তুমি কেন চলে গেল
তুমি কেন চলে গেলে?
---
প্রতিটি পরীক্ষার ফলাফল বের হবার পর আমি ভীষণ রকম আতংকিত থাকি এই বুঝি কোনও দুঃসংবাদ কানে আসে।প্রতিবারই আসে,নিশ্চল মূর্তির মতন ভাবতে থাকি,খুঁজতে থাকি কারণ।
পরীক্ষা কি এমন বিষয় যে এতে কাঙ্খিত ফলাফল না করলে জীবনটাই ত্যাগ করতে হবে!জীবনের কি বুঝে অবুঝ ছেলে মেয়েগুলো!
পড়াশোনা বিষয়টা ক্রমশ বিভীষিকায় পরিণত হচ্ছে, এতে নেই আনন্দ নেই প্রাণ কেবল প্রতিযোগিতা কর,প্রতিযোগিতায় সেরা হও তা না হলে জুটবে তিরষ্কার, চলবে তুলনা।
কোনও মানুষই তুলনা পছন্দ করে না,সবার মেধা এক নয়,সবার ধারণ ক্ষমতা এক নয় কিন্তু আমাদের অভিভাবকদের চিন্তাধারা একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ তা হলো- যে করেই হোক সেরা হও।অভিভাবকের চাপে সেরা হতে গিয়ে কত শিক্ষার্থী বেছে নেয় অনৈতিক পথ, অনেক সময় অভিভাবকেরাও।
অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও থাকে সেরা হবার চাপ।
কি হয় সেরা হলে? পৃথিবীতে অনেক সফল মানুষ আছেন যারা পরীক্ষার বৈতরণী পার হতে পারেন নি সেরা দূরের কথা।
***
আমাদের শিক্ষার পদ্ধতিটা কী? গণ্ডায় গণ্ডায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে,কী বের হয়ে আসছে ওখান থেকে! কেবল হতাশা ছাড়া আর কিছু নয়।
কাগজ গিলে খেলে জ্ঞানার্জন হয়? যদি তা ধারণ করা না হয়?
বস্তার বস্তা সনদ শুধু ভালো চাকরি পাবার জন্য? তারপর কী হয়?
আমাদের অভিভাবকদের প্রত্যাশা ছেলে ভালো চাকরি বাগাবে,তিনহাতে টাকা রুজি করবে, নয়তো বিদেশে ভালো চাকরি করবে।
শুধু নিজের জন্য চিন্তা।সবাই কেন যে আমের পোড়া বড়া হতে চায় বুঝি না।পোড়া বড়া শুধু খাওয়াই যায়,আর কি কাজে লাগে?
আপাদমস্তক আমাদের শিক্ষার লক্ষ্য একটাই তা হলো ভালো রোজগেরে হওয়া।
অথচ শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে অনেক ভালো ভালো কথা লেখা আছে দেখলাম।
***
স্লোগান আছে " শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে জ্বালো"
শিক্ষা তো এমনই এক আলো হবে যা কেবল নিজেকে আলোকিত করবে না,চারদিকে আলো ছড়াবে।
এই যে এত এত শিক্ষাঙ্গন, এই যে এত এত ডিগ্রীধারী-- কোথায় আলো?
কোথায় গেলো আমাদের মূল্যবোধ,কোথায় গেলো পারস্পরিক সেই শ্রদ্ধার জায়গাটুকু,কোথায় হারালো আমাদের মমতার প্রাঙ্গন?
বিসদৃশ আচরণে ক্রমশ অভ্যস্ত হয়ে জলাঞ্জলি দিচ্ছি যাবতীয় আলো আর হারিয়ে যাচ্ছি কোন অতল অন্ধকারে? কে দেবে উত্তর!
***
জানি কেউ নেই আজ কারও জন্য,সবাই নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। ব্যস্ত পাবার নেশায়।এ নেশা কখন কবে থামবে কে জানে!
