পিতা-মাতার জন্য আমি
অনেক আগে একটা গল্প পড়ছিলাম। গল্পটা ছিল এরকম- ছেলে তার বৃদ্ধ মা'কে কষ্ট দিতো। ঠিকমতো খেতে দিতো না অথচ তারা ভালো ভালো খেতো, ভালো ভালো পরতো। রোগে মার চিকিৎসা করতো না। বৃদ্ধার নাতি-নাতনিকেও তার কাছে যেতে দিতোনা। আর বৃদ্ধার পুত্রবধুও তাকে সহ্য করতে পারতোনা। একদিন ছেলেটি তার বউয়ের পরামর্শে বৃদ্ধ মাকে দুরে ফেলে দিয়ে আসার চিন্তা করে বাজার থেকে বড় একটি ঝুড়ি কিনে আনে। তারপর বৃদ্ধ মাকে যখন ঝুড়ি করে নিয়ে যাচ্ছিল তখন বুড়ির অবুঝ নাতি- নাতনিরা তাদের বাবাকে ডেকে বলল, আব্বু! দাদীকে ফেলে আসার সময় ঝুড়িটি যত্ন করে নিয়ে এসো। বাবা অনেকটা কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করল-কেন ঝুঁড়ি নিয়ে আসতে হবে? তখন বাচ্ছারা বললো- তোমরা যখন বৃদ্ধ হবে তখন তো তোমাদেরও দূরে ফেলে আসতে হবে না? তখন যেন নতুন ঝুঁড়ি কিনতে না হয়।
আজ নৈতিকতার অবক্ষয় হতে হতে আমরা এমন এক পর্যায়ে চলে গেছি যে, জন্মদাতা মা-বাবাকেও পর করে দিতে নূণ্যতম চিন্তা করিনা। অথচ আমরা ভুলে যাই এই মা নিজে না খেয়ে আমাদের খাওয়াছেন। বাবা যখন কিছু খাওয়ার জন্য কিনছেন আর আমাদের কথা মনে পড়াতে না খেয়ে পকেটে করে নিয়ে চলে আসছেন, আমাদের আদর করে খাওয়ায়েছেন।
আমরা তখনকার কথাও ভুলে যাই যখন ছোট বেলায় আমরা বাবা অথবা মা'র হাত ধরে জিজ্ঞেস করেছিলাম- আম্মু এটা কি? জবাব দিলো এটা আম। আবারো জিজ্ঞেস করলাম এটা কি করে? আদর করে বলছিল- এটা একটা ফল। খুব মিষ্টি। আবারো জিজ্ঞেস করছিলাম- এটা কি? বলল- আম। অনেকটা উৎসাহিত করে বার বার জিজ্ঞেস করতে লাগলাম এটা কি? তখন আদর করে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেয়ে বলছিল বাবা তুমি এটা চিনোনা? এটা আম। এটা খেতে মিষ্টি। অথচ সেই মা অথবা বাবাই যখন একবারের বেশি দু'বার আমাদের কোন কথা জিজ্ঞেস করে তখনি আমরা তাদেরকে ধমক দিয়ে কথা বলি- জানিনা! অথচ কোরআনে আল্লাহ খুব শক্ত ভাষায় আমাদেরকে আমাদের শিশুকাল থেকে ধরে মা-বাবার কষ্ট স্মরণ করিয়ে দিয়ে নিষেধ করেছেন আমরা যেন মা বাবাকে ধমক দিয়ে কথাতো দূরের কথা, আমরা যেন তাদের ব্যাপারে উফ্ শব্দটাও উচ্চারণ না করি।
ইসমাত ইয়াসমিন আপুর লেখা আইন না দরকার পারিবারিক ও নৈতিক শিক্ষাঃ লেখাটি তিনি অনেক সুন্দর করে লিখেছেন। লেখাটি পড়ে আমার চোখে অনেকটা পানি এসে গেছে। যে বাবা আমার জন্য এতটা কষ্ট করেছেন সেই বাবার জন্য কি করতে পারলাম। যখনি কিছু করার বয়সে উপনীতি হয়েছি তার অনেক আগেই তাঁকে হারিয়েছি। (হে আল্লাহ! তুমি আমার বাবাকে তোমার রহমতের হাত দিয়ে সেভাবেই লালন-পালন করো যেভাবে তিনি আমাকে লালনপালন করেছেন। আর মাকে নেক হায়াত দান করো। অন্তত যতটুকু আমল করলে তোমার বেহেস্তবাসী হবে নুণ্যতম ততটুকু আমল করার আগে আমাদের মাঝ থেকে বিদায় করে নিওনা- আমিন)।
মা কে এখনো আমার জন্য কষ্ট করে। এখনো রাত জাগে আমি ফেরার। নিজে না খেয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করবে একত্রে খাবে বলে। অথবা খাবার কম থাকলে মিথ্যে করে বলে আমি খেয়েছি- তুই খেয়ে নে। কখনো কোন অভিযোগ করে না আমার বিরুদ্ধে। এখনো আমার গেঞ্জিটি পর্যন্ত ধুয়ে দেয় নিজ হাতে। খুব কষ্ট লাগে মার জন্য- কিন্তু কিছু করতেও পারছিনা।
যদিও মা এখনো আমার জন্য কষ্ট করেন বা করতে হয় তবে আমি আমার মাকে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি। মা ভালো করেই জানে তার ছেলে তাকে কষ্ট দিলেও কতটা ভালোবাসে। তার সাধ্য অনুযায়ী কতটা কেয়ার করে।
পরিশেষ শুধু এটুকুই বলবো- চলমান শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে যদি ইসলাম ও নৈতিকতার সমন্বয় ঘটে তবে এ অবস্থা থেকে আমরা অনেকাংশে পরিত্রান পেতে পারি। তখন আর বৃদ্ধাশ্রম থাকবে না।
আজ নৈতিকতার অবক্ষয় হতে হতে আমরা এমন এক পর্যায়ে চলে গেছি যে, জন্মদাতা মা-বাবাকেও পর করে দিতে নূণ্যতম চিন্তা করিনা। অথচ আমরা ভুলে যাই এই মা নিজে না খেয়ে আমাদের খাওয়াছেন। বাবা যখন কিছু খাওয়ার জন্য কিনছেন আর আমাদের কথা মনে পড়াতে না খেয়ে পকেটে করে নিয়ে চলে আসছেন, আমাদের আদর করে খাওয়ায়েছেন।
আমরা তখনকার কথাও ভুলে যাই যখন ছোট বেলায় আমরা বাবা অথবা মা'র হাত ধরে জিজ্ঞেস করেছিলাম- আম্মু এটা কি? জবাব দিলো এটা আম। আবারো জিজ্ঞেস করলাম এটা কি করে? আদর করে বলছিল- এটা একটা ফল। খুব মিষ্টি। আবারো জিজ্ঞেস করছিলাম- এটা কি? বলল- আম। অনেকটা উৎসাহিত করে বার বার জিজ্ঞেস করতে লাগলাম এটা কি? তখন আদর করে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেয়ে বলছিল বাবা তুমি এটা চিনোনা? এটা আম। এটা খেতে মিষ্টি। অথচ সেই মা অথবা বাবাই যখন একবারের বেশি দু'বার আমাদের কোন কথা জিজ্ঞেস করে তখনি আমরা তাদেরকে ধমক দিয়ে কথা বলি- জানিনা! অথচ কোরআনে আল্লাহ খুব শক্ত ভাষায় আমাদেরকে আমাদের শিশুকাল থেকে ধরে মা-বাবার কষ্ট স্মরণ করিয়ে দিয়ে নিষেধ করেছেন আমরা যেন মা বাবাকে ধমক দিয়ে কথাতো দূরের কথা, আমরা যেন তাদের ব্যাপারে উফ্ শব্দটাও উচ্চারণ না করি।
