www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ডর ডাল

ডর ও ডাল
---
ডর: ডী ক্রিয়ামূল থেকে জাত শব্দ হচ্ছে ডর। ডী = গতিশীল ডয়নের আধার যে, = উড্ডয়ন। ড-কে ডয়ন বা ডয়নী বলা হয়েছে বঙ্গীয় শব্দার্থকোষে, কারণ ড-এর স্বভাব হল উড্ডয়ন, যে কিনা উড্ডয়ন করে অন্যত্র যাচ্ছে।
ক্রিয়াভিত্তিক শব্দার্থবিধি অনুযায়ী, ডর হল 'ডয়নী রহে যাহাতে', ডর এর আধার ডরা, ডরা অন হলে ডরান হয়। ডর অর্থ ভয়, ভয় করা; ডরা অর্থ ভয় করা আবার ডরান অর্থ ভয় পান---বঙ্গীয় শব্দকোষ। যে সত্তা দূর আছে কিন্তু উড়ে এসে আঘাত করতে পারে এমন সত্তাকে আমরা ভয় পাই। সেই কারণে ডর হল ডয়নী রহে যাহাতে। ডর শব্দটি গ্রামবাংলায় বেশী প্রচলিত।
ডার শব্দটি ডর হতে জাত, যার অর্থ বিক্ষেপ করা, ছুঁড়িয়া ফেলা, স্থাপন করা, সমর্পণ বা উৎসর্গ করা, শাখা, ঝাড়ের শাখা, শাখানদী---ইত্যাদি। শুরুতে র এবং ল এর পার্থক্য ছিল না। সংস্কৃতকারগণ র ও ল এর উচ্চারণে দুটি ধারা চিহ্নিত করে গেলেও অর্থের দিক থেকে অভেদকেই গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু মধ্যযুগে র এবং ল দুটি একেবারেই আলাদা হয়ে গেছে; এখনতো উচ্চারণ এবং অর্থ দুই-ই আলাদা। গ্রামবাংলায় এখনও র কে ল, এবং ল কে র এভাবে অদলবদল করে উচ্চারণ করা হয়। যাই হোক, ডার সেজন্য ডাল হয়ে যায়। ক্রিয়াভিত্তিক ভাষায় ডাল হল, ডা লালিত-লয়প্রাপ্ত যাহাতে; অথবা যা উড়ে যেতে যেতে যায়নি, কিংবা লয় পেতে পেতে পায়নি, ঝুলে গেছে। ডালনা হল যা ডালের মত নয় যা অর্থাৎ যা ডালের মত তরল নয়। ডালের আধার হল ডালি, ডাল গতিশীল থাকে ডালিতে।
ল বর্ণটি একই সাথে লালন ও লয় করণ করে, তাই ডাল হল গাছের ডাল আবার ঝোলের ডাল যা ভাতের সাথে খাওয়া হয়; ঝুলে থেকে যায় বলে ঝোল পদবাচ্য। যেমন ডাল কিন্তু ডালনা, তেমনি ঝোল কিন্তু ঝুলনা। ক্রিয়াভিত্তিক শব্দের নিয়মে, শব্দের ভিতরেই ক্রিয়ার কথা বলা থাকে, সেই ক্রিয়া যে করে, তাকেই সেই শব্দে চিহ্নিত করা হয়। এজন্য ডর এ থাকে ডয়নের রওয়ন, আর ডালে থাকে ডয়নের আধারের লালন-লয়ন।
কৃতজ্ঞতা: বঙ্গীয় শব্দার্থকোষের আলোকে।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৪৯৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৪/০২/২০২১

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast