ছায়াসঙ্গী
আজ শুনাবো আমার একান্তচারী গল্প...
শুনতে-ই হবেই আপনাকে... না চাইলেও বাধ্য করবো...
তবে হেঁটে হেঁটে বলি আপনি শুনুন।
হেঁটে হেঁটে আপন শহর দেখা একধরণের শখ, কেউকেউ পাগলামো বলতে পারেন। জানেন তো প্রতিদিন শহর নতুন নতুন রূপে সাজে। এই ধরুন আজ কোথাও মাঠে বাচ্চারা খেলা করছে আগামী কাল সেখানে কংক্রিটের অট্টালিকা। কোথাও আবার হয়ে গেলো নতুন ব্রিজ কোথাও পুরানো সাঁকোর অস্তিত্ব বিলীন। অনেকদিন দেখা না হলে মানুষ হোক বা শহর অচেনা হয়ে যায়।আমার শহরকে আমি ভুলতে চাইনা বলেই এমন হেঁটে বেড়ানো।
হেঁটে হেঁটে শহর, এতে করে আমি কিন্তু #হিমু না। আমি হিমুদের মত একা গভীর রাতে ঘুরি না, খালি পায়ে হলুদ পাঞ্জাবীও পরি করি না।হিমুদের মত সিক্সথ সেন্স ও আমার নেই। তবে হিমু হতে পারলে মন্দ হতো না ইচ্ছে স্বাধীন ঘুরে বেড়ানো যেতো উদ্ভট কাজ কর্ম করা যেতো।হিমুদের ভবঘুরে ভাবটা আমার ভালোলাগে। মানুষের মস্তিস্কে খুব সহজে ডুকে পরাটাও ভীষণরকম আকৃষ্ট করে।
এবার আসি আমার কথায়..
আমার এই হেঁটে বেড়ানোর সঙ্গী একজন ছিলো। আগে সব সময়-ই থাকতো। তক্ষকের মত দেখতে মানে টিকটিকির মত বের করা চোখ। দেখতে বেশ চমৎকার। গায়ের বর্ন ফর্শা। বেশ বুদ্ধিমান তবে বিরক্তিকর বাচাল। প্রচুর পরিমাণে বাদাম খায়। বলা যায় বাদামাসক্ত। আমার শহরে প্রত্যেক বাদাম বিক্রেতা হৃদয়কে চিনতো এবং ধরে বাদাম দিতো। হ্যাঁ বাদামাসক্ত-ই হৃদয়। আজ নেই তাই বাদামও খাওয়া হলো না।
আপনি আছেন আপনি তো আবার কিছুই খান্না। শুধু নিরবে পাশে হাটেন। আচ্ছা আপনার কি কথা বলতে ইচ্ছে করে না? - করে তো আপনার মুখেই বলি আপনার কানেই শুনি। বেশতো শুনুন আর বলুন।
জানেন তো হেটে বেড়ানো মধ্যে অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটে এই ধরুন কেউ বলে একটা রিক্সা ডেকে দেও তো আমিও আপত্তিহীন ভাবে ডেকে দেই। কখনকখন ভাড়া ঠিক করে দেই, কখনওবা ওড়না ঠিক করতে বলার মত উপদেশও দেই। সাথে মালামাল থাকলে তুলে দেই। কোনোকোনো ভ্যানগাড়ি উঁচু দিয়ে উঠতে পারছে না সাহায্য চাইতেও ইতস্তত বোধ করেন তাদের গাড়ী ঠেলে দেই। এতে করে কেউকেউ খুশি হয়ে সামান্য হাসি উপহার দেয় কেউবা কিছুই বলেনা বরং মনে করেন নিতান্ত অপরিচিত মানুষদের কাছে এটা তাদের প্রাপ্য।
হেটে বেড়ানোর সব থেকে মজার ব্যাপার হলো পকেটে টাকা নেই কিন্তু পেটভরা খাবার জুটে যায়। পুরানো পরিচিত মুখের সাথে দেখা হয়ে যায়। সেকি আপ্যায়ন। খুশিখুশি মুখ করে। দেখতে ভালোই লাগে। তারপর জিজ্ঞাসা বাদ
কেমন আছিস আজকাল?
- এই চলে যাচ্ছে।
কি করিস?
