www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

পাহাড়ি কলেজ লাইফ ( বড়পরং)

(৩)
গতকাল রাত থেকেই তুমুল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ভোর রাত হতে বৃষ্টি একটু কমে গুড়ি গুড়ি বর্ষন হচ্ছে এখনো। সকাল হলেও সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না। দেখতে দেখতে আবারও ঘন বর্ষন শুরু হল। এদিকে কিশোরের কলেজ যাবার সময়ও পেরিয়ে গেল। সেভাবল যাক! আজকে আর কলেজ যাওয়া হলো না। ছাতা নিয়ে কলেজে সে পৌছতে পারলেও লাভ হওয়ার আশা নেই। কেননা ছাত্র বা শিক্ষক কেউ আসতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। কিশোরের বাবা গিয়েছিল ধানী জমির কাজ দেখতে। এক বড় ভাই তরুন ও অন্য একজন শ্রমিক জমিতে কাজ করছে। কিছুক্ষনের মধ্যে কিশোরের বাবা মনিভূষন দেওয়ান ছাতা মাথায় বাড়িতে ফিরে এলেন। সকালের খাবার এখনো খাওয়া হয়নি। কিশোরের মা কিশোরকে রান্নাঘর থেকে ডাক দিলেন। তারা খেতে বসল এক সাথে মাদুর বিছিয়ে। হলা ভাত, চুগুনীদি মরিচবাত্যে আর আঙরমাচ বেগুনতোন- এই হচ্ছে ম্যনু। বাবাকে যেতে হবে আবার মাঠে ছেলের খাবার নিয়ে। মা কিশোরকে দাদুর ঘর ঘর থেকে খাবারের থালা বাটি আনতে বললেন। মূল ঘর থেকে দু-কদম দূরে দাদুর ২ রুমের আলাদা ঘর। তিনি একাই থাকেন দাদী মারা যাবার পর থেকে। কিশোর দেখল দাদু কেমন যেন আনমনা আর অসহায় ভাবে বসে আছে।
জিজ্ঞেস করল-আহ্ কি অহইয়ে আজু? চুদো মুউ পাঙর।নাতির কথা শুনে দাদু একটু হাসলেন। বললেন-
-কাপ্তে গদা নাঙ শুন্নোচ দাদু? সে দিনুন রিনি চে’ আগংগে! কিশোর ভাবল আজু আজ আবার পুরোনো টেপ বাজিয়ে দেবে নাকি আবার? বড় গাঙের এককূলে ছিল বড়আদাম বড় একটি গ্রাম, যেখানে ১০০ পরিবারের বেশী লোকের বাস ছিল ১৯৬০ ইংরেজীর পূর্বে। কিশোর বল্ল-
-আজু বাচ্চাক, মা’মারে এডা আনি ডি এজংগোই!
কলেজ যাওয়া হলো না। বাইরে বৃষ্টি, কোথাও যাবার তাড়া নেই। তাই সে দাদুর কাছে গিয়ে শুনল আবারও সেই পুরানো রের্কড। দাদু যা বল্লো তা অনেকটা এ রকম-
ব্যঙ-এ শহর’ত গিয়ে খবর নিয়ে আসার মতন সংবাদ এল যে পানি আসছে। আমাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানে এটা কোনদিন ভাবিনি যে বড়গাংকেউ বেঁধে ফেলা যায়। আমার তখন ১০/১২ বছরের সংসার । তোমার বাবাসহ ৫টি ছেলে মেয়ে। আমার বাবার দেয়া উচু ভিটা গুলোতে ঝাঁড়-জংগল পরিষ্কার করে আম কাঠালের বাগান করে ফেলেছি। আর ৩/৪ বছরের মধ্যে ফল আসবে। তোমার দাদী হাঁস, মুরগী আর শুকর পালন করে ঘরের চারপাশ ভরিয়ে ফেলেছেন। আমার গোয়ালে মহিষ ছোট বড় মিলিয়ে ৫ জোড়া, গরু ছিল ১৭ টি। তোমার বড় জ্যঠ্যা রাঙামাটি সরকারী স্কুলে পড়াশুনা করছে। তার পেছনে অন্য দুটি ভাইবোনও স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। তোমার বাবা ছোট, স্কুলে যাবার মতো অবস্থা হয়নি। আমি পুরো সংসার গুছিয়ে এনেছিলাম। ভাবছিলাম একটি নৌকা ক্রয় করে চট্টগ্রামে মাল আনা নেয়ার কাজে লাগিয়ে দেব। তখনিই আজগুবি খবরটা এল যে, পাকিস্থানী সরকার বড়গাঙে বাঁধ দেয়া শুরু করেছে। কাপ্তাইয়ের ঐ এলাকায় কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। আমাদের গ্রামের কেউ বিশ্বাস করতে পারেনি কী হতে চলেছে। আাম মনে মনে বুঝেছিলাম, মনে নিতে না চাইলেও মেনে নিতে হবে। আমার দুই ভাই মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা পানি আসতে শুরু করলে চলে গেলো ত্রিপুরামুখি অজানার উদ্দেশ্যে নতুন জীবনের সন্ধানে। বাজারে গরু মহিষের দাম কমে গেল আর হুট করে সোনাদানার দাম বেড়ে গেল। আমাদের সম্পত্তি বলতে যা ছিল গবাদি পশু আর আবাদি জমি, কিছুই আর মূল্য রইল না। তখনই বুঝেছিলাম জীবনের চেয়ে বড় সম্পদ আর নেই। তাই জীবন হাতে নিয়ে দুইদিন নৌকা চড়ে আসতে হলো এই গভীর জংগলে। অনাবাদী জমি কর্ষন করে করতে হলো আবাদ। শুরু হলো পক্ষাঘাতের জীবন! কেননা এই আঘাত কোনদিন ভুলতে পারিনি। রাঙামাটির সেই লেকের পানি দেখলে আমার চোখে জল আসে। মনে পড়ে সেসব রঙিন দিন। আমার মা-বাবা, দাদা-দিদি বড় পরিবার, আমার ছেলেবেলা…
প্রথম বছর খুব বৃষ্টি হলো, কর্ণফুলী বা বড়গাঙকে বাধা গেল না। পরবর্তী বছর বাঁধ আর ভাঙতে পারল না বড়গাঙ। আস্তে আস্তে ২/৩ বছরের মধ্যে হাট-বাজার, বসতভিটে, এমন কি রাজবাড়ী জলমগ্ন হয়ে গেল। বেচেঁ গেল কেবল উচু পাহাড়ে নির্মিত ডিসি অফিস ও গভার্নমেন্ট স্কুল। অবস্থাপন্ন মানষরা উঠে এল পাহাড়ের উপরের অংশে যেখানে জংগল। জংগল পরিষ্কার করা হল, পালিয়ে গেল সব জন্তু জানোয়ার মানুষের ভয়ে। ভয়ংকর প্রাকৃতিক বির্পযয়ে রাঙামাটির অবস্থা একবারে বদলে গেল। বিদ্যুত চলে গেল চট্টগ্রাম শহরের কলকারখানা স্থাপনে, উন্নয়নে আর গোটা পাবর্ত্য চট্টগ্রাম ডুবে গেল নিকশ অন্ধকারে।
কিশোর প্রশ্ন করে ছিল-জমির বদলে জমি তো পেলে দাদু, তবু কেন তোমার আক্ষেপ যাচ্ছে না!? দাদু বলল-জন্মভূমি বা মাতৃভূমির বিকল্প কিছু নেই দাদু! নিজের মায়ের স্বাদ অন্য কোন খানে পাবে তুমি? এই আঘাত বুকে নিয়ে আমি দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছি। তোর দাদীও বিদায় নিয়েছেন। তুমি নিজের পরিবারের ও সমাজের জীবনটা সুন্দর রাখার চেষ্টা করো। যে কোন পরিস্থিতিতে তোমাদের জদা থাকতে হবে।
বৃষ্টি থেমে গেছে। সূর্যের আর আজ দেখা পাওয়া গেল না। কিশোর ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ফিরে গেল বড় ঘরে। সন্ধায় নিভু নিভু বিদ্যুতের আলোয় পড়তে বসল বই খুলে। কাল কলেজের পড়াগুলো পড়তে হবে। কিন্তু কিছুতেই তার মন বসল না। চোখের পাতায় কেবল শোনা পুরোনো রাঙামাটির স্মৃতি দাদুর মতোই ভেসে বেড়াতে লাগল।

(৪)
বর্ষার কলেজ শুরু হওয়ার ক’দিন পর থেকেই তার মায়ের শরীরটা ভালো যাচ্ছে না । বোঝাও যাচ্ছে না কি রোগ হয়েছে। ঠিক মতো বাড়ির সাধারন কাজগুলোও করতে পারছে না। তাই বর্ষাকে এখন থেকে নিয়মিত মাকে সাহায্যে করতে হচ্ছে বাড়ির কাজে। একটি ছোট্ট মেয়ে ছিল মাকে সাহায্যে করার জন্য। সেও ক’দিন হল বাড়িতে গিয়েছে এখনো ফিরে আসার নাম নেই। এদিকে কলেজে নতুন নতুন বই পড়ার চাপ শুরু হয়েছে। সব শিক্ষই নিয়মিত ক্লাশ নিচ্ছেন। পড়া শুনায় ফাকিঁ দেয়া জো’ নেই। আর তার বাবাতো একদিনও কলেজ কামাই করতে দেন না। তিনি বলেছেন এখান থেকে ভালো রেজাল্ট করলে ইউনিভার্সিটিতে চট্টগ্রাম বা ঢাকা পাঠাবেন। নিজেও সারাদিন স্কুল ও বাগানের কাজ সেরে সন্ধায় রান্নআ বান্নার কাজ করেন মাঝে মধ্যে। বর্ষার রান্নার হাত এখনো খোলেনি। সে মূলত এসিসট্যন্ট ।মাকে রান্নার সময় এটা ওটা কেটে দেয়া, কিংবা এগিয়ে দেয়া ইত্যাদি কাজ সে করে। কিন্তু মার শরীর যেহেতু ভালো নেই,তাই পড়াশুনার পাশাপাশি রান্নার কাজও এখন করতে হচ্ছে। তার হাতে এখন মোবাইল যদিও ইন্টারনেট এখনও খুবই ধীর গতি। তবুও অনেকক্ষন অপেক্ষা করে হয়তো একটি রান্নার ভিডিও দেখে নেয়া যায়। বাবা-মা তাকে এ কাজে প্রেসার দেন না। তাদের আগ্রহ মেয়েকে পড়াশুনায় ছেলের মতো ভালো হতে হবে। তার কিন্তু রান্নার কাজে আগ্রহের কমতি নেই। তার বাবা একটু নরম হলেও মা খুব কড়া। কথামতো কাজ না হলে বকাঝকা করেন। অনেক আগে মারধর করতেন। তবে বড় হবার সাথে সাথে মারধর করার হারটাও কমে এসেছে। বর্ষার মনে পড়ে সিক্স নাকি সেভেনে শেষবার মার খেয়েছিল মায়ের কাছে। তারপর কোনদিন আর মার পড়েনি। তবে শাসন এখনো কঠোর। দৃষ্টি সবদিকে খোলা। বলেছেন কোন ছেলের সাথে প্রেমতো দূরের কথা বন্ধুত্বও করা চলবে না। সে মতোই চলছে এখনো। সে মাঝে মাঝে ভাবে এতগুলো বসন্ত গেল কোন মনের মতো মানুষ পাওয়া গেল না!
ক্লাস এইটে পড়ার সময় একটি পত্র পেয়েছিল অনন্যাদের বাড়িতে ভাড়া বাড়িতে থাকা একটি নবম শ্রেণী পড়ূয়া ছেলের কাছ থেকে। পত্রটি সে এখনো সংরক্ষন করে রেখেছে। অনন্যাই পৌঁছে দিয়েছিল চিঠিটি। ছেলেটিকে তার ভালো না লাগলেও খারাপ লাগেনি। কিন্তু মায়ের ভয়ে আর চিঠির উত্তর দিতে পারেনি। স্কুল শেষ করে ছেলেটি চলে যায় খাগড়াছড়ি কলেজে। হয়তো এখনো ওখানেই পড়ছে । শুধু এক বছর বিঝুতে একবার সেই ছেলেটির সাথে অন্য আরো ৪/৫ জন মিলে পাশের গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিল। সেদিন মদ খেয়ে ছেলেটি বেশ মাতলামি করে যা বর্ষার মোটেও ভালো লাগেনি। তারপর পড়াশুনার চাপে আর কোনদিকে মুখ তুলেনি সে।একদিন সন্ধায় রান্নাঘর থেকে বর্ষা জিজ্ঞেস করল-মা’ বেগুন তোনআন কিঙিরি রানিম?
মা টিভির সামনে বসে ছিলেন। বললেন-বেগুনুন আগে পাদল পাদলগুরি কুদি পানি বুরে থ’। উদনত্তুন দিয়ান সাবারাঙ পাদা ছিনি আনিচ। বর্ষা আবার জিজ্ঞেস করে-চিধোললোই খেবং না চুগুনিলোই? জবাব আসে-চুগুনি নয়, চিধোলছাগী মরিচ বাদি তাবাবো তুলিদে চুলোত মুই এজঙর! তিনি আরো বলেন-দুমদুমে আগুন দে আধিক্য পেদেব!
লাকরী চুলায় বর্ষা আগুন আরো একটু শুকনা লতাপাতা ঠেলে দেয়। তরকারী রান্না হলে সে ধাকনা দিতে যাচ্ছিল। মা বলে-ধাগনি ন’দিচ। বেগুনো হে’ল আন কালা অহব। উদ্দে থ!
এই খাবারটি বর্ষার খুবই প্রিয়। কিন্তু খাবার পর হাত থেকে যে গন্ধ থেকে যায় তা দারুন অপ্রিয়। সাবান মেখে ভালো করে হাত ধুতে হয়। দুপুরের একটু র্পক রয়ে গেছে, তাই শাখ আর মরিচবাত্যে ভাত খাবার আগে তৈরী করলে রাতের খাবার প্রস্তুত। সে বই পড়তে বসে গেল। মা টিভি দেখছেন। ২০/২৫ মিনিট পড়া হলো কি হলো না বিদ্যৎ চলে গেল। এটি হলো এখানকার নিয়মিত লোডসেডিং। সে সোলার লাইট জ্বলিয়ে পড়তে লাগল। কিছুক্ষন বাদে তার দাদার ফোন বেজে উঠল। যে কিনা জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র।
-চিজি, কি গরর?
-পরঙর।
-কী পড়র।
-ইংলিশ।
-অ’। কলেজ কেজান চলের?
-ভারী বেচ গম নয়! স্টুডেন্ট কম। ক্লাশ গরিবার ন’চান! স্যারদাগি আমারে তোগে তোগে
ক্লাশ গরি পান।
-অ’… জাফর ইকবাল’ বইবো কেজান লাগিলো?
-বেককানী ন’বুঝোং, যে গম লাগকে!
গত মাসে তার দাদা জাফর ইকবালের একটি সাইন্সফিকসন গল্প বই পাঠিয়েছিল- “কপোট্রনিক সুখ দুঃখ”। বর্ষার এখন পাঠ্য বইয়ের বাইরে বিভিন্ন বই পড়তে ইচ্ছে করে। মা বারন করলেও বাবা আপত্তি করে না।এ ব্যাপারে তার দাদা তাকে সাহায্য করে নানা বই পাঠিয়ে। সে মাসের খরচ বাঁচিয়ে বোনের জন্য এটা ওটা পাঠায়। বর্ষার ইতোমধ্যে অনেক নতুন বান্ধবী-বন্ধু হয়েছে কলেজে। পাঁচ-ছয় জনো মধ্যে বেশ খাতির জমেছে। ক্লাশের আগে বটতলায় কিছুক্ষন আড্ডা মারাও হচ্ছে আজকাল। কয়েকটা চাকমা ছেলে আছে যেমন মনিময়, জীবন শান্তি বা বসন্ত কেউই মেয়েদের পাত্তা দিতে চায় না বা মিশতে আড়ষ্ঠ, তবে আগ্রহ আছে তা সত্যি, বর্ষা বুঝতে পারে। সে ইচ্ছে করেই তাদের সাথে বেশী মেশার চেষ্টা করে। কেউ ক্লাশের লেকচার না বুঝলে শিক্ষককে জিজ্ঞস করে না বরং বর্ষার কাছে জানতে চায়। মাদ্রসা থেকে পাস করা দুটি মুসলিম মেয়ে আছে কুলসুম বেগম আর জান্নাতুল ফেরদৌস খুব দ্রুত কথা বলে। তারাও বর্ষাকে মাঝে বরিশালের টানে পড়া জিজ্ঞেস করে, সে তা বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। কিশোরের সাথেও তার বন্ধুত্ব হয়েছে। ছেলেটা কম কথা বললেও শান্ত প্রকৃতির নয়। ভেতরে ভেতরে দুষ্টামী করে মাঝে মাঝে। একদিন ক্লাশ চলাকালীন সে বর্ষার খাতায় লিখে দিয়েছিল রাত জেগে টিভি দেখে এখন ঘুম পাচ্ছে, না? অথচ বর্ষা মন দিয়ে লেকচার শুনছিল। স্যার পড়াচ্ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। পড়াশুনায় খুবই ভাল, নিয়মিত ক্লাশে উপস্থিত থাকে। বর্ষা ভাবে, ছেলেটা কি অহংকারী? তবে কিশোর বন্ধু হিসাবে চমৎকার। সবাইকে সেও সবাইকে সাহায্যে করে। তাছাড়া প্রথম পরিচয় হিসাবে বর্ষা কিশোরের সাথে বেশী এটাচ্ড ফিল করে।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৫৩৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/০৮/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast