www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

কৃষকপাড়া (এক)

অগ্রাহনের শেষ,পোষের শুরু। গ্রামের গৃহস্তেরা ব্যস্ত। কেউ ধান কাটছে,কেউ মাড়াই করছে,কেউ জমি চাষ করছে,কেউ চারা রোপণ করছে। ফলু গৃহস্তদের একজন। বয়স ২৬-২৭ হবে। সংসারে মা ছাড়া কেউ নেই। রোজ ফজরের নামাজ আদায় করে লাল চায়ের সাথে ঠান্ডা ভাতের গুটি গিলে বের হয়। ফিরে দুপুরে।
আজ শুক্রবার। বাড়ির দক্ষিণের বটতলায় চাষ দিচ্ছে ফলু। বলদগুলোর পায়ের গতি যখন কমে যায় তখন লেজ উপরের দিকে তুলে ধরে কাঁচা সিংলা(বেত) দিয়ে তাড়া করে, চাপাস্বরে ধমকায়। -"হাই দ্যাত তি-তি-তি, হারু রু-উ-উ"! বলদগুলো গতি বাড়িয়ে দেয়। সময় এগিয়ে যায়। কুয়াশার আবরণ ভেদ করে রোদ্রের তেজক্রিয় রশ্মি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
দূর থেকে হারু মিয়া হাক দেয়, জিঙেস করে,- "অ বেঠা ভাইগ্না, ইবার ইকানো কিতা খেত করতে?
--আলু দিলাইতাম কইয়ার বা মামু।
-আলুত দাম নাই রে...!
--সারা বছর খাওয়া যাইবতবা; প্রতিউত্তর দেয় ফলু। কথা বাড়ে, হালচাষ ফুরিয়ে আসে। এবার মই দিলেই জমি রোপনের উপযোগী। অদূরে রাস্তার মোড়ে বসে রোদ্রের সোনালি রশ্মি থেকে শীত নিবারন করছিল কাবির। ফলুর চোখ ওর দিকে পড়া মাত্র উচ্চস্বরে ডাক দিল-- 'কালাই নি-রে, তোড়া অবায় আয় রেবা। প্রতিবেশি কুদ্দুসের ছেলে কাবীর। গায়ের রঙ কালো বলে অনেকেই তাকে এই নামে ডাকে। কাবীর কিছু মনে করে না। অভ্যস্ত হয়ে গেছে। বিরক্তিকর কিছু শুনতে শুনতে মানুষ যখন অভ্যস্ত হয়ে পড়ে তখন আর শুনতে খারাপ লাগেনা।
কাবীর এগিয়ে আসে। মই চড়ে বসতে ভালো লাগে তার। বেলা বাড়ে। বাড়ে ক্লান্ততা। ক্ষুধা জ্বালা এসে পেটে হানা দেয়। বলদগুলোকে মাঠে ছেড়ে বাড়ির পথে পা বাড়ায় ফলু।

চলবে.....

(বি.দ্রঃ সিলেটের কোন এক অঞ্চলের একটি পরিবারের কয়েকদিনের জীবনযাত্রার খণ্ড চিত্র গল্পের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ধন্যবাদ।)
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৩০৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/০৩/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast