দর্পণে ভালবাসা
কলকাতার এক নামী কোম্পানির ফাইনান্স ম্যানেজার তন্ময় বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের ফ্লাটে একা । স্ত্রী অরুণিমা দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগে গত বছর তাকে ছেড়ে চিরদিনের মত বিদায় নিয়েছে । পাঁচ বছরের বিবাহিত জীবনে সে নিঃসন্তান । দাদা-বৌদি, অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু- বান্ধবদের অনুরোধ উপদেশও তাকে দ্বিতীয় বার বিয়ের পিড়িতে বসাতে পারেনি । অরুণিমাকে সে কিছুতেই ভুলতে পারেনা । সব সময় তার কথা মনে পড়ে । অরুণিমার জায়গায় সে কাউকেই বসাতে পারবে না ।
আজ রবিবার । ছুটির দিন । ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরীই হয়ে গেল তন্ময়ের । সামনে দেওয়ালে টাঙ্গানো ক্যালেন্ডারের দিকে নজর পড়তেই সে চমকে উঠল । আজ ৯ই ফেব্রুয়ারী । আজ অরুণিমার জন্মদিন । শোবার ঘরে অরুণিমার অয়েল-পেন্ট করা বড় ছবিটার দিকে তাকাতেই ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে তন্ময়ের । মনে পড়ে যায় এই দিনে তারা দু'জনে কত আনন্দ করত । রাতের ডিনার নামী রেস্তোরাঁয় হত । বিয়ের পর অরুণিমার জন্মদিনে তারা সারাদিন সায়েন্স-সিটিতে কাটিয়েছিল । বাড়ি ফেরার পথে সপিংমল থেকে মেরুন রঙের একটা সিল্কের শাড়ি অরুণিমাকে উপহার দিয়েছিল । অরুণিমাও একই রঙের একটা টি-শার্ট দিয়েছিল তাকে ।
দেওয়ালে টাঙ্গানো বড় ঘড়িটা মিউজিক বাজিয়ে বেলা ন'টার ইঙ্গিত দিল । দেরী না করে বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসে অরুণিমার ছবিটা পরিস্কার করল তন্ময় । তারপর ফুলের দোকান থেকে রজনীগন্ধার মালা আর একগোছা লালগোলাপ নিয়ে এল সে ।লালগোলাপ অরুণিমার ভীষণ প্রিয় ছিল । ছবিতে রজনীগন্ধার মালা পরিয়ে সামনে রাখা হাই টেবিলের ফুলদানিতে গোলাপের গোছা রেখে অরুণিমার চোখের দিকে তাকাতেই তাদের দু'জনের অতীতের রোমান্টিক মুহূর্তগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠল তন্ময়ের । অজান্তেই তার চোখের কোল ঘেঁষে গড়িয়ে পড়ল জলের ধারা । ধীরে ধীরে সে ঘরের এক কোণে রাখা অরুণিমার নিজস্ব আলমারিটার কাছে গিয়ে দাঁড়াল । আলমারিটায় আস্তে আস্তে হাত বোলাতে বোলাতে আলতো করে তাতে চুমু খেলো । আলমারির দরজা খুলে থরে থরে সাজানো অরুণিমার শাড়ি সালোয়ার-কামিজগুলোতে মৃদু হাত বোলাতে লাগলো । বিয়ের পর অরুণিমার প্রথম জন্মদিনে দেওয়া সেই প্রিয় মেরুন সিল্কের শাড়িটার দিকে চোখ পড়তেই সে আরও আবেগে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল । শাড়িটাকে আদর করে হাত বোলাতে বোলাতে আলমারি থেকে বার করতেই শাড়ির ভাঁজে রাখা একটা খাম মেঝেতে পড়ে গেল । অদম্য কৌতুহলে খামটা সে তুলে নিল । তারপর খামটা খুলতেই তার চোখে পড়ল এক সুদর্শন যুবকের ছবি । সাথে একটা সুন্দর কার্ড । তাতে গোটা গোটা সুন্দর হস্তাক্ষরে লেখা "আই লাভ ইউ অরু, আই অ্যাঁম ইয়রস ।" কার্ডের তারিখটা ভালো করে দেখল তন্ময় । বিয়ের দু'বছর পর পাঠানো কার্ড ।
তন্ময় তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় । তার হাত থেকে শাড়িটা মেঝেতে পড়ে গেল । তার মনে পড়ল অরুণিমার কথাগুলো - " তন্ময় আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি । আমি তোমারই ।।"