ইসমাত ইয়াসমিন আপুর লেখা আইন না দরকার পারিবারিক ও নৈতিক শিক্ষাঃ লেখাটি তিনি অনেক সুন্দর করে লিখেছেন। লেখাটি পড়ে আমার চোখে অনেকটা পানি এসে গেছে। যে বাবা আমার জন্য এতটা কষ্ট করেছেন সেই বাবার জন্য কি করতে পারলাম। যখনি কিছু করার বয়সে উপনীতি হয়েছি তার অনেক আগেই তাঁকে হারিয়েছি। (হে আল্লাহ! তুমি আমার বাবাকে তোমার রহমতের হাত দিয়ে সেভাবেই লালন-পালন করো যেভাবে তিনি আমাকে লালনপালন করেছেন। আর মাকে নেক হায়াত দান করো। অন্তত যতটুকু আমল করলে তোমার বেহেস্তবাসী হবে নুণ্যতম ততটুকু আমল করার আগে আমাদের মাঝ থেকে বিদায় করে নিওনা- আমিন)।
মা কে এখনো আমার জন্য কষ্ট করে। এখনো রাত জাগে আমি ফেরার। নিজে না খেয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করবে একত্রে খাবে বলে। অথবা খাবার কম থাকলে মিথ্যে করে বলে আমি খেয়েছি- তুই খেয়ে নে। কখনো কোন অভিযোগ করে না আমার বিরুদ্ধে। এখনো আমার গেঞ্জিটি পর্যন্ত ধুয়ে দেয় নিজ হাতে। খুব কষ্ট লাগে মার জন্য- কিন্তু কিছু করতেও পারছিনা।
যদিও মা এখনো আমার জন্য কষ্ট করেন বা করতে হয় তবে আমি আমার মাকে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি। মা ভালো করেই জানে তার ছেলে তাকে কষ্ট দিলেও কতটা ভালোবাসে। তার সাধ্য অনুযায়ী কতটা কেয়ার করে।
পরিশেষ শুধু এটুকুই বলবো- চলমান শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে যদি ইসলাম ও নৈতিকতার সমন্বয় ঘটে তবে এ অবস্থা থেকে আমরা অনেকাংশে পরিত্রান পেতে পারি। তখন আর বৃদ্ধাশ্রম থাকবে না।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ১৭/০২/২০১৫লেখাটি অনেক সুন্দর লিখেছেন। একটা বিষয় জানতে চাচ্ছিলাম আপনি বিভিন্ন নাম গুলো লিংকের মত দিয়ে লিখেছেন। এটা কিভাবে করতে হয়? প্লিজ যদি বলতেন!
-
אולי כולנו טועים ০৪/১১/২০১৩খুব প্রয়োজনীয় লেখা ;
বেশ সুন্দর লিখেছেন।
শুভেচ্ছা রইলো ll -
প্রবাসী পাঠক ০৪/১১/২০১৩আপনার লেখার সাথে একমত পোষণ করছি । আসলেই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় ও নৈতিকতার সমন্বয় ঘটে তবে অনেকাংশে এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারি।
আপনার লেখা ও লেখায় ইসমাত ইয়াসমিন আপুর লিঙ্কটার জন্য ধন্যবাদ । লেখাটা পড়া হয়নি আপনার এখানে লিঙ্ক পেয়ে পড়ে আসলাম। -
ইসমাত ইয়াসমিন ০৪/১১/২০১৩"চলমান শিক্ষার সাথে যদি ইসলাম ও নৈতিকতার সমনয় ঘটে তবে তবে এ অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রান পেতে পারি" একদম সত্যি কথা, আমি বিশ্বাস করি। ভাল লাগ্ল আপনার লেখাটি পড়ে। শুভকামনা রইল।
-
সায়েম খান ০৪/১১/২০১৩অনেক ভাল লাগলো, ধন্যবাদ।
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ০৩/১১/২০১৩সত্যি কথা বলেছেন জহির ভাই।যদি ভালো ভাবে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করা যায় তবে আমাদের মনে মনুষ্যত্ব জন্ম নিবে।ভালোল লাগলো আপনার লেখাটি।ধন্যবাদ।