বং থেকে বাংলা
বং থেকে বাংলা
---
ঝাউবনের ফাঁক দিয়ে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে। শন শন বাতাস বইছে, মাথার ছাতা যেন উড়িয়ে নিয়ে যেতে চায়। আলপথ ধরে যে মহিলারা যায়, তাদের মাথায় ছাতা, সামনেও ছাতা। রিনি অবাক চোখে ওদের দেখছে। এখানে রিণি, ছিপি তাদের বান্ধবীদের সাথে বেড়াতে এসেছে। চমৎকার একটা ডাকবাংলোয় তারা উঠেছে। ছিপির হাসব্যান্ডই সব ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এই জায়গাটা চর এলাকা। নারকেল গাছের সারি, খোলা আকাশ আর বালুময় পথঘাট। সবকিছুই খুব সুন্দর তবে পানি খেতে সমস্যা। লবণাক্ত পানির জন্য ভাত তরকারী সবই লবণাক্ত লাগে রিণির। বাংলোবাড়ীটা বেশ পুরনো হলেও ভেতরটা নতুনের মতই। বাইরে আছে ফুলের বাগান। সময়টা বেশ কাটছে ওদের। ছিপি আর রিণি দুজনেই বাগানের ভেতর হাঁটছে, এখান থেকে পায়ে চলার পথটা দেখা যায়, সম্পূর্ণ বাংলোবাড়ী বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা। একপাশ খালি।
'আচ্ছা, বলতে পারিস এই প্যাটার্নের বাড়িগুলোকে বাংলো বলে কেন?' হঠাৎ ছিপির প্রশ্ন।
'আগে ব-বর্ণটি বুঝতে হবে, বং বুঝতে হবে, তারপর তো বুঝবি বাংলো কাকে বলে।'
'সে কীরকম!'
'বাংলো শব্দটি এসেছে বং থেকে; বং গমন করে বঙ্গ-তে। ব-বর্ণ বাহী কিংবা অতিবাহী, অর্থাৎ দ্বৈতাদ্বৈতবাহী বা দুই-কে বোঝায়। বং হল ব বা বাহী, অতিবাহীর রহস্যরূপ কিংবা দ্বৈতাদ্বৈতবাহীর রহস্যরূপ। বঙ্গ আশ্রিত বঙ্গা-তে। বঙ্গ-এর আধার লালিত বঙ্গাল-এ। দ্বিত্বের রহস্যরূপ লালিত থাকে বাংলা-তে (বাঙলা)। সংস্কৃত বঙ্গ মূল শব্দ তার থেকে বাঙালা, বাঙলা, বাংলা যা কিনা বঙ্গদেশ বোঝায়, বঙ্গভাষা বোঝায় আবার ধনুরাকৃতি টুয়াযুক্ত খড়ে ছাওয়া দো-চালা ঘরকেও বোঝায় যা ঝড়বৃষ্টি ঠেকাতে সাহায্য করে। গ্রামবাংলায় আগে এরূপ ঘর দেখা যেত, এগুলোকে বাঙলা, বাংলা ঘর বলে। কোনও কোনও স্থানে অবশ্য চারচালা, আটচালা ঘরকেও বাঙলা ঘর বলে। গ্রামবাংলায় মূল বাড়ির বাইরে বসার ঘর, অতিথিদের জন্য ঘরকে বাংলা ঘর বলে।'
রিণি বলে, 'আমার তো মনে অনেক প্রশ্ন জাগছে, বাংলা ঘর শুনেছি, আবার ডাকবাংলাও শুনেছি। কিন্তু এগুলো সম্পর্কে জানি না। আবার বলছিস দ্বৈতাদ্বৈত, আমাকে বুঝিয়ে বলতে হবে সব।'
'ঠিক আছে বাবা সব বলছি ধীরে ধীরে, তুই মন দিয়ে শোন।' ছিপি বলতে থাকে। 'হ্যাঁ, বড় চালাঘরকে বাংলাঘর বলা হত, সেই ঘরে অতিথি লোকজন থাকত। বলছিস ডাকবাংলোর কথা। ডাকবাংলা বা ডাকবাংলো হল সরকারী অতিথিদের বাসভবন। এখন শৌখিন বাসভবনকে আদর করে বাংলো বলে, ওইযে বড়লোক সাহেবরা থাকেন বাংলোতে। আর বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ বলছেন, ডাকবাংলা মানে যে বাঙ্ লা (বাংলো) হইতে ডাকিয়া পাঠান হয়।'
রিণি আবার প্রশ্ন করে, 'ডাক শব্দের সাথে কি ডাকবাংলার কোন সম্পর্ক আছে?'
