www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

একজন আলতাফ আলি

“আমারে যে লইয়া যাইবা, খাওয়াইবা কি?সম্বল তো খালি
হাত্তির নাহান শইলডা,আর কি আছে তোমার?” ওই একবারই
নিজেকে সহায়সম্বল হীন মনে হয়েছিল আলতাফ আলির।প্রিয়তমা
নারী এখন জৌলুশে কাটায় দিন।ঘরের চালের ফুটো দিয়ে আকাশ
দেখতে দেখতে আলতাফ আলি ভাবে পুরনো দিন, “ঠিকই করছে
মাইয়াডা,যৌবনের জোশে মাইয়াডারে যদি তহন লইয়া আইতাম,
কপাল চাপড়াইতে হইত এহন।বুদ্ধি আছে ছেমড়ির,অভাবের আভাস
আগাম টের পাইছিল”।

শক্ত দুটো হাতের ওপর নির্ভর করে জড়িয়ে ধরেছিল একদিন
জরিনার শরীর।পাকস্থলির ভেতর জ্বলে উঠা খিদের আগুনে শিথিল
হয়েছে সেই হাত।এক পেটের ভেতরেই রাজ্যের ক্ষুধা,কেমনে নেবে
অন্য পেটের দায়?মিষ্টি মেয়ের পেলব শরীর ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে
যায় সুযোগ সন্ধানি ধূর্ত শেয়াল।পঁচিশের যুবক আলতাফ আলি তখন
যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে নাই।জরিনার বিয়ের দাওয়াতে সেও খেয়েছিল
একবেলা ভাত, সে সব এখন অতীত।

আলতাফ আলি পরিশ্রম করে বারমাস, টানে অপরের বোঝা,মাটি
কুপিয়ে গভীর থেকে তুলে আনে ফসলের ঘ্রাণ।ওদের মতো আলতাফ
আলিদের হাতের ছোঁয়ায় সভ্যতা প্রান পায়, কিন্তু ফোঁটাতে পারে না
কাঙ্ক্ষিত বিদ্রোহের গোলাপ।ওদের সচল হাতে রচিত হয় উন্নয়নের
কাব্যগাথা, তবু ওরা রয়ে যায় শুধুই পত্রিকার পাতায়।ওদের হাতের
লাঙ্গল হয়ে উঠে না রুদ্র রাখালের বাঁশি,প্রচণ্ড খরায় এখনও ভিজে যায়
মাটি ওদেরই শরীরের ঘামে।

আলতাফ আলি এরপরেও আছে, তাঁকে থাকতেই হয়। পৈত্রিক ভিটে
টুকু খেয়েছে সর্বগ্রাসী নদী।তবুও আছে সে সেই সব মানুষের সাথে
যাদের সাথে একসাথে বসে সে দেখেছে ক্ষুধার স্বরূপ।ওরা তার কেউ
নয়, তবুও আপন। ওরা একসাথে লাঙ্গল চালায় জোতদারের জমিতে,
নিজেদের হাতে লাগায় ফসলের চাড়া,সময়মত কেটে আনে পরিপক্ব ফসল,
তুলে দেয় জোতদারের গোলায়।তবুও তারা বেঁচে থাকে ক্রমাগত ক্ষুধার
আগুনে ঝলসানো মানুষ।

জয়দেবপুর।
৩/১০/১৪।।
বিষয়শ্রেণী: কবিতা
ব্লগটি ৭৮৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৭/০২/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • হাসান ইমতি ০৯/০২/২০১৫
    বেশ ...
  • ভালো লিখেছেন। ভালো লাগলো।
  • জাহিদুর রহমান ০৮/০২/২০১৫
    Sundor
  • সবুজ আহমেদ কক্স ০৭/০২/২০১৫
    valo but @@@@@@@@@@,
 
Quantcast