- কি আর করার খাইদাই ঘুরিফিরি।
সবাই এক-ই প্রশ্ন করে তবে উত্তর গুলো ভিন্নতা পায়।তবে মিথ্যে বলিনা কাউকে পেঁচিয়ে সত্য বলি।
এই সব কথা-ই হয় ২মিনিটস এর মধ্যে ; কারণ এর বেশি কারো সাথে কথা বলা হয়না। নিয়মের বাহিরে।
প্রত্যেকের শহরে একান্ত কিছু যায়গা থাকে যেগুলো ছোটো বেলার স্মৃতি বহন করে। সেসব জায়গায় গেলে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলি কিছুক্ষণের জন্য ছোটো বেলায় ফিরে যাই।
একটা মজার ব্যপার বলি আপনাকে শুনুন একবার হেটে যাচ্ছি একলোক মাহিন্দ্রা গাড়ীর পেছনে দাঁড়িয়ে ভেতরে লোকের সাথে কথা বলছে। কথা শেষ গাড়ী ছেড়ে দিলি লোকটাও গাড়ীর পেছন পেছন ছুটছে। কিচ্ছুক্ষণ পরে দেখি লোকটা রাস্তায় পরে আছে কোনো আঘাত ছাড়াই ; কারণ তার লুঙ্গী বেধেছিল গাড়ীর বাম্পারের সাথে। লুঙ্গী রয়ে গেছে গাড়ীর সাথে আর তিনি লজ্জায় রাস্তায় শুয়েছিলেন। তাকে দেখে সেকি হাসাহাসি এযুগে lol বলে এমন অবস্থা আরকি। তারপর পাশের বাড়ির থেকে ফেরত যোগ্য বলে একটা লুঙ্গি নিয়ে লোকটার কাছে গিয়ে পরতে বললাম। পুরানো লুঙ্গিতে লোকটার ঈদের আনন্দ দেখতে পেলাম। মনে অন্যরকম প্রশান্তি পেলাম।
মানুষের মুখমণ্ডলীয় একধরনের ভাষা লুকিয়ে আছে তা কেবল মানুষের প্রকৃত হাসিতে প্রকাশ পায়। সব মানুষ-ই হাসে তবে হৃদয় দিয়ে সবাই হাসে না ; পরম আনন্দে মানুষ হৃদয় দিয়ে হাসে।
যাই অনেক কথা বলা হলো দেখাও হলো অনেক কিছু। আপনি আমার সবচেয়ে বড় সঙ্গী। একান্ত-ই আপনজন আমার ছায়াসঙ্গী।
শুনতে-ই হবেই আপনাকে... না চাইলেও বাধ্য করবো...
তবে হেঁটে হেঁটে বলি আপনি শুনুন।
হেঁটে হেঁটে আপন শহর দেখা একধরণের শখ, কেউকেউ পাগলামো বলতে পারেন। জানেন তো প্রতিদিন শহর নতুন নতুন রূপে সাজে। এই ধরুন আজ কোথাও মাঠে বাচ্চারা খেলা করছে আগামী কাল সেখানে কংক্রিটের অট্টালিকা। কোথাও আবার হয়ে গেলো নতুন ব্রিজ কোথাও পুরানো সাঁকোর অস্তিত্ব বিলীন। অনেকদিন দেখা না হলে মানুষ হোক বা শহর অচেনা হয়ে যায়।আমার শহরকে আমি ভুলতে চাইনা বলেই এমন হেঁটে বেড়ানো।
হেঁটে হেঁটে শহর, এতে করে আমি কিন্তু #হিমু না। আমি হিমুদের মত একা গভীর রাতে ঘুরি না, খালি পায়ে হলুদ পাঞ্জাবীও পরি করি না।হিমুদের মত সিক্সথ সেন্স ও আমার নেই। তবে হিমু হতে পারলে মন্দ হতো না ইচ্ছে স্বাধীন ঘুরে বেড়ানো যেতো উদ্ভট কাজ কর্ম করা যেতো।হিমুদের ভবঘুরে ভাবটা আমার ভালোলাগে। মানুষের মস্তিস্কে খুব সহজে ডুকে পরাটাও ভীষণরকম আকৃষ্ট করে।
এবার আসি আমার কথায়..