ছিপি উত্তর দেয়, 'অবশ্যই আছে। প্রাচীনকালের ডাক সম্পর্কিত তথ্য আমরা পাই বৈদিক গ্রন্থ অথর্ববেদে। আমাদের এই অঞ্চলে প্রাচীনকাল থেকেই সংবাদ আদান-প্রদান করার ব্যবস্থা যে ছিল তা আমরা জানতে পাই বিভিন্ন প্রাচীন সাহিত্য, লোকগাথা ও ছড়া-কবিতার মাধ্যমে। একজায়গা থেকে অন্যজায়গায় খবর, তথ্য পাঠানোর জন্য জন্য দূত এবং কবুতর ব্যবহার করা হতো। প্রাচীনকালে দূতের সামাজিক অবস্থান অনেক উঁচুতে ছিল, দূতকে বন্দী, অত্যাচার বা হত্যা করা হত না। কালিদাস আর ধোয়ী তো আপনজনকে খবর পাঠাতে মৌসুমী মেঘ আর বাতাসকে দূত হিসেবে কল্পনা করেছেন তাঁদের বিখ্যাত গ্রন্থ মেঘদূত ও পবনদূত-এ। প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে নল-দময়ন্তীর হাঁস, রামায়নে হনুমান, মহাভারতে বিদুর এবং আনারকলীর হরিণ এসব প্রাণীকে দূতিয়ালীর কাজে ব্যবহার হতে দেখা যায়। বাংলা ডাক কথাটির শব্দার্থ আহবান করা অথবা মনোযোগ আকর্ষণ করা। এ শব্দ থেকে ডাকব্যবস্থা, ডাকঘর, ডাকহরকরা এবং ডাকমাশুল শব্দগুলির জন্ম হয়েছে।'
রিণি বলে ওঠে, 'অনেক কিছু জানলাম। তুই বিরক্ত হচ্ছিস না তো? সবাই বেড়াতে গেল চরে আর আমি তোকে কেবল প্রশ্নই করছি।'
ছিপি হাসে, 'আমি এগুলো কষ্ট করে পড়ে জেনেছি, কাউকে জানাতে পারলে বা কেউ প্রশ্ন করলে আমার ভাল লাগে। তারপর শোন, ১২০৬ থেকে ১২১০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দিল্লীর প্রথম সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবেক-এর শাসনামলে ডাক ব্যবস্থার ক্রমোন্নতির একটা ধারাবাহিক বিবরণ পাওয়া যায়। তিনি দিল্লি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত আরবদের অনুকরণে এক ধরনের ডাক ব্যবস্থা (ঘোড়ার ডাক) চালু করেন।ডাক-এর আধুনিক রূপ ডাকব্যবস্থা, পোষ্টঅফিসকে ডাকঘর বলা হয়। চিঠি আগে আসত ডাকে, এখন আসে মেইলে।'
'ডাক-এর সাথে ডাকবাংলোর কী সম্পর্ক?'
'ডাক শব্দটির অর্থ একসময় ছিল অশ্ব, শকটাদিযান ও বাহনের যোগান। আগের দিনে দূরদুরান্তে চিঠিপত্রাদি পৌঁছানোর জন্য ঘোড়া ব্যবহার হত, পথিমধ্যে স্থানে স্থানে ঘোড়া ও তার চালকের বিশ্রামের জন্য যে ব্যবস্থা ছিল তাকে বলা হত ডাক। পরবর্ত্তীতে ওইরূপে প্রেরিত চিঠিপত্রাদিই ডাক নামে অভিহিত হতে থাকে। ইংরেজ আমলে ঠিকানা অনুসারে প্রেরিত বা আনীত পত্রাদি বা সামগ্রীকে ডাক বলা হত যা প্রাচীন ডাক-এর আধুনিক রূপ। বর্ত্তমানে মোবাইল, ইমেইল, জিমেইল এসব হচ্ছে ডাক-এর অত্যাধুনিক রূপ।'
আর ডাকবাংলা তাই সরকারী কর্মচারী বা ভ্রমনকারীর পান্থশালা বা সরাই কারণ ‘ডাক’-বাহী ঘোড়ার ও আরোহীর বিশ্রামের ও রাত্রি যাপনের ঘর ছিল বলেই এখনকার দিনে তা সরকারী বিশ্রামাগার।'
'বুঝলাম, ওই যে বললি দ্বৈতাদ্বৈত, দ্বি এগুলোর মানে কী?'
