শিকারী
ছেলেটা আজ অনেকক্ষণ ধরে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে। তাকিয়ে তাকিয়ে মেয়েটাকে দেখছে। মেয়েটি খুব সাধারণ। পোষাক বা সাজগোজে তেমন আহামরি নেই। অন্যকে আকর্ষণ করার জন্য বাড়তি উৎকটতা নেই।
আজই মেয়েটাকে প্রথম দেখল? না; তা' কিন্ত নয়। যাদুঘরের সামনের রাস্তাটার আশেপাশে আরো দুইদিন দেখেছে। একদিন প্রজন্মচত্বরে বসে বসে ফুচকা খাওয়া অবস্থায়। আজ মেয়েটি হাঁটছে। তার কাছে মনে হয়েছিল উদ্দেশ্যহীনভাবে মেয়েটি হেঁটে যাচ্ছে। হাঁটতে হাঁটতে চারুকলা ইউনিভার্সিটি দিকে যাচ্ছে। তার জন্যই কি মেয়েটিকে সে 'অন্যরকম'মেয়ে ভেবেছিল? আস্তে আস্তে মেয়েটা ছেলেটির কাছে গিয়ে নিচু গলায় জিজ্ঞাসা করল, যাবে ?
আজ আবহাওয়া খুবই ভালো। এমন দিনে কিছুতেই নিজেকে একা ঘরে আটকে রাখতে চাইছিলো না মেয়েটি। আজ নিজেকে হারাতে ইচ্ছে করছে। ঠিক করেছে হারাবেই। আজ শিকার চাই-ই।
গত দুইদিনই ছেলেটাকে খেয়াল করেছে সে। পাবলিক লাইব্রেরি বা যাদুঘরের আশে পাশে কোথায়ও বসে থাকে। ভাল করে ছেলেটার চেহারাও দেখেছে। একটু লাজুক আর বোকাবোকা টাইপের। একবার ভাবলো, এগিয়ে গিয়ে বলবে নাকি ?
মেয়েটার 'যাবে' প্রশ্নটার সাথে সাথেই ছেলেটি থমকিয়ে তার সামনে দাঁড়ালো। মেয়েটি প্রথমেই কথা বলল, ''আমার বাসায় যেতে আপত্তি নেই তো ?''
একটি উবার নিয়ে মেয়েটার ঠিকানা মতো গাড়ি চললো গুলশানের দিকে। দুজনেই নীরব। রাস্তায় একবার এক খাবারের দোকানে ঢুকে মেয়েটি কিছু খাবার নিয়ে গাড়ীতে এলো। আবার ছুটল। গুলশান-১ এর একটি গলি রোডে ঢুকে গেল। একটা বড় এপার্টমেন্টের সামনে এলো। ছেলেটা অবাক হয়ে যাচ্ছে। মেয়েটা এ এরিয়াতে থাকে ! এই বিলাসবহুল এপার্টমেন্টে ! সে যতটুকু জানে এই এলাকায় বাসা ভাড়া অনেক বেশি। এই পেশায় এখানে! হিসাব মিলাতে পারছেনা।
কৌতুহল নিয়ে গাড়ী থেকে নেমে ওরা পাঁচ তলার একটা এপার্টমেন্টে ঢুকল। বড় দুইবেড রুমের একটা বাসা। ছিমছাম,সুন্দর করে সাজানো। ঘরে আর কেউ নেই। ভেতরের সাজসজ্জা দেখে ছেলেটা দমে গেল। ভুল ভেবে মেয়েটার সাথে এলো?
রুমে ঢুকে ছেলেটাকে বাথরুম দেখিয়ে ফ্রেশ হতে বলে নিজেও ভেতরে চলে গেল মেয়েটি। কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটা ফিরে এল। বাইরের কাপড় ছেড়েছে। এখন তার পড়নে হাল্কা গোলাপী রংয়ের একটি টি-শার্ট। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল সে। গা থেকে মিষ্টি একটা পারফিউমের গন্ধ বেরিয়ে আসছে। নিয়ে আসা খাবার দুজনে ভাগ করে খেল। টেবিল পরিস্কার করে মেয়েটি দুই কাপ কফি নিয়ে এসে ছেলেটার পাশে বসলো।
কি নাম তোমার ? মেয়েটা প্রশ্ন করে।
রুবেল। তোমার?
জুগনু। থাকো কোথায় ?
