বইয়ে মানুষের চিন্তা
ছেলেবেলা থেকেই বই পড়া আমার কাছে শুধু আগ্রহ না হয়ে অঙ্গীকারে পরিণত হয়েছিল। পাঠ্যবইয়ের বাইরের বই আমাকে আকর্ষণ করত প্রবলভাবে, ঠিক যেভাবে মিষ্টান্ন আকর্ষণ করে পিপীলিকাকে। জীবনে সুখী হবার প্রধান একটি শর্ত হলো বই পড়া। এই শর্তের ব্যাপারে দার্শনিক তত্ত্ব উপস্থাপন হয়তো করা যেত কিন্তু সেই আলোচনায় যাওয়ার দুঃসাহস আমার নেই। ব্যক্তিগত জীবনে বই ছাড়া ভালো বন্ধুর সংখ্যা হাতে গোণা কয়েকজন হয়তো আছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় আর ব্র্যাকের সেই বন্ধুগুলোর সাথে এখন আর যোগাযোগ নেই বললেই চলে। যাদের সাথেই শুরু হয়েছিল পথচলা। তারপর মাধ্যমিকে যাদের সাথে কাটিয়েছি পাঁচটি বছর, তাদের সাথেও বেড়েছে দূরত্ব। দূরত্বটা আত্মিক। পুজা-পার্বণ আর ঈদ উৎসব বাদে কারো নাগাল পাওয়া যায় না। উচ্চমাধ্যমিকের দুইটা বছরও মাধ্যমিকের বন্ধুদেরই ছিল উপস্থিতি। সেভেনে থাকতে যে স্বজন সংঘ করেছিলাম বাবুল রাজনদের নিয়ে সেটারও স্থায়িত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয়নি। আমাদের জীবনটাই এরকম। অনুভূতিগুলো স্থায়ী রূপ নিতে চায় না। কৈশোরের দুরন্তপনায় যা কিছু ভেবেছিলাম, নিজেই সেটা মানতে এখন অস্বীকার করি। অস্বীকার করি সচেতনভাবেই। তারুণ্যের হাওয়ায় এসে স্বভাবটা হয়েছে বাউণ্ডুলে। নিজেকে মনে হয় জীবন-সংসার থেকে দূরের কেউ। যে দায়বদ্ধতা আমার থাকা প্রয়োজন ছিল সেটা নীরবে খুঁজলেও কূল মেলে না। কূল মেলাতে গেলে আসে বাঁধাবাঁধি নিয়ম, সে নিয়ম বড় নিষ্ঠুর আর অবিবেচক। উচ্চশিক্ষার গণ্ডি পেরোনোর আগেই বুঝতে হলো প্রথা ভাঙতে গেলে বন্ধুত্ব টিকতে চায় না। টিকতে চায় না সম্পর্কগুলোও। বাড়ি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়েছি ২০১৪ সালে। তারপর তো আর ফেরা হলো না। ঈদ-পুজায় বাড়ি যাওয়াটাকে ফেরা বলতে অনীহা আছে। এরকমও হয়েছে, বাড়ির সাথে যোগাযোগ নেই কয়েক সপ্তাহ, ক্ষেত্রবিশেষে মাস ছাড়িয়েছে। ফোনকলে না পাওয়ার দৃষ্টান্ত নেহাৎ কম নয়। মা বিষয়টি নিয়ে প্রথমদিকে আপত্তি তুললেও পরে মেনে নিয়েছে বাধ্য হয়েই। ঘরের ছেলের ওপর অভিমান-অনুযোগ রাখতে নেই। কিন্তু বন্ধুরা এতটা উদারতা দেখায়নি। কেউ কেউ ঘোষণা দিয়েই ছেড়েছে বন্ধুত্ব নামক সম্পর্কটা। জীবনের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই, তবে জীবন আমাকে বিচলিত করে। সামনের দিনের জটিলতা আমাকে কিভাবে গ্রাস করবে সেটা ভেবে ভয় হয়। সে জীবন বড্ড অচেনা। আমি এবং আমরা তো বর্তমানের জন্যই। ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে গেলে আমার অস্তিত্বই খুঁজে পাই না। মহাকালের কবলে পড়ে হয়তো টিকে থাকব অথবা হারিয়ে যাব। কিন্তু মহাকাল থেমে থাকতে পারে না। তাই জীবন চলছে মহাকালের স্রোতে, যে স্রোত প্রবল হয়ে তীরে এসে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা দেয় বলেই বিচলিত হতে হয়।
