www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ভালবাসা একটু স্পর্শ

আল্লাহ মানুষকে একটা শরীর ও মন দিয়ে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সাথে সেই শরীরে রোগ ও দিয়ে দিয়েছেন। আবার অনেক সময় বিভিন্ন কারনে মানুষ মানসিকভাবে ও বিপর্যস্ত থাকে। অসুখ হলে মানুষ বড় অসহায় হয়ে পড়ে। এই পৃথিবীর কোন কিছুই তখন তার ভাল লাগেনা। শুধু মনে হয় আর বোধ হয় ভাল হবনা।মানুষের শরীর ও মন দুটোই দুর্বল হয়ে যায়। এই সময় মন থাকে বিক্ষিপ্ত, কোন কিছুই ভাল লাগেনা।
কয়েকদিন আগে আমি অসুস্থ ছিলাম আমার তাই মনে হয়েছিল। সামান্য জর আর কাশি আমাকে বিছানায় ফেলে দিল। যখন আমি আর পারছিলাম না, তখন আমার হাজবেন্ড কে তলব করলাম, চলে আস আর পারছিনা।
ও যখনই বাসায় পা দিল, আমার বুকের ছাতি অনেক বড় হয়ে গেল, আমার মনে হল আমি অর্ধেক ভাল হয়ে গেলাম। আসলে ভাল হয়নি কিন্তু প্রিয় মানুষকে কাছে পেয়ে আমার মনের জোড় বাড়ল। মনে হল এখন আমার আর কিছুই হবেনা যতই জর আসুক।
যা হোক বিপদে পড়লে মানুষ সব কিছু পারে। না ভুল বললাম, চেষ্টা আর ইচ্ছা থাকলে পুরুষ মানুষ ও সংসার আগলে রাখতে পারে। আমি দেখলাম আমার ছেলের বাবা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে বাজার করে, থালা বাসন পরিস্কার করে, ঘরবাড়ি পরিস্কার করে, কাপড় ধুয়ে রান্না বান্না করে রেডী। এর ভেতরে আমার যত্ন নেওয়া তো আছেই।হাসপাতালে ও যেতে হচ্ছে। বাচ্চারা যা চায় সাথে সাথে হাজির। বাচ্চারা এই জন্য ওদের পাপাকে নাম দিল “ অটো মেকার পাপা”। পাপা সব করছে দেখে ওরা মাকে আর কিছু বলেনা। বুঝতে পেরেছে মা অসুস্থ, পাপা সব কিছু করবে এবং পাপাকেই বলতে হবে। ওদের পাপা ও দেখলাম দায়িত্ত নিয়ে সব কিছু করতে লাগল। কোন ক্লান্তি নেই। মাঝে মাঝে আমি দেখতাম হাপিয়ে উঠেছে, অভ্যাস তো আর নেই কিন্তু করে যাচ্ছে।১২ দিন একটানা সংসার দেখভাল করলেন।আমাকে সুস্থ করে দিয়ে তারপর গেলেন তিনি।
সারারাত ঘুমাত না, যেহেতু আমার ঘুম ছিলনা। বসে থাকত , কখন কি চায়, কাশি যেহেতু তাই সারারাত একটু শান্তির জন্য, গরম পানি, না হলে আদা, না হলে লবঙ্গ না হলে লেবু পানি এ সবের উপরেই থাকতাম। বেচারা না ঘুমিয়ে বসে থাকত আমি কখন কি চায় তা দেবার জন্য। সকালে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে তারপর ঘুমাতে যেত।
যা বলছিলাম অসুস্থ অবস্থায় কস্টের অনুভূতি কমিয়ে দিতে প্রিয়জনের সান্নিধ্য , ভালবাসা, আদরমাখা কথা অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে।তাকে সুস্থ করে তুলতে পারে আপনার মমতামাখা কিছু কথা। আপনি নিজেই পারবেন আপনার প্রিয় মানুষকে অনেকখানি সুস্থ করে তুলতে, এর জন্য দরকার একটু ভালবাসা।
আর অসুস্থ হলে একটু সংসারের হাল না হয় ধরলেন, কি বা হয়, শুধু একবার ভাবেন, যে মানুষ আপানর সংসারে সারা বছর বিনা পয়সায় কাজ করে, সে তো ভালবাসা দিয়ে আপনার সংসার, বাচ্চাদেরকে আগলে রাখে, তার অসুস্থতার সময়ে আপনি না হয় একটু করলেন, তাকে একটু শান্তি দিলেন, তাকে বুঝালেন যে সংসার নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবেনা, তুমি রেস্ট নাও, সুস্থ হয়ে ওঠ, তারপর আবার তোমার সংসারের সব কিছু কর।
আসেন ভাই ঘরের প্রিয় মানুষটি অসুস্থ হলে তাকে পরম মমতায় গায়ে হাত বুলিয়ে দিই, তাকে বুঝিয়ে দিই, আমি তোমার পাশে আছি, চিন্তা করোনা, ভয় করোনা।“তুমি ভাল হয়ে যাবে”। একটু ভালবাসা, একটু আদর তাকে মানসিকভাবে অনেক শান্তি দিতে পারে, যা অসুস্থ শরীরের জন্য প্রয়োজন। আসুন প্রিয়জনকে ভালবাসি, ভালবাসা খারাপ কিছু না। দোষের কিছু না।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ১৩৪০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/১২/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • প্রিয় ২৫/০৭/২০১৬
    আবেগময়ী খেলাটি খুব ভালো লাগল।ভালো থাকবেন।
  • আহমাদ মাগফুর ২৭/০১/২০১৫
    ভালবাসা তো বিধাতার হাই এন্ড স্পেশাল গিফট্....
    সেইটা খারাপ হওয়ার কোন চান্স আছে আপু!
    .
    .
    .
    আমরা তো অভিমান করে ভালোবাসাটাকে তখনই কেবল খারাপ বলি,,, যখন ভালোবাসার মানুষটা আমাদের ভালবাসা বুঝেনা বা বুঝতে চায় না।

    তাই না আপু?
  • আবিদ আল আহসান ২২/০১/২০১৫
    মোবাইল হারিয়ে ছিলো। নিউ মোবাইল কিনে ব্লগে এসে আপনার লিখা পড়ে খুব ভাল লাগলো
  • সায়েম খান ১৯/১২/২০১৪
    ১১ মাস পর ব্লগে ফিরে আমার প্রিয় লেখকদের অনেককেই আর ব্লগে পাচ্ছিনা, কিন্তু আপনাকে পেয়ে আপনার চমতকার লেখা পড়ে অনেক ভাল লাগলো।
  • আবিদ আল আহসান ১৪/১২/২০১৪
    আপনি সব সময় চমৎকার লিখেন। তাই আপনাকে প্রিয়তে রেখেছি
  • ভাল লাগলো! এরকম ভালবাসা থাকুক আজীবন!!
  • শম্পা ১৩/১২/২০১৪
    একই অনুভুতি আমারও হয়েছে। খুব ভাল লাগল আপনার প্রকাশ। ভাল থাকবেন।
  • ১৩/১২/২০১৪
    খুব সুন্দর লাগল পড়ে । আসলে ভালবাসার সম্পর্ক এমনটিই হওয়া উচিত ।
    ধন্যবাদ ।
 
Quantcast