয়ের কন্ঠ শুনি ।পরিচয়ের পর জানতে পারি যে ইমন এর ভাবি ।ইমন এর কথা জানতে চাইলে বললো,ইমন চাকরি ছেড়ে দিয়ে অনেকদিন হলো বাড়িতে আছে ।কারো সাথে কথা বলে না ।আবার কারো কাছে কিছু বলেও না ।ভাবি আমাকে বললো পরে ফোন করে ইমন এর কাছ থেকে সবকিছু জানতে ।রাতে ফোন দিলে ওর সাথে কথা হয় ।কিছু বলার আগেই নিজেই বলে,বন্ধু মানুষ কেন সবকিছু চাওয়ার পরেও পায় না ।আর যদি পাবে না জানে তবে কেন স্বপ্ন দেখে ।আমি কোন উত্তর দিতে পারি না ।বলতে পারিনি বন্ধু জীবনে সবাই সব কিছু পায় না ।চাকরির কথা বলতেই বললো-যাকে পাওয়ার জন্য সবকিছু করা আর এখন যদি সেই দুরে চলে যায় তবে এসব করে কি লাভ ।আর কিছু বলার আগেই ফোন কেটে দেয় ।বুঝতে পারি ও এখন কাঁদবে ।বুঝতে পারি ওর কান্না পাওয়া দরকার,যতো কাঁদবে ওর কষ্ট কমবে ।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৭৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২১/০৯/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • অভি তোমার লেখা দেখে অনুপ্রাণীত হলাম , কাল এমন একতা লেখা পোষ্ট দিব
    • মাহমুদ নাহিদ ২১/০৯/২০১৩
      ঠিক বুঝলাম না সুবীর কাস্মীর পেরেরা দাদা ।আসলে আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন আমি বুঝতে পারলাম না ।
      • কিছু কিছু লেখা মানুষকে অনুপ্রাণীত করে। বিশেষ করে লিখতে
  • Înšigniã Āvî ২১/০৯/২০১৩
    অসাধারণ,
    কান্না সত্যি অনেক জমানো কস্ট কমিয়ে দেয়
 
Quantcast