বৈশাখের বিকেলগুলোয়
হালকা আকাশী রঙের সালোয়ার কামিজ পরা হাস্যময়ী মেয়েটা! যাকে এভাবেই প্রথম আমার চোখে ধরা পড়ে। সে ই একদিন স্মারক হিসেবে হাতে লেখা কাগজের চিঠি চেয়ে বসবে সেটা কি ঘুণাক্ষরে ভেবেছিলাম! না এখনও ভাবছি!
ফরমায়েশি লেখা আমি কোন দিন লিখি নি, তা বলাটা অসত্যই হবে। নিঃশ্বাসের সঙ্গে লেপ্টে থাকা প্রিয় বন্ধুটা যেদিন প্রিয়ার কাছে প্রথম চিঠি লিখবে, সেদিন এই নাদানকেই বসে যেতে হয়েছিল বর্ণের পর বর্ণ সাজাতে। আইডিয়াবাজির কারসাজিতে আমার বাক্যগুলো আর তার প্রিয়ার হাত অবধি পৌঁছায় নি। এর আগেই, দোস্ত, কিছুটা ছাঁটাই করে দিয়েছি বলে মৃদু হাসি দেয় প্রিয় আসাদ। সান্ত্বনা হলো, যাক প্রেম তো আর আমি করছি না! আর আমার লেখা না হোক, আমার ভাবনাগুলোর উপর মশলার মিশেলে ও চিঠি লিখছে তো! এভাবেই আমার চিঠি লেখা।
বলতে গেলে দুর্ভাগ্যই বটে। নইলে চোখের সামনে কত বন্ধুর চলে কত চিঠি লেখার আয়োজন। আর আমার! "তুমি চলে গেলে আমার ওঠোন মাড়িয়ে/ আর আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলাম" অবস্থা। তাই চিঠি লেখা আর হয়ে ওঠে নি। এই নাদানের রোমান্টিক বাক্যগুলো আসাদ তার চিঠিতে টুকলিফাই করাপূর্বক প্রেমিকাকে প্রেম জলে অবগাহনের বছরখানেক পরেই সে চলে যায় বিমানবাহিনীতে। তারপর আর তার প্রেমিকার জন্য লিখতে হয় না, বরং সে ই হয়ে ওঠে আমার প্রিয়া, নইতো আমি তার। ট্রেইনিং চলাকালীন সময়ে আদান- প্রদান করা চিঠিগুলোও আজ কালের গর্ভে বিলীন।
তারপর আবার চিঠি লিখতে বসে যাওয়া। কোন এক শৈশবতুল্য আদুরে প্রিয় বন্ধুর সেই "আবদার।" ভয়ংকর সেই আবদারে লিখতে গেলেই, ভয় হয়। লাজে মাথা নুয়াই। তাকে ভেতর থেকে স্যালুট দেই। মুহুর্তেই পূজনীয় হয়ে ওঠে। আর যাপিত সময়ের হিসেব মিলাই। "গিভ এন টেইক"। আমি হারি, ও জিতে। ও ভালোবাসে, আমি দুহাত পেতে নেই। ও ভালোবেসে জিতে আর আমি ভালোবাসা নিয়ে হারি।
শেষ বিকেলের হেলানো রোদ, মেহগনি গাছের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হওয়া। ঘরে ফেরা পাখিদের কলরব ওঠে ছায়াপথের রিহার্সেল ঘরে। আমি তার আলোয় আলোকিত হই, তার কন্ঠে মিশাই সুর। আমার ভাঙা, বেসুরো গলার আওয়াজ ওর রিনিঝিন সুরেলা ঝংকারে হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। তার ঠোঁটের কোণে ঝুলে থাকা এক চিলতে হাসি, নিবিড় মনোযোগ আমায় গল্পকার বানায়। আমি সহসায় হয়ে উঠি ন্যারেটর। যে গল্পে থাকে শৈশবের মুচড়ে থাকা প্যান্ট থেকে ধুলো ঝাড়ার মতো করে ঝেড়ে ফেলা এক তরফা ভালো লাগার আখ্যান। পরম নির্ভর এক শ্রোতা, শ্রোতাই থেকে যায়। এখনও সে রকমই আছে। আমি স্বার্থপরের মত আমার কথা বলে যাই, ওকে শুনতে চাই না। নীরব অভিমানে ও নিজেও আর বলে না। আমারও সময় হয় না যে শুধাই, কেমন আছিস তুই? কেমন আছে মন?
অকারণেই রাগ করি, দূরে থাকতে চাই। আঘাত করি, আহত করি। ও আমায় আড়াল করে না। "চরিত্রহীন" অপবাদ দেয়, ভুল করেও ভুলে না। কাঁদায়, কাঁদি। পাগলের মত স্বীকার করে নেয়। আমি নিজেকে রক্তাক্ত করি, মাথার চুল ছিড়ি। নিজেও আহত হই, এত অভিমান কেন আমার? ওকে প্ররোচনা দেই, গণচ্যাট ভালো নয়। ও আর চ্যাটে আসে না। নির্লজ্জের মত আমি ঠিকই যাই। ও তার কথা রাখে, আমি রাখি না। তাকে ভয় পাই। চোখের দিকে তাকাতে পারি না। সমীহ জাগে।
অবান্তর ভাবনায় হাজারো বর্ণের ডালা সাজাই, ছোট্ট করে লিখতে পারি না, ঈদ মোবারক। ও আগে লিখে, ভদ্রতা করে জবাব দেই। সন্দেহ করে না, প্রশ্ন তোলে না।
গভীর অনুভূতিপ্রবণ মন নিয়ে গুটিয়ে থাকে, আমিও ভাঙতে চাই না। চিঠি লেখার নাম করে গল্প হয়, নয়তো গল্পের পট। চিঠি লিখলে প্রাপক লাগে, নাম লাগে। তার জন্য আমার কোন নাম ঠিক করা নেই, নির্দিষ্ট নামের গন্ডিতে আটকে রাখার ক্ষমতাও আমার নেই। ও তখন আমার সামনে দেবী দূর্গা; বিবিধ রূপে সর্বলোকে। শরীর ভাঁজ, চোখের চাউনী, রূপ লাবণ্যের উর্ধ্বে ওঠে যায় সে। আত্মিক সৌন্দর্যের অপার আলোয় উদ্ভাসিত দুধেল জোৎস্নাশোভিত সৌন্দর্য থই থই করে পাঁজরের প্রকোষ্ঠ জুড়ে। তাই, কিছু মানুষ থাকুক হৃদয়ের অলিতে গলিতে।
০৯নভেম্বর২০১৪।
ফরমায়েশি লেখা আমি কোন দিন লিখি নি, তা বলাটা অসত্যই হবে। নিঃশ্বাসের সঙ্গে লেপ্টে থাকা প্রিয় বন্ধুটা যেদিন প্রিয়ার কাছে প্রথম চিঠি লিখবে, সেদিন এই নাদানকেই বসে যেতে হয়েছিল বর্ণের পর বর্ণ সাজাতে। আইডিয়াবাজির কারসাজিতে আমার বাক্যগুলো আর তার প্রিয়ার হাত অবধি পৌঁছায় নি। এর আগেই, দোস্ত, কিছুটা ছাঁটাই করে দিয়েছি বলে মৃদু হাসি দেয় প্রিয় আসাদ। সান্ত্বনা হলো, যাক প্রেম তো আর আমি করছি না! আর আমার লেখা না হোক, আমার ভাবনাগুলোর উপর মশলার মিশেলে ও চিঠি লিখছে তো! এভাবেই আমার চিঠি লেখা।
বলতে গেলে দুর্ভাগ্যই বটে। নইলে চোখের সামনে কত বন্ধুর চলে কত চিঠি লেখার আয়োজন। আর আমার! "তুমি চলে গেলে আমার ওঠোন মাড়িয়ে/ আর আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলাম" অবস্থা। তাই চিঠি লেখা আর হয়ে ওঠে নি। এই নাদানের রোমান্টিক বাক্যগুলো আসাদ তার চিঠিতে টুকলিফাই করাপূর্বক প্রেমিকাকে প্রেম জলে অবগাহনের বছরখানেক পরেই সে চলে যায় বিমানবাহিনীতে। তারপর আর তার প্রেমিকার জন্য লিখতে হয় না, বরং সে ই হয়ে ওঠে আমার প্রিয়া, নইতো আমি তার। ট্রেইনিং চলাকালীন সময়ে আদান- প্রদান করা চিঠিগুলোও আজ কালের গর্ভে বিলীন।
