জলছবি
প্রিয়, যদি কখনো হারিয়ে যাই
তোমার থেকে বহু দূরে
একটু খুঁজে দেখো আমায় পাবে
তোমারই অন্তরে।
সেখানে থাকবো আমি জীবন্তস্মৃতি হয়ে...
ডায়েরির শেষেরপাতার কবিতাটি পড়তে পড়তে ছেলেটার দু'চোখ ভারি হয়ে এলো। কয়কবিন্দু নোনাজল চোখের কোণে টলমল করতে করতে নিরবে ঝরে পড়লো নিরবে। ধরে নেওয়া যাক, এই ছেলেটার নাম জল আর মেয়েটির নাম ছবি। ছেলেটা ভীষণ শান্ত। আর মেয়েটা ভীষণ দুষ্ট, কাব্যপ্রেমী। দুজন দুজনার ভিন্ন ভিন্ন পৃথিবীতে বেশ সুখী। নিয়মিত বন্ধুদের সাথে আড্ডা-গল্প, ঘুরাফেরা, খেলাধুলা আর দুষ্টুমিতে কেটে যেতো তাদের বেলা। একদিন আকস্মিক ক্লান্ত দুপুরের উদাস ছায়ায় দু'জনের পরিচয়।
তারপর প্রায়ই রৌদ্রজ্জল সকালে গ্রামের মেঠো পথে; উদাস দুপুরের ব্যস্ততায়, স্কুলের রাস্তায় কিংবা পড়ন্ত বিকেলে বাড়ির আঙিনায় তাদের দেখা হত। দুজনের ছোট ছোট কথামালায় মুখরিত হয়ে উঠত চারপাশ। কখনোবা কাছাকাছি বসে স্বপ্ন বোনা, অথবা হাতে হাত রেখে দিগন্তে ছুটে চলা....
এবাবেই একটু একটু করে দুজন দুজনার কাছের মানুষে পরিণত হলো। ক্রমান্বয়ে শিকড় গজাতে থাকলো নতুন এক সম্পর্ক। সেই সম্পর্কটা বন্ধুত্বের নাকি ভালোবাসার তারা জানত না। তাই বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মধ্যখানেই আটকে রইলো তাদের সম্পর্কটা।
কখনো একে অন্যকে ভালোবাসি বলতে পারেনি। হয়তোবা, তারা বলতেই চায়নি। কি ছিল সেই না বলার করণ? সেটা কেউই জানেনা। হতে পারে জলের ভীরুতা অথবা ছবির সংশয়, কিংবা দুজনেরই অনুভূতির অস্পষ্টতা।
নৈসর্গিক নিয়মে পেরিয়ে যেতে থাকলো সময়। বাস্তবতার ছোয়া লাগল জলের চিন্তাভাবনায়। নিজের চেয়ে বেশি ভাবতে লাগলো পরিবারের কথা। তার চেয়েও দ্রুত বদলে গেলো ছবির আচরণ। কেমন যেন অচেনা হয়ে গেলো মেয়েটি। ছবির সেই শীতল আচরণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে দূরে সরে যেতে থাকল জল। বাড়তে লাগলো দূরত্বের পরিধি। কখনো কখনো দুজন আগের মতো কাছে আসার চেষ্টা করলেও ছবির নিরবতা আর জলের বিষন্নতা একাকার হয়ে ব্যর্থতার কৌটায় বন্দি হতে থাকলো সব চেষ্টা।বিপরীতে হৃদয়পটে জন্ম নিতে থাকলো নতুন নতুন ক্ষোভ আর হতাশা। এইসব ব্যর্থতা, হতাশা আর ক্ষোভ- দুজনের মনে মাঝে মাঝে দূর আকাশের সহস্র তারার ভিড়ে মিশে যাওয়ার ইচ্ছে আঁকতে থাকতো। নাহ, তবে কেউই দূর আকাশের নিলিমায় কিংবা হাজারও তারার ভিড়ে হারিয়ে যায়নি। দুজনই বেঁচে আছে! হ্যা, বেশ ভালো আছে মেয়েটি। হয়তোবা অন্য কেউ এসে রাঙিয়ে দিয়েছে তার এলোমেলো জীবন। আর ছেলেটি? সে ব্যস্ত তার নিজের পৃথিবী নিয়ে। পরিবার,বন্ধুবান্ধব আর ভবিষ্যৎ প্রতিনিয়ত ভাবায় তাকে। তবে মাঝে মাঝে রাতের গভীরে ফিরে যায় অতীতে। চোখের পাতায় ভেসে উঠে অজস্র স্মৃতি। প্রাণবন্ত হয়ে উঠে নিজের অজান্তে আকা সেই জলছবি। ক্রমান্বয়ে কষ্টের কণাগুলোর জমাট বাধতে থাকে আকাশে, মেঘালয়ের নিচে ঢাকা পড়ে রবি। ছেলেটি ডায়েরি খুলে বসে। এবং একসময় কয়েকফোটা অশ্রুর বিসর্জন ঘটে।
তোমার থেকে বহু দূরে
একটু খুঁজে দেখো আমায় পাবে
তোমারই অন্তরে।
সেখানে থাকবো আমি জীবন্তস্মৃতি হয়ে...