আমার এই হেঁটে বেড়ানোর সঙ্গী একজন ছিলো। আগে সব সময়-ই থাকতো। তক্ষকের মত দেখতে মানে টিকটিকির মত বের করা চোখ। দেখতে বেশ চমৎকার। গায়ের বর্ন ফর্শা। বেশ বুদ্ধিমান তবে বিরক্তিকর বাচাল। প্রচুর পরিমাণে বাদাম খায়। বলা যায় বাদামাসক্ত। আমার শহরে প্রত্যেক বাদাম বিক্রেতা হৃদয়কে চিনতো এবং ধরে বাদাম দিতো। হ্যাঁ বাদামাসক্ত-ই হৃদয়। আজ নেই তাই বাদামও খাওয়া হলো না।
আপনি আছেন আপনি তো আবার কিছুই খান্না। শুধু নিরবে পাশে হাটেন। আচ্ছা আপনার কি কথা বলতে ইচ্ছে করে না? - করে তো আপনার মুখেই বলি আপনার কানেই শুনি। বেশতো শুনুন আর বলুন।
জানেন তো হেটে বেড়ানো মধ্যে অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটে এই ধরুন কেউ বলে একটা রিক্সা ডেকে দেও তো আমিও আপত্তিহীন ভাবে ডেকে দেই। কখনকখন ভাড়া ঠিক করে দেই, কখনওবা ওড়না ঠিক করতে বলার মত উপদেশও দেই। সাথে মালামাল থাকলে তুলে দেই। কোনোকোনো ভ্যানগাড়ি উঁচু দিয়ে উঠতে পারছে না সাহায্য চাইতেও ইতস্তত বোধ করেন তাদের গাড়ী ঠেলে দেই। এতে করে কেউকেউ খুশি হয়ে সামান্য হাসি উপহার দেয় কেউবা কিছুই বলেনা বরং মনে করেন নিতান্ত অপরিচিত মানুষদের কাছে এটা তাদের প্রাপ্য।
হেটে বেড়ানোর সব থেকে মজার ব্যাপার হলো পকেটে টাকা নেই কিন্তু পেটভরা খাবার জুটে যায়। পুরানো পরিচিত মুখের সাথে দেখা হয়ে যায়। সেকি আপ্যায়ন। খুশিখুশি মুখ করে। দেখতে ভালোই লাগে। তারপর জিজ্ঞাসা বাদ
কেমন আছিস আজকাল?
- এই চলে যাচ্ছে।
কি করিস?
- কি আর করার খাইদাই ঘুরিফিরি।
সবাই এক-ই প্রশ্ন করে তবে উত্তর গুলো ভিন্নতা পায়।তবে মিথ্যে বলিনা কাউকে পেঁচিয়ে সত্য বলি।
এই সব কথা-ই হয় ২মিনিটস এর মধ্যে ; কারণ এর বেশি কারো সাথে কথা বলা হয়না। নিয়মের বাহিরে।
প্রত্যেকের শহরে একান্ত কিছু যায়গা থাকে যেগুলো ছোটো বেলার স্মৃতি বহন করে। সেসব জায়গায় গেলে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলি কিছুক্ষণের জন্য ছোটো বেলায় ফিরে যাই।
একটা মজার ব্যপার বলি আপনাকে শুনুন একবার হেটে যাচ্ছি একলোক মাহিন্দ্রা গাড়ীর পেছনে দাঁড়িয়ে ভেতরে লোকের সাথে কথা বলছে। কথা শেষ গাড়ী ছেড়ে দিলি লোকটাও গাড়ীর পেছন পেছন ছুটছে। কিচ্ছুক্ষণ পরে দেখি লোকটা রাস্তায় পরে আছে কোনো আঘাত ছাড়াই ; কারণ তার লুঙ্গী বেধেছিল গাড়ীর বাম্পারের সাথে। লুঙ্গী রয়ে গেছে গাড়ীর সাথে আর তিনি লজ্জায় রাস্তায় শুয়েছিলেন। তাকে দেখে সেকি হাসাহাসি এযুগে lol বলে এমন অবস্থা আরকি। তারপর পাশের বাড়ির থেকে ফেরত যোগ্য বলে একটা লুঙ্গি নিয়ে লোকটার কাছে গিয়ে পরতে বললাম। পুরানো লুঙ্গিতে লোকটার ঈদের আনন্দ দেখতে পেলাম। মনে অন্যরকম প্রশান্তি পেলাম।
মানুষের মুখমণ্ডলীয় একধরনের ভাষা লুকিয়ে আছে তা কেবল মানুষের প্রকৃত হাসিতে প্রকাশ পায়। সব মানুষ-ই হাসে তবে হৃদয় দিয়ে সবাই হাসে না ; পরম আনন্দে মানুষ হৃদয় দিয়ে হাসে।
যাই অনেক কথা বলা হলো দেখাও হলো অনেক কিছু। আপনি আমার সবচেয়ে বড় সঙ্গী। একান্ত-ই আপনজন আমার ছায়াসঙ্গী।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
অনির্বাণ সূর্যকান্ত ০৬/০৯/২০১৭
-
সমির প্রামাণিক ০৩/০৯/২০১৭'ছায়াসঙ্গী'- সঙ্গী হল পাঠকের। পাঠক পেলো সুন্দর আস্বাদ। শুভেচ্ছা রইলো।
লেখা টা ভালো লাগলো।