ভদ্র না হওয়াটাই দোষের
ভদ্র না হওয়াটাই দোষের
-কামরুজ্জামান সাদ
আমরা ভদ্রতা নামক সংবেদনশীল জিনিসটাকে তোয়াক্কা করছি না।কেউ আপনার উপকার করলো অথচ তাকে থ্যাংকস্ জানালেন না,আবার নিজে ভুল করলে অন্তত স্যরি বলার প্রয়োজনীয়তা মনে করলেন না তবে আপনাকে আর যাইহোক আমি ভদ্র বলতে পারছি না।যারা আমার থেকে বয়সে ছোট তাদেরকে যেমন আপনি বলে সম্বোধন করি আবার মাঝে মাঝে সমবয়সিদেরকেও আপনি বলে থাকি।এতে করে ছোটদের ভেতরে শ্রদ্ধা নামক জিনিসটা গড়ে উঠতে পারে।যারা আমার থেকে বড় তাদেরকে আপনি বলে সম্বোধন করি।এইতো কিছুদিন আগে কলেজ বাসে করে বাড়ি ফিরছিলাম।ভাগ্যক্রমে জানালার পাশে সিট পেয়েছি।এই সিটগুলো আগে থেকেই বরাদ্দ হয়ে যায়।পাশে একটা মেয়ে বসেছিলো যেটা অসস্তিকর।কলেজ ড্রেস পড়েছিলো।খুব সম্ভবত প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী কারণ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক নয়।তবে দ্বিতীয় বর্ষের হলেও অবাক হবো না।এতটুকু পর্যন্ত ঠিক ছিলো,এরপরেই ঘটল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।চকোলেট খেয়ে তার মোড়ক বাইরে ফেলত গিয়ে ফেললো আমার গায়ে!আমার আবার অল্পে রেগে যাওয়ার স্বভাবটা মাধ্যমিকেই বাদ দিতে হয়েছে নতুবা রেগে যেতাম।শান্তস্বরে বললাম,মোড়কটা আমার হাতে দিলেই পারতেন,ফেলে দিতাম।গায়ে ফেলানোর দরকার ছিলো না।সে এখানে স্যরি বলতে পারতো,কিন্তু বললো না।উল্টো ঝগড়া আরম্ভ করলো।একচেটিয়া ঝগড়া।আমি চুপ করে ছিলাম কারণ আমি ঝগড়া করতে পারি না।বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হওয়ার একটা পুরষ্কার থাকলেও ঝগড়া করতে পারিনা,ঝগড়া আর বিতর্ক এক জিনিস নয়।যেহেতু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে সেহেতু দর্শক যুদ্ধের ময়দানের দিকে তাকিয়ে আছে।বাসভর্তি দর্শক!সকলে হয়তো মেয়েটার পক্ষে সাফাই গাইবে,কারণ মেয়েরা ভুল করতে পারেনা!কিন্তু সেই গুড়ে বালি দিয়ে পেছনের সিট থেকে একবন্ধু বলে উঠলো,কি হইছেরে সাদ?আমি কিছু বললাম না,চুপ করেই থাকলাম।বিচক্ষণ বন্ধু যা বোঝার বুঝে নিয়েছে।ও আবার রাজনীতি করে।ঝগড়া শুরু হয়ে গেলো।আমি হাজারো বলে বন্ধুটিকে থামাতে পারলাম না।একসময় দেখলাম মেয়েটি তুই তুকারি শুরু করেছে।আমি বললাম,আপু আপনি ওকে তুই তুকারি করছেন কেনো?ওতো আপনার বড়ই হবে।তখন মেয়েটি যা বললো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।সরাসরি বললো,ওইসব বড় দেখা আছে।কি সাংঘাতিক!কিছুক্ষণ পরে মেয়েটি তার গন্তব্যে নেমে গেলো।পাশের সিটগুলো থেকে বলা শুরু হলো-এমকে জামানের(আমাকে অনেকেই এমকে জামান বলে সম্বোধন করে) সাথে ঝগড়া করে এটাতো সাংঘাতিক মেয়ে!মেয়েটা দেখলা কীভাবে কথা বললো!এই টাইপের কথাগুলো বড্ড বিরক্ত লাগে।এই কথাগুলো মেয়েটার সামনে বললে হয়তো পরিস্থিতি ভিন্ন হতো।মেয়েটা চুপ করে যেতো পারতো।অথবা মেয়েটার আগে আমি বাস ত্যাগ করলে হয়তো দোষটা আমার কাধে দিতে এই দর্শকমন্ডলী ভুল করতো না।দোষটা কার ছিলো জানি না।চুপচাপ মোড়কটা গা থেকে তুলে ফেলে দিলে হয়তো এই ঝামেলাটুকু হতো না অথবা মেয়েটা বাসে আসার সাথে সাথে তাকে জানালার পাশে বসতে দেওয়া উচিত ছিলো,সে নির্বিঘ্নে মোড়কটা ফেলতে পারতো।তবে মেয়েটা ভদ্রতার খাতিরে স্যরি বলতে পারতো,বড়দের সম্মান জানিয়ে আপনি বলতে পারতো।এই চাওয়াটা খুব বেশি কিনা জানিনা।আমি বলবো মেয়েটি যথেষ্ট ভদ্র নয়,তাকে অভদ্র বলে গালি দিবো না বরং সে উপযুক্ত পরিবেশে ভদ্রতা শিখে উঠতে পারেনি এজন্য অনুশোচনা করবো।একটা কলেজ পড়ুয়া মেয়ের দ্বারা এই ভদ্রতাটুকু অন্তত আশা করাই যায়।এটা কিন্তু সবমেয়ের চিত্র নয়।অনেক ভদ্র মেয়ে আমি দেখেছি যারা ভুল করলে স্যরি বলে,অনুশোচনা করে ভুল করার জন্য।আবার থ্যাংকস্ বলে সামান্য উপকৃত হলে।অনেক ছেলেমেয়ে উপযুক্ত ভদ্রতা শিখেছে আবার অনেকে এখনো ভদ্র হয়ে উঠতে পারেনি।আপনি ভদ্র হয়ে গেলে কিন্তু দোষের নয়,বরং ভদ্র না হওয়াটাই দোষের।
-কামরুজ্জামান সাদ
আমরা ভদ্রতা নামক সংবেদনশীল জিনিসটাকে তোয়াক্কা করছি না।কেউ আপনার উপকার করলো অথচ তাকে থ্যাংকস্ জানালেন না,আবার নিজে ভুল করলে অন্তত স্যরি বলার প্রয়োজনীয়তা মনে করলেন না তবে আপনাকে আর যাইহোক আমি ভদ্র বলতে পারছি না।যারা আমার থেকে বয়সে ছোট তাদেরকে যেমন আপনি বলে সম্বোধন করি আবার মাঝে মাঝে সমবয়সিদেরকেও আপনি বলে থাকি।এতে করে ছোটদের ভেতরে শ্রদ্ধা নামক জিনিসটা গড়ে উঠতে পারে।যারা আমার থেকে বড় তাদেরকে আপনি বলে সম্বোধন করি।এইতো কিছুদিন আগে কলেজ বাসে করে বাড়ি ফিরছিলাম।ভাগ্যক্রমে জানালার পাশে সিট পেয়েছি।এই সিটগুলো আগে থেকেই বরাদ্দ হয়ে যায়।পাশে একটা মেয়ে বসেছিলো যেটা অসস্তিকর।কলেজ ড্রেস পড়েছিলো।খুব সম্ভবত প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী কারণ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক নয়।তবে দ্বিতীয় বর্ষের হলেও অবাক হবো না।এতটুকু পর্যন্ত ঠিক ছিলো,এরপরেই ঘটল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।চকোলেট খেয়ে তার মোড়ক বাইরে ফেলত গিয়ে ফেললো আমার গায়ে!আমার আবার অল্পে রেগে যাওয়ার স্বভাবটা মাধ্যমিকেই বাদ দিতে হয়েছে নতুবা রেগে যেতাম।শান্তস্বরে বললাম,মোড়কটা আমার হাতে দিলেই পারতেন,ফেলে দিতাম।গায়ে ফেলানোর দরকার ছিলো না।সে এখানে স্যরি বলতে পারতো,কিন্তু বললো না।উল্টো ঝগড়া আরম্ভ করলো।একচেটিয়া ঝগড়া।আমি চুপ করে ছিলাম কারণ আমি ঝগড়া করতে পারি না।বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হওয়ার একটা পুরষ্কার থাকলেও ঝগড়া করতে পারিনা,ঝগড়া আর বিতর্ক এক জিনিস নয়।যেহেতু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে সেহেতু দর্শক যুদ্ধের ময়দানের দিকে তাকিয়ে আছে।বাসভর্তি দর্শক!সকলে হয়তো মেয়েটার পক্ষে সাফাই গাইবে,কারণ মেয়েরা ভুল করতে পারেনা!কিন্তু সেই গুড়ে বালি দিয়ে পেছনের সিট থেকে একবন্ধু বলে উঠলো,কি হইছেরে সাদ?আমি কিছু বললাম না,চুপ করেই থাকলাম।বিচক্ষণ বন্ধু যা বোঝার বুঝে নিয়েছে।ও আবার রাজনীতি করে।ঝগড়া শুরু হয়ে গেলো।আমি হাজারো বলে বন্ধুটিকে থামাতে পারলাম না।একসময় দেখলাম মেয়েটি তুই তুকারি শুরু করেছে।আমি বললাম,আপু আপনি ওকে তুই তুকারি করছেন কেনো?ওতো আপনার বড়ই হবে।তখন মেয়েটি যা বললো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।সরাসরি বললো,ওইসব বড় দেখা আছে।কি সাংঘাতিক!কিছুক্ষণ পরে মেয়েটি তার গন্তব্যে নেমে গেলো।পাশের সিটগুলো থেকে বলা শুরু হলো-এমকে জামানের(আমাকে অনেকেই এমকে জামান বলে সম্বোধন করে) সাথে ঝগড়া করে এটাতো সাংঘাতিক মেয়ে!মেয়েটা দেখলা কীভাবে কথা বললো!এই টাইপের কথাগুলো বড্ড বিরক্ত লাগে।এই কথাগুলো মেয়েটার সামনে বললে হয়তো পরিস্থিতি ভিন্ন হতো।মেয়েটা চুপ করে যেতো পারতো।অথবা মেয়েটার আগে আমি বাস ত্যাগ করলে হয়তো দোষটা আমার কাধে দিতে এই দর্শকমন্ডলী ভুল করতো না।দোষটা কার ছিলো জানি না।চুপচাপ মোড়কটা গা থেকে তুলে ফেলে দিলে হয়তো এই ঝামেলাটুকু হতো না অথবা মেয়েটা বাসে আসার সাথে সাথে তাকে জানালার পাশে বসতে দেওয়া উচিত ছিলো,সে নির্বিঘ্নে মোড়কটা ফেলতে পারতো।তবে মেয়েটা ভদ্রতার খাতিরে স্যরি বলতে পারতো,বড়দের সম্মান জানিয়ে আপনি বলতে পারতো।এই চাওয়াটা খুব বেশি কিনা জানিনা।আমি বলবো মেয়েটি যথেষ্ট ভদ্র নয়,তাকে অভদ্র বলে গালি দিবো না বরং সে উপযুক্ত পরিবেশে ভদ্রতা শিখে উঠতে পারেনি এজন্য অনুশোচনা করবো।একটা কলেজ পড়ুয়া মেয়ের দ্বারা এই ভদ্রতাটুকু অন্তত আশা করাই যায়।এটা কিন্তু সবমেয়ের চিত্র নয়।অনেক ভদ্র মেয়ে আমি দেখেছি যারা ভুল করলে স্যরি বলে,অনুশোচনা করে ভুল করার জন্য।আবার থ্যাংকস্ বলে সামান্য উপকৃত হলে।অনেক ছেলেমেয়ে উপযুক্ত ভদ্রতা শিখেছে আবার অনেকে এখনো ভদ্র হয়ে উঠতে পারেনি।আপনি ভদ্র হয়ে গেলে কিন্তু দোষের নয়,বরং ভদ্র না হওয়াটাই দোষের।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আলমগীর কাইজার ২৪/০৮/২০১৭ভালো লাগলো পড়ে
-
সমির প্রামাণিক ২০/০৮/২০১৭বাহ! কথা বলার ধরনটি চমৎকার। বিষয়টিও সময়োপযোগী। শুভেচ্ছা রইলো।
-
আবু সাইদ লিপু ১৯/০৮/২০১৭ঠিক কথা
-
আব্দুল হক ১৯/০৮/২০১৭সুন্দর সত্য কথা লিখেছেন!!,,,,,,,