ডায়েরির শেষেরপাতার কবিতাটি পড়তে পড়তে ছেলেটার দু'চোখ ভারি হয়ে এলো। কয়কবিন্দু নোনাজল চোখের কোণে টলমল করতে করতে নিরবে ঝরে পড়লো নিরবে। ধরে নেওয়া যাক, এই ছেলেটার নাম জল আর মেয়েটির নাম ছবি। ছেলেটা ভীষণ শান্ত। আর মেয়েটা ভীষণ দুষ্ট, কাব্যপ্রেমী। দুজন দুজনার ভিন্ন ভিন্ন পৃথিবীতে বেশ সুখী। নিয়মিত বন্ধুদের সাথে আড্ডা-গল্প, ঘুরাফেরা, খেলাধুলা আর দুষ্টুমিতে কেটে যেতো তাদের বেলা। একদিন আকস্মিক ক্লান্ত দুপুরের উদাস ছায়ায় দু'জনের পরিচয়।
তারপর প্রায়ই রৌদ্রজ্জল সকালে গ্রামের মেঠো পথে; উদাস দুপুরের ব্যস্ততায়, স্কুলের রাস্তায় কিংবা পড়ন্ত বিকেলে বাড়ির আঙিনায় তাদের দেখা হত। দুজনের ছোট ছোট কথামালায় মুখরিত হয়ে উঠত চারপাশ। কখনোবা কাছাকাছি বসে স্বপ্ন বোনা, অথবা হাতে হাত রেখে দিগন্তে ছুটে চলা....
এবাবেই একটু একটু করে দুজন দুজনার কাছের মানুষে পরিণত হলো। ক্রমান্বয়ে শিকড় গজাতে থাকলো নতুন এক সম্পর্ক। সেই সম্পর্কটা বন্ধুত্বের নাকি ভালোবাসার তারা জানত না। তাই বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার মধ্যখানেই আটকে রইলো তাদের সম্পর্কটা।
কখনো একে অন্যকে ভালোবাসি বলতে পারেনি। হয়তোবা, তারা বলতেই চায়নি। কি ছিল সেই না বলার করণ? সেটা কেউই জানেনা। হতে পারে জলের ভীরুতা অথবা ছবির সংশয়, কিংবা দুজনেরই অনুভূতির অস্পষ্টতা।
নৈসর্গিক নিয়মে পেরিয়ে যেতে থাকলো সময়। বাস্তবতার ছোয়া লাগল জলের চিন্তাভাবনায়। নিজের চেয়ে বেশি ভাবতে লাগলো পরিবারের কথা। তার চেয়েও দ্রুত বদলে গেলো ছবির আচরণ। কেমন যেন অচেনা হয়ে গেলো মেয়েটি। ছবির সেই শীতল আচরণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে দূরে সরে যেতে থাকল জল। বাড়তে লাগলো দূরত্বের পরিধি। কখনো কখনো দুজন আগের মতো কাছে আসার চেষ্টা করলেও ছবির নিরবতা আর জলের বিষন্নতা একাকার হয়ে ব্যর্থতার কৌটায় বন্দি হতে থাকলো সব চেষ্টা।বিপরীতে হৃদয়পটে জন্ম নিতে থাকলো নতুন নতুন ক্ষোভ আর হতাশা। এইসব ব্যর্থতা, হতাশা আর ক্ষোভ- দুজনের মনে মাঝে মাঝে দূর আকাশের সহস্র তারার ভিড়ে মিশে যাওয়ার ইচ্ছে আঁকতে থাকতো। নাহ, তবে কেউই দূর আকাশের নিলিমায় কিংবা হাজারও তারার ভিড়ে হারিয়ে যায়নি। দুজনই বেঁচে আছে! হ্যা, বেশ ভালো আছে মেয়েটি। হয়তোবা অন্য কেউ এসে রাঙিয়ে দিয়েছে তার এলোমেলো জীবন। আর ছেলেটি? সে ব্যস্ত তার নিজের পৃথিবী নিয়ে। পরিবার,বন্ধুবান্ধব আর ভবিষ্যৎ প্রতিনিয়ত ভাবায় তাকে। তবে মাঝে মাঝে রাতের গভীরে ফিরে যায় অতীতে। চোখের পাতায় ভেসে উঠে অজস্র স্মৃতি। প্রাণবন্ত হয়ে উঠে নিজের অজান্তে আকা সেই জলছবি। ক্রমান্বয়ে কষ্টের কণাগুলোর জমাট বাধতে থাকে আকাশে, মেঘালয়ের নিচে ঢাকা পড়ে রবি। ছেলেটি ডায়েরি খুলে বসে। এবং একসময় কয়েকফোটা অশ্রুর বিসর্জন ঘটে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
মনিরুজ্জামান রাফি ০৭/১২/২০১৫ভাল লাগলো।
-
মনিরুজ্জামান রাফি ০৭/১২/২০১৫খুব ভাল লাগলো।
-
মোঃ মুলুক আহমেদ ০৬/১২/২০১৫একবার পড়লে, বারবার পড়তে মন চায়|
কিন্তু কেন? -
দেবাশীষ দিপন ০৬/১২/২০১৫ভাল লেগেছে খুব।।
-
মোহাম্মদ আয়নাল হক ০৫/১২/২০১৫ভালো লাগা জানবেন কবি অভিরত
-
হাসান কাবীর ০৫/১২/২০১৫ভালো হয়েছে,আরো লিখুন।
-
নাসিফ আমের চৌধুরী ০৫/১২/২০১৫ভাল
-
সমরেশ সুবোধ পড়্যা ০৫/১২/২০১৫ভালো লাগলো । শুভেচ্ছা জানাই।
-
শাহানাজ সুলতানা (শাহানাজ) ০৫/১২/২০১৫ভালোই লাগলো শুভ কামনা রইলো।