'দ্বি হল দুই, সে একইসাথে দুইরকম গুণ নিয়ে চলে। বঙ্গ শব্দটি এই গুণসম্পন্ন বলেই সে দ্বৈতাদ্বৈতবাহী। এখানে দ্বৈত হল বিশেষ্য পদ, যার অর্থ দুই সত্তা, যুগ্ম, দ্বিত্ব। অদ্বৈত হল অদ্বয়, যার দ্বিতীয় নাই। সে ভেদশূন্য; অদ্বিতীয়। দ্বৈত আর অদ্বৈত মিলে দ্বৈতাদ্বৈত, দ্বৈতাদ্বৈত-এর মানে জীবাত্মা ও পরমাত্মার ভেদাভেদ। মূল অর্থ একের ভিতর দুই। সবকিছুই আসলে এক, থাকে দুই হয়ে, এর একটি পুরুষ অন্যটি প্রকৃতি হয়ে পরস্পরের সঙ্গে কামসূত্রে লিপ্ত থাকে। পুরুষ প্রকৃতির এই অভেদ অবস্থায় উভয়কে আলাদা করে চেনা যায় না।'
'এবার বঙ্গ সম্পর্কে বল।'
'বঙ্গ আসলে একটি বিশেষ ধরনের অস্তিত্বের / সত্তার বা গমনপ্রক্রিয়ার বা টিকে থাকার উপায়। এর দ্বৈতাদ্বৈত গুণ আছে বলে সে হতে পারে কোন ধাতু, উদ্ভিদ, মানুষ বা দেশ। যে বঙ্গপ্রক্রিয়া অবলম্বন করে চলে, সে বঙ্গ। এজন্য যে বঙ্গ-এর দর্শনের সাহায্যে চলে সে বঙ্গাল বা বাঙ্গাল বা বাঙ্গালী আর দেশ এর ক্ষেত্রে তা বঙ্গদেশ।'
'আর বাংলাদেশ?'
রিণির উত্তরে ছিপি বলে, 'যে দেশ বাংলা দিশায় চলে সেই দেশ বাংলাদেশ।'
'দেশ হিসেবে বঙ্গ নামটির উৎপত্তি বিষয়ে কিছু বলবি?'
'দেশ হিসেবে কবে বঙ্গ নামের প্রচলন হয়েছিল তা নিয়ে মহাভারতে কাহিনী আছে। এই বঙ্গদেশ হল পূর্ব্ববঙ্গ যা নদীবহুল ও জলপ্রায় একটি দেশ ছিল।
বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি নিয়ে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। ইতিহাস থেকে যতটুকু পড়েছি তা হল কারো কারো মতে, বঙ্গ নাম থেকেই বঙ্গাল এবং পরবর্তীতে বাঙালা নামের উৎপত্তি হয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, অতীতে বং নামের এক জনগোষ্ঠী এ অঞ্চলে বসবাস করত এবং তাদের নাম অনুযায়ী অঞ্চলটি বঙ্গ নামে পরিচিতি লাভ করে। আবার অনেকেই মরে করেন জলমগ্ন স্যাঁতস্যাঁতে অঞ্চলকে বঙ্গ বা বংশশ বলা হতো। তাই নদী মেঘলা ও জলমগ্ন দক্ষিণাঞ্চল বঙ্গ নামে অভিহিত হয়ে আসছে। কারও কারও মতে প্রাচীনকালে এর নাম বঙ্গ ছিল, তখনকার রাজারা বড় বড় আল নির্ম্মাণ করতেন, যা থেকে পরে বঙ্গ হয়ে যায় বঙ্গাল। কারও মতে বঙ্গ ও বঙ্গাল নামে দুটো আলাদা দেশ ছিল, পরে বঙ্গাল থেকে বাংলা নামকরণ। কারও মতে নদীমাতৃক এই দেশে বন্যা ও জোয়ার ঠেকাতে ছোট বড় আল তৈরী হত জমিতে, কালক্রমে বঙ্গ শব্দের সাথে আল যুক্ত হয়ে বঙ্গাল এরপর বাঙালা হয়ে বাংলা। অনেক হিন্দু ঐতিহাসিক মহাভারত, পুরাণ, হরিবংশ প্রভৃতি ধর্ম্মশাস্ত্রের ভিত্তিতে উল্লেখ করেছেন যে, বলী রাজার ৫ জন সন্তান ছিল। যাদের নাম রাখা হয় অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, পুন্ড্র ও সূক্ষ। বলিরাজ এদেরকে ৫টি রাজ্য দেন এবং যে, যে রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন তার নামানুসারে সে রাজ্যের নামকরণ হয়। এদের মধ্যে বঙ্গ এর অধিকারভূক্ত দেশই বঙ্গ নামে পরিচিতি হয়। আবার, মুসলমানদের