রায়েরবাজার।
অনেক দূর! অতো রাতে ফেরা একটু অসুবিধে হতে পারে। তুমি চাইলে আজ আমার এখানে থেকে যেতে পার।
রুবেল সে রাত মেয়েটার কাছে থেকে গেল।
সকাল দশটার দিকে জুগনুর ফোনে রিং হলো। চোখ মেলে ফোন নিতে গিয়ে পাশে ঘুমন্ত রুবেলকে দেখল। রাতের কথা মনে পড়ল তার।
ফোন নিয়ে সে বিছানা ছেড়ে দূরে চলে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাইরে বের হওয়ার জন্য রেডি হয়ে এলো। রুবেলের কাছে এসে ডাকল, রুবেল, উঠো।
রুবেল চোখ মেলে তাকাতেই, জুগনু বলে, উঠ। সরি আমাকে বের হতে হবে এক্ষুনি। তুমি ফ্রেশ হয়ে এসো।
কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে জুগনু বলে- মানির বিষয়টা কী হবে ? কতো রেট? !
রুবেল- হ্যাঁ মানি। বলেই রুবেল মানিব্যাগের জন্য প্যাণ্টের পকেটে হাত দেয়।
জুগনু- কত পেলে তুমি আনন্দিত হবে মনে কর ?
রুবেল আশ্চর্য হয়ে বলে, পেলে! মানে ? আমি কেন ?
জুগনু হেসে বলে- তা কেন ? তোমাকে আমি এই কাজে পেশাদার ভেবেই এখানে নিয়ে এসেছি। সে টেবিলের উপর এক হাজার টাকার পাঁচটা নোট রাখতে রাখতে বলে, গত রাত্রিটি খুবই আনন্দময়ভাবে কেটেছে। তোমাকে ধন্যবাদ। তাড়াতাড়ি কর, আমাদের এখনই বের হতে হবে।
আজই মেয়েটাকে প্রথম দেখল? না; তা' কিন্ত নয়। যাদুঘরের সামনের রাস্তাটার আশেপাশে আরো দুইদিন দেখেছে। একদিন প্রজন্মচত্বরে বসে বসে ফুচকা খাওয়া অবস্থায়। আজ মেয়েটি হাঁটছে। তার কাছে মনে হয়েছিল উদ্দেশ্যহীনভাবে মেয়েটি হেঁটে যাচ্ছে। হাঁটতে হাঁটতে চারুকলা ইউনিভার্সিটি দিকে যাচ্ছে। তার জন্যই কি মেয়েটিকে সে 'অন্যরকম'মেয়ে ভেবেছিল? আস্তে আস্তে মেয়েটা ছেলেটির কাছে গিয়ে নিচু গলায় জিজ্ঞাসা করল, যাবে ?
আজ আবহাওয়া খুবই ভালো। এমন দিনে কিছুতেই নিজেকে একা ঘরে আটকে রাখতে চাইছিলো না মেয়েটি। আজ নিজেকে হারাতে ইচ্ছে করছে। ঠিক করেছে হারাবেই। আজ শিকার চাই-ই।
গত দুইদিনই ছেলেটাকে খেয়াল করেছে সে। পাবলিক লাইব্রেরি বা যাদুঘরের আশে পাশে কোথায়ও বসে থাকে। ভাল করে ছেলেটার চেহারাও দেখেছে। একটু লাজুক আর বোকাবোকা টাইপের। একবার ভাবলো, এগিয়ে গিয়ে বলবে নাকি ?
মেয়েটার 'যাবে' প্রশ্নটার সাথে সাথেই ছেলেটি থমকিয়ে তার সামনে দাঁড়ালো। মেয়েটি প্রথমেই কথা বলল, ''আমার বাসায় যেতে আপত্তি নেই তো ?''
একটি উবার নিয়ে মেয়েটার ঠিকানা মতো গাড়ি চললো গুলশানের দিকে। দুজনেই নীরব। রাস্তায় একবার এক খাবারের দোকানে ঢুকে মেয়েটি কিছু খাবার নিয়ে গাড়ীতে এলো। আবার ছুটল। গুলশান-১ এর একটি গলি রোডে ঢুকে গেল। একটা বড় এপার্টমেন্টের সামনে এলো। ছেলেটা অবাক হয়ে যাচ্ছে। মেয়েটা এ এরিয়াতে থাকে ! এই বিলাসবহুল এপার্টমেন্টে ! সে যতটুকু জানে এই এলাকায় বাসা ভাড়া অনেক বেশি। এই পেশায় এখানে! হিসাব মিলাতে পারছেনা।
কৌতুহল নিয়ে গাড়ী থেকে নেমে ওরা পাঁচ তলার একটা এপার্টমেন্টে ঢুকল। বড় দুইবেড রুমের একটা বাসা। ছিমছাম,সুন্দর করে সাজানো। ঘরে আর কেউ নেই। ভেতরের সাজসজ্জা দেখে ছেলেটা দমে গেল। ভুল ভেবে মেয়েটার সাথে এলো?
রুমে ঢুকে ছেলেটাকে বাথরুম দেখিয়ে ফ্রেশ হতে বলে নিজেও ভেতরে চলে গেল মেয়েটি। কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটা ফিরে এল। বাইরের কাপড় ছেড়েছে। এখন তার পড়নে হাল্কা গোলাপী রংয়ের একটি টি-শার্ট। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল সে। গা থেকে মিষ্টি একটা পারফিউমের গন্ধ বেরিয়ে আসছে। নিয়ে আসা খাবার দুজনে ভাগ করে খেল। টেবিল পরিস্কার করে মেয়েটি দুই কাপ কফি নিয়ে এসে ছেলেটার পাশে বসলো।
কি নাম তোমার ? মেয়েটা প্রশ্ন করে।
রুবেল। তোমার?
জুগনু। থাকো কোথায় ?
রায়েরবাজার।
অনেক দূর! অতো রাতে ফেরা একটু অসুবিধে হতে পারে। তুমি চাইলে আজ আমার এখানে থেকে যেতে পার।
রুবেল সে রাত মেয়েটার কাছে থেকে গেল।
সকাল দশটার দিকে জুগনুর ফোনে রিং হলো। চোখ মেলে ফোন নিতে গিয়ে পাশে ঘুমন্ত রুবেলকে দেখল। রাতের কথা মনে পড়ল তার।
ফোন নিয়ে সে বিছানা ছেড়ে দূরে চলে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাইরে বের হওয়ার জন্য রেডি হয়ে এলো। রুবেলের কাছে এসে ডাকল, রুবেল, উঠো।
রুবেল চোখ মেলে তাকাতেই, জুগনু বলে, উঠ। সরি আমাকে বের হতে হবে এক্ষুনি। তুমি ফ্রেশ হয়ে এসো।
কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে জুগনু বলে- মানির বিষয়টা কী হবে ? কতো রেট? !
রুবেল- হ্যাঁ মানি। বলেই রুবেল মানিব্যাগের জন্য প্যাণ্টের পকেটে হাত দেয়।
জুগনু- কত পেলে তুমি আনন্দিত হবে মনে কর ?
রুবেল আশ্চর্য হয়ে বলে, পেলে! মানে ? আমি কেন ?
জুগনু হেসে বলে- তা কেন ? তোমাকে আমি এই কাজে পেশাদার ভেবেই এখানে নিয়ে এসেছি। সে টেবিলের উপর এক হাজার টাকার পাঁচটা নোট রাখতে রাখতে বলে, গত রাত্রিটি খুবই আনন্দময়ভাবে কেটেছে। তোমাকে ধন্যবাদ। তাড়াতাড়ি কর, আমাদের এখনই বের হতে হবে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
জানবক্স খান ২৫/০৬/২০২০বাঙলাদেশের প্রেক্ষিতে বেশ নতুন ঘটনা।
-
অভিজিৎ জানা ০৫/০৬/২০২০বেশ ভাল
-
ন্যান্সি দেওয়ান ০৪/০৬/২০২০Beautiful
-
মোঃ ছাকিবুল ইসলাম (শাওন) ০৪/০৬/২০২০ভালো লাগলো
-
দীপঙ্কর বেরা ০৩/০৬/২০২০ভালো হয়েছে।
-
মোহাম্মদ ইউনুস ০২/০৬/২০২০খুব ভালো লিখেছেন, পরিপাটি এবং সুন্দর লিখা
-
ফয়জুল মহী ০২/০৬/২০২০পরিপক্ব ও পরিপাটি লেখা
-
শ্রীমান দে ০২/০৬/২০২০খুব ভাল। ভাল থাকবেন।