শিশুশ্রম বন্ধ করো
অভাবের তাড়নায় নিয়েছে ওরা
ইট-বালি মাথার পরে,
বিবেকহীন পিতার কঠোর চাপে
স্থান হয়নি কষ্টের সংসারে।
যে বয়সে ওদের হাতে থাকতো
বই-খাতার ঝুলি,
সেই বয়সে হয়েছে ওরা আজ
দু'টাকার-ই কুলি।
বয়সের কোনো বিচার না করে-ই
মহাজন দিচ্ছে কর্ম,
কাজের বিনিময়ে অর্থ দিবে ওদের
এটা-ই তাদের ধর্ম।
দশ কিংবা বারো-এর নিচে
শিশু বলে চিহ্নিত,
শ্রমের কাজে খাটানো ওদের
অপরাধ বলে গৃহীত।
সরকারের নীতির একী অবনতি!
শিশুশ্রম আজো অবিরত,
আর কত অকালেই ঝরে পড়বে
দেশের এই নবাগত?
আসুন আজ একই বন্ধনে এগিয়ে
শিশুশ্রমকে করি প্রতিরোধ,
না হয় করবো আবারো একটি যুদ্ধ
আর থাকবোনা নির্বোধ।
("বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস" উপলক্ষ্যে আমার এই ক্ষুদ্র লিখনী")
ইট-বালি মাথার পরে,
বিবেকহীন পিতার কঠোর চাপে
স্থান হয়নি কষ্টের সংসারে।
যে বয়সে ওদের হাতে থাকতো
বই-খাতার ঝুলি,
সেই বয়সে হয়েছে ওরা আজ
দু'টাকার-ই কুলি।
বয়সের কোনো বিচার না করে-ই
মহাজন দিচ্ছে কর্ম,
কাজের বিনিময়ে অর্থ দিবে ওদের
এটা-ই তাদের ধর্ম।
দশ কিংবা বারো-এর নিচে
শিশু বলে চিহ্নিত,
শ্রমের কাজে খাটানো ওদের
অপরাধ বলে গৃহীত।
সরকারের নীতির একী অবনতি!
শিশুশ্রম আজো অবিরত,
আর কত অকালেই ঝরে পড়বে
দেশের এই নবাগত?
আসুন আজ একই বন্ধনে এগিয়ে
শিশুশ্রমকে করি প্রতিরোধ,
না হয় করবো আবারো একটি যুদ্ধ
আর থাকবোনা নির্বোধ।
("বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস" উপলক্ষ্যে আমার এই ক্ষুদ্র লিখনী")
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সৈয়দ মোঃ আল মামুন ১১/০৬/২০১৪আমরাও আছি সাথে , অর্থনৈতিক শক্তি অপরিহার্য, নইলে চলবে কি করে দেশ, তাই দেশের অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করা আবশ্যক , তবে শিশুশ্রম কমে যাবে আয় করবে প্রাপ্তবয়স্করা
-
শিমুল শুভ্র ১১/০৬/২০১৪ইকবাল তোমার কবিতা টি পড়লাম ।বেশ ভালো লাগছে দেখে তুমি একটা ভালো বিষয় তুলে এনেছো কবিতায় অসাধারণ ভঙ্গিমায় সত্যিই অসাধারণ ।আমার কথা রেখেছো জেনে খুব খুশি হলাম ।আসো বস কিছু আলোচনা করা যাক তোমার কবিতা টি কে নিয়ে,বিষয় বস্তু কে নিয়ে। শিশুশ্রম এদেশে আজ একটি জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে এবং এ সমস্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। শিশুশ্রম প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলে 'আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত্'-এ ধরনের নীতিকথাগুলো বাস্তবিক অর্থে অপপ্রলাপে পরিণত হবে। ফলে শিশুশ্রম প্রতিরোধ করা এখন জরুরি একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে কল-কারখানা, দোকান-পাট, হোটেল-মোটেল, বিপণীবিতান, বাসাবাড়ি, যানবাহনসহ বিভিন্ন জায়গায় অহরহই দেখা যায় শিশুশ্রমের স্বরূপ। এসব জায়গায় নিয়োজিত শিশুরা সারা মাস হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করে। আর সামান্য অপরাধ করলেই তাদের ভাগ্যে জোটে মালিকের মারধর।
কিন্তু এসব 'মালিক' মাস শেষে তাদেরকে মজুরি বাবদ দেয় যত্সামান্য টাকা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দারিদ্র্যতার কারণে আর দশটি শিশুর মতো এদের বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়া কিংবা লেখাপড়া করা সম্ভব হয় না। দারিদ্র্যতাই তাদেরকে বাধ্য করেছে শিশুশ্রমিকের খাতায় নাম লেখাতে। সবচেয়ে খারাপ লাগে যখন দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের দোকান-পাট আর চায়ের দোকানে শিশুরা শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ করে এবং শেষ পর্যন্ত তারা নিরক্ষর থেকে যায়। এ যেন ঠিক বাতির নিচে অন্ধকার—এ অবস্থাকেই তুলে ধরে। দেশের অসংখ্য শিশুর জীবন এভাবে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে স্কুল ছেড়ে তাদের বাধ্য হয়ে বেছে নিতে হচ্ছে শিশুশ্রমের মত কঠিন কাজকে। আর এভাবেই দেশের লাখ লাখ শিশু বঞ্চিত হচ্ছে তাদের মৌলিক অধিকারগুলো থেকে। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) ও জাতিসংঘের ইউনিসেফ কর্তৃক পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, এদেশের শতকরা ৭৫ ভাগ শিশুই আর্থিক অনটনের কারণে নাম লেখায় শিশুশ্রমিকের খাতায়।
'চাইল্ড ওয়েলফেয়ার এ্যাকটিভিটিজ ইন এশিয়া' নামক একটি প্রকাশনাতেও দেখা যায়, অর্থনৈতিক দারিদ্র্যই শিশুশ্রমের সবচেয়ে বড় কারণ। নিতান্তই আর্থিক কারণে বা পেটের দায়ে শিশুরা কাজ করতে বাধ্য হয়। তবে সব সময়ই যে, শিশুরা আর্থিক অনটন বা পেটের দায়ে কাজ করতে বাধ্য হয় তা অবশ্য নয়। আশপাশের বাড়ির অনেক শিশুর কাজ করা ও তাদের অর্থ উপার্জন করা দেখেও অনেক শিশু কাজ করতে আসে এবং এক্ষেত্রে ওইসব শিশুর বাবা-মা তাদের সন্তানকে কাজ করতে পাঠাতেও খুব একটা কুণ্ঠা বোধ করেন না। কারণ, ওইসব বাবা-মা এ ধরনের ধারণা পোষেণ করে যে, স্কুলে গিয়ে লেখা-পড়া শিখে টাকা পাওয়া যাবে না, বরং কাজ করলেই টাকা পাওয়া যাবে আর এই টাকা দিয়ে প্রয়োজন মিটবে। কিন্তু তারা লেখাপড়ার প্রকৃত অর্থ, গুরুত্ব, মর্মার্থ ও সুদূরপ্রসারী সুফল সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝেন না এবং বোঝার চেষ্টাও খুব একটা করেন না।
আমাদের দেশের সংবিধানের ১৫ (ক) ধারায় খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিত্সাসহ জীবন ধারণের জন্য মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা করার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল শিশুকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করতে সংবিধানের ১৭ (ক) ধারায় রাষ্ট্রের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।
'আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত্, জাতির কর্ণধার, ভবিষ্যতে আজকের শিশুরাই দেশ-জাতির নেতৃত্ব দিবে'—এমন সব কথাবার্তা বিভিন্ন সভা, সেমিনারসহ বিভিন্ন জায়গায় বলা হয়ে থাকলেও বাংলাদেশে শিশুদের সামগ্রিক চিত্র কিন্তু অত্যন্ত ভয়াবহ। এদেশে শিশুশ্রমিকের সঠিক সংখ্যা কত তার সঠিক পরিসংখ্যান দেয়া সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী এদেশে প্রায় এক কোটিরও অধিক শিশুশ্রমিক কর্মরত। এসব শিশুশ্রমিক শহর ও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় শিশুশ্রমিক হিসেবে কর্মরত। এরা প্রতিনিয়ত শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে এবং জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য শিশুশ্রমের মত কঠিন শ্রমকে বেছে নিতে বাধ্য হয়।
এ দেশে ৬-১০ বছরের মধ্যে ১ কোটি ৬২ লাখ শিশুর মধ্যে স্কুলে যায় মাত্র ৫০ ভাগের মত। এদের মধ্যে আবার শতকরা ৩৫ ভাগ শিশুই প্রাথমিক শিক্ষা শেষ না করে দারিদ্র্যতাসহ বিভিন্ন কারণে স্কুল ছেড়ে দেয়। আবার দেশের অনেক শিশু দারিদ্র্যতাসহ বিভিন্ন কারণে কখনোই স্কুলে যায় না। তাছাড়া দেশে ছিন্নমূল শিশুর সংখ্যা প্রায় কয়েক লাখের মতো। এদের শতকরা ৫০ ভাগেরই নিজস্ব কোন ঠিকানা নেই। এদের সংখ্যা বেশি দেখা যায় রাজধানী ঢাকা শহর তথা দেশের অন্যান্য বড় বড় শহরে। আবার দেশে পুষ্টিহীনতায় ভোগা শিশুর সংখ্যাও কম নয়।
দারিদ্র্যতাসহ পিতা-মাতার অসচেতনতার কারণে অনেক শিশুই শিকার হচ্ছে অপুষ্টির। এসব অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর অনেকেই শেষ পর্যন্ত শিশুশ্রমে আত্মনিয়োগ করতে দেখা যায়। আর বর্তমান সময়ে শিশুদেরকে নানাভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড (যেমন: মাদক চোরাচালান, চুরি, ছিনতাই-এর কাজে নিয়োজিত করাসহ রাজনৈতিক মাঠে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এক পক্ষ কর্তৃক আরেক পক্ষের ওপর অস্ত্র ছুঁড়তে, বোমা-গ্রেনেড-পেট্রোল মারতে, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করতে ইত্যাদি) সংঘটন করতে-যা সবচেয়ে মারাত্মক এবং সবচেয়ে দু:খজনক বিষয়। দেশের সংবিধানসহ জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে শিশুদের বিভিন্ন অধিকার সম্পর্কে বলা হলেও বাস্তবতা হচ্ছে দেশের অসংখ্য শিশু তাদের বিভিন্ন অধিকার থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হচ্ছে। এজন্য বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, সরকার, জনগণ, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সচেতন প্রত্যেক ব্যক্তিরই উচিত অধিকার বঞ্চিত শিশুদের অধিকার বাস্তবায়নে তাদের পাশে দাঁড়ানো-যেন শিশুশ্রম বন্ধ হয়। অনেক ভালো একটি কবিতা পড়লাম আজ আসরে'র তোমার প্রথম কবিতা পড়ে মনে হচ্ছে আজ দিন টা ভালো যাবে ।ভালো থেকো নিরবধি ।ভালোবাসা জেনো । -
আবু সাহেদ সরকার ১১/০৬/২০১৪বর্তমান প্রেক্ষাপটের একটি প্রকাশ। পড়লাম... বেশ মজা পেলাম।
-
পিয়ালী দত্ত ১০/০৬/২০১৪বাস্তব বোধের সুন্দর কবিতা...