পুরাণ কাহিনী অনুসারে হযরত নূহ (আঃ)-এর এক পুত্রের নাম ছিল হাম, তার পুত্র হিন্দ, আর হিন্দ এর দ্বিতীয় পুত্রের নাম ছিল বং। বং ও তার সন্তান সন্ততিগণ যে অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করেন, সেই অঞ্চলই কালক্রমে বঙ্গ নামে পরিচিতি লাভ করে। তাছাড়া কোনো ইতিহাসবিদ মনে করেন যে বাংলাদেশের আদিমতম জনগোষ্ঠী সাঁওতাল, কোল ও মুন্ডাদের এক দেবতার নাম হলো ‘বোঙ্গা’। এই বোঙ্গা থেকেও বঙ্গ নামের উৎপত্তি হতে পারে। খ্রিষ্টপূর্ব্ব তিন হাজার বছর আগে ঋগ্বেদে ’বঙ্গ' শব্দের উল্লেখ নেই। তবে খ্রিষ্টপূর্ব্ব ৫ম শতকে মুনি কর্তৃক রচিত ‘ঐতরেয় আরন্যক' গ্রন্থে বঙ্গ নামের সর্বপ্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। সপ্তম শতাব্দিতে বাংলার প্রথম স্বাধীন ও সার্ব্বভৌম রাজা শশাংক এই জনপদগুলোকে গৌড় নামে একত্রিত করেন। এরপর বঙ্গদেশ পুন্ড্র, গৌড় ও বঙ্গ এই তিন জনপদে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
সম্রাট আকবর-এর শাসনামলে সমগ্র বঙ্গদেশ ‘ সুবহ-ই-বঙ্গালহ ’ নামে পরিচিত হয়েছিল। বাঙালা নামটি মুসলমান শাসকদের সৃষ্টি। বঙ্গ শব্দটির সঙ্গে ফার্সি "আল" প্রত্যয় যোগ করে। এতে নাম দাঁড়ায় "বাঙাল" বা "বাঙ্গালাহ্"।
সুতরাং ফারসী বঙ্গালহ শব্দ থেকে পর্তুগীজ Bengala এবং ইংরেজি bengal শব্দ এসেছে। পরবর্তীকালে বাঙালা কিংবা বাংলা যা ব্রিটিশ শাসনগণ ইংরেজী ভাষায় বেঙ্গল (Bengal) এবং ভাষাকে বেঙ্গলী (Bengali) বলেই প্রায় দুইশত বছর চালিয়েছে। এভাবে কালক্রমে বঙ্গ>বঙ্গাল>বাঙ্গালা>সুবা-ই-বাঙ্গালা>পূর্ব্ববঙ্গ>পূর্ব পাকিস্তান>বাংলা নামের উৎপত্তি।
'তাহলে বঙ্গই হল আমাদের এই বাংলাদেশ।' রিণির কণ্ঠে বিস্ময়।
'হুম। এ নিয়ে শব্দার্থকোষে আরো তথ্য আছে। অঙ্গ হল যে জাতি উত্তরাধিকার অনুসারে চলে। যে জাতির নিজস্ব অর্জ্জন থাকে আবার উত্তরাধিকার মিলিয়ে নিয়েও চলে তাকে বঙ্গ বলা যায়। যে জাতি কলির সঙ্গে উত্তরাধিকার মিলিয়ে চলে তাকে বলে কলিঙ্গ। আসলে এর সব ব্যবস্থাই জনগণ থেকে রাজাদের বিভিন্ন পন্থায় খাজনা আদায়ের এক এক ধরনের কৌশল। বঙ্গ-এর সর্ব্বোচ্চ বিকাশ শ্রীচৈতন্যের আমলে, তাঁর দর্শন ছিল দ্বৈতাদ্বৈতবাদী।'
ছিপি একনাগাড়ে কথা বলা শেষ করে। রিণি ভাবনার রাজ্যে হারিয়ে যায়। এই বং থেকে বাংলা, বঙ্গ থেকে বাঙ্গালা কত ইতিহাস জড়িয়ে আছে পরতে পরতে। তার কতটুকুই বা জানা হল। কত রাজা কত বেনিয়া এল, এই বঙ্গে। কত যুদ্ধ কত বিগ্রহ করল বহিরাগতরা এই দেশে নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে। সবশেষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে এই সোনার বাংলাদেশ। ছিপি দূরে তাকায়, কত সুন্দর এই দেশ। সন্ধ্যা হয়ে আসল প্রায়, শীতের পাখিরা ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাচ্ছে। একটু যেন শীত শীত লাগছে। রিণি আর ছিপি দুজনেই এবার বাংলোর দিকে পা বাড়ায়।
কৃতজ্ঞতা:বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ, বাংলার বুক-ডট-কম, উইকিপিডিয়া, ইন্টারনেট।
'
---
ঝাউবনের ফাঁক দিয়ে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে। শন শন বাতাস বইছে, মাথার ছাতা যেন উড়িয়ে নিয়ে যেতে চায়। আলপথ ধরে যে মহিলারা যায়, তাদের মাথায় ছাতা, সামনেও ছাতা। রিনি অবাক চোখে ওদের দেখছে। এখানে রিণি, ছিপি তাদের বান্ধবীদের সাথে বেড়াতে এসেছে। চমৎকার একটা ডাকবাংলোয় তারা উঠেছে। ছিপির হাসব্যান্ডই সব ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এই জায়গাটা চর এলাকা। নারকেল গাছের সারি, খোলা আকাশ আর বালুময় পথঘাট। সবকিছুই খুব সুন্দর তবে পানি খেতে সমস্যা। লবণাক্ত পানির জন্য ভাত তরকারী সবই লবণাক্ত লাগে রিণির। বাংলোবাড়ীটা বেশ পুরনো হলেও ভেতরটা নতুনের মতই। বাইরে আছে ফুলের বাগান। সময়টা বেশ কাটছে ওদের। ছিপি আর রিণি দুজনেই বাগানের ভেতর হাঁটছে, এখান থেকে পায়ে চলার পথটা দেখা যায়, সম্পূর্ণ বাংলোবাড়ী বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা। একপাশ খালি।
'আচ্ছা, বলতে পারিস এই প্যাটার্নের বাড়িগুলোকে বাংলো বলে কেন?' হঠাৎ ছিপির প্রশ্ন।
'আগে ব-বর্ণটি বুঝতে হবে, বং বুঝতে হবে, তারপর তো বুঝবি বাংলো কাকে বলে।'
'সে কীরকম!'
'বাংলো শব্দটি এসেছে বং থেকে; বং গমন করে বঙ্গ-তে। ব-বর্ণ বাহী কিংবা অতিবাহী, অর্থাৎ দ্বৈতাদ্বৈতবাহী বা দুই-কে বোঝায়। বং হল ব বা বাহী, অতিবাহীর রহস্যরূপ কিংবা দ্বৈতাদ্বৈতবাহীর রহস্যরূপ। বঙ্গ আশ্রিত বঙ্গা-তে। বঙ্গ-এর আধার লালিত বঙ্গাল-এ। দ্বিত্বের রহস্যরূপ লালিত থাকে বাংলা-তে (বাঙলা)। সংস্কৃত বঙ্গ মূল শব্দ তার থেকে বাঙালা, বাঙলা, বাংলা যা কিনা বঙ্গদেশ বোঝায়, বঙ্গভাষা বোঝায় আবার ধনুরাকৃতি টুয়াযুক্ত খড়ে ছাওয়া দো-চালা ঘরকেও বোঝায় যা ঝড়বৃষ্টি ঠেকাতে সাহায্য করে। গ্রামবাংলায় আগে এরূপ ঘর দেখা যেত, এগুলোকে বাঙলা, বাংলা ঘর বলে। কোনও কোনও স্থানে অবশ্য চারচালা, আটচালা ঘরকেও বাঙলা ঘর বলে। গ্রামবাংলায় মূল বাড়ির বাইরে বসার ঘর, অতিথিদের জন্য ঘরকে বাংলা ঘর বলে।'
রিণি বলে, 'আমার তো মনে অনেক প্রশ্ন জাগছে, বাংলা ঘর শুনেছি, আবার ডাকবাংলাও শুনেছি। কিন্তু এগুলো সম্পর্কে জানি না। আবার বলছিস দ্বৈতাদ্বৈত, আমাকে বুঝিয়ে বলতে হবে সব।'
'ঠিক আছে বাবা সব বলছি ধীরে ধীরে, তুই মন দিয়ে শোন।' ছিপি বলতে থাকে। 'হ্যাঁ, বড় চালাঘরকে বাংলাঘর বলা হত, সেই ঘরে অতিথি লোকজন থাকত। বলছিস ডাকবাংলোর কথা। ডাকবাংলা বা ডাকবাংলো হল সরকারী অতিথিদের বাসভবন। এখন শৌখিন বাসভবনকে আদর করে বাংলো বলে, ওইযে বড়লোক সাহেবরা থাকেন বাংলোতে। আর বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ বলছেন, ডাকবাংলা মানে যে বাঙ্ লা (বাংলো) হইতে ডাকিয়া পাঠান হয়।'
রিণি আবার প্রশ্ন করে, 'ডাক শব্দের সাথে কি ডাকবাংলার কোন সম্পর্ক আছে?'
ছিপি উত্তর দেয়, 'অবশ্যই আছে। প্রাচীনকালের ডাক সম্পর্কিত তথ্য আমরা পাই বৈদিক গ্রন্থ অথর্ববেদে। আমাদের এই অঞ্চলে প্রাচীনকাল থেকেই সংবাদ আদান-প্রদান করার ব্যবস্থা যে ছিল তা আমরা জানতে পাই বিভিন্ন প্রাচীন সাহিত্য, লোকগাথা ও ছড়া-কবিতার মাধ্যমে। একজায়গা থেকে অন্যজায়গায় খবর, তথ্য পাঠানোর জন্য জন্য দূত এবং কবুতর ব্যবহার করা হতো। প্রাচীনকালে দূতের সামাজিক অবস্থান অনেক উঁচুতে ছিল, দূতকে বন্দী, অত্যাচার বা হত্যা করা হত না। কালিদাস আর ধোয়ী তো আপনজনকে খবর পাঠাতে মৌসুমী মেঘ আর বাতাসকে দূত হিসেবে কল্পনা করেছেন তাঁদের বিখ্যাত গ্রন্থ মেঘদূত ও পবনদূত-এ। প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে নল-দময়ন্তীর হাঁস, রামায়নে হনুমান, মহাভারতে বিদুর এবং আনারকলীর হরিণ এসব প্রাণীকে দূতিয়ালীর কাজে ব্যবহার হতে দেখা যায়। বাংলা ডাক কথাটির শব্দার্থ আহবান করা অথবা মনোযোগ আকর্ষণ করা। এ শব্দ থেকে ডাকব্যবস্থা, ডাকঘর, ডাকহরকরা এবং ডাকমাশুল শব্দগুলির জন্ম হয়েছে।'
রিণি বলে ওঠে, 'অনেক কিছু জানলাম। তুই বিরক্ত হচ্ছিস না তো? সবাই বেড়াতে গেল চরে আর আমি তোকে কেবল প্রশ্নই করছি।'
ছিপি হাসে, 'আমি এগুলো কষ্ট করে পড়ে জেনেছি, কাউকে জানাতে পারলে বা কেউ প্রশ্ন করলে আমার ভাল লাগে। তারপর শোন, ১২০৬ থেকে ১২১০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দিল্লীর প্রথম সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবেক-এর শাসনামলে ডাক ব্যবস্থার ক্রমোন্নতির একটা ধারাবাহিক বিবরণ পাওয়া যায়। তিনি দিল্লি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত আরবদের অনুকরণে এক ধরনের ডাক ব্যবস্থা (ঘোড়ার ডাক) চালু করেন।ডাক-এর আধুনিক রূপ ডাকব্যবস্থা, পোষ্টঅফিসকে ডাকঘর বলা হয়। চিঠি আগে আসত ডাকে, এখন আসে মেইলে।'
'ডাক-এর সাথে ডাকবাংলোর কী সম্পর্ক?'
'ডাক শব্দটির অর্থ একসময় ছিল অশ্ব, শকটাদিযান ও বাহনের যোগান। আগের দিনে দূরদুরান্তে চিঠিপত্রাদি পৌঁছানোর জন্য ঘোড়া ব্যবহার হত, পথিমধ্যে স্থানে স্থানে ঘোড়া ও তার চালকের বিশ্রামের জন্য যে ব্যবস্থা ছিল তাকে বলা হত ডাক। পরবর্ত্তীতে ওইরূপে প্রেরিত চিঠিপত্রাদিই ডাক নামে অভিহিত হতে থাকে। ইংরেজ আমলে ঠিকানা অনুসারে প্রেরিত বা আনীত পত্রাদি বা সামগ্রীকে ডাক বলা হত যা প্রাচীন ডাক-এর আধুনিক রূপ। বর্ত্তমানে মোবাইল, ইমেইল, জিমেইল এসব হচ্ছে ডাক-এর অত্যাধুনিক রূপ।'
আর ডাকবাংলা তাই সরকারী কর্মচারী বা ভ্রমনকারীর পান্থশালা বা সরাই কারণ ‘ডাক’-বাহী ঘোড়ার ও আরোহীর বিশ্রামের ও রাত্রি যাপনের ঘর ছিল বলেই এখনকার দিনে তা সরকারী বিশ্রামাগার।'
'বুঝলাম, ওই যে বললি দ্বৈতাদ্বৈত, দ্বি এগুলোর মানে কী?'
