www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ছোট চিরকুটে আই লাভ ইউ বলা। ১ম পর্ব।

ফেসবুক একটি ট্যাবে চালু রেখে অন্য ট্যাবে ইউটিউবে একটি নাটক দেখছি। হঠাৎ করে একটি নোটিফিকেশন আসে ফেসবুকে, সেটা দেখার জন্য আবার ফেসবুকের হোমপেজে যাই। কিন্তু চোখ যায় অন্যখানে, একটি প্রোফাইলে, নাম লেখা আছে, সামিয়া জাহান সেতু। সাথে সাথে মনের মাঝে কেমন যেন একটা অস্থিরতা কাজ শুরু করে। প্রোফাইলের টাইমলাইনে গিয়ে দেখি, এ আর কেউ নয় হাইস্কুল লাইফের সেতু। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট সেন্ড করি সেতুকে। তার ঠিক পাঁচ মিনিট পর আবার নোটিফিকেশন আসে, চেয়ে দেখি সেতু ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহন করেছে। একটু ভাল লাগা কাজ করতে শুরু করল। হঠাৎ সেতু চ্যাটে নক করে।
সেতুঃ কেমন আছো?
আমিঃ ভাল আছি, তুমি কেমন আছো?
সেতুঃ আমিও ভাল আছি। অনেক দিন পর আজ আবার তোমার সাথে যে যোগাযোগ হবে আমি ভাবতেই পারি নি।
আমিঃ আমিও কখনও ভাবিনি যে দীর্ঘ ১১টি বছর আবার তোমার সাথে যোগাযোগ করতে পারবো। আচ্ছা তুমি আমাকে এখনো মনে রেখেছো?
সেতুঃ তোমাকে কি ভুলে থাকা যায়। হাইস্কুল জীবনে তুমি আর তোমার তিন ৪২০ বন্ধু ( সরি আমারও তিন বন্ধু) আমাকে যে পরিমাণে জ্বালিয়েছো সেটা কি আমি এত সহজে ভুলতে পারি। ক্লাস চলাকালীন আমাকে ছোট চিরকুটের মা্ধ্যমে আই লাভ ইউ লিখে আমার দিকে ছুড়ে দিতে, আরো অনেকভাবে আমাকে জ্বালাতে, এগুলো কি ভুলবার মত।
আমিঃ আসলেই ওই সময়ে তোমাকে অনেক জ্বালাতন করতাম, কিন্তু ক্লাসের অন্য কোন মেয়েকে নয় শুধুমাত্র তোমাকেই বিরক্ত করতাম। কেন তোমাকে বিরক্ত করতাম সেটা ঠিক আজোও বুঝে উঠতে পারিনি, তবে তোমাকে বিরক্ত করতে আমার ভাল লাগত তাই তোমাকে বিরক্ত করতাম। আচ্ছা তোমাকে তো আমরা চারজন বিরক্ত করতাম, তুমি একদিনও স্যারের কাছে কোন অভিযোগ দাখিল করোনি।
সেতুঃ করিনি এই কারণে যে, আমি যদি তোমাদের নামে কোন অভিযোগ করি, স্যার হয়ত তোমাদের কে কিছুটা শাস্তি দিবে। তারপর হয়ত তোমরা আমাকে বিরক্তের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিবে তাই।
আমিঃ আচ্ছা আমি কিন্তু একটা প্রশ্নের উত্তর আজো মেলাতে পারছি না। এস.এস.সি পরীক্ষার আগে স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠানের শেষে তুমি ওই ভাবে কান্নাকাটি করছিলে কেন?
সেতুঃ ‍দুটো কারণে আমি সেদিন কেঁদেছিলাম। প্রথমত, যে আজকের পর আর তোমাদের কারণে আমাকে আর বিরক্ত হতে হবে না। দ্বিতীয়ত, পাঁচ বছর এই স্কুলে সবাই একসাথে সবাই পড়াশোনা করেছি। সবাইকে ছেড়ে যেতে হচ্ছে, হয়ত অনেকের সাথে আর কখনও দেখা হবে না। কিন্তু দেখ আবার তোমার সাথে কলেজে দেখা। মনের মাঝে একটা অস্বস্তি কাজ করতে শুরু করল কলেজে তোমাকে দেখে।
আমিঃ কিন্তু আমি তো তোমাকে কলেজে বিরক্ত করিনি।
সেতুঃ হ্যাঁ সেটা দেখেই তো আমি বেশ অবাক হচ্ছি যে, এই তিন মাসের ব্যবধানে তুমি এতটা বদলে গেলে কি করে। তুমি আর আমাকে বিরক্ত কর না, আমার সাথে কোন কথা বল না। আমাকে দেখে এড়িয়ে চলতে। তবে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম যেদিন শুনতে পেলাম তোমার ৪২০ দুই ব্ন্ধু পাশ করতে পারিনি।
আমিঃ কলেজে ভর্তি হবার পর কিভাবে যে, ‍রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়লাম আমি নিজেও জানি না। পরে অবশ্য এক স্যারের সহযোগিতার কারণে ‍রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছি।
সেতুঃ সেটা অবশ্য আমি দেখতে পেয়েছি। আচ্ছা বাদ দাও ওইসব কথা। এখনকার কথা বল। কি করছ এখন।
আমিঃ কি আর করব। কয়েকবার বিসিএস এ চেষ্টা করে সফল হতে না পেরে এখন একটি দেশীয় কোম্পানির এডমিন ম্যানেজার হিসেবে আছি।
সেতুঃ বিয়ে করেছো?
আমিঃ না এখনও সেটা হয়ে উঠেনি। তবে পরিবার থেকে বিয়ের জন্য খুব চাপ দিচ্ছে।
সেতুঃ তাহলে দেরি করছো কেন।
আমিঃ পছন্দমত কোন মেয়ে পাচ্ছি না।

চলবে ২য় পর্ব।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮৯৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৮/১২/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast