বাল্য বিয়ে ।। যা দেখে চলেছি-তিন
কিছু কাজ নিয়ে বসে আছি কম্পিউটার কম্পোজের দোকানে। দুইটা ছেলে দোকানে ঢুকলো। হাতে একটা জন্মনিবন্ধন আর টিকা'র কার্ড। ভাবলাম হয়তো কপি করবে। কিন্তু তাদের কথা শুনে বুঝলাম তাদের একটা জন্মনিবন্ধন বানাতে হবে আর যেটি আছে এটি সংশোধন করতে হবে। প্রথমে ভাবলাম কোন কারণে হয়তোবা তাদের জন্ম তারিখ পরিবর্তন আরেকটা বানাতে হবে। তাদের পরামর্শও দিলাম পৌরসভা অফিস থেকেই ঠিক করে নিতে। কিন্তু তাদের অবস্থা দেখে মনে হলো কেসটা ভিন্ন। মূল ঘটনা বুঝতে আর কষ্ট হলোনা।
টিকার কার্ড হাতে নিয়ে দেখলাম মেয়েটার জন্য ১৯৯৯'র সেপ্টেম্বরে। তার মানে মেয়েটির বয়স ১৪ বছর ২ মাস। ছেলেটার জন্মনিবন্ধন দেখলাম ১৯৯৪'র জুনে। তার মানে ছেলেটির বয়স দাঁড়ায় ১৯ বছর ৫ মাস। ছেলে দু'টিকে আমি চিনি। শহরের পাশেই বাড়ি। মেয়েটিও সম্ভবত একই বাড়ির নয়তো পাশাপাশি বাড়ির।
বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের জন্য মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছর এবং ছেলেদের জন্য ২১ বছরের কম হলে একে বাল্য বিয়ে হিসেবে ধরা হয়। এজন্য মেয়েটির বয়সকে ১৮ বছর আর ছেলেটির বয়সকে ২২ বছরে উন্নীত করতে হবে! বেশ অবাক হয়ে তাদের কার্যক্রম লক্ষ্য করলাম।
এরা এখনি বিয়ে করতে হবে। এরা বিয়ের কি বুঝে? ভালোবাসারইবা বুঝে কি? মেয়েটি হয়তোবা এখনো নিজ হাতে ভাত নিয়ে খায়না কিংবা এখনো মা নিজ হাতে খাওয়ায়ে দিতে হয়! সে কিনা সংসার পাতবে? যে বয়সটা পুতুল খেলার সে বয়সে তারা বিয়ে করতে যাচ্ছে! পুতুল খেলা আর ফিউচার লাইফ কি আর এক হলো! কেন সে এতোটা মোহে পড়েছে? তাছাড়া ছেলেটি মাইনে ৩/৪ হাজার টাকার একটা চাকুরি করে। সে কি পারবে মেয়েটির ভরণপোষণের ভার নিতে? তারা কি তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করছে? তারা এখনো ছোট-খাটো সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল করে অথচ এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে! তাছাড়া তাদের এখনো বয়স হয়নি তাও বললাম।
তাদেরকে কিছুক্ষণ বুঝালাম। দেখো, এখনি এই কাজটা করতে য়েয়োনা। পুরো ভবিষ্যতটা অন্ধকারে ঠেলে দিওনা। এখনো তুমি প্রতিষ্ঠিত হতে পারোনি। তোমরা সুখি হতে পারবেনা। কারণ তোমাদের মাঝে এখন একটা ভালোলাগা কাজ করে। একটা মোহ কাজ করে। আবেগ দিয়ে তোমরা চিন্তা করতেছো। আবেগকে আলাদা করে বিবেক দিয়ে চিন্তা করে দেখো কাজটা কি আসলে ঠিক হচ্ছে? কয়েকটি ঘটনাও তাদের শোনালাম।
মাথার মাঝে আবার আরেকটা ভাবনা চলে এলো! এরা যদি বিয়ে না করে একত্রিত হয় তবেতো অবৈধ সম্পর্ক হয়ে গেলো! তার চেয়ে বিয়ে করাইতো ভালো। অন্তত পাপাচার থেকে বাঁচলো। তাই আর জোর দিয়ে কিছু বললাম না।
আমি তাদের দু'জনকে (ছেলে আর তার বন্ধুকে, কারণ কেউ বন্ধুদের সাহস ছাড়া এই কাজ করতে পারেনা। আবার বন্ধুদের বুঝটা সহজে নেয়) কতটুকু বুঝাতে পেরেছি অথবা তারা কতটুকু বুঝেছে বলতে পারবোনা। চায়ের তেষ্টা পাওয়ায় কাজ রেখে চা খেতে চলে গেলাম। আর মাথার মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে- আমরা এ কোন সমাজে এসে পড়লাম! কেন আজ আমাদের এই অবস্থা! আমাদের চাচা, বড় ভাইদের দেখেছি ২৮ বছর পার হয়ে গেছে তারপরও বিয়ের কথা মাথায় আনছেনা। বার বার বলার পরেও বিয়ে করতে রাজি হচ্ছেনা। একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম।
টিকার কার্ড হাতে নিয়ে দেখলাম মেয়েটার জন্য ১৯৯৯'র সেপ্টেম্বরে। তার মানে মেয়েটির বয়স ১৪ বছর ২ মাস। ছেলেটার জন্মনিবন্ধন দেখলাম ১৯৯৪'র জুনে। তার মানে ছেলেটির বয়স দাঁড়ায় ১৯ বছর ৫ মাস। ছেলে দু'টিকে আমি চিনি। শহরের পাশেই বাড়ি। মেয়েটিও সম্ভবত একই বাড়ির নয়তো পাশাপাশি বাড়ির।
বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের জন্য মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছর এবং ছেলেদের জন্য ২১ বছরের কম হলে একে বাল্য বিয়ে হিসেবে ধরা হয়। এজন্য মেয়েটির বয়সকে ১৮ বছর আর ছেলেটির বয়সকে ২২ বছরে উন্নীত করতে হবে! বেশ অবাক হয়ে তাদের কার্যক্রম লক্ষ্য করলাম।
এরা এখনি বিয়ে করতে হবে। এরা বিয়ের কি বুঝে? ভালোবাসারইবা বুঝে কি? মেয়েটি হয়তোবা এখনো নিজ হাতে ভাত নিয়ে খায়না কিংবা এখনো মা নিজ হাতে খাওয়ায়ে দিতে হয়! সে কিনা সংসার পাতবে? যে বয়সটা পুতুল খেলার সে বয়সে তারা বিয়ে করতে যাচ্ছে! পুতুল খেলা আর ফিউচার লাইফ কি আর এক হলো! কেন সে এতোটা মোহে পড়েছে? তাছাড়া ছেলেটি মাইনে ৩/৪ হাজার টাকার একটা চাকুরি করে। সে কি পারবে মেয়েটির ভরণপোষণের ভার নিতে? তারা কি তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করছে? তারা এখনো ছোট-খাটো সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল করে অথচ এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে! তাছাড়া তাদের এখনো বয়স হয়নি তাও বললাম।
তাদেরকে কিছুক্ষণ বুঝালাম। দেখো, এখনি এই কাজটা করতে য়েয়োনা। পুরো ভবিষ্যতটা অন্ধকারে ঠেলে দিওনা। এখনো তুমি প্রতিষ্ঠিত হতে পারোনি। তোমরা সুখি হতে পারবেনা। কারণ তোমাদের মাঝে এখন একটা ভালোলাগা কাজ করে। একটা মোহ কাজ করে। আবেগ দিয়ে তোমরা চিন্তা করতেছো। আবেগকে আলাদা করে বিবেক দিয়ে চিন্তা করে দেখো কাজটা কি আসলে ঠিক হচ্ছে? কয়েকটি ঘটনাও তাদের শোনালাম।
মাথার মাঝে আবার আরেকটা ভাবনা চলে এলো! এরা যদি বিয়ে না করে একত্রিত হয় তবেতো অবৈধ সম্পর্ক হয়ে গেলো! তার চেয়ে বিয়ে করাইতো ভালো। অন্তত পাপাচার থেকে বাঁচলো। তাই আর জোর দিয়ে কিছু বললাম না।
আমি তাদের দু'জনকে (ছেলে আর তার বন্ধুকে, কারণ কেউ বন্ধুদের সাহস ছাড়া এই কাজ করতে পারেনা। আবার বন্ধুদের বুঝটা সহজে নেয়) কতটুকু বুঝাতে পেরেছি অথবা তারা কতটুকু বুঝেছে বলতে পারবোনা। চায়ের তেষ্টা পাওয়ায় কাজ রেখে চা খেতে চলে গেলাম। আর মাথার মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে- আমরা এ কোন সমাজে এসে পড়লাম! কেন আজ আমাদের এই অবস্থা! আমাদের চাচা, বড় ভাইদের দেখেছি ২৮ বছর পার হয়ে গেছে তারপরও বিয়ের কথা মাথায় আনছেনা। বার বার বলার পরেও বিয়ে করতে রাজি হচ্ছেনা। একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১৭/০২/২০১৫এখন আর প্রবলেম নাই সরকার আমাদের সাথে আছে।
-
দাদা মুহাইমিন চৌধূরী ০৭/১১/২০১৩আমার মতে বাল্যবিবাহ খুবই খারাপ আবার বিয়ের বয়স হলে দেরী করাটা আরও খারাপ।
-
পল্লব ০৭/১১/২০১৩আমাদের দেশে বাল্যবিবাহ আসলেই এক অভিশাপ... তবে এর বিরোধীতা করতে করতে সমাজে আবার এমন এক শ্রেণী তৈরি হয়েছে যারা ২৩-২৪ বছরের কোন মেয়েকে বিয়ে করতে দেখলেও আহা ওহো করতে থাকে যে এতো অল্প বয়সে বিয়ে দিচ্ছে কেন...
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ০৭/১১/২০১৩লেখাটা পড়ে একটা দীর্ঘ শ্বাস বেড়িয়ে গেলো। সত্যিই তো যে বয়স টা পুতুল খেলার সেই বয়সে একটি মেয়ে কিভাবে একটি সংসারের দ্বায়িত্ব নিবে? যে ছেলেটি এখনো বুঝে উঠতে পারেনি এই সমাজ পরিবার ভবিষ্যৎ ইত্যাদি কি জিনিস। সে কিনা পাততে চাইছে সংসার। বরই অদ্ভুত এই সাময়িক আবেগের মোহ। যেখানে আমি চাকরি করছি ও চাকরি করছে। অথচ বিয়ে করতে দুজনই সময় নিচ্ছি। আরও একটু গুছিয়ে উঠি এই বলে। সত্যি মোহ খুব খারাপ। ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।