www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ক্যারিয়ার আলোচনা পর্ব ০১ -পড়ার সুন্দর পদ্ধতি ও মস্তিষ্কের ব্যবহার

মানুষের দেহের ওজনের চল্লিশ ভাগের একভাগ হলো তার মস্তিষ্কের ওজন।মৌমাছির দেহের ওজনের একশত সাতচল্লিশ ভাগের একভাগ হলো মস্তিষ্কের ওজন।ক্ষুদ্র এই পতঙ্গগুলি মস্তিষ্কে পূর্ণভাবে ব্যবহার করে।তাদের বানাতো কারুকাজময় মৌচাক আর তাদের শাসনব্যবস্থা দেখলেই তা বুঝা যায়।আধুনিক গণতন্ত্র কিংবা রাজতন্ত্র সবই এখানে দেখা যেতে পারে।হা হা।হাজার মানুষের ভেতর একজনও তার মস্তিষ্কের পূর্ণ ব্যবহার করতে পারেনা বরং সর্বদা মাথাকে একটি বোঝা হিসেবেই নিয়ে বেড়ায়।কিন্তু বেড়ানোর জন্য তো আর মাথার দরকার নেই মেরুদন্ড হলেই চলে।অবশ্য মাথাবিহীন কাউকে দেখলে নির্ঘাত মামদো ভূত,বন্য রাক্ষসের কথা মনে পড়লেই সব গন্ডগোল হয়ে যেতে পারে।তারপরও কথাটা কিন্তু ভুল নয়।তুমি মাথা বয়ে বেড়াবে কেনো?যাক্ বন্ধুরা, একটু বোধহয় কড়া কথা বলে ফেললাম।ডোন্ট মাইন্ড;আসলে কথাটা কিন্তু তোমাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়নি।বরং আমিসহ সর্বসাধারণের জন্যই এটি প্রযোজ্য।তোমরা হয়তো মস্তিষ্কের পূর্ণ ব্যবহার শিখে গেছো।কিন্তু আমার মতো অনেকেই পারেনি।লেখাটা মূলত তাদের জন্যই।তুমিও যদি আমাদের দলের হয়ে থাকো তবে ঝটপট পড়ে নাও লেখাটা।এবার এসো,আমরা দেখি কিভাবে আমাদের মাথাকে পূর্ণভাবে কাজে লাগানো যায়।অন্তত পড়ার কাজে।আমরা অনেকেই যেহেতু ছাত্র তাই পড়ার কাজেই ব্যবহার করতে পারি।তবে ছাত্র না হলেও যে তোমাকে পড়তেই হবে।যত পড়বে তত জানতে পারবে।আমেরিকার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার জন্য একটি সুন্দর সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।সংক্ষেপে এটাকে বলা হয়- SQ3R system, The SQ3R stands for,
SURVEY , QUESTION , READ , RECITE , REVISE ।তাহলে এগুলো সম্পর্কে একটু জেনে নেই।

** Survey (সামগ্রিকভাবে দেখা,জরিপ বা পরিদর্শন করা,পরীক্ষা করা,পর্যালোচনা করা): অর্থাৎ পঠিতব্য বই বা অধ্যায়কে সামগ্রিকভাকবে একনজর দেখা।এজন্য ভূমিকা,সূচিপত্র,অধ্যায়সমূহের সংক্ষিপ্তসার দেখে নেয়া।যাতে করে সামগ্রিক বই সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা হয়।এতে সকল অধ্যায়ই অপেক্ষাকৃত সহজ ও পরিচিত লাগবে।যেমন,তোমাদের বিজ্ঞান বইটির সূচিপত্র দেখে কিছুটা হলেও ধারণা করতে পারবে।আবার ফেসবুকের হোম,প্রোফাইল দেখেও কিছু আন্দাজ করতে পারবে।যদি তারুণ্য ব্লগের বিষয়গুলো দেখো তবেও একটা ধারণা পাবে।পাবে তো?

** Question(প্রশ্ন,প্রশ্নবোধকবাক্য):শুধুমাত্র অধ্যায়ে দেওয়া প্রশ্ন বা স্যারদের সাজেশানের প্রস্তুতি নিলেই হবে না।পঠিত বিষয়ের দশ দিক থেকে যত প্রকার প্রশ্ন হতে পারে তা খুঁজে বের করতে হবে।অতঃপর শিক্ষক,সহায়ক,অন্যান্য বই থেকে তা সংগ্রহ করতে হবে।এতে করে, সে অধ্যায় সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা হবে।যেখান থেকেই প্রশ্ন আসুক তা হবে 'জলবৎ তরলং'

** Read (পড়,পড়তে পারা,অর্থ উদ্ধার করা): অতঃপর উদ্ধারকৃত উত্তরসহকারে অধ্যায়টি ভালভাবে পড়া।প্রতিটি শব্দের অর্থ বুঝে বুঝে পড়া।মনের ভেতর পঠিত বিষয়ের একটি চিত্র তৈরি করা।প্রতিটি প্যারার কি-ওয়ার্ডসমূহ (যে শব্দ দেখলে সমগ্র প্যারাটিই মনে আসে) পাশে রঙিন পেন্সিল দিয়ে লিখে রাখা মূল্যবান বাক্য বা উদ্ধৃতির নিচে রঙিন পেন্সিল দিয়ে লাগিয়ে রাখা।এতে করে পরবর্তীতে দশভাগের একভাগ সময়ে তা রিভিশন দেয়া যাবে।তোমাকে অবশ্যই পড়তে হবে।বেশি বেশি পড়তে হবে।

** Recite (আবৃত্তি করা,ফিরিস্তি দেয়া,তেলওয়াত করা) : একটি বিষয়কে খুব ভালভাবে আত্মস্থ করার জন্য বারবার আবৃত্তির কোন বিকল্প নেই।ছন্দবদ্ধ লেখা দ্রুত মুখস্ত হয়।কবিতাগুলো ছন্দবদ্ধ বিধায় পড়তেও ভাল লাগে আবার দ্রুত মুখস্ত হয়।তুমি যদি আল কুরআনের দিকে খেয়াল করো তবে দেখবে প্রায় ত্রিশ লক্ষের উপরে সারাপৃথিবীতে হাফেজ আছে।যারা কুরআন A To Z মুখস্ত করে ফেলেছে।গীতার শ্লোক কিন্তু দ্রুত মুখস্ত হয়।সুতরাং মৌলিক বিষয়সমূহ বারবার আবৃত্তি করা দরকার।

** Revise (পুনর্বিবেচনা করা,সংশোধন ও মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে পুনর্বার পড়া) : একটি বিষয় আত্মস্থ হওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন কয়েকবার হেঁটে হেঁটে,সকালে মর্নিং ওয়াকের ফাঁকে ফাঁকে বা পড়ার টেবিলে বসে চোখ বন্ধ করে,বই না দেখে রিভিশন দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।আর পরবর্তীতে তা আরো ভালোভাবে ঝালাই করার জন্যই সম্ভব হলে সপ্তাহে একবার অথবা মাসে একবার রিভিশন দিতে হবে।তারপর না দেখে লেখার চেষ্টা করতে হবে।

পড়ার সুন্দর পদ্ধতি কিন্তু আলোচনা হয়ে গেলো।সেটা কি খেয়াল করেছো?তারপরও মস্তিষ্কের পূর্ণ ব্যবহার সম্ভব নয়।তবে নিয়মিত চেষ্টার ফলে হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।তোমাকে অবশ্যই অধ্যাবসায় রপ্ত করতে হবে।এর বিকল্প নেই।আজ এ পর্যন্তই।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৭৫৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৪/১০/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast