www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

শিলং-এ গরমে হিমেল পরশ আর বর্ষায় ঝর্নার গান (১)


উমিয়াম লেক


ছবি দেখে কি সব খাবারের স্বাদ বোঝা যায়?
ছবি বা ভিডিও দেখে ঘুড়ে বেড়ানোর যে অনাবিল আনন্দ তা পাওয়া যায় না।
লেখা পড়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার মজা অন্য রকম। একই জায়গায় বেড়াতে গিয়ে একেক জনের বোধ হয় হরেক রকম । আমি শিলচর পড়াশুনা করি তখন প্রায় এক বছর হতে চলল। কিন্তু তখনো শিলং বেড়াতে যাবার অবকাশ পাইনি। মন আকুলি-বিকুলী করছিল, বলছিল—কবে যাবো? কবে যাবো?

২০১৮ সালের শেষ দিকে অবশেষে সে সুযোগ মিলে গেল। আমার দুই ঘনিষ্ট আত্নিয় বেড়াতে এলেন গৌহাটি-শিলং। গৌহাটি আসামের রাজধানী। ভারতের যে কোন জায়গা থেকে বাস, ট্রেন কিংবা প্লেনে গৌহাটি হয়ে শিলং যেতে হয়। বাংলাদেশ থেকে অবশ্য সিলেট-তামাবিল সিমান্ত দিয়ে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার লেক বা রুট ব্রিজ দেখে শিলং পৌঁছানো যায়।

আমি শিলচর থেকে রাতের ট্রেন ধরে গৌহাটি রওনা হলাম। 3A সিট/বিছানা আমার, ভাড়া ৬৫০ রুপি। তবে কমপক্ষে দুই-তিনদিন আগে টিকেট নেয়া চাই। পরে আর টিকেট পাওয়া যায় না সহজে। তবে সুবিধা হচ্ছে অনলাইনে বা এজেন্সির মাধ্যমে অগ্রিম টিকেট কেনা যায়। দশ ঘন্টা আঁকা-বাঁকা ভ্রমন শেষে ভোর বেলা পৌঁছলাম গৌহাটি। রাতে এসির হান্ডা হাওয়া আর শব্দদূষণ মুক্ত ঘুম। সকালটা মনে হলো আজ কি একটু বেশী সুন্দর? গৌহাটি ট্রেন স্টেশনটিও বেশ পরিষ্কার। বিশাল সাইজের পাখা ঘুড়ছে মাথার উপর। গৌহাটিও সেই প্রথম। গৌহাটি নিয়ে লিখবো অন্য কোন কোন দিন। ফোন করে নির্দিষ্ট জায়গায় চলে গেলাম অটো নিয়ে। বাংলাদেশে সিএনজি, ভারতে অটো। যে কোন শহরে ভারতে লোকাল অটোর ভাড়া সবসময় ১০ রুপি। রির্জাভ করে গেলে এক-দেড়শর নিচে হয় না।

বহুদিন পর বিদেশ-বিভূইয়ে আত্নিয় পাওয়া মানে আশ্রয় পাওয়ার মতো। আগে থেকেই রিজার্ভ করা ছিল টাটা ইনোভা। শিলং গিয়ে শহরের কাছে ৩/৪টি স্পট ঘুরে আবার গৌহাটি ফিরে আসা, লাগবে ৬০০০ রুপি। গাড়ি ধারন ক্ষমতা ৭জন, আমরা মোটে ৪। আসামিজ ড্রাইভারের গাড়িতে আসামিজ গান শুনতে শুনতে পথ চলছি। তবে চেয়ে দেখার কিছু অভাব নেই পথে। শহরের শেষ প্রান্তের অদূরে উচু পাহাড়ে মানুষের বসতি দেখতে দেখতে তীরের বেগে ছুটে চলেছে ইনোভা। রাস্তার এক পাশ আসাম অন্যপাশ মেঘালয়, দারুন আশ্চর্য। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা মেঘালয় অঞ্চলে প্রবেশ করলাম। শুধু নামেই নয়, বাস্তবিক আমরা দেখতে লাগলাম দূর পাহাড় চূড়া আর মেঘেরা খেলায় মেতেছে। চার লেনের ডিভাইডার দেয়া আঁকা-বাঁকা রাস্তা, দূঘটনা হওয়ার ঝুকি কম। ধীরে ধীর গাড়ি উঠতে লাগল উচু থেকে আরো উচুতে। কানে বায়ু চাপ কমাতে মনে হলো কম শুনছি। বিমানে চড়লে যেমন হয়।
ঘন্টা দুই পর পৌঁছে গেলাম উমিয়াম লেকের ধার। শান্ত, সবুজ (নীল নয় কিন্তু) জলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে লেক ভিউ পয়েন্ট পৌঁছে গেলাম। গাড়ি থেকে চটজলদি নেমে ছবি তুলতে লাগলাম টপাটপ। আদিগন্ত ‍বিস্তৃত পাহাড় শ্রেণী, মাঝে উমিয়াম লেক। কি শোভা কি অপরূপ তোমার সৃষ্টি! ১৯৬০ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উমিয়াম নদীতে বাঁধ দিয়ে লেক তৈরী করা হয়েছিল। এখন আর বিদ্যুৎ হয় না, পরে রয়েছে শুধু সৌন্দর্য। মনে মনে ভাবি আমাদের কাপ্তাই লেকের মতো ট্রাজিডী হয়নি আশা করি!
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৩৬৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০১/০৭/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ফয়জুল মহী ০১/০৭/২০২০
    ভালো লিখেছেন । অসাধারণ ।
 
Quantcast