জীবন চক্র
জগতের সকল প্রজাতির শিশুদের মধ্যে জন্মের পর পরই একমাত্র মানবশিশুই বোধকরি কান্নার মাধ্যমে তার আগমনী বার্তা ঘোষণা করে। এ ধরাধামে তার কন্ঠে প্রথম উচ্চারিত ধ্বনিটিই হয় কান্নার, যা সারাটা জীবন ধরে তার কাছে স্বল্প-দীর্ঘ বিরতিসহ ফিরে ফিরে আসে, তবে সবসময় কন্ঠে নয়; কখনো শুধু চোখে কান্নার ঢেউ নিঃশব্দে স্ফীত হতে থাকে, কখনো নির্বাক মনের গহীনে গুমরে ওঠে। শিশু যত বড় হতে থাকে, কান্না ততই তার কন্ঠ থেকে বিদায় নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় খুঁজতে থাকে। সশব্দ থেকে নিঃশব্দ হতে থাকে।
ক্রমান্বয়ে মা বাবা, ভাই বোন, পরিবারের অন্যান্যদের সাথে শিশুটির সখ্য গড়ে ওঠে। সে নির্ভয়ে তাদেরকে বিশ্বাস করতে শেখে, তাদের কোলে লাফ দিয়ে চড়ে স্বস্তি ও আশ্রয় খুঁজে পায়, তাদেরকে তার নিজের ভাষায় এটা ওটা বলে তৃপ্তি পায়। পাড়ার আশে পাশের সমবয়স্কদের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়, সে খেলাধুলা করতে শেখে। সে ভাব আদান প্রদান করতে শেখে, সেই সাথে শেয়ারিং কেয়ারিং করতেও শেখে, প্রথমে পরিবার থেকে, পরে বন্ধুবলয় থেকে। সে ধীরে ধীরে জগত সংসারের মায়ার বাঁধনে আটকা পড়তে থাকে।
এরপর সে জীবনের অনিবার্য অনুষঙ্গ হিসেবে নানা রকমের দুঃখ-ব্যথা, ঘাত-প্রতিঘাতের সাথে পরিচিত হতে শুরু করে। এসব কখনো তাকে ভাবায়, কখনো কাঁদায়, কখনো একটি গোপন বেষ্টনীর ভেতর নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করে সেখানে তার ব্যথা বেদনাগুলোকে লুকিয়ে রাখতে শেখায়। তাকে এক সময় শিক্ষা অথবা কর্মোপলক্ষে পরিবার ত্যাগ করে ঘরের বাইরে যেতে হয়। সে ঘরের বাইরে অন্য কোন এক ঘরের সাথে পরিচিত হয়, ঘর সামলানোর নানামুখি চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে অবগত হয়, বিশ্ব ধীরে ধীরে তার সামনে অবারিত হতে থাকে। এ ছাড়া কন্যা শিশুদেরকে এক সময় বড় হয়ে বিবাহোত্তর দায়িত্ব পালনের জন্য স্বামীর ঘরে গিয়ে নতুন এক ঘর সামলাতে হয়।
শিক্ষার জন্য ঘর ছাড়ার পর সে বন্ধুত্বের ভালমন্দ চিনতে শেখে, কখনো আপনা আপনিই, আবার কখনো হিসেব করে তা নির্ণয় করতে শেখে। একটা সময় আসে, যখন সব বন্ধুদেরকে তার কাছে ভাল লাগে না, তাদের সবার সঙ্গ কাম্য হয় না। সে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শেখে অনেকের থেকে অল্পের মাঝে। তার গোপন অনুভবের কথাগুলো কারো সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য সে উন্মাতাল হতে থাকে, সে একজন সোলমেট (soulmate) খুঁজতে থাকে। ভাগ্যবান হলে পায়, তা না হলে নয়। না পেলে সে শান্ত সরোবরে ভাসমান কাগজের নৌকোর মত এক সময় ডুবে যায়, নয়তো চারটি তীরের যে কোন একটিতে এসে, কিংবা সরোবারটি বৃত্তাকার হলে যে কোন একটি স্থানে এসে সেখানে জমে থাকা ঘাস, ঝরাপাতা ইত্যাদির সাথে আটকে থাকে।
ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখতে দেখতে সে একসময় যুগলবন্দী হয়। আবারো ভাগ্যবান হলে এ বাঁধন আজীবন টিকে যায়, কিন্তু কোনক্রমেই ঝড় ঝন্ঝা ব্যতীত নয়। জীবন সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে এ বাঁধন কখনো কখনো ছিন্ন হবার উপক্রম হলেও হতে পারে, কিন্তু উভয়ের মাঝে ভাল বোঝাপড়া এবং সহানুভূতি থাকলে তা টিকে যায়, তরঙ্গায়িত হতে হতে এক সময় থীতু হয়। আর ভাগ্য ভাল না হলে ব্রেকাপের (ছাড়াছাড়ি) অভিশপ্ত বিষবাষ্প তার জীবনকে তমসাচ্ছন্ন করে রাখে, দুর্ভাগ্যক্রমে কারো ক্ষেত্রে হয়তো বা একাধিক! একেবারে নিস্তরঙ্গ, শুধু প্রেমময় যাপিত জীবন বিরল কয়েকজন মহাভাগ্যবানের জীবনে ঘটে থাকে।
যে সকল সৌভাগ্যবান ব্যক্তি একটা পরিণত, পূর্ণ জীবনের অধিকারী হন, তাদের জীবন তরীটিকে ইপ্সিত তীরে ভেড়াতে পারেন, তারা নমস্য, তারা অনুকরণীয়, তারা অনুসরণীয়। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তারা তাদের অভিজ্ঞতার আলো ছড়াতে থাকেন। তাঁরা তাদের উত্তরসূরীদের আঁকড়ে ধরে থাকতে চান, আবার জীবন পাঠের অমূল্য দীক্ষা থেকে তারা এটাও বেশ ভাল করেই জানেন, জীবনের কোন অর্জন বা কোন সঞ্চয়ই তাদের নিজস্ব নয়, শুধু অপত্য স্নেহ ও ভালবাসার অনুভূতিটুকু ছাড়া। কোন শক্ত বদ্ধমুষ্টিই একটি কোমল হাতের একটি চিকণ অঙ্গুলিকেও চিরদিন ধরে রাখতে সক্ষম নয়। এক সময় না এক সময় তা ছেড়ে দিতেই হয়! তাই তারা সেই স্নেহ ও ভালবাসার অনুভূতিটুকুকে বুকে জড়িয়ে ধরে এক সময় ঘুমিয়ে পড়েন, শাব্দিক এবং আত্মিক, উভয় অর্থেই।
শিশুরা যেমন কথা বলা শেখার পর একসাথে অনেক কিছু বলতে চায়, বয়স্ক ব্যক্তিদেরও মাঝে মাঝে সেরকম হয়। শিশুদের সে কথা শোনার জন্য আর কেউ না থাকলেও তাদের মা থাকে (বিরল ব্যতিক্রম ব্যতীত), বয়স্ক ব্যক্তিদের কেউই থাকে না (বিরল ব্যতিক্রম ব্যতীত)। শিশুরা যত বড় হতে থাকে, পরিবারের সদস্যদের সাথে তাদের কথা তত কমতে থাকে, বন্ধুবান্ধবদের সাথে বাড়তে থাকে। বয়স্করা একসময় বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে ফেলতে শুরু করেন, পরিবারের সদস্যদেরকে আঁকড়ে ধরতে চান। পুত্র কন্যাদের চেয়ে নাতি নাতনিদের প্রতি তারা বেশি আকর্ষণ বোধ করেন, তাদের সাথেই বেশি সখ্য গড়ে ওঠে। কিন্তু একসময় তাদেরকেও হারাতে হয়, যেমন এক সময় তারা নিজেরাই তাদের ভাই বোন, মা বাবা, দাদা দাদী, নানা নানীকে ফেলে এসেছিলেন। ঘরের বাইরে বের হওয়া তাদের কমে