স্বপ্ন ঘটনা অবলম্বনে
সকাল বেলার স্বপ্ন নাকি সত্যি হয়। হবে হয়তো! রোজ রাতে কত কিছুই না দেখি… আবোল তাবোল। আজ দেখলাম সকাল বেলায়, তারপর আর ঘুম আসে নি।
দেখলাম অস্থির চৌধুরীর টিভি চ্যানেলের বিতর্ক সভায় আজকের অতিথি গোবীজি আর ফ্যাসাদউদ্দিন ওয়েইশি। রোজ যেমন হয় আজও তাই, বিতর্ক টিতর্ক মাথায় তুলে প্রায় হাতাহাতির অবস্থা, এমন সময় কি যেন এক ম্যাজিক হল! গোবীজি আর ফ্যাশাদউদ্দিন দুজনেই ভ্যানিস। অনেকটা ওই প্রফেসর শঙ্কুর এনাইহিলিন রিভলভারের মত কিছু একটা নতুন টেকনোলজি বাজারে এসেছে, ব্যাস ওতেই দুই নেতা কুপোকাত।
চোখের সামনে নেতা গায়েব হলে হুজুগে জনতার ঘরে বসে থকলে চলেনা, সোজা রাস্তায় নেমে এলো। হাতে লাঠি, ছোরা, বোমা, পটকা, অ্যাসিড কি নেই! অতএব আবার এনাইহিলিন চালু… যারা যারা বাস পোড়ানোর, ঘর জ্বালানোর মহোৎসবে শামিল হতে এসেছিল সব নিমেষে গায়েব। এতে হল্লা বাড়ল বই কমলো না, তবে মহল্লা গুলো বেঁচে গেল। মোমবাতি মিছিল, পার্লামেন্টে ভাঙচুর, প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি, মন্ত্রিপরিষদের ঘণ্টাখানেকের প্রতীকী গণইস্তফা, ঘনিষ্ঠ চামচাদের আধ ঘণ্টার অনশন ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু যারা গেল তারা কেউ ফিরে এল না।
এরপর দৃশ্য পরিবর্তন। পরের দৃশ্যে একটা ছোট্ট কুঠুরি, আট ফুট বাই দশ ফুট, আমাদের গোবীজি আর ফ্যাশাদউদ্দিন ভাটার মতো চোখ পাকিয়ে একে অপরের দিকে তাকিয়ে। ঠিক যেন বক্সিং রিংয়ে দুই পেশাদার প্রতিপক্ষ একে অপরের মুখটা গুঁড়িয়ে দেবে বলে হাতের গুলি পাকিয়ে বসে, শুধু ঘন্টি বাজার অপেক্ষা! তবে ঘন্টি বাজেনি এটাই বাঁচোয়া।
একটা সময় পর দুজনেই কিছুটা ধাতস্থ হয়ে আসে। মাথা ঠান্ডা হলে অনুভব হয় যে পেটের ভেতরটা কেমন যেন চুঁই চুঁই করছে। সেই কোন দুপুর বেলায় পোলাও কোপ্তা খেয়েছিল, তারপর লবডঙ্কা। দিন না রাত কে জানে! কোন এক সময় খাবার আসে, এক থালা ভাত! দুজনেই হামলে পড়ে, দুজনেই ছুঁয়ে ফেলে! আর খাবার অশুদ্ধ হয়ে যায় দুজনের তরেই। অভুক্ত কাটে সারাটা রাত।
পরের বার খাবার এলে গোবীজির হস্তগত হয়, যতটা পারে খায় বাকিটা ফেলা যায়। অভুক্ত থাকে ফ্যাসাদউদ্দিন। পরের দিন ঘটে উল্টো ঘটনা, ফ্যাসাদউদ্দিন পেট ভরে খায়, গোবীজির খালি পেট। দুজনেই বুঝল খালি পেট মহাবিপদ! অতঃপর এক প্রকার রফা করে নিল, ভাত এলে আর কাড়া কাড়ি না, আধা আধি করে খাবে! এবার খাবার থালা এলে, মাঝামাঝি তৈরি হল বর্ডার-- হিন্দুস্তান! পাকিস্তান!, না! এমনি ঠিকই ছিল, তবে ছোট্ট থালা, অনেকটা ভাত ছড়িয়ে ছিটিয়ে নষ্ট হল। মাগ্গিগন্ডার দিন, অপচয় মানেই দুরাবস্থা! প্রাণ রাখি না মান! তাই ভাগাভাগি বাতিল, পরের বার একই থালায় একসঙ্গেই খাওয়া। প্রাণে বাঁচলে যাত হুজ্জত পরেও করা যাবে।
ভরপেট খেয়ে দুজনেরই মনে হল অনেক দিন পূজা প্রার্থনা করা হয়নি। গোবীজির ভক্তি গদগদ মন! তার হাতের ছোঁয়ায় নিমিষে দেওয়াল জুড়ে দেখা দিলেন শ্রী শ্রী স্বয়ং ভগবান। তারপর, ধ্যানগম্ভীর আরাধনায় তাঁর অপার প্রশান্তি! ফ্যাসাদউদ্দিন পড়লেন নামাজ, মুদ্রিত চোখ, হাঁটুর ওপরে উপবিষ্ট, প্রশান্ত ললাট!
ওই বদ্ধ কুঠুরিতে তখন তৃতীয় ব্যক্তির নিঃশব্দ প্রবেশ, তিনি আর কেউ নন, তিনি স্বয়ং অন্তর্যামী। যিনি সকল দুনিয়াদারির মালিক তাঁর চোখের কোলে চিকচিক করছে আনন্দাশ্রু, ঠোঁটের কোনায় জেগে ভুবন ভোলানো হাসি, হাতের মুদ্রায় বরাভয়! তিনি বিস্ময়াভিভূত! দেখলেন,
মূর্তির সামনে হাঁটু গেড়ে প্রণিপাত আর বিমুর্তের সামনে ইবাদত-- ভঙ্গিটা অনেকটা একই রকম!
তিনি, নির্নিমেষে ছুঁয়ে দিলেন দুজনের বুকের বাম দিক,
যেথায় ঘুমায় অকাতরে বিশ্ব প্রানের অনন্ত প্রদীপ।
কানের ভেতরে দিলেন মন্ত্রগুপ্তি--
হৃদয়কে করো প্রসারিত, প্রশান্তি ছেয়ে থাক হৃদয় জুড়ে--
একবার ভালোবেসে তো দেখো সখা--
অবিমিশ্র প্রেমে হৃদয় দেবে সে ভরে।।
রোজ কত কী ঘটে যাহা তাহা- এমন কেন সত্যি হয় না আহা (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।।
দেখলাম অস্থির চৌধুরীর টিভি চ্যানেলের বিতর্ক সভায় আজকের অতিথি গোবীজি আর ফ্যাসাদউদ্দিন ওয়েইশি। রোজ যেমন হয় আজও তাই, বিতর্ক টিতর্ক মাথায় তুলে প্রায় হাতাহাতির অবস্থা, এমন সময় কি যেন এক ম্যাজিক হল! গোবীজি আর ফ্যাশাদউদ্দিন দুজনেই ভ্যানিস। অনেকটা ওই প্রফেসর শঙ্কুর এনাইহিলিন রিভলভারের মত কিছু একটা নতুন টেকনোলজি বাজারে এসেছে, ব্যাস ওতেই দুই নেতা কুপোকাত।
চোখের সামনে নেতা গায়েব হলে হুজুগে জনতার ঘরে বসে থকলে চলেনা, সোজা রাস্তায় নেমে এলো। হাতে লাঠি, ছোরা, বোমা, পটকা, অ্যাসিড কি নেই! অতএব আবার এনাইহিলিন চালু… যারা যারা বাস পোড়ানোর, ঘর জ্বালানোর মহোৎসবে শামিল হতে এসেছিল সব নিমেষে গায়েব। এতে হল্লা বাড়ল বই কমলো না, তবে মহল্লা গুলো বেঁচে গেল। মোমবাতি মিছিল, পার্লামেন্টে ভাঙচুর, প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি, মন্ত্রিপরিষদের ঘণ্টাখানেকের প্রতীকী গণইস্তফা, ঘনিষ্ঠ চামচাদের আধ ঘণ্টার অনশন ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু যারা গেল তারা কেউ ফিরে এল না।
এরপর দৃশ্য পরিবর্তন। পরের দৃশ্যে একটা ছোট্ট কুঠুরি, আট ফুট বাই দশ ফুট, আমাদের গোবীজি আর ফ্যাশাদউদ্দিন ভাটার মতো চোখ পাকিয়ে একে অপরের দিকে তাকিয়ে। ঠিক যেন বক্সিং রিংয়ে দুই পেশাদার প্রতিপক্ষ একে অপরের মুখটা গুঁড়িয়ে দেবে বলে হাতের গুলি পাকিয়ে বসে, শুধু ঘন্টি বাজার অপেক্ষা! তবে ঘন্টি বাজেনি এটাই বাঁচোয়া।
একটা সময় পর দুজনেই কিছুটা ধাতস্থ হয়ে আসে। মাথা ঠান্ডা হলে অনুভব হয় যে পেটের ভেতরটা কেমন যেন চুঁই চুঁই করছে। সেই কোন দুপুর বেলায় পোলাও কোপ্তা খেয়েছিল, তারপর লবডঙ্কা। দিন না রাত কে জানে! কোন এক সময় খাবার আসে, এক থালা ভাত! দুজনেই হামলে পড়ে, দুজনেই ছুঁয়ে ফেলে! আর খাবার অশুদ্ধ হয়ে যায় দুজনের তরেই। অভুক্ত কাটে সারাটা রাত।