আজ রবিবার । ছুটির দিন । ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরীই হয়ে গেল তন্ময়ের । সামনে দেওয়ালে টাঙ্গানো ক্যালেন্ডারের দিকে নজর পড়তেই সে চমকে উঠল । আজ ৯ই ফেব্রুয়ারী । আজ অরুণিমার জন্মদিন । শোবার ঘরে অরুণিমার অয়েল-পেন্ট করা বড় ছবিটার দিকে তাকাতেই ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে তন্ময়ের । মনে পড়ে যায় এই দিনে তারা দু'জনে কত আনন্দ করত । রাতের ডিনার নামী রেস্তোরাঁয় হত । বিয়ের পর অরুণিমার জন্মদিনে তারা সারাদিন সায়েন্স-সিটিতে কাটিয়েছিল । বাড়ি ফেরার পথে সপিংমল থেকে মেরুন রঙের একটা সিল্কের শাড়ি অরুণিমাকে উপহার দিয়েছিল । অরুণিমাও একই রঙের একটা টি-শার্ট দিয়েছিল তাকে ।
দেওয়ালে টাঙ্গানো বড় ঘড়িটা মিউজিক বাজিয়ে বেলা ন'টার ইঙ্গিত দিল । দেরী না করে বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে এসে অরুণিমার ছবিটা পরিস্কার করল তন্ময় । তারপর ফুলের দোকান থেকে রজনীগন্ধার মালা আর একগোছা লালগোলাপ নিয়ে এল সে ।লালগোলাপ অরুণিমার ভীষণ প্রিয় ছিল । ছবিতে রজনীগন্ধার মালা পরিয়ে সামনে রাখা হাই টেবিলের ফুলদানিতে গোলাপের গোছা রেখে অরুণিমার চোখের দিকে তাকাতেই তাদের দু'জনের অতীতের রোমান্টিক মুহূর্তগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠল তন্ময়ের । অজান্তেই তার চোখের কোল ঘেঁষে গড়িয়ে পড়ল জলের ধারা । ধীরে ধীরে সে ঘরের এক কোণে রাখা অরুণিমার নিজস্ব আলমারিটার কাছে গিয়ে দাঁড়াল । আলমারিটায় আস্তে আস্তে হাত বোলাতে বোলাতে আলতো করে তাতে চুমু খেলো । আলমারির দরজা খুলে থরে থরে সাজানো অরুণিমার শাড়ি সালোয়ার-কামিজগুলোতে মৃদু হাত বোলাতে লাগলো । বিয়ের পর অরুণিমার প্রথম জন্মদিনে দেওয়া সেই প্রিয় মেরুন সিল্কের শাড়িটার দিকে চোখ পড়তেই সে আরও আবেগে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল । শাড়িটাকে আদর করে হাত বোলাতে বোলাতে আলমারি থেকে বার করতেই শাড়ির ভাঁজে রাখা একটা খাম মেঝেতে পড়ে গেল । অদম্য কৌতুহলে খামটা সে তুলে নিল । তারপর খামটা খুলতেই তার চোখে পড়ল এক সুদর্শন যুবকের ছবি । সাথে একটা সুন্দর কার্ড । তাতে গোটা গোটা সুন্দর হস্তাক্ষরে লেখা "আই লাভ ইউ অরু, আই অ্যাঁম ইয়রস ।" কার্ডের তারিখটা ভালো করে দেখল তন্ময় । বিয়ের দু'বছর পর পাঠানো কার্ড ।
তন্ময় তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় । তার হাত থেকে শাড়িটা মেঝেতে পড়ে গেল । তার মনে পড়ল অরুণিমার কথাগুলো - " তন্ময় আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি । আমি তোমারই ।।"
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
Înšigniã Āvî ২১/০৯/২০১৩
-
ইব্রাহীম রাসেল ২১/০৯/২০১৩--বাহ, দারুণ একটি গল্প--
-
দেবদাস মৈত্র ২১/০৯/২০১৩একই ধরনের গল্পে কত রকম শাখা-প্রশাখা থাকতে পারে সেটা লেখিকা দেখিয়ে দিলেন বলেই আমার বিশ্বাস । জয়শ্রীর গল্পগুলোর মধ্যে অসাধারন অসাধারন সব কল্পনাগুলো বাস্তব ও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে । গল্প বলার ঢং-ও বেশ সহজ ও সাবলিল ।
-
Shubhajit majumdar ২১/০৯/২০১৩Khub sundar monta kothay jano hareya geya6elo best of luck jayasree
-
shubhajit majumdar ২১/০৯/২০১৩Sotti ato valo likha6o monta hareya ga6elo but valobasa kasto o dey kintu tumi khub sundar likha6o jayasree
-
সুবীর কাস্মীর পেরেরা ২০/০৯/২০১৩কখনো কখনো অতীত মানুষকে কাঁদায়
-
সালমান মাহফুজ ২০/০৯/২০১৩গল্পের প্লট অসাধারণ লেগেছে জয়শ্রী দিদি । কথাসাহিত্যের চমৎকার গুণাবলী আছে আপনার মধ্যে । এগিয়ে যান ।
আপনার লেখাগুলো পড়ে মনে হয় বাণী বসু বা সুচিত্রা ভট্টাচার্যের লেখা পড়ছি,
খুব ভালো লাগে ।