www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

সাহাবীর নামায ll সোনালী দিনের কাহিনী



উপরের আয়াতটির সরল বাংলা অনুবাদ হলোঃ
আপনি আপনার প্রতি যে ওহী কিতাব নাযিল করা হয়েছে তা পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও পাপাচার থেকে বিরত রাখে। সর্বশ্রেষ্ঠ আল্লাহ সুবহানাহু ওতায়ালার জিকর কর। তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ সব বিষয়ে জানেন।
(আনকাবুতঃ আয়াত-৪৫)
নিশ্চয়ই নামায অন্যায় ও পাপাচার থেকে বিরত রাখে। যদি বিরত না রাখে তবে আমাদের বুঝতে হবে আমাদের নামায হচ্ছে না অথবা আমরা ঠিকমতো নামায আদায় করতে পারছি না। বিশেষ করে নামাযে দাঁড়ালে আমাদের মনের মাঝে নানা কথা বা ঘটনার আনাগোনা হতে থাকে। তাছাড়া আরবী না বুঝার কারণে আমরা যা পড়ি তা বুঝিনা বলেই এমন হয় আর আমরা নামাযে মনযোগ দিতে পারিনা। আর নামাযে আল্লাহর সাথে কি কথা বলি তা বুঝিনা বলেই আমরা পাপাচারে লিপ্ত হই। নামাযে বলি "আমাদের সরল সঠিক পূণ্যের পথা দেখান, আমাদেরকে হেদায়াত দান করুন" আর নামায থেকে বেরিয়ে মন্দ ভাষায় কথা বলতে থাকি। এজন্য আমাদের বুঝতে হবে কুরআন বুঝতে হবে। আর কুরআন বুঝার জন্য তাফসীর পড়তে হবে, হাদীস পড়তে হবে, ইসলামী সাহিত্য পড়তে হবে। নামায নিয়ে একটু বিস্তারিত লিখবো পরে। আজ শুধু বলবো- নামাযে মনোযোগ দেওয়ার জন্য এই কাজগুলি করা যেতে পারে- "আপনি আল্লাহকে দেখছেন" এই মানসিকতা সৃষ্টি করুন। তা যদি না হয় তবে "তবে মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওতায়া'লা আপনাকে দেখছেন" মনে মনে এটা চিন্তা করুন। ভাবুন- এটাই আপনার জীবনে শেষ নামায। মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ করুন।
নামায নিয়ে একটি ঘটনা উল্লেখ করছি-
এক অভিযানকালে রাসূল (সঃ) এর তাঁবু পাহারা দেয়ার জন্য প্রতি রাত্রে পালাক্রমে কয়েকজন সাহাবীকে নিয়োগ করা হয়। এক রাতে হযরত আব্বাস ও হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসার পরস্পর পুরো রাতটাকে এভাবে ভাগ করে নিয়েছিলেন যে, প্রথমভাগে পাহারার দায়িত্ব হযরত আব্বাসের ওপর এবং শেষের অংশ হযরত আম্মারের ওপর পড়ল। হযরত আব্বাসের পাহারার পালা শুরু হল। পাহারা দিতে দিতে এক পর্যায়ে তিনি ভাবলেন এত দীর্ঘ সময় চুপচাপ থেকে লাভ কী? সময়টা নামায পড়ে কাটিয়ে দেয়া যাক। তিনি নামাযে সূরা কাহাফ পড়া শুরু করলেন। ওদিকে হযরত আম্মার ঘুমিয়ে পড়লেন। চারদিক গাঢ় অন্ধকার। এক কাফের দূর থেকে দেখার চেষ্টা করছিলো পাহারায় কেউ আছে কিনা? দূর থেকে হযরত আব্বাসকে একটা গাছ মনে করে আরও নিশ্চিত হবার জন্য একটা তীর নিক্ষেপ করলো। তীর এসে হযরত আব্বাসের পিঠে গিয়ে ঢুকলো। কিন্তু তিনি নামায ছাড়লেন না। কাফেরটা সন্দেহমুক্ত হবার জন্য পরপর তিনটি তীর নিক্ষেপ করলো। প্রত্যেকটি তীর তার গায়ে বিদ্ধ হয়ে প্রবল রক্তপাত ঘটালো। অগত্যা বাধ্য হয়ে তিনি নামায ছেড়ে দিয়ে সঙ্গীকে ডাকলেন। তার নড়াচড়া ও কথাবার্তা শুনে শত্রু সৈন্যটি নীরবে প্রস্থান করলো। হযরত আম্মার আব্বাসকে ক্ষত বিক্ষত ও রক্তাক্ত দেখে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি প্রথম তীরের সাথে সাথেই আমাকে ডাকলেন না কেন?” তিনি উত্তর দিলেন- “আমি নামাযে সূরা কাহাফ পাঠ করছিলাম। এতে এত মজা লাগছিল যে, সূরা শেষ না করে কিছুতেই নামায ছাড়তে ইচ্ছা হচ্ছিল না।”
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৮২৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৭/১১/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুক। আমিন।
  • এমন সুন্দর একটা পোস্টের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আল্লাহ্ যেন আপনাকে এর ফল দুনিয়া এবং আখিরাতে দান করেন। আমীন!!!
    • জহির রহমান ১৫/০২/২০১৫
      আমীন।

      আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, সেই সাথে মহান রাজাধিরাজের কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করছি। আমিন।
  • আহমাদ সাজিদ ১৭/১১/২০১৩
    খুবই চমত্কার একটি প্রবন্ধ।
 
Quantcast