পরের বার খাবার এলে গোবীজির হস্তগত হয়, যতটা পারে খায় বাকিটা ফেলা যায়। অভুক্ত থাকে ফ্যাসাদউদ্দিন। পরের দিন ঘটে উল্টো ঘটনা, ফ্যাসাদউদ্দিন পেট ভরে খায়, গোবীজির খালি পেট। দুজনেই বুঝল খালি পেট মহাবিপদ! অতঃপর এক প্রকার রফা করে নিল, ভাত এলে আর কাড়া কাড়ি না, আধা আধি করে খাবে! এবার খাবার থালা এলে, মাঝামাঝি তৈরি হল বর্ডার-- হিন্দুস্তান! পাকিস্তান!, না! এমনি ঠিকই ছিল, তবে ছোট্ট থালা, অনেকটা ভাত ছড়িয়ে ছিটিয়ে নষ্ট হল। মাগ্গিগন্ডার দিন, অপচয় মানেই দুরাবস্থা! প্রাণ রাখি না মান! তাই ভাগাভাগি বাতিল, পরের বার একই থালায় একসঙ্গেই খাওয়া। প্রাণে বাঁচলে যাত হুজ্জত পরেও করা যাবে।
ভরপেট খেয়ে দুজনেরই মনে হল অনেক দিন পূজা প্রার্থনা করা হয়নি। গোবীজির ভক্তি গদগদ মন! তার হাতের ছোঁয়ায় নিমিষে দেওয়াল জুড়ে দেখা দিলেন শ্রী শ্রী স্বয়ং ভগবান। তারপর, ধ্যানগম্ভীর আরাধনায় তাঁর অপার প্রশান্তি! ফ্যাসাদউদ্দিন পড়লেন নামাজ, মুদ্রিত চোখ, হাঁটুর ওপরে উপবিষ্ট, প্রশান্ত ললাট!
ওই বদ্ধ কুঠুরিতে তখন তৃতীয় ব্যক্তির নিঃশব্দ প্রবেশ, তিনি আর কেউ নন, তিনি স্বয়ং অন্তর্যামী। যিনি সকল দুনিয়াদারির মালিক তাঁর চোখের কোলে চিকচিক করছে আনন্দাশ্রু, ঠোঁটের কোনায় জেগে ভুবন ভোলানো হাসি, হাতের মুদ্রায় বরাভয়! তিনি বিস্ময়াভিভূত! দেখলেন,
মূর্তির সামনে হাঁটু গেড়ে প্রণিপাত আর বিমুর্তের সামনে ইবাদত-- ভঙ্গিটা অনেকটা একই রকম!
তিনি, নির্নিমেষে ছুঁয়ে দিলেন দুজনের বুকের বাম দিক,
যেথায় ঘুমায় অকাতরে বিশ্ব প্রানের অনন্ত প্রদীপ।
কানের ভেতরে দিলেন মন্ত্রগুপ্তি--
হৃদয়কে করো প্রসারিত, প্রশান্তি ছেয়ে থাক হৃদয় জুড়ে--
একবার ভালোবেসে তো দেখো সখা--
অবিমিশ্র প্রেমে হৃদয় দেবে সে ভরে।।
রোজ কত কী ঘটে যাহা তাহা- এমন কেন সত্যি হয় না আহা (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)।।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ন্যান্সি দেওয়ান ১১/০৭/২০২০Darun
-
রমা চৌধুরী ২৬/০৬/২০২০এমন স্বপ্ন সত্যি হোক। ভালো লাগলো গল্প।
-
Md. Rayhan Kazi ১৯/০৬/২০২০ভালোই তো
-
কুমারেশ সরদার ১৮/০৬/২০২০বাহ্!
-
মহিউদ্দিন রমজান ১৮/০৬/২০২০দারুন
-
জানবক্স খান ১৭/০৬/২০২০রোমাঞ্চকর সপ্ন, অদ্ভুত দারুন।
-
ফয়জুল মহী ১৭/০৬/২০২০চমৎকার উপস্থাপন
-
স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ১৭/০৬/২০২০ভালো হয়েছে।