***
আমাদের তো সেই শিক্ষার প্রয়োজন যে শিক্ষা আমাদের জীবনকে শেখাতে সাহায্য করবে,জীবনবোধ তৈরি করতে সাহায্য করবে।
তা নয় বড় বড় ডিগ্রী নিয়ে, ভালো ফলাফল করে যখন চাকরি না পেয়ে ঘুরে ছেলেগুলো তখন ওরা হয় কলাগাছ,অষ্টরম্ভা নামে অভিহিত।তাই উপায় খুঁজতে হয় কিভাবে ভালো চাকরি বাগানো যায়,কপাল ভালো থাকলে তা জুটবে তখনই রাতারাতি হয়ে যাবে সোনার টুকরো ছেলে।
যে দরে চাকরি সেই দরে শুরু হয় উসুল। দোষ কাকে কে দেবে!
***
আপনার সন্তান প্রয়োজনে দুটো ডাল ভাত ফুটিয়ে খেতে পারে না,বাজার করতে পারে না তাহলে কি হলো এত বই গিলে।
বই গিলার বস্তু নয়,সার্টিফিকেট অর্জন মানে শিক্ষা নয়।
খুবই প্রয়োজন আমাদের এই তুলনা সৃষ্টিকারী বিভাজিত শিক্ষা পদ্ধতির সংস্কার।
সংস্কারে হাত দিলেও তো ওরাই করবেন যাদের সন্তানেরা এদেশে পড়ে না।
বড় ভালো আছি আমরা,উপর থেকে আপেল পড়ুক আর বাজই পড়ুক টুপ করে ধরে নিতেই হবে আমাদের।
***
অভিভাবক শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ ছেলেমেয়েগুলোকে শেখান জীবন বোধ,শেখান জীবন মানেই কন্টকশয্যা,এখানে হার-জিত আছে তবে ঘুরে দাড়াবারও সুযোগ আছে।
সুখ দুঃখ,হার জিত মিলেই এই জীবন যতদিন বেঁচে থাকা।
নিজের চলে যাওয়া নিজেকেই কেন বেছে নিতে হবে?
শিক্ষা এবার আমাদের শেখাক জীবন মানে সুখ দুঃখ নিয়ে বহুদূর যাওয়া,ঝরে পড়া নয়।
শিক্ষা হোক প্রতিযোগিতামুক্ত,শিক্ষার্থী থাকুক তুলনার বাইরে।
--১৯/০৭/২০১৯
---
প্রতিটি পরীক্ষার ফলাফল বের হবার পর আমি ভীষণ রকম আতংকিত থাকি এই বুঝি কোনও দুঃসংবাদ কানে আসে।প্রতিবারই আসে,নিশ্চল মূর্তির মতন ভাবতে থাকি,খুঁজতে থাকি কারণ।
পরীক্ষা কি এমন বিষয় যে এতে কাঙ্খিত ফলাফল না করলে জীবনটাই ত্যাগ করতে হবে!জীবনের কি বুঝে অবুঝ ছেলে মেয়েগুলো!
পড়াশোনা বিষয়টা ক্রমশ বিভীষিকায় পরিণত হচ্ছে, এতে নেই আনন্দ নেই প্রাণ কেবল প্রতিযোগিতা কর,প্রতিযোগিতায় সেরা হও তা না হলে জুটবে তিরষ্কার, চলবে তুলনা।
কোনও মানুষই তুলনা পছন্দ করে না,সবার মেধা এক নয়,সবার ধারণ ক্ষমতা এক নয় কিন্তু আমাদের অভিভাবকদের চিন্তাধারা একটি জায়গায় সীমাবদ্ধ তা হলো- যে করেই হোক সেরা হও।অভিভাবকের চাপে সেরা হতে গিয়ে কত শিক্ষার্থী বেছে নেয় অনৈতিক পথ, অনেক সময় অভিভাবকেরাও।
অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও থাকে সেরা হবার চাপ।
কি হয় সেরা হলে? পৃথিবীতে অনেক সফল মানুষ আছেন যারা পরীক্ষার বৈতরণী পার হতে পারেন নি সেরা দূরের কথা।
***
আমাদের শিক্ষার পদ্ধতিটা কী? গণ্ডায় গণ্ডায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে,কী বের হয়ে আসছে ওখান থেকে! কেবল হতাশা ছাড়া আর কিছু নয়।
কাগজ গিলে খেলে জ্ঞানার্জন হয়? যদি তা ধারণ করা না হয়?
বস্তার বস্তা সনদ শুধু ভালো চাকরি পাবার জন্য? তারপর কী হয়?
আমাদের অভিভাবকদের প্রত্যাশা ছেলে ভালো চাকরি বাগাবে,তিনহাতে টাকা রুজি করবে, নয়তো বিদেশে ভালো চাকরি করবে।
শুধু নিজের জন্য চিন্তা।সবাই কেন যে আমের পোড়া বড়া হতে চায় বুঝি না।পোড়া বড়া শুধু খাওয়াই যায়,আর কি কাজে লাগে?
আপাদমস্তক আমাদের শিক্ষার লক্ষ্য একটাই তা হলো ভালো রোজগেরে হওয়া।
অথচ শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে অনেক ভালো ভালো কথা লেখা আছে দেখলাম।
***
স্লোগান আছে " শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে জ্বালো"
শিক্ষা তো এমনই এক আলো হবে যা কেবল নিজেকে আলোকিত করবে না,চারদিকে আলো ছড়াবে।
এই যে এত এত শিক্ষাঙ্গন, এই যে এত এত ডিগ্রীধারী-- কোথায় আলো?
কোথায় গেলো আমাদের মূল্যবোধ,কোথায় গেলো পারস্পরিক সেই শ্রদ্ধার জায়গাটুকু,কোথায় হারালো আমাদের মমতার প্রাঙ্গন?
বিসদৃশ আচরণে ক্রমশ অভ্যস্ত হয়ে জলাঞ্জলি দিচ্ছি যাবতীয় আলো আর হারিয়ে যাচ্ছি কোন অতল অন্ধকারে? কে দেবে উত্তর!
***
জানি কেউ নেই আজ কারও জন্য,সবাই নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। ব্যস্ত পাবার নেশায়।এ নেশা কখন কবে থামবে কে জানে!
***
আমাদের তো সেই শিক্ষার প্রয়োজন যে শিক্ষা আমাদের জীবনকে শেখাতে সাহায্য করবে,জীবনবোধ তৈরি করতে সাহায্য করবে।
তা নয় বড় বড় ডিগ্রী নিয়ে, ভালো ফলাফল করে যখন চাকরি না পেয়ে ঘুরে ছেলেগুলো তখন ওরা হয় কলাগাছ,অষ্টরম্ভা নামে অভিহিত।তাই উপায় খুঁজতে হয় কিভাবে ভালো চাকরি বাগানো যায়,কপাল ভালো থাকলে তা জুটবে তখনই রাতারাতি হয়ে যাবে সোনার টুকরো ছেলে।
যে দরে চাকরি সেই দরে শুরু হয় উসুল। দোষ কাকে কে দেবে!
***
আপনার সন্তান প্রয়োজনে দুটো ডাল ভাত ফুটিয়ে খেতে পারে না,বাজার করতে পারে না তাহলে কি হলো এত বই গিলে।
বই গিলার বস্তু নয়,সার্টিফিকেট অর্জন মানে শিক্ষা নয়।
খুবই প্রয়োজন আমাদের এই তুলনা সৃষ্টিকারী বিভাজিত শিক্ষা পদ্ধতির সংস্কার।
সংস্কারে হাত দিলেও তো ওরাই করবেন যাদের সন্তানেরা এদেশে পড়ে না।
বড় ভালো আছি আমরা,উপর থেকে আপেল পড়ুক আর বাজই পড়ুক টুপ করে ধরে নিতেই হবে আমাদের।
***
অভিভাবক শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ ছেলেমেয়েগুলোকে শেখান জীবন বোধ,শেখান জীবন মানেই কন্টকশয্যা,এখানে হার-জিত আছে তবে ঘুরে দাড়াবারও সুযোগ আছে।
সুখ দুঃখ,হার জিত মিলেই এই জীবন যতদিন বেঁচে থাকা।
নিজের চলে যাওয়া নিজেকেই কেন বেছে নিতে হবে?
শিক্ষা এবার আমাদের শেখাক জীবন মানে সুখ দুঃখ নিয়ে বহুদূর যাওয়া,ঝরে পড়া নয়।
শিক্ষা হোক প্রতিযোগিতামুক্ত,শিক্ষার্থী থাকুক তুলনার বাইরে।
--১৯/০৭/২০১৯
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
বেগম সেলিনা খাতুন ০৫/০৫/২০২০শিক্ষা হোক প্রতিযোগিতা মুক্ত। অসাধারন চিন্তা। ভালো থাকবেন সব সময়।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৭/১২/২০১৯ভালো লিখেছেন।