যায়, সেলফোনে কথা বলার লোক ধীরে ধীরে কমতে থাকে, এক সময় কারো সাথে কথা বলার জন্য মনটা আঁকুপাকু করতে থাকলেও, তারা খুঁজেই পান না কার সাথে বলবেন! ঘরের বাইরে বের না হলেও কিছুকাল তারা নিজ বাড়ীর পুরোটা এলাকায় পদচারণা করেন, বয়স্কা মহিলারা মাঝে মাঝে রসুইঘরেও ঢোকেন বা ঢুকতে বাধ্য হন, কিন্তু এক সময় সেটাও ধীরে ধীরে সীমিত হয়ে যায়। তাদের চলাফেরা নিজ শয়নকক্ষে আর ওয়াশরুমে সীমিত হয়ে যায়, সেটাও যারা নিজ পদযুগলের ওপর ভর করে করতে সক্ষম হন, তারা ভাগ্যবান। কম ভাগ্যবানরা নিজ শয্যা থেকে ওয়াশরুম পর্যন্ত হুইলচেয়ারে করে অন্যের সাহায্যনির্ভর হয়ে যাওয়া আসা করেন। তারও পরে সেটাও সম্ভব হয় না। জন্মের পর পর শিশু যেমন মায়ের কোলে অথবা শয্যায় মলমূত্র ত্যাগ করে, তারাও তেমনি। শিশুরা যেমন জন্মের পর কয়েক সপ্তাহ কাউকে দেখেও চেনে না, কেবল মাকে চেনে ঘ্রাণশক্তি দিয়ে, ওনারাও তেমনি। উভয়ের প্রক্রিয়াটা অনেকটা একই রকম, পার্থক্য কেবল শিশুরা আসে, থেকে যায়; ওনারা এভাবে থাকতে থাকতে একসময় চলে যান। বিন্দুটা এক সময় স্ফীত হতে হতে বৃত্তে পরিণত হয়, আবার বৃত্তটা এক সময় চুপসে যেতে যেতে বিন্দুতে পরিণত হয়। এটাই জীবন চক্র।
ঢাকা
১০ জুন ২০২১
শব্দ সংখ্যাঃ ৮৫২
ক্রমান্বয়ে মা বাবা, ভাই বোন, পরিবারের অন্যান্যদের সাথে শিশুটির সখ্য গড়ে ওঠে। সে নির্ভয়ে তাদেরকে বিশ্বাস করতে শেখে, তাদের কোলে লাফ দিয়ে চড়ে স্বস্তি ও আশ্রয় খুঁজে পায়, তাদেরকে তার নিজের ভাষায় এটা ওটা বলে তৃপ্তি পায়। পাড়ার আশে পাশের সমবয়স্কদের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়, সে খেলাধুলা করতে শেখে। সে ভাব আদান প্রদান করতে শেখে, সেই সাথে শেয়ারিং কেয়ারিং করতেও শেখে, প্রথমে পরিবার থেকে, পরে বন্ধুবলয় থেকে। সে ধীরে ধীরে জগত সংসারের মায়ার বাঁধনে আটকা পড়তে থাকে।
এরপর সে জীবনের অনিবার্য অনুষঙ্গ হিসেবে নানা রকমের দুঃখ-ব্যথা, ঘাত-প্রতিঘাতের সাথে পরিচিত হতে শুরু করে। এসব কখনো তাকে ভাবায়, কখনো কাঁদায়, কখনো একটি গোপন বেষ্টনীর ভেতর নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করে সেখানে তার ব্যথা বেদনাগুলোকে লুকিয়ে রাখতে শেখায়। তাকে এক সময় শিক্ষা অথবা কর্মোপলক্ষে পরিবার ত্যাগ করে ঘরের বাইরে যেতে হয়। সে ঘরের বাইরে অন্য কোন এক ঘরের সাথে পরিচিত হয়, ঘর সামলানোর নানামুখি চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে অবগত হয়, বিশ্ব ধীরে ধীরে তার সামনে অবারিত হতে থাকে। এ ছাড়া কন্যা শিশুদেরকে এক সময় বড় হয়ে বিবাহোত্তর দায়িত্ব পালনের জন্য স্বামীর ঘরে গিয়ে নতুন এক ঘর সামলাতে হয়।
শিক্ষার জন্য ঘর ছাড়ার পর সে বন্ধুত্বের ভালমন্দ চিনতে শেখে, কখনো আপনা আপনিই, আবার কখনো হিসেব করে তা নির্ণয় করতে শেখে। একটা সময় আসে, যখন সব বন্ধুদেরকে তার কাছে ভাল লাগে না, তাদের সবার সঙ্গ কাম্য হয় না। সে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শেখে অনেকের থেকে অল্পের মাঝে। তার গোপন অনুভবের কথাগুলো কারো সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য সে উন্মাতাল হতে থাকে, সে একজন সোলমেট (soulmate) খুঁজতে থাকে। ভাগ্যবান হলে পায়, তা না হলে নয়। না পেলে সে শান্ত সরোবরে ভাসমান কাগজের নৌকোর মত এক সময় ডুবে যায়, নয়তো চারটি তীরের যে কোন একটিতে এসে, কিংবা সরোবারটি বৃত্তাকার হলে যে কোন একটি স্থানে এসে সেখানে জমে থাকা ঘাস, ঝরাপাতা ইত্যাদির সাথে আটকে থাকে।
ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখতে দেখতে সে একসময় যুগলবন্দী হয়। আবারো ভাগ্যবান হলে এ বাঁধন আজীবন টিকে যায়, কিন্তু কোনক্রমেই ঝড় ঝন্ঝা ব্যতীত নয়। জীবন সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গে এ বাঁধন কখনো কখনো ছিন্ন হবার উপক্রম হলেও হতে পারে, কিন্তু উভয়ের মাঝে ভাল বোঝাপড়া এবং সহানুভূতি থাকলে তা টিকে যায়, তরঙ্গায়িত হতে হতে এক সময় থীতু হয়। আর ভাগ্য ভাল না হলে ব্রেকাপের (ছাড়াছাড়ি) অভিশপ্ত বিষবাষ্প তার জীবনকে তমসাচ্ছন্ন করে রাখে, দুর্ভাগ্যক্রমে কারো ক্ষেত্রে হয়তো বা একাধিক! একেবারে নিস্তরঙ্গ, শুধু প্রেমময় যাপিত জীবন বিরল কয়েকজন মহাভাগ্যবানের জীবনে ঘটে থাকে।
যে সকল সৌভাগ্যবান ব্যক্তি একটা পরিণত, পূর্ণ জীবনের অধিকারী হন, তাদের জীবন তরীটিকে ইপ্সিত তীরে ভেড়াতে পারেন, তারা নমস্য, তারা অনুকরণীয়, তারা অনুসরণীয়। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও তারা তাদের অভিজ্ঞতার আলো ছড়াতে থাকেন। তাঁরা তাদের উত্তরসূরীদের আঁকড়ে ধরে থাকতে চান, আবার জীবন পাঠের অমূল্য দীক্ষা থেকে তারা এটাও বেশ ভাল করেই জানেন, জীবনের কোন অর্জন বা কোন সঞ্চয়ই তাদের নিজস্ব নয়, শুধু অপত্য স্নেহ ও ভালবাসার অনুভূতিটুকু ছাড়া। কোন শক্ত বদ্ধমুষ্টিই একটি কোমল হাতের একটি চিকণ অঙ্গুলিকেও চিরদিন ধরে রাখতে সক্ষম নয়। এক সময় না এক সময় তা ছেড়ে দিতেই হয়! তাই তারা সেই স্নেহ ও ভালবাসার অনুভূতিটুকুকে বুকে জড়িয়ে ধরে এক সময় ঘুমিয়ে পড়েন, শাব্দিক এবং আত্মিক, উভয় অর্থেই।
শিশুরা যেমন কথা বলা শেখার পর একসাথে অনেক কিছু বলতে চায়, বয়স্ক ব্যক্তিদেরও মাঝে মাঝে সেরকম হয়। শিশুদের সে কথা শোনার জন্য আর কেউ না থাকলেও তাদের মা থাকে (বিরল ব্যতিক্রম ব্যতীত), বয়স্ক ব্যক্তিদের কেউই থাকে না (বিরল ব্যতিক্রম ব্যতীত)। শিশুরা যত বড় হতে থাকে, পরিবারের সদস্যদের সাথে তাদের কথা তত কমতে থাকে, বন্ধুবান্ধবদের সাথে বাড়তে থাকে। বয়স্করা একসময় বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে ফেলতে শুরু করেন, পরিবারের সদস্যদেরকে আঁকড়ে ধরতে চান। পুত্র কন্যাদের চেয়ে নাতি নাতনিদের প্রতি তারা বেশি আকর্ষণ বোধ করেন, তাদের সাথেই বেশি সখ্য গড়ে ওঠে। কিন্তু একসময় তাদেরকেও হারাতে হয়, যেমন এক সময় তারা নিজেরাই তাদের ভাই বোন, মা বাবা, দাদা দাদী, নানা নানীকে ফেলে এসেছিলেন। ঘরের বাইরে বের হওয়া তাদের কমে যায়, সেলফোনে কথা বলার লোক ধীরে ধীরে কমতে থাকে, এক সময় কারো সাথে কথা বলার জন্য মনটা আঁকুপাকু করতে থাকলেও, তারা খুঁজেই পান না কার সাথে বলবেন! ঘরের বাইরে বের না হলেও কিছুকাল তারা নিজ বাড়ীর পুরোটা এলাকায় পদচারণা করেন, বয়স্কা মহিলারা মাঝে মাঝে রসুইঘরেও ঢোকেন বা ঢুকতে বাধ্য হন, কিন্তু এক সময় সেটাও ধীরে ধীরে সীমিত হয়ে যায়। তাদের চলাফেরা নিজ শয়নকক্ষে আর ওয়াশরুমে সীমিত হয়ে যায়, সেটাও যারা নিজ পদযুগলের ওপর ভর করে করতে সক্ষম হন, তারা ভাগ্যবান। কম ভাগ্যবানরা নিজ শয্যা থেকে ওয়াশরুম পর্যন্ত হুইলচেয়ারে করে অন্যের সাহায্যনির্ভর হয়ে যাওয়া আসা করেন। তারও পরে সেটাও সম্ভব হয় না। জন্মের পর পর শিশু যেমন মায়ের কোলে অথবা শয্যায় মলমূত্র ত্যাগ করে, তারাও তেমনি। শিশুরা যেমন জন্মের পর কয়েক সপ্তাহ কাউকে দেখেও চেনে না, কেবল মাকে চেনে ঘ্রাণশক্তি দিয়ে, ওনারাও তেমনি। উভয়ের প্রক্রিয়াটা অনেকটা একই রকম, পার্থক্য কেবল শিশুরা আসে, থেকে যায়; ওনারা এভাবে থাকতে থাকতে একসময় চলে যান। বিন্দুটা এক সময় স্ফীত হতে হতে বৃত্তে পরিণত হয়, আবার বৃত্তটা এক সময় চুপসে যেতে যেতে বিন্দুতে পরিণত হয়। এটাই জীবন চক্র।
ঢাকা
১০ জুন ২০২১
শব্দ সংখ্যাঃ ৮৫২
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
রাজা গুহ ২১/০৭/২০২১বিন্দু-বৃত্ত-বিন্দু...অসামান্য জীবন বোধ। শিক্ষণীয়।
-
দীপঙ্কর বেরা ২২/০৬/২০২১শিক্ষনীয়
-
আমিনুল ইসলাম সৈকত ১৭/০৬/২০২১সুন্দর হয়েছে লেখা
-
সাঞ্জু ১৬/০৬/২০২১জীবন খুবই জটিল প্রক্রিয়া
-
আমিনুল ইসলাম সৈকত ১১/০৬/২০২১শুভকামনা
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ১১/০৬/২০২১মানবশিশু বড়ই অসহায়,
নাই তার সহায়। -
মাহতাব বাঙ্গালী ১১/০৬/২০২১সকলের জীবনের খেয়াগুলো সময়ের ঘাটে ঘাটে বাঁধা
-
ফয়জুল মহী ১০/০৬/২০২১অভিভূত হলাম লেখাটা পড়ে, শুভ কামনা রইলো
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১০/০৬/২০২১ভালো লাগলো।
ব্লগে স্বাগতম।