শতাংশ জীবন-০২ (মায়ের কোলে)
মা আমাকে কোলে নিয়ে নিস্তব্দ দুপুরে আম্রকাননের এক গহীন আলো আঁধারী ছায়ায় দাঁড়িয়ে আছেন পুকুর পাড়ে। পূর্ব ও দক্ষিন পাড়ে সারিবদ্ধ আম গাছ। উত্তর পাড়ে পারিবারিক গোরস্থান। আমার মায়ের চোখ নিবন্ধ উত্তর পাড়ের এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তাল গাছটার দিকে। কারন, ঐ গাছটার গোঁড়ার সাথে মিলে মিশে আছে, আমার প্রয়াত পিতার পদযুগলের ছায়া। বিরবির করে অলস দুপুরে সুরেলা কন্ঠে আমার মায়ের কন্ঠে বেজে উঠে চকমকি পাথরে পাথরে আঘাতের ভেতর ঝিলিক দিয়ে উঠা এক টুকরো গীত মালা- 'আমার সোনার ময়না পাখি! কোন দোষেতে গেলা উইড়া রে, দিয়া মোরে ফাঁকি রে ....'
এ যেন গান নয়, সমুদ্র মন্থনের বিরহ বিলাপ। স্তম্ভিত হয়ে যায় আকাশ-বাতাস। আম্রকুঞ্জে মুখরিত হাজার হাজার তিলা ঘুঘু, চন্দ্র শালিক, ভাত শালিক, ফিঙ্গে, ময়না তারা তাদের সমস্ত গানের সুর ভুলে এক্কেবারে নিশ্চুপ আর গাছের কোঠর থেকে ঘুম ভেঙ্গে ড্যাব ড্যাবে চোখে তাকিয়ে থাকে রাত জাগা লক্ষ্মী পেঁচার দল। পুকুরের পাশের ঝোপের খোপ থেকে বেড়িয়ে এসে অবাক দৃষ্টি তাকিয়ে আছে এক জোড়া ডাহুক-ডাহুকী। জলের ভেতরে খেলা করা মীনেরা শব্দহীন তরঙ্গ তোলে সাঁতার কেটে যাচ্ছে।
তির তির করে কেঁপে উঠে পুকুরের নিটোল জলরাশি। সেখান থেকে জেগে উঠে দীর্ঘশ্বাসের একটি তপ্ত বাতাস। সে গান বেজে উঠে আমার পাথর চাপা হৃদয়ে। আমি কঁকিয়ে উঠি। মায়ের কাঁশফুলের মতো পেলবিত হাতখানি বদন স্পর্শ করে, নতুন সুরে গেয়ে উঠে-
'রাজার ছেলে যাচ্ছে উড়ে পঙ্খীরাজে করে,
তুই যে আমার সাত রাজার ধন ওরে মানিক ওরে ...''
এইভাবেই স্বরবৃত্তের ছন্দের সূত্রপাত হলো আমার চেতনে। এই ছন্দের আনন্দেই আজো আমি তাল ঠুকি এখানে সেখানে কবিতার আসরে-
'মা যে আমার প্রথম ধ্বনি, মা যে আমার গুরু,
মা-কে নিয়েই যখন তখন কাব্য করি শুরু....
এ যেন গান নয়, সমুদ্র মন্থনের বিরহ বিলাপ। স্তম্ভিত হয়ে যায় আকাশ-বাতাস। আম্রকুঞ্জে মুখরিত হাজার হাজার তিলা ঘুঘু, চন্দ্র শালিক, ভাত শালিক, ফিঙ্গে, ময়না তারা তাদের সমস্ত গানের সুর ভুলে এক্কেবারে নিশ্চুপ আর গাছের কোঠর থেকে ঘুম ভেঙ্গে ড্যাব ড্যাবে চোখে তাকিয়ে থাকে রাত জাগা লক্ষ্মী পেঁচার দল। পুকুরের পাশের ঝোপের খোপ থেকে বেড়িয়ে এসে অবাক দৃষ্টি তাকিয়ে আছে এক জোড়া ডাহুক-ডাহুকী। জলের ভেতরে খেলা করা মীনেরা শব্দহীন তরঙ্গ তোলে সাঁতার কেটে যাচ্ছে।
তির তির করে কেঁপে উঠে পুকুরের নিটোল জলরাশি। সেখান থেকে জেগে উঠে দীর্ঘশ্বাসের একটি তপ্ত বাতাস। সে গান বেজে উঠে আমার পাথর চাপা হৃদয়ে। আমি কঁকিয়ে উঠি। মায়ের কাঁশফুলের মতো পেলবিত হাতখানি বদন স্পর্শ করে, নতুন সুরে গেয়ে উঠে-
'রাজার ছেলে যাচ্ছে উড়ে পঙ্খীরাজে করে,
তুই যে আমার সাত রাজার ধন ওরে মানিক ওরে ...''
এইভাবেই স্বরবৃত্তের ছন্দের সূত্রপাত হলো আমার চেতনে। এই ছন্দের আনন্দেই আজো আমি তাল ঠুকি এখানে সেখানে কবিতার আসরে-
'মা যে আমার প্রথম ধ্বনি, মা যে আমার গুরু,
মা-কে নিয়েই যখন তখন কাব্য করি শুরু....
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সেলিম রেজা সাগর ০৮/১১/২০২০অসাধারণ
-
ফয়জুল মহী ০৬/১১/২০২০লেখা হোক সমাজ ও দেশ গঠনের অন্যতম হাতিয়ার।