হলুদ ভীতি
হলুূদ ভীতিঃ
---
বাসায় কিছুদিন ছিলাম না,না না না বাপের বাড়ি নয়।ওখানে যাওয়ার টাইম আছে সময় নেই,গেলেও বড়জোর ঘন্টা খানেক থাকা হয়।রাতে থেকে ছিলাম বিয়ের পর ভাইবোনের অনুরোধে ১৭ এর কোরবানী ঈদে।
বাসা,শ্বশুরবাড়ির মুরব্বীগণ নারাজ।ভাসুর গম্ভীর কণ্ঠে ফোনে নিষেধ করলেন যেতে।টোনা তো আগে থেকেই নারাজ।আর ওদের নারাজ করে আমি যে স্বর্গেও যাবনা,সেটা ওরা জানে।
আমার মন খারাপ।আমার ছেলেমেয়ে গুলো ভাবলো বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য বুঝি আমার মনভার।তারা বিদ্রোহ করলো।আম্মুকে তোমরা যেতে দাও নয়তো আমরা কেউ ঈদ করবো না।
আমি বার বার বলছি ঘটনা সেটা হয়।
ঘটনা তীব্র অসুস্থ ছিলাম আমি,শরীরের অসুস্থতা তীব্র হলে কাহাতক লুকানো যায়? মুখে ফুটে উঠে।
আমি অসুস্থ,ব্যথা অসহনীয়,বাবার বাড়ি যাবো তা নিয়ে ভাবিত না।
আমার মেয়ে মার্চ অন,আমাকে নিয়ে মামার বাড়ি গেলো।ভাসুর দেবর টোনা ওরাই ম্যানেজ করলো,আম্মু কাঁদছেন বাবার বাড়ি ঈদ করার জন্য।
আহা- এই বয়সে বাবার বাড়ি ঈদ করার জন্য কেউ কাঁদে।
যা হোক গেলাম।ভাই বোনেরা এসেছে।সবাই আনন্দ করছে,রিমি প্রতিবেলা নিত্য নতুন রেসিপি রেডি করছে।
মজাদার মুখরোচক।
আমি আর পারলাম না,শয্যাশায়ী।ঈদ মাটি,তীব্র ব্যথা।আল্লাহ রক্ষা আমার ঘুম।ঘুমে আচ্ছন্ন,রিমি কি সেবাটা করলো আমার।সাথে মুন্নী,মা বোন।আর মেয়ে?
সারাক্ষণ পাশে বসা,চেতন নেই আমার।আমার মুখ নীল হয়ে গেছে।ঈদের পর দিন টোনা উনার দুই ছেলেকে নিয়ে আমায় আনতে গেলেন।আমার বাসায় কোনও কাজের লোক কখনই ছিলো না,রাতারাতি বোন একটা হেল্পিং হেন্ড যোগাড় করে দিলো।বাসায় আসার একদিন পরই স্কুল খোলা।জয়েন করেতো ছুটি নিবো।
কোনও রকমে স্কুলের মাঠে ঢুকলাম,আমার সহকর্মীরা দৌড়ে এলো,আমার মুখ কালো বর্ণ,সর্বত্র ব্যথার চিহ্ন।ওরা আমায় ধরে নিয়ে গিয়ে বসালো।আমার যেতে দেরি হয়েছিলো তাই ওরা চিন্তিত ছিলো কারণ বরাবর আমি সবার আগে স্কুলে যাই।
ঘন্টা দুই পরে,ব্যথা কমেছে অনেক।অটোমেটিক,বিউটি আপা সঙ্গ দিচ্ছে।একসময় বললো ম্যাডাম কালো রঙটা একটু হালকা হয়েছে মনে হচ্ছে।
স্কুল যখন ছুটি,আমি পুরোপুরি সুস্থ।ব্যথা নেই এতটুকু।
বাসায় এসে সবাইকে বললাম আমার ব্যথা নেই।
এরই মধ্যে ভাইবোনেরা মাকে সহ দেখতে এলো।
স্থির হলো আমি ঢাকায় গিয়েই চেকআপ করাবো।
ছুটি নিয়েছিলাম বেশ কয়েকদিন পর,ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য।
ঢাকায় গিয়েও সুস্থ ছিলাম,রিমির সাথে সারাদিন ঘুরেছি।
তবে হ্যাঁ সমস্যা ব্যপক ছিলো।অনেক টেস্ট,প্রয়োজনীয় বলবো আমি,আমার অসুস্থতার সব কারণ ডাঃ শাকুর বের করে এনেছিলেন।
আমি ডাক্তারদের সম্মান করি।আমার পছন্দের ডাক্তার আছেন কয়েকজন।যাদের কাছে গিয়েছি সবাই,দরদ দিয়ে এমনভাবে কথা বলেন,কথায় রোগ অর্ধেক সারা।
আজ ডাঃ আলী আহসান সম্পর্কে পড়লাম,তিনি আমাদের মন্ত্রী মহোদয়কে চিকিৎসা দিয়েছিলেন।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকলে জরুরী সময়ে অসহায় তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কি করার থাকে!
ডাঃ শাকুর আমার সাথে টানা দুইঘন্টা কথা বলেছিলেন,তিনি ভুলে গিয়েছিলেন বাইরে রোগীরা অপেক্ষা করছে।
আমি উনাকে দোয়া করে এসেছিলাম।
আমি দোয়া করি আমাদের দেশের সকল ডাক্তারদের জন্য।যারা রোগীর মুখে হাসি ফোটান,কিন্তু পান থেকে চুন খসলে কত দুর্নাম- কত রটনা।
কিন্তু মূল্যায়ণ করি আমরা বিদেশি ডাক্তারদের।
বিদেশি সবকিছুই যে চটকদার।
শিক্ষকরাও এমন,আসল ঘটনা কি কেউ দেখেনা।যা খুশি লেখা যায়,জবাবদিহিতা নেই যে।
সকল জবাবদিহিতা এক দেখলাম শিক্ষকদের আর দেখলাম ডাক্তারদের।
নিজে ডাক্তার হইনি,কিন্তু আত্মীয়দের মধ্যে আছেন তো তাই কিছুটা তার জানতে পারি।আর পারি প্রিয় ডাক্তারদের চেম্বারে গেলে।
যাই হোক হলুদ দিয়ে শুরু করে কোথায় চলে গেলাম।
সর্ষের রঙ হলুদ,বিপদে পড়লে চোখে সর্ষে ফুল দেখে মানুষ।
মশলা হলুদ হয়,আর কি কি হলুদ হতে পারে?
কিছু কিছু হলুদ বর্জনীয় অবশ্যই।
তাতে সকলের মঙ্গল।
--০৫/০৩/২০১৯
---
বাসায় কিছুদিন ছিলাম না,না না না বাপের বাড়ি নয়।ওখানে যাওয়ার টাইম আছে সময় নেই,গেলেও বড়জোর ঘন্টা খানেক থাকা হয়।রাতে থেকে ছিলাম বিয়ের পর ভাইবোনের অনুরোধে ১৭ এর কোরবানী ঈদে।
বাসা,শ্বশুরবাড়ির মুরব্বীগণ নারাজ।ভাসুর গম্ভীর কণ্ঠে ফোনে নিষেধ করলেন যেতে।টোনা তো আগে থেকেই নারাজ।আর ওদের নারাজ করে আমি যে স্বর্গেও যাবনা,সেটা ওরা জানে।
আমার মন খারাপ।আমার ছেলেমেয়ে গুলো ভাবলো বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য বুঝি আমার মনভার।তারা বিদ্রোহ করলো।আম্মুকে তোমরা যেতে দাও নয়তো আমরা কেউ ঈদ করবো না।
আমি বার বার বলছি ঘটনা সেটা হয়।
ঘটনা তীব্র অসুস্থ ছিলাম আমি,শরীরের অসুস্থতা তীব্র হলে কাহাতক লুকানো যায়? মুখে ফুটে উঠে।
আমি অসুস্থ,ব্যথা অসহনীয়,বাবার বাড়ি যাবো তা নিয়ে ভাবিত না।
আমার মেয়ে মার্চ অন,আমাকে নিয়ে মামার বাড়ি গেলো।ভাসুর দেবর টোনা ওরাই ম্যানেজ করলো,আম্মু কাঁদছেন বাবার বাড়ি ঈদ করার জন্য।
আহা- এই বয়সে বাবার বাড়ি ঈদ করার জন্য কেউ কাঁদে।
যা হোক গেলাম।ভাই বোনেরা এসেছে।সবাই আনন্দ করছে,রিমি প্রতিবেলা নিত্য নতুন রেসিপি রেডি করছে।
মজাদার মুখরোচক।
আমি আর পারলাম না,শয্যাশায়ী।ঈদ মাটি,তীব্র ব্যথা।আল্লাহ রক্ষা আমার ঘুম।ঘুমে আচ্ছন্ন,রিমি কি সেবাটা করলো আমার।সাথে মুন্নী,মা বোন।আর মেয়ে?
সারাক্ষণ পাশে বসা,চেতন নেই আমার।আমার মুখ নীল হয়ে গেছে।ঈদের পর দিন টোনা উনার দুই ছেলেকে নিয়ে আমায় আনতে গেলেন।আমার বাসায় কোনও কাজের লোক কখনই ছিলো না,রাতারাতি বোন একটা হেল্পিং হেন্ড যোগাড় করে দিলো।বাসায় আসার একদিন পরই স্কুল খোলা।জয়েন করেতো ছুটি নিবো।
কোনও রকমে স্কুলের মাঠে ঢুকলাম,আমার সহকর্মীরা দৌড়ে এলো,আমার মুখ কালো বর্ণ,সর্বত্র ব্যথার চিহ্ন।ওরা আমায় ধরে নিয়ে গিয়ে বসালো।আমার যেতে দেরি হয়েছিলো তাই ওরা চিন্তিত ছিলো কারণ বরাবর আমি সবার আগে স্কুলে যাই।
ঘন্টা দুই পরে,ব্যথা কমেছে অনেক।অটোমেটিক,বিউটি আপা সঙ্গ দিচ্ছে।একসময় বললো ম্যাডাম কালো রঙটা একটু হালকা হয়েছে মনে হচ্ছে।
স্কুল যখন ছুটি,আমি পুরোপুরি সুস্থ।ব্যথা নেই এতটুকু।
বাসায় এসে সবাইকে বললাম আমার ব্যথা নেই।
এরই মধ্যে ভাইবোনেরা মাকে সহ দেখতে এলো।
স্থির হলো আমি ঢাকায় গিয়েই চেকআপ করাবো।
ছুটি নিয়েছিলাম বেশ কয়েকদিন পর,ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় যাওয়ার জন্য।
ঢাকায় গিয়েও সুস্থ ছিলাম,রিমির সাথে সারাদিন ঘুরেছি।
তবে হ্যাঁ সমস্যা ব্যপক ছিলো।অনেক টেস্ট,প্রয়োজনীয় বলবো আমি,আমার অসুস্থতার সব কারণ ডাঃ শাকুর বের করে এনেছিলেন।
আমি ডাক্তারদের সম্মান করি।আমার পছন্দের ডাক্তার আছেন কয়েকজন।যাদের কাছে গিয়েছি সবাই,দরদ দিয়ে এমনভাবে কথা বলেন,কথায় রোগ অর্ধেক সারা।
আজ ডাঃ আলী আহসান সম্পর্কে পড়লাম,তিনি আমাদের মন্ত্রী মহোদয়কে চিকিৎসা দিয়েছিলেন।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকলে জরুরী সময়ে অসহায় তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কি করার থাকে!
ডাঃ শাকুর আমার সাথে টানা দুইঘন্টা কথা বলেছিলেন,তিনি ভুলে গিয়েছিলেন বাইরে রোগীরা অপেক্ষা করছে।
আমি উনাকে দোয়া করে এসেছিলাম।
আমি দোয়া করি আমাদের দেশের সকল ডাক্তারদের জন্য।যারা রোগীর মুখে হাসি ফোটান,কিন্তু পান থেকে চুন খসলে কত দুর্নাম- কত রটনা।
কিন্তু মূল্যায়ণ করি আমরা বিদেশি ডাক্তারদের।
বিদেশি সবকিছুই যে চটকদার।
শিক্ষকরাও এমন,আসল ঘটনা কি কেউ দেখেনা।যা খুশি লেখা যায়,জবাবদিহিতা নেই যে।
সকল জবাবদিহিতা এক দেখলাম শিক্ষকদের আর দেখলাম ডাক্তারদের।
নিজে ডাক্তার হইনি,কিন্তু আত্মীয়দের মধ্যে আছেন তো তাই কিছুটা তার জানতে পারি।আর পারি প্রিয় ডাক্তারদের চেম্বারে গেলে।
যাই হোক হলুদ দিয়ে শুরু করে কোথায় চলে গেলাম।
সর্ষের রঙ হলুদ,বিপদে পড়লে চোখে সর্ষে ফুল দেখে মানুষ।
মশলা হলুদ হয়,আর কি কি হলুদ হতে পারে?
কিছু কিছু হলুদ বর্জনীয় অবশ্যই।
তাতে সকলের মঙ্গল।
--০৫/০৩/২০১৯
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আব্দুর রহমান আনসারী ১৬/০৮/২০২৩সুন্দর
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৬/০৬/২০১৯কিছু বলার নেই।