লাল পলাশ
প্রতিদিন স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে বড় রাস্তা ছেড়ে গ্রামের ভিতর দিয়ে যাওয়া আঁকা-বাঁকা সরু রাস্তাটা ধরি । একটু ঘুরে যেতে হয় এবং একটু বেশী সময় লাগে ঠিকই কিন্তু সময়ের তাড়া না থাকায় এই রাস্তা দিয়ে যেতে বেশ ভালই লাগে । বাঁকুড়ার লালমাটির পথ দিয়ে যেতে এক আলাদা অনুভূতি অনুভব করা যায় । রাস্তার দু’ধারে খড়ের চাল দেওয়া ঘর, রাস্তার মাঝে বা পাশের ছোট মাঠে বাচ্চাদের খেলা, পুকুরের শাপলাদলের আনাগোনা, বুনো গাছগাছালির আন্দোলন, পাখিদের বাসায় ফেরার কিচিরমিচির আর তার ফাঁকে সূর্যাস্তের কনে দেখা আলো মনকে ভীষণ ভাবে উদ্বেলিত করে তোলে । এখন প্রাক বসন্ত । প্রকৃতি নতুন সাজে সেজে উঠছে । শিমুল, পলাশ তাদের রক্ত রাগের ছটায় উচ্ছ্বসিত । পুকুরের ধারে সারি সারি লাল ফুলে ভরা শিমূল পলাশ গাছগুলো গ্রাম্য প্রকৃতিকে আরও পূর্ণতা এনে দিয়েছে ।
এখানেই রোজ দেখা হয় একটা ছোট্ট ছেলের সাথে । নাম তার রহিত । বয়স বড়জোর নয় দশ হবে । একদিন ফেরার পথে নিজের অসাবধনাতায় হাতের ফাইল থেকে একটা পেন পড়ে যায় । ও দৌড়ে এসে আধো আধো আদুরে গলায় বলে – ‘দিদিমনি, তোমার পেন’ । সরলতায় ভরা মুখটা দেখে খুব মায়া পড়ে যায় । ‘কি নাম রে তোর’ ? - ‘রোহিত দিদিমনি’ । -‘পড়াশোনা করিস’ ? –হ্যাঁ, পাঠশালায় টু-তে পড়ি গো’ । হ্যান্ড ব্যাগ খুলে ওর হাতে পাঁচ টাকার কয়েন দিতে গেলাম । মাথা নাড়ল নেবে না । গাল ধরে একটু আদর করে এগিয়ে গেলাম আমার পথে । পরদিন ফেরার পথে আবার দেখা রহিতের সাথে । আজ ওর হাতে গুঁজে দিই দুটো চকলেট । দারুণ খুশি । মাঝে মাঝেই দুটো চকলেট ওর হাতে ধরিয়ে দিই । ওর আলো ঝলমলে মুখটা দেখে খুব আনন্দ লাগে ।
সেদিনও ফিরছিলাম ঐ পথ ধরে । রহিত আজও দাঁড়িয়ে আছে ফুল ভরা পলাশ গাছটার তলায় । হাতে এক রাশ লাল পলাশ । আমাকে দেখে হাসিমুখে এগিয়ে এল । - ‘দিদিমনি তোমার জন্য’ । আজ ঐ যে সবাই বলছে না – ভালবাসার দিন । ফুল দিতে হয় । তুমি তো আমায় প্রায়ই চকলেট দাও । আমি তোমাকে কিছু দিতে পারিনা । নাও এগুলো । তোমার জন্য পেড়ে রেখেছি । দু’হাত ভরে লালপলাশ তুলে নিলাম । ওর নিষ্পাপ ভালবাসায় মনটা ভরে গেল । চোখে জলের চিকচিকানি । বাঁকুড়ার লালমাটির পথ ধরে এগিয়ে চললাম বাসার পথে ।।
এখানেই রোজ দেখা হয় একটা ছোট্ট ছেলের সাথে । নাম তার রহিত । বয়স বড়জোর নয় দশ হবে । একদিন ফেরার পথে নিজের অসাবধনাতায় হাতের ফাইল থেকে একটা পেন পড়ে যায় । ও দৌড়ে এসে আধো আধো আদুরে গলায় বলে – ‘দিদিমনি, তোমার পেন’ । সরলতায় ভরা মুখটা দেখে খুব মায়া পড়ে যায় । ‘কি নাম রে তোর’ ? - ‘রোহিত দিদিমনি’ । -‘পড়াশোনা করিস’ ? –হ্যাঁ, পাঠশালায় টু-তে পড়ি গো’ । হ্যান্ড ব্যাগ খুলে ওর হাতে পাঁচ টাকার কয়েন দিতে গেলাম । মাথা নাড়ল নেবে না । গাল ধরে একটু আদর করে এগিয়ে গেলাম আমার পথে । পরদিন ফেরার পথে আবার দেখা রহিতের সাথে । আজ ওর হাতে গুঁজে দিই দুটো চকলেট । দারুণ খুশি । মাঝে মাঝেই দুটো চকলেট ওর হাতে ধরিয়ে দিই । ওর আলো ঝলমলে মুখটা দেখে খুব আনন্দ লাগে ।
সেদিনও ফিরছিলাম ঐ পথ ধরে । রহিত আজও দাঁড়িয়ে আছে ফুল ভরা পলাশ গাছটার তলায় । হাতে এক রাশ লাল পলাশ । আমাকে দেখে হাসিমুখে এগিয়ে এল । - ‘দিদিমনি তোমার জন্য’ । আজ ঐ যে সবাই বলছে না – ভালবাসার দিন । ফুল দিতে হয় । তুমি তো আমায় প্রায়ই চকলেট দাও । আমি তোমাকে কিছু দিতে পারিনা । নাও এগুলো । তোমার জন্য পেড়ে রেখেছি । দু’হাত ভরে লালপলাশ তুলে নিলাম । ওর নিষ্পাপ ভালবাসায় মনটা ভরে গেল । চোখে জলের চিকচিকানি । বাঁকুড়ার লালমাটির পথ ধরে এগিয়ে চললাম বাসার পথে ।।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ডাঃ প্রবীর আচার্য নয়ন ০৫/০৬/২০১৮দারুণ!
-
আসাদুজ্জামান খান ১৭/০৫/২০১৮বেশ। ছোট ছোট কিছু আনন্দ, কিছু ভালোবাসাই এ জীবন সুন্দর করার জন্য যথেষ্ঠ।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১৬/০৫/২০১৮ভালো লেগেছে।