বই আমাদের এই পার্থিব জীবনটাকে নানাভাবে পূর্ণ করে তোলে। আমরা মানব হৃদয় বৈচিত্রময়তাকে সুন্দরভাবে উপলব্ধি করতে পারি পুস্তক পাঠের মাধ্যমে। পুস্তক পাঠে মন আনন্দ, বিষ্ময় ও সহানুভূতিতে আবিষ্ট হয়ে ওঠে। সৃষ্টির আদিমকাল হতে মানুষ এসেছে, একে একে চলে গেছে। খ্যাতি, মান, অর্থ, শক্তি কিছুই রেখে যেতে পারেনি। কিন্তু পুস্তকের পৃষ্ঠাগুলোতে তারা তাদের তপস্যা,তাদের আশা আকাঙ্খা, তাদের নৈরাশা, কি করতে চেয়ে কি করতে পারেনি, আদর্শ, বিধি বিধান সবকিছুই লিখে গিয়েছে। পরবর্তী প্রজন্ম যেন সবকিছুই জানতে পারে,বুঝতে পারে সেই সুব্যবস্থা করে গেছেন অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে। আলেকজান্ডার স্মিথ বলেছেন, বই যেন এই পৃথিবীর মধ্যে আর এক সুক্ষ্ম পৃথিবী, যখন আমি দীর্ঘ নিদ্রায় শয়ন করি, তখন একটি বইয়ের উপর যেন আমার মস্তক শায়িত হয়।
জগৎ ও জীবনকে জানতে হলে বইয়ের কোন বিকল্প নেই। আমার জীবনটা হয়ে উঠুক বইময় এই ছাড়া আর কি'বা চাওয়ার থাকতে পারে।
বই আমাদের এই পার্থিব জীবনটাকে নানাভাবে পূর্ণ করে তোলে। আমরা মানব হৃদয় বৈচিত্রময়তাকে সুন্দরভাবে উপলব্ধি করতে পারি পুস্তক পাঠের মাধ্যমে। পুস্তক পাঠে মন আনন্দ, বিষ্ময় ও সহানুভূতিতে আবিষ্ট হয়ে ওঠে। সৃষ্টির আদিমকাল হতে মানুষ এসেছে, একে একে চলে গেছে। খ্যাতি, মান, অর্থ, শক্তি কিছুই রেখে যেতে পারেনি। কিন্তু পুস্তকের পৃষ্ঠাগুলোতে তারা তাদের তপস্যা,তাদের আশা আকাঙ্খা, তাদের নৈরাশা, কি করতে চেয়ে কি করতে পারেনি, আদর্শ, বিধি বিধান সবকিছুই লিখে গিয়েছে। পরবর্তী প্রজন্ম যেন সবকিছুই জানতে পারে,বুঝতে পারে সেই সুব্যবস্থা করে গেছেন অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে। আলেকজান্ডার স্মিথ বলেছেন, বই যেন এই পৃথিবীর মধ্যে আর এক সুক্ষ্ম পৃথিবী, যখন আমি দীর্ঘ নিদ্রায় শয়ন করি, তখন একটি বইয়ের উপর যেন আমার মস্তক শায়িত হয়।
জগৎ ও জীবনকে জানতে হলে বইয়ের কোন বিকল্প নেই। আমার জীবনটা হয়ে উঠুক বইময় এই ছাড়া আর কি'বা চাওয়ার থাকতে পারে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মধু মঙ্গল সিনহা ৩১/১২/২০১৭সত্যি কথা।
-
দীপঙ্কর বেরা ২৮/১২/২০১৭কালো অক্ষরেই আলো
সঠিক বলেছেন। -
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৭/১২/২০১৭বই হোক নিত্যসঙ্গী।