তারপর আবার চিঠি লিখতে বসে যাওয়া। কোন এক শৈশবতুল্য আদুরে প্রিয় বন্ধুর সেই "আবদার।" ভয়ংকর সেই আবদারে লিখতে গেলেই, ভয় হয়। লাজে মাথা নুয়াই। তাকে ভেতর থেকে স্যালুট দেই। মুহুর্তেই পূজনীয় হয়ে ওঠে। আর যাপিত সময়ের হিসেব মিলাই। "গিভ এন টেইক"। আমি হারি, ও জিতে। ও ভালোবাসে, আমি দুহাত পেতে নেই। ও ভালোবেসে জিতে আর আমি ভালোবাসা নিয়ে হারি।
শেষ বিকেলের হেলানো রোদ, মেহগনি গাছের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হওয়া। ঘরে ফেরা পাখিদের কলরব ওঠে ছায়াপথের রিহার্সেল ঘরে। আমি তার আলোয় আলোকিত হই, তার কন্ঠে মিশাই সুর। আমার ভাঙা, বেসুরো গলার আওয়াজ ওর রিনিঝিন সুরেলা ঝংকারে হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। তার ঠোঁটের কোণে ঝুলে থাকা এক চিলতে হাসি, নিবিড় মনোযোগ আমায় গল্পকার বানায়। আমি সহসায় হয়ে উঠি ন্যারেটর। যে গল্পে থাকে শৈশবের মুচড়ে থাকা প্যান্ট থেকে ধুলো ঝাড়ার মতো করে ঝেড়ে ফেলা এক তরফা ভালো লাগার আখ্যান। পরম নির্ভর এক শ্রোতা, শ্রোতাই থেকে যায়। এখনও সে রকমই আছে। আমি স্বার্থপরের মত আমার কথা বলে যাই, ওকে শুনতে চাই না। নীরব অভিমানে ও নিজেও আর বলে না। আমারও সময় হয় না যে শুধাই, কেমন আছিস তুই? কেমন আছে মন?
অকারণেই রাগ করি, দূরে থাকতে চাই। আঘাত করি, আহত করি। ও আমায় আড়াল করে না। "চরিত্রহীন" অপবাদ দেয়, ভুল করেও ভুলে না। কাঁদায়, কাঁদি। পাগলের মত স্বীকার করে নেয়। আমি নিজেকে রক্তাক্ত করি, মাথার চুল ছিড়ি। নিজেও আহত হই, এত অভিমান কেন আমার? ওকে প্ররোচনা দেই, গণচ্যাট ভালো নয়। ও আর চ্যাটে আসে না। নির্লজ্জের মত আমি ঠিকই যাই। ও তার কথা রাখে, আমি রাখি না। তাকে ভয় পাই। চোখের দিকে তাকাতে পারি না। সমীহ জাগে।
অবান্তর ভাবনায় হাজারো বর্ণের ডালা সাজাই, ছোট্ট করে লিখতে পারি না, ঈদ মোবারক। ও আগে লিখে, ভদ্রতা করে জবাব দেই। সন্দেহ করে না, প্রশ্ন তোলে না।
গভীর অনুভূতিপ্রবণ মন নিয়ে গুটিয়ে থাকে, আমিও ভাঙতে চাই না। চিঠি লেখার নাম করে গল্প হয়, নয়তো গল্পের পট। চিঠি লিখলে প্রাপক লাগে, নাম লাগে। তার জন্য আমার কোন নাম ঠিক করা নেই, নির্দিষ্ট নামের গন্ডিতে আটকে রাখার ক্ষমতাও আমার নেই। ও তখন আমার সামনে দেবী দূর্গা; বিবিধ রূপে সর্বলোকে। শরীর ভাঁজ, চোখের চাউনী, রূপ লাবণ্যের উর্ধ্বে ওঠে যায় সে। আত্মিক সৌন্দর্যের অপার আলোয় উদ্ভাসিত দুধেল জোৎস্নাশোভিত সৌন্দর্য থই থই করে পাঁজরের প্রকোষ্ঠ জুড়ে। তাই, কিছু মানুষ থাকুক হৃদয়ের অলিতে গলিতে।
০৯নভেম্বর২০১৪।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
অনিরুদ্ধ বুলবুল ১০/১১/২০১৪
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১০/১১/২০১৪লেখার ধরন ঠিক আছে । বাট আরেকটু গোছালো বা ক্লিয়ার হলে মনে হয় বেশি ভালো লাগতো।
ধন্যবাদ কবিকে।