বিধ্বস্ত শ্রাবন
একটু আগেই একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং শেষ করে নিজের অফিস ঘরে এসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিল সুচেতা । শ্রাবনের শেষ । আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা । মনে হচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝেঁপে বৃষ্টি নামবে । বাইরের দিকে তাকিয়ে সুচেতার মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠল ।
শেখরের সাথে প্রায় ছ'বছর তার কোন যোগাযোগ নেই । সে ভালবেসেই বিয়ে করেছিল শেখরকে । কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে ছেলে সৌম্যের জন্মের এক বছরের মধ্যেই শেখরকে ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল সে । শেখরের অত্যাধুনিক জীবন সে আর সহ্য করতে পারছিল না । একদিন বচসা চরমে উঠল । শেখর সেদিন তার গায়ে হাত তুলেছিল । কালবিলম্ব না করে সে সেদিনই সৌম্যকে নিয়ে বাবা-মায়ের কাছে চলে এসেছিল । তারপর এম,বি,এ, কোর্স কমপ্লিট করে মেধা গুনে নামী কোম্পানির এই পার্সোনেল অফিসারের চাকরিটা সে পেয়ে গেল । এখন পর্যন্তও শেখরের সাথে তার আইনতঃ বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়নি । ছেলে সৌম্যের জন্য মনটা বড় খারাপ লাগে । বাধ্য হয়ে তাকে রাখতে হয়েছে দার্জিলিঙের সেন্ট-পলসে ।
হঠাৎ সুইংডোরে নকিং-এর আওয়াজ । জানালা থেকে চোখ সরিয়ে নেয় সুচেতা । ঘরে ঢোকে তার পিয়ন শ্যাম ।
- ম্যাডাম, আপনার ভিজিটর ।
একটু বিরক্ত হল সুচেতা । ভিজিটিং আওয়ার্স তিনটের পর । এখনও প্রায় দু'ঘণ্টা বাকি । শ্যামকে ধমকে উঠল সুচেতা ।
- তুমি তো জান, এ সময়ে আমি কারো সাথে দেখা করি না ।
- আমি অনেকবার সে কথা বলেছি ম্যাডাম । উনি নাছোড়বান্দা । উনি বললেন আপনার সাথে দেখা করা ওনার খুব জরুরি ।
- ঠিক আছে, ওনাকে বল এখন দেখা করা যাবে না ।
শ্যাম চলেই যাচ্ছিল । সুচেতার হঠাৎ কি মনে হল, শ্যামকে পিছন থেকে ডেকে বলল - 'ঠিক আছে, পাঠিয়ে দাও । ভদ্রলোক হয়তঃ কোন আর্জেন্ট বিষয়ে কথা বলতে চান।'
শ্যাম ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই টেবিলের একপাশে কফির কাপটা রেখে সুচেতা তার চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে আরাম করে বসে । চোখ দুটো তার সামনের সুইং-ডোরের দিকে নিবদ্ধ ।
- ' আসব ?'
ভিজিটরের দিকে তাকাতেই সুচেতার চক্ষুস্থির । বিস্ময়ে সে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় । শেখর যে এ-ভাবে এতদিন পরে তার সাথে দেখা করতে আসবে, সে ভাবতেও পারেনি । কিন্তু আজ তার সামনে যে শেখর দাঁড়িয়ে আছে সে তার সেই শেখর নয় । বিধ্বস্ত চেহারায় এ এক অন্য শেখর । সুচেতা নিজেকে আর সামলাতে পারল না ।
- এ-কি তুমি ? এখানে কেন এসেছ ? বেরিয়ে যাও এখান থেকে ।
শেখর দু'হাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে ফেলল ।
- সুচেতা, আমরা তিনজন আবার একসঙ্গে থাকতে পারি না ? আমার না হয় অনেক ভুল হয়েছে, তার জন্য আমাকে ক্ষমা করতে পারো না ?