'দ্বি হল দুই, সে একইসাথে দুইরকম গুণ নিয়ে চলে। বঙ্গ শব্দটি এই গুণসম্পন্ন বলেই সে দ্বৈতাদ্বৈতবাহী। এখানে দ্বৈত হল বিশেষ্য পদ, যার অর্থ দুই সত্তা, যুগ্ম, দ্বিত্ব। অদ্বৈত হল অদ্বয়, যার দ্বিতীয় নাই। সে ভেদশূন্য; অদ্বিতীয়। দ্বৈত আর অদ্বৈত মিলে দ্বৈতাদ্বৈত, দ্বৈতাদ্বৈত-এর মানে জীবাত্মা ও পরমাত্মার ভেদাভেদ। মূল অর্থ একের ভিতর দুই। সবকিছুই আসলে এক, থাকে দুই হয়ে, এর একটি পুরুষ অন্যটি প্রকৃতি হয়ে পরস্পরের সঙ্গে কামসূত্রে লিপ্ত থাকে। পুরুষ প্রকৃতির এই অভেদ অবস্থায় উভয়কে আলাদা করে চেনা যায় না।'
'এবার বঙ্গ সম্পর্কে বল।'
'বঙ্গ আসলে একটি বিশেষ ধরনের অস্তিত্বের / সত্তার বা গমনপ্রক্রিয়ার বা টিকে থাকার উপায়। এর দ্বৈতাদ্বৈত গুণ আছে বলে সে হতে পারে কোন ধাতু, উদ্ভিদ, মানুষ বা দেশ। যে বঙ্গপ্রক্রিয়া অবলম্বন করে চলে, সে বঙ্গ। এজন্য যে বঙ্গ-এর দর্শনের সাহায্যে চলে সে বঙ্গাল বা বাঙ্গাল বা বাঙ্গালী আর দেশ এর ক্ষেত্রে তা বঙ্গদেশ।'
'আর বাংলাদেশ?'
রিণির উত্তরে ছিপি বলে, 'যে দেশ বাংলা দিশায় চলে সেই দেশ বাংলাদেশ।'
'দেশ হিসেবে বঙ্গ নামটির উৎপত্তি বিষয়ে কিছু বলবি?'
'দেশ হিসেবে কবে বঙ্গ নামের প্রচলন হয়েছিল তা নিয়ে মহাভারতে কাহিনী আছে। এই বঙ্গদেশ হল পূর্ব্ববঙ্গ যা নদীবহুল ও জলপ্রায় একটি দেশ ছিল।
বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি নিয়ে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। ইতিহাস থেকে যতটুকু পড়েছি তা হল কারো কারো মতে, বঙ্গ নাম থেকেই বঙ্গাল এবং পরবর্তীতে বাঙালা নামের উৎপত্তি হয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, অতীতে বং নামের এক জনগোষ্ঠী এ অঞ্চলে বসবাস করত এবং তাদের নাম অনুযায়ী অঞ্চলটি বঙ্গ নামে পরিচিতি লাভ করে। আবার অনেকেই মরে করেন জলমগ্ন স্যাঁতস্যাঁতে অঞ্চলকে বঙ্গ বা বংশশ বলা হতো। তাই নদী মেঘলা ও জলমগ্ন দক্ষিণাঞ্চল বঙ্গ নামে অভিহিত হয়ে আসছে। কারও কারও মতে প্রাচীনকালে এর নাম বঙ্গ ছিল, তখনকার রাজারা বড় বড় আল নির্ম্মাণ করতেন, যা থেকে পরে বঙ্গ হয়ে যায় বঙ্গাল। কারও মতে বঙ্গ ও বঙ্গাল নামে দুটো আলাদা দেশ ছিল, পরে বঙ্গাল থেকে বাংলা নামকরণ। কারও মতে নদীমাতৃক এই দেশে বন্যা ও জোয়ার ঠেকাতে ছোট বড় আল তৈরী হত জমিতে, কালক্রমে বঙ্গ শব্দের সাথে আল যুক্ত হয়ে বঙ্গাল এরপর বাঙালা হয়ে বাংলা। অনেক হিন্দু ঐতিহাসিক মহাভারত, পুরাণ, হরিবংশ প্রভৃতি ধর্ম্মশাস্ত্রের ভিত্তিতে উল্লেখ করেছেন যে, বলী রাজার ৫ জন সন্তান ছিল। যাদের নাম রাখা হয় অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, পুন্ড্র ও সূক্ষ। বলিরাজ এদেরকে ৫টি রাজ্য দেন এবং যে, যে রাজ্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন তার নামানুসারে সে রাজ্যের নামকরণ হয়। এদের মধ্যে বঙ্গ এর অধিকারভূক্ত দেশই বঙ্গ নামে পরিচিতি হয়। আবার, মুসলমানদের পুরাণ কাহিনী অনুসারে হযরত নূহ (আঃ)-এর এক পুত্রের নাম ছিল হাম, তার পুত্র হিন্দ, আর হিন্দ এর দ্বিতীয় পুত্রের নাম ছিল বং। বং ও তার সন্তান সন্ততিগণ যে অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করেন, সেই অঞ্চলই কালক্রমে বঙ্গ নামে পরিচিতি লাভ করে। তাছাড়া কোনো ইতিহাসবিদ মনে করেন যে বাংলাদেশের আদিমতম জনগোষ্ঠী সাঁওতাল, কোল ও মুন্ডাদের এক দেবতার নাম হলো ‘বোঙ্গা’। এই বোঙ্গা থেকেও বঙ্গ নামের উৎপত্তি হতে পারে। খ্রিষ্টপূর্ব্ব তিন হাজার বছর আগে ঋগ্বেদে ’বঙ্গ' শব্দের উল্লেখ নেই। তবে খ্রিষ্টপূর্ব্ব ৫ম শতকে মুনি কর্তৃক রচিত ‘ঐতরেয় আরন্যক' গ্রন্থে বঙ্গ নামের সর্বপ্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। সপ্তম শতাব্দিতে বাংলার প্রথম স্বাধীন ও সার্ব্বভৌম রাজা শশাংক এই জনপদগুলোকে গৌড় নামে একত্রিত করেন। এরপর বঙ্গদেশ পুন্ড্র, গৌড় ও বঙ্গ এই তিন জনপদে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
সম্রাট আকবর-এর শাসনামলে সমগ্র বঙ্গদেশ ‘ সুবহ-ই-বঙ্গালহ ’ নামে পরিচিত হয়েছিল। বাঙালা নামটি মুসলমান শাসকদের সৃষ্টি। বঙ্গ শব্দটির সঙ্গে ফার্সি "আল" প্রত্যয় যোগ করে। এতে নাম দাঁড়ায় "বাঙাল" বা "বাঙ্গালাহ্"।
সুতরাং ফারসী বঙ্গালহ শব্দ থেকে পর্তুগীজ Bengala এবং ইংরেজি bengal শব্দ এসেছে। পরবর্তীকালে বাঙালা কিংবা বাংলা যা ব্রিটিশ শাসনগণ ইংরেজী ভাষায় বেঙ্গল (Bengal) এবং ভাষাকে বেঙ্গলী (Bengali) বলেই প্রায় দুইশত বছর চালিয়েছে। এভাবে কালক্রমে বঙ্গ>বঙ্গাল>বাঙ্গালা>সুবা-ই-বাঙ্গালা>পূর্ব্ববঙ্গ>পূর্ব পাকিস্তান>বাংলা নামের উৎপত্তি।
'তাহলে বঙ্গই হল আমাদের এই বাংলাদেশ।' রিণির কণ্ঠে বিস্ময়।
'হুম। এ নিয়ে শব্দার্থকোষে আরো তথ্য আছে। অঙ্গ হল যে জাতি উত্তরাধিকার অনুসারে চলে। যে জাতির নিজস্ব অর্জ্জন থাকে আবার উত্তরাধিকার মিলিয়ে নিয়েও চলে তাকে বঙ্গ বলা যায়। যে জাতি কলির সঙ্গে উত্তরাধিকার মিলিয়ে চলে তাকে বলে কলিঙ্গ। আসলে এর সব ব্যবস্থাই জনগণ থেকে রাজাদের বিভিন্ন পন্থায় খাজনা আদায়ের এক এক ধরনের কৌশল। বঙ্গ-এর সর্ব্বোচ্চ বিকাশ শ্রীচৈতন্যের আমলে, তাঁর দর্শন ছিল দ্বৈতাদ্বৈতবাদী।'
ছিপি একনাগাড়ে কথা বলা শেষ করে। রিণি ভাবনার রাজ্যে হারিয়ে যায়। এই বং থেকে বাংলা, বঙ্গ থেকে বাঙ্গালা কত ইতিহাস জড়িয়ে আছে পরতে পরতে। তার কতটুকুই বা জানা হল। কত রাজা কত বেনিয়া এল, এই বঙ্গে। কত যুদ্ধ কত বিগ্রহ করল বহিরাগতরা এই দেশে নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে। সবশেষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে এই সোনার বাংলাদেশ। ছিপি দূরে তাকায়, কত সুন্দর এই দেশ। সন্ধ্যা হয়ে আসল প্রায়, শীতের পাখিরা ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাচ্ছে। একটু যেন শীত শীত লাগছে। রিণি আর ছিপি দুজনেই এবার বাংলোর দিকে পা বাড়ায়।
কৃতজ্ঞতা:বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ, বাংলার বুক-ডট-কম, উইকিপিডিয়া, ইন্টারনেট।
'
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রইসউদ্দিন গায়েন ১৯/০১/২০২২খুব সুন্দর লেখা। প্রিয়তে রাখলাম।
-
মোঃ নাজাতুল হক চৌধুরী ২২/১০/২০২১Wow
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১৯/১০/২০২১ভালো লিখেছেন।
-
শ.ম. শহীদ ১৯/১০/২০২১সুন্দর।
অশেষ ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।