চাঁদের বাড়ি চাঁদের বুড়ি
চাঁদের বাড়ি, চাঁদের বুড়ি
--
হ্যাঁ, আমরা তো জানতামই চাঁদে কেবল একটি বাড়িই আছে, সেই বাড়িতে কেবল একটি বুড়িই থাকে,সেই বুড়ির কোনও কাজ ছিল না আর ; চরকায় সুতা কেটে জাল বুনতো আর পচা সুতোগুলো পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিত আমাদের জন্য।
যখন চৈত্র বৈশাখে একটানা বৃষ্টি হত - মানুষ, জিনিসপত্র কাপড়চোপড় সবকিছুতে ছাতি পড়ত তখন বড়রা অপেক্ষায় থাকতেন কখন বুড়ি সুতা ছাড়বে, বৃষ্টিতে মনে হয় বুড়ির সুতাগুলোও পচে যেত, তাই সে উড়িয়ে দিত পৃথিবীতে।সুতাগুলো উড়ে উড়ে আসত আমাদের কাছে, আমরা সুতা ধরার জন্য কত না হুড়োহুড়ি করতাম, দৌড়তাম, কে কার আগে সুতা ধরতে পারে।সেই সুতা আমাদের যে কোনও কাজে আসত তা কিন্তু নয়, বরং মাকড়শার জালের মত হাতকে পেঁচিয়ে ফেলত।
আর বড়রা! বড়রা বলতেন, বুড়ি সুতা ছেড়েছে এবার রোদ উঠবে।সত্যি তখন রোদ উঠত।
" উপর থেকে পড়লো বুড়ি কাঁথা কম্বল নিয়ে
ভাসতে ভাসতে যায় সে বুড়ি কানাই নগর দিয়ে "।
চাঁদের বুড়ি কেবল সুতা কাটত তা নয় কিন্তু।কেউ পথ হারিয়ে ফেললে কীভাবে কীভাবে যেন ওই বুড়ির কাছেই পৌঁছে যেত। বুড়ি আদর করে খেতে দিত, বাড়ি যাওয়ার পথ বাতলে দিত, সাথে দিত সুতার বাণ্ডিল।
কত না গল্পে বুড়ির কথা পড়েছি আমি,আমরা।
প্রথম পড়েছিলাম ক্লাস থ্রিতে - আনোয়ারের গল্পে।
আমি তো সেই ভাঙা দোতলায় আমাদের ক্লাসে টিফিনের সময় চুপচাপ বসে রাস্তার আইসক্রিমওলা আর আচারওলা দেখতাম, বান্ধবীরা খেলতে যেত। ওরা এসে বলত " নাসরীন কেন একা বসে আছিস - আনোয়ারকে পরী নিয়ে গেছে, চাঁদের বুড়ি চরকা কাটে - ওখানে নিয়ে যেতে পারে। তুই কেন বসে থাকিস একেলা! তোকেও নিয়ে যাবে "।
আমি বলতাম " সে তো বইয়ে লেখা, সত্যি নিয়ে গেছে নাকি! "
লাভলী তখন বলত " জানিস না! বইয়ের লেখা সত্য হয়, তোকেও একদিন পরী নিয়ে যাবে "।
" নিয়ে গেলে যাক, নিয়ে যাবে তো বুড়ির কাছে, বুড়ি ভালো মানুষ, সে আমাকে আদর করবে "।
লাভলী কিছুতেই আমার সাথে কথায় পেরে উঠতে পারত না।
আমিও তো বহুদিন ভেবেছি যদি পরী আমায় নিয়ে যেত, বেশ হত।
কিন্তু ওগুলো যে কেবলই গল্প সেটা আমি বুঝতাম কেবল, ওরা বুঝতই না।
বুড়ির সুতা আজকাল দেখি না।আজকের শিশুরা বুড়ির সুতা দেখে কিনা জানি না,বুড়ির সুতায় তাদের উচ্ছাস জাগে কিনা জানা নেই।
বুড়ির সুতার সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের শৈশব, শৈশবের রঙিন কল্পনা, ওই সুতা আজন্ম থাকবে জড়িয়ে, বৃষ্টির পর রোদ উঠলে মনে মনে ভাববো ঠিক, খুঁজবো ঠিক - চাঁদের বুড়ির সুতা।
* শিমুল গাছের বীজ ফেটে শিমুল তুলো বাতাসে উড়ে যায়, সেই তুলো পৌঁছে যায় কোনও দুরন্ত কৌতুহলী শিশু কিংবা কিশোরের কাছে।
অবাক চোখে তারা এই সুতাটি দেখতে থাকে।
অজানা অচেনা জিনিসেই থাকে রাজ্যের কৌতুহল।
২৮/০৫/২০
--
হ্যাঁ, আমরা তো জানতামই চাঁদে কেবল একটি বাড়িই আছে, সেই বাড়িতে কেবল একটি বুড়িই থাকে,সেই বুড়ির কোনও কাজ ছিল না আর ; চরকায় সুতা কেটে জাল বুনতো আর পচা সুতোগুলো পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিত আমাদের জন্য।
যখন চৈত্র বৈশাখে একটানা বৃষ্টি হত - মানুষ, জিনিসপত্র কাপড়চোপড় সবকিছুতে ছাতি পড়ত তখন বড়রা অপেক্ষায় থাকতেন কখন বুড়ি সুতা ছাড়বে, বৃষ্টিতে মনে হয় বুড়ির সুতাগুলোও পচে যেত, তাই সে উড়িয়ে দিত পৃথিবীতে।সুতাগুলো উড়ে উড়ে আসত আমাদের কাছে, আমরা সুতা ধরার জন্য কত না হুড়োহুড়ি করতাম, দৌড়তাম, কে কার আগে সুতা ধরতে পারে।সেই সুতা আমাদের যে কোনও কাজে আসত তা কিন্তু নয়, বরং মাকড়শার জালের মত হাতকে পেঁচিয়ে ফেলত।
আর বড়রা! বড়রা বলতেন, বুড়ি সুতা ছেড়েছে এবার রোদ উঠবে।সত্যি তখন রোদ উঠত।
" উপর থেকে পড়লো বুড়ি কাঁথা কম্বল নিয়ে
ভাসতে ভাসতে যায় সে বুড়ি কানাই নগর দিয়ে "।
চাঁদের বুড়ি কেবল সুতা কাটত তা নয় কিন্তু।কেউ পথ হারিয়ে ফেললে কীভাবে কীভাবে যেন ওই বুড়ির কাছেই পৌঁছে যেত। বুড়ি আদর করে খেতে দিত, বাড়ি যাওয়ার পথ বাতলে দিত, সাথে দিত সুতার বাণ্ডিল।
কত না গল্পে বুড়ির কথা পড়েছি আমি,আমরা।
প্রথম পড়েছিলাম ক্লাস থ্রিতে - আনোয়ারের গল্পে।
আমি তো সেই ভাঙা দোতলায় আমাদের ক্লাসে টিফিনের সময় চুপচাপ বসে রাস্তার আইসক্রিমওলা আর আচারওলা দেখতাম, বান্ধবীরা খেলতে যেত। ওরা এসে বলত " নাসরীন কেন একা বসে আছিস - আনোয়ারকে পরী নিয়ে গেছে, চাঁদের বুড়ি চরকা কাটে - ওখানে নিয়ে যেতে পারে। তুই কেন বসে থাকিস একেলা! তোকেও নিয়ে যাবে "।
আমি বলতাম " সে তো বইয়ে লেখা, সত্যি নিয়ে গেছে নাকি! "
লাভলী তখন বলত " জানিস না! বইয়ের লেখা সত্য হয়, তোকেও একদিন পরী নিয়ে যাবে "।
" নিয়ে গেলে যাক, নিয়ে যাবে তো বুড়ির কাছে, বুড়ি ভালো মানুষ, সে আমাকে আদর করবে "।
লাভলী কিছুতেই আমার সাথে কথায় পেরে উঠতে পারত না।
আমিও তো বহুদিন ভেবেছি যদি পরী আমায় নিয়ে যেত, বেশ হত।
কিন্তু ওগুলো যে কেবলই গল্প সেটা আমি বুঝতাম কেবল, ওরা বুঝতই না।
বুড়ির সুতা আজকাল দেখি না।আজকের শিশুরা বুড়ির সুতা দেখে কিনা জানি না,বুড়ির সুতায় তাদের উচ্ছাস জাগে কিনা জানা নেই।
বুড়ির সুতার সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের শৈশব, শৈশবের রঙিন কল্পনা, ওই সুতা আজন্ম থাকবে জড়িয়ে, বৃষ্টির পর রোদ উঠলে মনে মনে ভাববো ঠিক, খুঁজবো ঠিক - চাঁদের বুড়ির সুতা।
* শিমুল গাছের বীজ ফেটে শিমুল তুলো বাতাসে উড়ে যায়, সেই তুলো পৌঁছে যায় কোনও দুরন্ত কৌতুহলী শিশু কিংবা কিশোরের কাছে।
অবাক চোখে তারা এই সুতাটি দেখতে থাকে।
অজানা অচেনা জিনিসেই থাকে রাজ্যের কৌতুহল।
২৮/০৫/২০
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ২১/১০/২০২০বাঃ কী চমৎকার
-
Md. Rayhan Kazi ২১/০৬/২০২০চমৎকার
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ২৯/০৫/২০২০ভালো।
-
পি পি আলী আকবর ২৯/০৫/২০২০ভালো