- না, তা সম্ভব নয় । চলে যাও এখান থেকে ।
শেখর মাথা হেঁট করে কিছুক্ষণ নির্বিকার দাঁড়িয়ে রইল । তারপর কথা আর না বাড়িয়ে চলে যাবার জন্য পা বাড়াল । হঠাৎই মাথা ঘুরে গিয়ে দরজা ধরে দাঁড়িয়ে পড়ল শেখর ।
শেখরের অবস্থা দেখে সুচেতা নিজেকে আর কঠিন আস্তরনে আবদ্ধ রাখতে পারল না ।
- দাঁড়াও । একা চলার ক্ষমতা তুমি হারিয়েছ ।
সুচেতার দু'চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ল জলের ধারা ।
শেখরের সাথে প্রায় ছ'বছর তার কোন যোগাযোগ নেই । সে ভালবেসেই বিয়ে করেছিল শেখরকে । কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে ছেলে সৌম্যের জন্মের এক বছরের মধ্যেই শেখরকে ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল সে । শেখরের অত্যাধুনিক জীবন সে আর সহ্য করতে পারছিল না । একদিন বচসা চরমে উঠল । শেখর সেদিন তার গায়ে হাত তুলেছিল । কালবিলম্ব না করে সে সেদিনই সৌম্যকে নিয়ে বাবা-মায়ের কাছে চলে এসেছিল । তারপর এম,বি,এ, কোর্স কমপ্লিট করে মেধা গুনে নামী কোম্পানির এই পার্সোনেল অফিসারের চাকরিটা সে পেয়ে গেল । এখন পর্যন্তও শেখরের সাথে তার আইনতঃ বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়নি । ছেলে সৌম্যের জন্য মনটা বড় খারাপ লাগে । বাধ্য হয়ে তাকে রাখতে হয়েছে দার্জিলিঙের সেন্ট-পলসে ।
হঠাৎ সুইংডোরে নকিং-এর আওয়াজ । জানালা থেকে চোখ সরিয়ে নেয় সুচেতা । ঘরে ঢোকে তার পিয়ন শ্যাম ।
- ম্যাডাম, আপনার ভিজিটর ।
একটু বিরক্ত হল সুচেতা । ভিজিটিং আওয়ার্স তিনটের পর । এখনও প্রায় দু'ঘণ্টা বাকি । শ্যামকে ধমকে উঠল সুচেতা ।
- তুমি তো জান, এ সময়ে আমি কারো সাথে দেখা করি না ।
- আমি অনেকবার সে কথা বলেছি ম্যাডাম । উনি নাছোড়বান্দা । উনি বললেন আপনার সাথে দেখা করা ওনার খুব জরুরি ।
- ঠিক আছে, ওনাকে বল এখন দেখা করা যাবে না ।
শ্যাম চলেই যাচ্ছিল । সুচেতার হঠাৎ কি মনে হল, শ্যামকে পিছন থেকে ডেকে বলল - 'ঠিক আছে, পাঠিয়ে দাও । ভদ্রলোক হয়তঃ কোন আর্জেন্ট বিষয়ে কথা বলতে চান।'
শ্যাম ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই টেবিলের একপাশে কফির কাপটা রেখে সুচেতা তার চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে আরাম করে বসে । চোখ দুটো তার সামনের সুইং-ডোরের দিকে নিবদ্ধ ।
- ' আসব ?'
ভিজিটরের দিকে তাকাতেই সুচেতার চক্ষুস্থির । বিস্ময়ে সে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় । শেখর যে এ-ভাবে এতদিন পরে তার সাথে দেখা করতে আসবে, সে ভাবতেও পারেনি । কিন্তু আজ তার সামনে যে শেখর দাঁড়িয়ে আছে সে তার সেই শেখর নয় । বিধ্বস্ত চেহারায় এ এক অন্য শেখর । সুচেতা নিজেকে আর সামলাতে পারল না ।
- এ-কি তুমি ? এখানে কেন এসেছ ? বেরিয়ে যাও এখান থেকে ।
শেখর দু'হাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে ফেলল ।
- সুচেতা, আমরা তিনজন আবার একসঙ্গে থাকতে পারি না ? আমার না হয় অনেক ভুল হয়েছে, তার জন্য আমাকে ক্ষমা করতে পারো না ?
- না, তা সম্ভব নয় । চলে যাও এখান থেকে ।
শেখর মাথা হেঁট করে কিছুক্ষণ নির্বিকার দাঁড়িয়ে রইল । তারপর কথা আর না বাড়িয়ে চলে যাবার জন্য পা বাড়াল । হঠাৎই মাথা ঘুরে গিয়ে দরজা ধরে দাঁড়িয়ে পড়ল শেখর ।
শেখরের অবস্থা দেখে সুচেতা নিজেকে আর কঠিন আস্তরনে আবদ্ধ রাখতে পারল না ।
- দাঁড়াও । একা চলার ক্ষমতা তুমি হারিয়েছ ।
সুচেতার দু'চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ল জলের ধারা ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী ১৭/০৯/২০১৩ভাল লিখেছ... তারপর।
-
Înšigniã Āvî ১৭/০৯/২০১৩অসাধারণ...