www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

নারী-২

অতঃপর তুমি আবারো সঙ্কিত চাহনিতে
গালে আঁকা শাদা অশ্রুরেখার সরু চিহ্ন নিয়ে প্রবহমান-  
সময়ের বিপরীতে বারংবার।সব লগ্নেই যেন তুমি লগ্নভ্রষ্টা,
স্বার্থের তীক্ষ্ণ নখের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত হও প্রতিনিয়ত,
অসহায় চিত্তে সয়ে যাও নিয়মের শৃঙ্খলিত লাঞ্ছনা।
খোলা চুলের স্বাধীনতা কেবল  পুরুষনির্ভর,
সূর্যতো সবার জন্যই শাশ্বত। তবু তাকে তোমা হতে
কেড়ে নেয়া হয়,নিয়মের হিংস্র দাসত্বে হয়ে যাও তুমি
অসূর্যস্পর্শা। অথচ পার্বতী হতে পাঞ্চালী ,
ইভ হতে মাতা মেরী  সর্বত্রই তোমার কীর্তি গাঁথা।
কখনোবা অসুরের দমন, কখনো খ্রিষ্টের গর্বিত জননী
নাইটেঙ্গেল হয়ে বাঁচিয়ে তুলেছ শতশত অর্ধমৃত প্রাণ,
শক্তি যুগিয়েছ  নতুন করে বাঁচার,
হাজারো কবিতার অলঙ্কার তুমি কখনোবা পূজারিণী ,
কখনো হয়তো পাখির নীড়ের মতোচোখ তুলে সাক্ষাৎ
বনলতা সেন। তুমি ছিলে তাই কবিতায় বয়ে গেলো
নিরবধি স্রোতস্বিনীদম্ভিত ঊর্মিতালে । নির্ঝরিণী সুর তোলে
জল তরঙ্গের। অথচ সেই অপরূপ আভা ইতিহাস
কিংবা পাণ্ডুলিপিকে ছাপিয়ে বর্তমানকে জীবন্ত করতে পারেনি।
এখনো নিশীথে তোমায় ভীত করেধর্ষকামীর কলুষিত হাত।
অনিচ্ছায় লজ্জিত হয়ে পরিচিত হতে হয় অবরোধবাসিনী রূপে
প্রথার নির্লজ্জ গ্রাসে। ছন্দময় কবিতায় নিমেষে
সুরের বিচ্যুতি। ধর্ম মুহূর্তে রূপ বদলে পরিচালিত হয়
ক্ষমতাবানদের স্বেচ্ছাচারিতায়। তোমায়
বেঁধে ফেলে গৃহকোণে। স্বপ্নাকাশে পরাধীনতার শেকল
তখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রূপ নেয় দুঃস্বপ্নের কালো মেঘে।
প্রানবন্ত তোমাকে সমাজের লালসায়
হতে হয় কামিত মাংসপিণ্ড।
বাকময় দেহে শৈল্পিক স্তন আর নিতম্ব যেন
কলুষিত কিছু পুরুষের কুৎসিত কামনার উর্বরতা ।
তুমি আর কাব্যময় নিসর্গ নও,
যৌনতার মোহময় উপঢৌকন মাত্র।
নিঃশব্দে প্রতিবাদহীন ধর্ষিত হও হিংস্র অসুরের হাতে
সমাজের কুণ্ঠিত স্বার্থপরতায়।
রক্তক্ত দেহে ক্ষতের সাথে বয়ে বেড়াও
ধর্মবাজের নিক্ষিপ্ত লজ্জা।
বিষয়শ্রেণী: কবিতা
ব্লগটি ৬০৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০১/১০/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • পরিপক্বতার তীব্র গন্ধ ভেসে আসছে কবিতার প্রতিটা লাইন থেকে । অনেক ভাল লাগলো । শুভেচ্ছে রইলো কবি বন্ধুর প্রতি ।
  • চমৎকার ভাবনা।
  • এক কথায় অসাধারন। অনেক পরিপক্ক একটা লেখা খুব ভালো লাগলো।
 
Quantcast