আম আমজনতা আমলা
আম-আমজনতা-আমলা
--
***
জৈষ্ঠ মাসকে মধুমাস বলে।
কারণ? পাকা মিস্ট ফলের গন্ধে মৌ মৌ চারদিক।
না,এখন নয় এটা আরও আগের কথা।এখন মধুমাসের ফলে বাজার সয়লাব,ওতে মৌ মৌ গন্ধ নেই তবে আছে কার্বাইড,ফরমালিন সহ বিভিন্ন নামের প্রিজার্ভেটিভ।
বসতভিটায় আগে থাকতো গাছ।
কথাই ছিলো এমন," সাজাইলে বাড়ি,পিন্দাইলে নারী"।
এ সাজানো ছিলো হরেক রকম গাছ দিয়ে সাজানো।
এখন গাছ দিয়ে সাজায় না কেউ,সাজানোর তালিকায় কত নতুন উপাদান যুক্ত হয়েছে!
যারা গাছ দিয়ে সাজান তারা কাষ্ঠল বৃক্ষ দিয়ে সাজান, নয় ফলমুলের গাছ দিয়ে, কারণ পাকা ফলে পোঁকা থাকে।পোকার জন্য যতই বালাইনাশক ব্যবহার হোক না কেন," যেমন বুনো ওল, তেমনি বাঘা তেঁতুল" এর মতো যত পোকা আছে সব অভিযোজিত হয়ে যাচ্ছে।
ফলে যত পোকা,কীট তত ওষুধ - ফলাফল ডোজের মাত্রা বাড়ছো,কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
ফলের মার্কেটের সামনেই রিকশাটা ছিলো,পাকা পাকা আম, লিচু আরও কত কি!
কত বছর আম খাই না?
গাছ দুটো আছে বটে, ওতে পোকা।
বাজারে আছে বটে, ভেজালে হবো বোকা।
তাই আম কিনি না ভয়ে।
" কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে?"
আমি নই অন্তত,তবে আম নিয়ে ভাবনায় পেলো।কারণ আছে,রিকশা এগোচ্ছে না,সামান্য জট আছে সামনে।
মনে আছে বহু আগে আরিচায় পড়েছিলাম যানজটের মহাজটে।
অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ পথ অতিক্রম করা কালে নিরাপত্তার খাতিরে বা দ্রুত চলাচলের খাতিরে সাধারণের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়।
সাধারণ কারা? আমজনতা?
***
আম নিয়ে কত শব্দ আছে?
মনে করছি-
* আমগন্ধি- আমের ন্যায় গন্ধ,আমে যেহেতু এখন গন্ধ নেই কাজেই ওটা হবে আমযুক্ত ( অপক্ক) মলের গন্ধ।
অপক্ক খাদ্যের বা রান্নার গন্ধও হতে পারে।
* আমগর্ভ- অপরিণত গর্ভ।
* আমজ্বর- অপক্ক জ্বর।
* আমতা- আমসত্ত্ব( যাহা দুধে ফেলিয়া কদলী দলিয়া কবিগুরু খাইয়াছিলেন)।
* আমতা আমতা- স্বীকারও নয়,অস্বীকারও নয়।আব্দলু করিমের গানের মতো ( ভাসেও না,ডুবেও না)।
* আম দরবার- সাধরাণের দরবার।
* আমবাত- অপক্ক বাত।
* আমরক্ত- অপরিণত রক্ত।
* আমরস- অপরিপক্ক রস।
* আমরণ - মরণ পর্যন্ত।
আমলাও আছে কিন্তু
আমরণ পর্যন্ত এসে থেমে গেলাম।
এর বেশি গেলে আমরণ অনশনের কথা মনে পড়তে থাকবে কেবল,এর বেশি যাওয়াও যাবে না।তবে আম নিয়ে আরও বহু শব্দ আছে।
***
আসি আম এ।
আম- আম একটি আরবী উপসর্গ। যার অর্থ সাধারণ বা নির্বিশেষে।সকল স্তরের মানুষ।
সংস্কৃতেও আম শব্দটি আছে।
আম- ( বিশেষ্য) অন্ত্রের নির্যাস,ফল,সাধা
রণ।
আম- ( বিশেষণ) কাঁচা,অপক্ক,অদগ
্ধা,অজীর্ণ।(অনলাইন অভিধান)
***
আমলা-( বিশেষ্য) আমলকী ফল।আমলকী তেলের গুণাগুণ টিভিতে অনেক দেখেছি,ব্যবহার করা হয় নাই।
আমলা- ( বিশেষ্য)কর্মচারী,কেরাণী।( অনলাইন অভিধান)
আমলা প্রকৃত অর্থ বিনামূল্যে।
সেরা অর্থ- বন্ধুত্বপূর্ণ,উপযুক্ত,উদার,আরা
মদায়ক,আধুনিক,সক্রিয়,মনোযোগী,ভা
গ্যবান,স্বাভাবিক।( সারনেইম এনালাইসিস)
***
তাহলে আমজনতা হলো সাধারণ মানুষ।সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।তাহলে যারা আম দ্রুত পাকাতে, সংরক্ষণ করে দাম বাড়াতে ক্যামিকেল ইউজ করে, তারা কি আমজনতার অন্তর্ভুক্ত নন?
কি জানি,কে জানে?
***
বঙ্গীয় শব্দার্থকোষে আসি।
আ বর্ণটি হচ্ছে অ বর্ণের আধার।
অ+অ= আ।
'অ' অস্তিত্ব হলে ' আ' অস্তিত্বধারী।
( অস্তিত্ব হচ্ছে সত্ত্বা,স্থিতি,
জীবন,বিদ্যমানতা,জীব,জীবনকাল,থাকা।)
যদি একগ্লাস পানিকে অস্তিত্ব ধরি তবে গ্লাসটি হলো তার আধার।
'আ' একটি উপসর্গও বটে।যখন সে উপসর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন সে যে ক্রিয়ার ধারক হয়, তখন তাকে সে তার স্বরূপে ধারণ করে।
যেমন আ উপসর্গ দিয়ে আকাশ,
তার বিপরীত উপসর্গ প্র দিয়ে প্রকাশ।
আচার- প্রচার,আহার- বিহার, এরকম।
***
আম এসেছে অম থেকে।
অম-অস্তিত্ব সীমায়িত যাহাতে।
আম- অম এর আধার।
আম- সীমায়িত গতির আশ্রয় যাহাতে/যাহা পীড়িত করে।
আম- অপক্ক,কাঁচা,অপরিণত,অজীর্ণ রোগ,অসিদ্ধ।
***
প্রাচীনকালে আম বলতে গাছের আম যেমন বুঝাতো, তেমনি শারিরীক আমও বুঝাতো।
গাছের আম গাছে পাকে,শরীরের আম হয় আমাশয় রোগ হলে।
"সীমায়িত গতি যাহাতে" এমন সব কিছুই আম কাজেই মানসিক আমও আছে।
ব্যক্তিমালিকানা বোধই মানসিক আম।
যার ভেতরে এই বোধ থাকে সে কেবল আমি আমি করে।
ইংরেজি am i - যার অর্থ আমি হই ( আমি একজন ব্যক্তি মালিক)।
যার ভেতরে আমিত্ব বোধ প্রবল সে নিঃসন্দেহে স্বার্থপর ও অহংকারী।
***
আমলা- আম যে আধারে লালিত,লয়িত।
সীমায়িত গতির আশ্রয় যাহাতে তাহা লালিত, লয়িত যে আধারে।
( প্রতিটি বাংলা বর্ণের নিজস্ব অর্থ আছে,আছে প্রতিটি শব্দের ইতিহাস।বর্ণগুলোর অর্থ আমি আমার সীমিত জ্ঞান দিয়ে যতদূর সম্ভব অন্যত্র আলোচনা করেছি।)
---- কৃতজ্ঞতাঃ বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ,বঙ্গীয় শব্দকোষ,অনলাইন বাংলা একাডেমি অভিধান,সারনেম এনালাইসিস( নেট)
০৯/০৬/২০১৯।
--
***
জৈষ্ঠ মাসকে মধুমাস বলে।
কারণ? পাকা মিস্ট ফলের গন্ধে মৌ মৌ চারদিক।
না,এখন নয় এটা আরও আগের কথা।এখন মধুমাসের ফলে বাজার সয়লাব,ওতে মৌ মৌ গন্ধ নেই তবে আছে কার্বাইড,ফরমালিন সহ বিভিন্ন নামের প্রিজার্ভেটিভ।
বসতভিটায় আগে থাকতো গাছ।
কথাই ছিলো এমন," সাজাইলে বাড়ি,পিন্দাইলে নারী"।
এ সাজানো ছিলো হরেক রকম গাছ দিয়ে সাজানো।
এখন গাছ দিয়ে সাজায় না কেউ,সাজানোর তালিকায় কত নতুন উপাদান যুক্ত হয়েছে!
যারা গাছ দিয়ে সাজান তারা কাষ্ঠল বৃক্ষ দিয়ে সাজান, নয় ফলমুলের গাছ দিয়ে, কারণ পাকা ফলে পোঁকা থাকে।পোকার জন্য যতই বালাইনাশক ব্যবহার হোক না কেন," যেমন বুনো ওল, তেমনি বাঘা তেঁতুল" এর মতো যত পোকা আছে সব অভিযোজিত হয়ে যাচ্ছে।
ফলে যত পোকা,কীট তত ওষুধ - ফলাফল ডোজের মাত্রা বাড়ছো,কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
ফলের মার্কেটের সামনেই রিকশাটা ছিলো,পাকা পাকা আম, লিচু আরও কত কি!
কত বছর আম খাই না?
গাছ দুটো আছে বটে, ওতে পোকা।
বাজারে আছে বটে, ভেজালে হবো বোকা।
তাই আম কিনি না ভয়ে।
" কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে?"
আমি নই অন্তত,তবে আম নিয়ে ভাবনায় পেলো।কারণ আছে,রিকশা এগোচ্ছে না,সামান্য জট আছে সামনে।
মনে আছে বহু আগে আরিচায় পড়েছিলাম যানজটের মহাজটে।
অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ পথ অতিক্রম করা কালে নিরাপত্তার খাতিরে বা দ্রুত চলাচলের খাতিরে সাধারণের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়।
সাধারণ কারা? আমজনতা?
***
আম নিয়ে কত শব্দ আছে?
মনে করছি-
* আমগন্ধি- আমের ন্যায় গন্ধ,আমে যেহেতু এখন গন্ধ নেই কাজেই ওটা হবে আমযুক্ত ( অপক্ক) মলের গন্ধ।
অপক্ক খাদ্যের বা রান্নার গন্ধও হতে পারে।
* আমগর্ভ- অপরিণত গর্ভ।
* আমজ্বর- অপক্ক জ্বর।
* আমতা- আমসত্ত্ব( যাহা দুধে ফেলিয়া কদলী দলিয়া কবিগুরু খাইয়াছিলেন)।
* আমতা আমতা- স্বীকারও নয়,অস্বীকারও নয়।আব্দলু করিমের গানের মতো ( ভাসেও না,ডুবেও না)।
* আম দরবার- সাধরাণের দরবার।
* আমবাত- অপক্ক বাত।
* আমরক্ত- অপরিণত রক্ত।
* আমরস- অপরিপক্ক রস।
* আমরণ - মরণ পর্যন্ত।
আমলাও আছে কিন্তু
আমরণ পর্যন্ত এসে থেমে গেলাম।
এর বেশি গেলে আমরণ অনশনের কথা মনে পড়তে থাকবে কেবল,এর বেশি যাওয়াও যাবে না।তবে আম নিয়ে আরও বহু শব্দ আছে।
***
আসি আম এ।
আম- আম একটি আরবী উপসর্গ। যার অর্থ সাধারণ বা নির্বিশেষে।সকল স্তরের মানুষ।
সংস্কৃতেও আম শব্দটি আছে।
আম- ( বিশেষ্য) অন্ত্রের নির্যাস,ফল,সাধা
রণ।
আম- ( বিশেষণ) কাঁচা,অপক্ক,অদগ
্ধা,অজীর্ণ।(অনলাইন অভিধান)
***
আমলা-( বিশেষ্য) আমলকী ফল।আমলকী তেলের গুণাগুণ টিভিতে অনেক দেখেছি,ব্যবহার করা হয় নাই।
আমলা- ( বিশেষ্য)কর্মচারী,কেরাণী।( অনলাইন অভিধান)
আমলা প্রকৃত অর্থ বিনামূল্যে।
সেরা অর্থ- বন্ধুত্বপূর্ণ,উপযুক্ত,উদার,আরা
মদায়ক,আধুনিক,সক্রিয়,মনোযোগী,ভা
গ্যবান,স্বাভাবিক।( সারনেইম এনালাইসিস)
***
তাহলে আমজনতা হলো সাধারণ মানুষ।সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।তাহলে যারা আম দ্রুত পাকাতে, সংরক্ষণ করে দাম বাড়াতে ক্যামিকেল ইউজ করে, তারা কি আমজনতার অন্তর্ভুক্ত নন?
কি জানি,কে জানে?
***
বঙ্গীয় শব্দার্থকোষে আসি।
আ বর্ণটি হচ্ছে অ বর্ণের আধার।
অ+অ= আ।
'অ' অস্তিত্ব হলে ' আ' অস্তিত্বধারী।
( অস্তিত্ব হচ্ছে সত্ত্বা,স্থিতি,
জীবন,বিদ্যমানতা,জীব,জীবনকাল,থাকা।)
যদি একগ্লাস পানিকে অস্তিত্ব ধরি তবে গ্লাসটি হলো তার আধার।
'আ' একটি উপসর্গও বটে।যখন সে উপসর্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন সে যে ক্রিয়ার ধারক হয়, তখন তাকে সে তার স্বরূপে ধারণ করে।
যেমন আ উপসর্গ দিয়ে আকাশ,
তার বিপরীত উপসর্গ প্র দিয়ে প্রকাশ।
আচার- প্রচার,আহার- বিহার, এরকম।
***
আম এসেছে অম থেকে।
অম-অস্তিত্ব সীমায়িত যাহাতে।
আম- অম এর আধার।
আম- সীমায়িত গতির আশ্রয় যাহাতে/যাহা পীড়িত করে।
আম- অপক্ক,কাঁচা,অপরিণত,অজীর্ণ রোগ,অসিদ্ধ।
***
প্রাচীনকালে আম বলতে গাছের আম যেমন বুঝাতো, তেমনি শারিরীক আমও বুঝাতো।
গাছের আম গাছে পাকে,শরীরের আম হয় আমাশয় রোগ হলে।
"সীমায়িত গতি যাহাতে" এমন সব কিছুই আম কাজেই মানসিক আমও আছে।
ব্যক্তিমালিকানা বোধই মানসিক আম।
যার ভেতরে এই বোধ থাকে সে কেবল আমি আমি করে।
ইংরেজি am i - যার অর্থ আমি হই ( আমি একজন ব্যক্তি মালিক)।
যার ভেতরে আমিত্ব বোধ প্রবল সে নিঃসন্দেহে স্বার্থপর ও অহংকারী।
***
আমলা- আম যে আধারে লালিত,লয়িত।
সীমায়িত গতির আশ্রয় যাহাতে তাহা লালিত, লয়িত যে আধারে।
( প্রতিটি বাংলা বর্ণের নিজস্ব অর্থ আছে,আছে প্রতিটি শব্দের ইতিহাস।বর্ণগুলোর অর্থ আমি আমার সীমিত জ্ঞান দিয়ে যতদূর সম্ভব অন্যত্র আলোচনা করেছি।)
---- কৃতজ্ঞতাঃ বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ,বঙ্গীয় শব্দকোষ,অনলাইন বাংলা একাডেমি অভিধান,সারনেম এনালাইসিস( নেট)
০৯/০৬/২০১৯।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ১৬/০৮/২০২৩চমৎকার শিক্ষনীয়
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১১/০৬/২০১৯ভালো।
-
মুহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন ১০/০৬/২০১৯শিক্ষণীয় বিষয়ে আলোকপাত। কবির শ্রম সার্থক হোক।
কবিকে শুভেচ্ছা অবিরাম।