www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রম্য কথন

স্বস্তা প্রেমের গল্প মাঝে বস্তাপচা আমি এক...

একবিংশ শতাব্দীর রোমিও জুলিয়েট রেঁনেসার স্বর্ণযুগে দাঁড়িয়ে স্নাতক পড়ুয়া ছেলে যদি বলে, ভাই আমি সিঙ্গেল। আমার কোন গার্লফ্রেন্ড নাই। তাহলে এর চেয়ে ডাহা মিথ্যে কথা বোধহয় আর হতে পারে না। এটা একটা চটুল রসিকতাও বটে! কিন্তু সাক্ষী দুর্বল হলেও ঘটনা সত্যরে ভাই। আমার কোন গার্লফ্রেন্ড নাই।

ছোট ভাই বলে, এখন না পটালে কখন...? বন্ধুরা টিপ্পনী কাটে, দোস্ত, একুশে না হইলে একত্রিশেও হয় নারে... ছোট আপাও মাঝে মধ্যে খোঁচা দিয়ে বলে, কই তোর তো কোন...

বন্ধুদের সাথে মিলিত হলে একটা পর্যায়ে প্রায় সবাই "দুই মিনিট" বলে ওঠে যায়। সবারই এই "দুই মিনিট" নিদেন পক্ষে দশ মিনিট থেকে বিশ মিনিট পর্যন্ত গড়ায়। বন্ধু তালিকায় এমনও কেউ আছে, রি- ইউনিউন বা গেট টুগেদারে তাদের মোবাইল ফোন সীজ করা হয়, পাছে দশ মিনিটের কথা বলে ওঠে গিয়ে আড্ডার প্রাণ চাঞ্চল্য নষ্ট করে!

মজার ব্যাপার হলো, আমি এমন বিশেষ কোন ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠতে পারি নি। যার কাছ থেকে কেউ দুই মিনিট চেয়ে নিয়ে বিশ মিনিটও কেড়ে নেবে। কিংবা আমাকে বন্ধুদের আড্ডা মহল থেকে "দুই মিনিট" চেয়ে নিতে হবে। আর সমস্যা এখানেই, এই বিশেষ কারও বিশেষ কেউ হয়ে উঠতে না পারার নিদারুণ যন্ত্রণা আমাকে যতটা আঘাত করে তারচে শতগুণ বেশি জ্বালায় পোড়ায় আমার বন্ধুদের। আর করুণা ভরা দৃষ্টি নিয়ে ব্যঙ্গাত্বক স্বরে বলে, তোকে দিয়ে আর কিচ্ছু হবে নারে....

আসলেই কথা ঠিক। আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। অন্তত কোন মানবীর মনে আমার মনের শেকড় গেড়ে তার মনের শিখর পর্যন্ত যাওয়া আমার পক্ষে কোন দিনই সম্ভব হবে না, সে কথা এখন হ্যাট খুলে সসম্মানে মেনে নিই। করার নাইতো কিচ্ছু।

কদিন আগে এক মানবীর দৃষ্টি আকর্ষণে মনোযোগী হলাম। যেই না বললাম, ইয়ে মানে ইয়ে... আমার খাবি খাওয়া দেখে মানবী বেশ মজাই পেয়েছিল। মৃদু হেসে বলল, আহা, এত ইতস্তত করছো কেন? যা বলার বলেই ফেল না। ঠোঁটের কোণায় পিচ্ছিল হাসি দেখে ভাবলাম, বললে কাজ হবে। ফাইনালি যেই না বললাম, অমনি রূপদেবী তার কোমল মূর্তি পাল্টে রুদ্রমূর্তির রূপ ধারণ করে বলল, আরেকবার বললে রে জুতিয়ে দাঁত ফেলে দেবো।

নিঃসন্দেহে দুপাটিতে জ্বলজ্বল করা ৩২টি দাঁত আমার কাছে রূপদেবীর ভালোবাসার চেয়ে মহামূল্যবান। মনে মনে বললাম,মেয়ে তোর প্রেম চাই না, জুতা সামলা... অতঃপর সেই প্রণয় প্রস্তাব পর্বের এখানেই সমাপ্তি ঘটল।

কাল রাতে এক বন্ধু ফোন করে বলল, ওর হাতে গার্লফ্রেন্ড আছে, লাগবে কিনা! আমার পিলে চমকে যাবার দশা। তোরা যে যা বলিস ভাই, এইসব প্রেমে আমি নাই। বন্ধু লোভ দেখালো, আর যাই হোক অন্তত শীতের রাতের উষ্ণতাটুকু পাবি। বললাম, কীভাবে? ওর উত্তরে লালায়িত হলাম। ও বলল, অন্তত রসময় গুপ্তের শেষ অধ্যায়টা বেশ ভালোভাবেই শিখতে পারবি।

আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম, তবে শেষ চেষ্টাটা করতেই পারি...

বিঃ দ্রঃ মেয়ের ফোন নম্বর আর পঞ্চাশ টাকার দুটো রিচার্জ কার্ড আমার পকেটে বার বার লাফিয়ে ওঠছে আর বলছে, এইবার তাইলে শুরু কর...

টাকার একটা কামড় আছে নাহ্! আপনি কী বলেন?
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ১৫১৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৯/১২/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast