জীবনের গল্প
আম্মু সেই গল্পটা বল না?
কোন গল্প? তুমি কি ভুতের গল্প শুনতে চাও?
নিজের গল্প বার বার শুনতে ইচ্ছা হয় আম্মু,ওই যে আমি কিভাবে তোমার কোল জুড়ে আসলাম।
নিজের কথা শুনতে খুব ভাল লাগে, না?
অবশ্যই লাগে আর যদি সেটা ছোটকালের হয়। আচ্ছা আরম্ভটা আমিই করে দিই। ২০০১ সাল। “ তুমি তখন বাংককে পাপার কাছে বেড়াতে এসেছ। পাপা সারাদিন থাকেনা, তুমি সারাদিন একা একা রুমে। আমি তখন তোমার পেটে মাত্র দুই মাস।তুমি কিছু খেতে পার না, সকাল বেলা ঘুম ঊঠেই বমি করা শুরু কর, খেতে পার না বলে রাতে ঘুমাতে পারনা। মাঝরাতে উঠে বসে জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাক। না খেতে খেতে তোমার অবস্থা এমন হল যে তোমাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হল”।
থাম থাম তুই তো নিজেই গল্পটা বলে শেষ করছিস? আম্মু বলতে দাও, আর এ গল্প শুনতে শুনতে আমার মুখস্থ হয়ে গেছে।
আম্মু তখন কি আমার উপর তোমার খুব রাগ হত?মনে হত কি এই বাচ্চাটার জন্য আমার এত কস্টহচ্ছে।
না, একটু ও রাগ হতোনা, বরং অপেক্ষা করতাম কবে নয় মাস দশ দিন শেষ হবে, আর আমি তোর মুখটা দেখতে পাব?
তারপর কি হল আম্মু?
আমাকে হাসপাতাল থেকে আনা হল, অবস্থা আরো খারাপের দিকে যেতে লাগল, হোমসিক আর কি। শুধু মনে হচ্ছিল বাবা মায়ের কাছে গেলে আমি ভাল হয়ে যাব। তোর পাপা বাসায় আসলেই কান্না শুরু করে দিতাম যে আমাকে বাড়ি পাঠিয়ে দাও। বেচারা প্রতিদিন এই শুনতে শুনতে একদিন দেখি টিকেট করে নিয়ে এসেছে। তার সাতদিন পরেই ফ্লাইট।
নির্দিষ্ট দিনে আমি প্লেনে উঠলাম, বিশ্বাস কর, তোর পাপাকে ছেড়ে যাচ্ছি কিন্তু আমার একটু ও খারাপ লাগছিল না। কারন আমি তখন নতুন স্বপ্নে বিভোর, মনে মনে তোর সাথে কথা বলি। চলে আসলাম বাংলাদেশে। আর তারপরেই আমি কেমন জানি ভাল হয়ে গেলাম। আর কোনদিন বমি করিনি। খাওয়া শুরু করলাম, আমার আর কোন সমস্যা নেই। যখন তুই ৬ মাসের তখন আমি আবার স্কুলে জয়েন করলাম।
তারপর আম্মু?
তখন আমি মাগুরায়। ডাক্তার সোখেনা খানম বেলীর কাছে প্রতি মাসে যাই চেক আপ এর জন্য। কোনদিন এদিক ওদিক হয়নি, তোর এতটুকু সমস্যা হোক আমি চায়নি। ডাক্তারের কথামত চলেছি।শুরু হল তোর নড়াচড়া, লাথি কাকে বলে। খুব স্ট্রং ছিলি।রাতে ঘুমাতে দিতিনা।ঘুমালেই এমন লাথি দিতি যে আমার ঘুম ভেঙ্গে যেত।
হা হা হা আম্মু।
আর লাথি না দিলে মন খারাপ হয়ে যেত, মনে হত তোর কিছু হল না তো, নড়ছিস না কেন?আট মাসের সময় খুব জর হল আমার। শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করছিলাম, তোর যেন কোন ক্ষতি না হয়।
এই সময় তোমার নিয়ে চিন্তা করতে না আম্মু,শুধু আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে?
হ্যা, আমার ধ্যান জ্ঞান তখন একটাই একটা সুস্থ সুন্দর বাচ্চা। এর ভেতরে আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে আমি জেনে গেছি, যে আসছে সে ছেলে। মজার ব্যাপার কি জানিস আমি যখন ব্যাংকক থেকে চলে আসি তখন তোর পাপা আসার সময় কিছু জামা কাপড় আর একটা স্বর্ণের চেইন আমার সাথে দিয়ে দিয়েছিল, বলেছিল এটা আমার ছেলের জন্য।তখন ও আমরা জানতাম না ছেলে না মেয়ে? হা হা হা।।
পাপা তাহলে ছেলে চেয়েছিল, তাইনা আম্মু।
হ্যা। শোন তারপর কি হল। তোর জন্মের ডেট ছিল ফেব্রুয়ারীর ১৪ তারিখ। ডাক্তার বলেছিল প্রথম বেবী আগে হয়ে যাবে। কোন খবর নেই, ১৪ তারিখপার হয়ে ২০ পার হয়ে যাচ্ছে , তোর বেরুবার নাম নেই। আর আমি দিব্যি হেটে চলে বেড়াচ্ছি।ডাক্তারের কাছে গেলাম। সামনেই ছিল কোরবানী ঈদ, ডাক্তার বলল,ঈদের পরের দিন আসতে। অপেক্ষা করতে বললেন। আমার তখন একটাই চিন্তা তুই ঠিকমত বেরোতে পারবি তো, যদি তোরকিছু হয়ে যায় তাহলে আমি তোর পাপাকে কি জবাব দেব? শুধু এই সব চিন্তা করতাম।
হা হা হা ।আমি খুব মজা পাচ্ছি। তোমার গল্পশুনে আমি যেন সেই সময়টাকে দেখতে পাচ্ছি। তারপর কি হল আম্মু/
ঈদ এসে গেল, বুঝলাম তুই কোরবানীর গোশ না খেয়ে বের হবিনা। ঈদের দিন পার করে দিলাম কোন খবর নেই। রাত শুরু হল। পরের দিন আমার জন্মদিন। ফেব্রুয়ারীর ২৪ তারিখ। গভীর রাতে মনে হল তুই অন্যদিন যেভাবে নড়িস, ঠিক সেভাবে নড়ছিস না।
মানে লাথি দিচ্ছিনা, ফুটবল খেলছিনা, তাই নাআম্মু। ঠিক তাই।
সারারাত বসে থাকলাম। টেনশানে ঘুম হলনা। কেন নড়ছিস না এই ভেবে।কেমন যেন ভয় লাগতে লাগল। শুধু মনে হচ্ছিল তোর কিছু হল না তো।আমার অবস্থা তখন এমন যে তোর জন্য আমি হাতের মুঠোয় আকাশ ধরে আনতে পারি। সকাল নয়টা বাজে।তোর ছোট খালা আর নানা ভাইকে সাথে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম। ডাক্তার চেক আপ করে আমাকে মাগুরার শান্তি ক্লিনিকে ভর্তি করলেন। ক্লিনিক টা আমাদের বাড়ির কাছেই। স্যালাইন দিলেন।এর মধ্যে তোর সব মামা,নানী, দাদা ভাই, দাদু, চাচারা এসে গেছে। তুই নড়ছিস না। আমি নার্সের হাত জড়িয়ে বলি আমার বাচ্চাটা নড়ছে না, ওকে আপনারা অপারেশন করে বের করে ফেলেন।প্লিজ ওকে বাঁচান।
আম্মু অপারেশনের কথা যে বললে তোমার ভয় লাগেনি?
একটু ও না। আমার মনের ভেতর তখন কি যে ব্যাকুলতা, আমি একটা জীবন্ত বাচ্চা চাই।
তারপর, তারপর কি হল?
দুপুর দুটোর সময় আমাকে অপারেশনের রুমে নিয়েগেল। আমি তখন কাদছি।মনে হচ্ছিল যদি আর ফিরে না আসি।তোর মুখটা যদি দেখতে না পারি।
ডাক্তার অপারেশন করছে, কথা বলছে আমি সবশু নতে পাচ্ছি।“আমি তোর কান্না শুনতে পেলাম।“ অনুভব করলাম, আমার হাতের মুঠোয় এখন আকাশ। তুই কান্না করে এই পৃথিবীকে জানিয়ে দিলি আমি এসেছি। নার্স একটা ট্রের মধ্যে তোকে নিয়ে আমার সঙ্গে তোর সযোগ বিচ্ছিন্ন করল নাড়ি কেটে।ডাক্তার বলল ইসমাত “তোমার ফুটফুটে একটা ছেলে হয়েছে”। আমি বললাম মনে হয় ওর পাপার মত হয়েছে, ওর পাপা তোসুন্দর। ডাক্তার বলে না আমার রোগী বেশী সুন্দর।
তারপর আম্মু!!!
ডাক্তার নার্সকে বললেন বাইরে নেবার আগে ওর মায়ের কাছে নিয়ে এস। নার্স তোকে আমার সামনে মেলে ধরল। তুই চোখ বন্ধ করে আছিস, “আমি তোকে দেখলাম, মুখে চুমু দিলাম, নার্স তোকে নিয়ে বাইরে চলে গেল।এরপর আমি আর কিছু জানিনা, আমার শরীর তখন অবশ হয়ে যেতে লাগল, আমি তখন আর কিছু দেখতে চায়নি, তোর মুখটা দেখেছি ওতেই আমার শান্তি। শুধু মনে হচ্ছিল মনে একটু ঘুমাই। কতক্ষণ পর জানিনা আমাকে কেবিনে আনা হয়েছে।যখন চোখ খুললাম তোকে আবার দেখলাম তোর নানুর কোলে।আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি তোর দিকে।তখন কেউ যদি বলতো, এই বিশ্ব আপানার এক হাতে, অন্য হাতে এই শিশুটি আপনি কাকে চান?
“ আমি তাকে ধমক দিয়ে বলতাম, আপনি কি পাগল নাকি। আমার কাছে এই বিশ্বের সবকিছু এখন তুচ্ছ। আমি এই দুনিয়ার কিছুই চায়না, শুধু এই শিশুকে চায়”।
কোন গল্প? তুমি কি ভুতের গল্প শুনতে চাও?
নিজের গল্প বার বার শুনতে ইচ্ছা হয় আম্মু,ওই যে আমি কিভাবে তোমার কোল জুড়ে আসলাম।
নিজের কথা শুনতে খুব ভাল লাগে, না?
অবশ্যই লাগে আর যদি সেটা ছোটকালের হয়। আচ্ছা আরম্ভটা আমিই করে দিই। ২০০১ সাল। “ তুমি তখন বাংককে পাপার কাছে বেড়াতে এসেছ। পাপা সারাদিন থাকেনা, তুমি সারাদিন একা একা রুমে। আমি তখন তোমার পেটে মাত্র দুই মাস।তুমি কিছু খেতে পার না, সকাল বেলা ঘুম ঊঠেই বমি করা শুরু কর, খেতে পার না বলে রাতে ঘুমাতে পারনা। মাঝরাতে উঠে বসে জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাক। না খেতে খেতে তোমার অবস্থা এমন হল যে তোমাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হল”।
থাম থাম তুই তো নিজেই গল্পটা বলে শেষ করছিস? আম্মু বলতে দাও, আর এ গল্প শুনতে শুনতে আমার মুখস্থ হয়ে গেছে।
আম্মু তখন কি আমার উপর তোমার খুব রাগ হত?মনে হত কি এই বাচ্চাটার জন্য আমার এত কস্টহচ্ছে।
না, একটু ও রাগ হতোনা, বরং অপেক্ষা করতাম কবে নয় মাস দশ দিন শেষ হবে, আর আমি তোর মুখটা দেখতে পাব?
তারপর কি হল আম্মু?
আমাকে হাসপাতাল থেকে আনা হল, অবস্থা আরো খারাপের দিকে যেতে লাগল, হোমসিক আর কি। শুধু মনে হচ্ছিল বাবা মায়ের কাছে গেলে আমি ভাল হয়ে যাব। তোর পাপা বাসায় আসলেই কান্না শুরু করে দিতাম যে আমাকে বাড়ি পাঠিয়ে দাও। বেচারা প্রতিদিন এই শুনতে শুনতে একদিন দেখি টিকেট করে নিয়ে এসেছে। তার সাতদিন পরেই ফ্লাইট।
নির্দিষ্ট দিনে আমি প্লেনে উঠলাম, বিশ্বাস কর, তোর পাপাকে ছেড়ে যাচ্ছি কিন্তু আমার একটু ও খারাপ লাগছিল না। কারন আমি তখন নতুন স্বপ্নে বিভোর, মনে মনে তোর সাথে কথা বলি। চলে আসলাম বাংলাদেশে। আর তারপরেই আমি কেমন জানি ভাল হয়ে গেলাম। আর কোনদিন বমি করিনি। খাওয়া শুরু করলাম, আমার আর কোন সমস্যা নেই। যখন তুই ৬ মাসের তখন আমি আবার স্কুলে জয়েন করলাম।
তারপর আম্মু?
তখন আমি মাগুরায়। ডাক্তার সোখেনা খানম বেলীর কাছে প্রতি মাসে যাই চেক আপ এর জন্য। কোনদিন এদিক ওদিক হয়নি, তোর এতটুকু সমস্যা হোক আমি চায়নি। ডাক্তারের কথামত চলেছি।শুরু হল তোর নড়াচড়া, লাথি কাকে বলে। খুব স্ট্রং ছিলি।রাতে ঘুমাতে দিতিনা।ঘুমালেই এমন লাথি দিতি যে আমার ঘুম ভেঙ্গে যেত।
হা হা হা আম্মু।
আর লাথি না দিলে মন খারাপ হয়ে যেত, মনে হত তোর কিছু হল না তো, নড়ছিস না কেন?আট মাসের সময় খুব জর হল আমার। শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করছিলাম, তোর যেন কোন ক্ষতি না হয়।
এই সময় তোমার নিয়ে চিন্তা করতে না আম্মু,শুধু আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে?
হ্যা, আমার ধ্যান জ্ঞান তখন একটাই একটা সুস্থ সুন্দর বাচ্চা। এর ভেতরে আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে আমি জেনে গেছি, যে আসছে সে ছেলে। মজার ব্যাপার কি জানিস আমি যখন ব্যাংকক থেকে চলে আসি তখন তোর পাপা আসার সময় কিছু জামা কাপড় আর একটা স্বর্ণের চেইন আমার সাথে দিয়ে দিয়েছিল, বলেছিল এটা আমার ছেলের জন্য।তখন ও আমরা জানতাম না ছেলে না মেয়ে? হা হা হা।।
পাপা তাহলে ছেলে চেয়েছিল, তাইনা আম্মু।
হ্যা। শোন তারপর কি হল। তোর জন্মের ডেট ছিল ফেব্রুয়ারীর ১৪ তারিখ। ডাক্তার বলেছিল প্রথম বেবী আগে হয়ে যাবে। কোন খবর নেই, ১৪ তারিখপার হয়ে ২০ পার হয়ে যাচ্ছে , তোর বেরুবার নাম নেই। আর আমি দিব্যি হেটে চলে বেড়াচ্ছি।ডাক্তারের কাছে গেলাম। সামনেই ছিল কোরবানী ঈদ, ডাক্তার বলল,ঈদের পরের দিন আসতে। অপেক্ষা করতে বললেন। আমার তখন একটাই চিন্তা তুই ঠিকমত বেরোতে পারবি তো, যদি তোরকিছু হয়ে যায় তাহলে আমি তোর পাপাকে কি জবাব দেব? শুধু এই সব চিন্তা করতাম।
হা হা হা ।আমি খুব মজা পাচ্ছি। তোমার গল্পশুনে আমি যেন সেই সময়টাকে দেখতে পাচ্ছি। তারপর কি হল আম্মু/
ঈদ এসে গেল, বুঝলাম তুই কোরবানীর গোশ না খেয়ে বের হবিনা। ঈদের দিন পার করে দিলাম কোন খবর নেই। রাত শুরু হল। পরের দিন আমার জন্মদিন। ফেব্রুয়ারীর ২৪ তারিখ। গভীর রাতে মনে হল তুই অন্যদিন যেভাবে নড়িস, ঠিক সেভাবে নড়ছিস না।
মানে লাথি দিচ্ছিনা, ফুটবল খেলছিনা, তাই নাআম্মু। ঠিক তাই।
সারারাত বসে থাকলাম। টেনশানে ঘুম হলনা। কেন নড়ছিস না এই ভেবে।কেমন যেন ভয় লাগতে লাগল। শুধু মনে হচ্ছিল তোর কিছু হল না তো।আমার অবস্থা তখন এমন যে তোর জন্য আমি হাতের মুঠোয় আকাশ ধরে আনতে পারি। সকাল নয়টা বাজে।তোর ছোট খালা আর নানা ভাইকে সাথে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম। ডাক্তার চেক আপ করে আমাকে মাগুরার শান্তি ক্লিনিকে ভর্তি করলেন। ক্লিনিক টা আমাদের বাড়ির কাছেই। স্যালাইন দিলেন।এর মধ্যে তোর সব মামা,নানী, দাদা ভাই, দাদু, চাচারা এসে গেছে। তুই নড়ছিস না। আমি নার্সের হাত জড়িয়ে বলি আমার বাচ্চাটা নড়ছে না, ওকে আপনারা অপারেশন করে বের করে ফেলেন।প্লিজ ওকে বাঁচান।
আম্মু অপারেশনের কথা যে বললে তোমার ভয় লাগেনি?
একটু ও না। আমার মনের ভেতর তখন কি যে ব্যাকুলতা, আমি একটা জীবন্ত বাচ্চা চাই।
তারপর, তারপর কি হল?
দুপুর দুটোর সময় আমাকে অপারেশনের রুমে নিয়েগেল। আমি তখন কাদছি।মনে হচ্ছিল যদি আর ফিরে না আসি।তোর মুখটা যদি দেখতে না পারি।
ডাক্তার অপারেশন করছে, কথা বলছে আমি সবশু নতে পাচ্ছি।“আমি তোর কান্না শুনতে পেলাম।“ অনুভব করলাম, আমার হাতের মুঠোয় এখন আকাশ। তুই কান্না করে এই পৃথিবীকে জানিয়ে দিলি আমি এসেছি। নার্স একটা ট্রের মধ্যে তোকে নিয়ে আমার সঙ্গে তোর সযোগ বিচ্ছিন্ন করল নাড়ি কেটে।ডাক্তার বলল ইসমাত “তোমার ফুটফুটে একটা ছেলে হয়েছে”। আমি বললাম মনে হয় ওর পাপার মত হয়েছে, ওর পাপা তোসুন্দর। ডাক্তার বলে না আমার রোগী বেশী সুন্দর।
তারপর আম্মু!!!
ডাক্তার নার্সকে বললেন বাইরে নেবার আগে ওর মায়ের কাছে নিয়ে এস। নার্স তোকে আমার সামনে মেলে ধরল। তুই চোখ বন্ধ করে আছিস, “আমি তোকে দেখলাম, মুখে চুমু দিলাম, নার্স তোকে নিয়ে বাইরে চলে গেল।এরপর আমি আর কিছু জানিনা, আমার শরীর তখন অবশ হয়ে যেতে লাগল, আমি তখন আর কিছু দেখতে চায়নি, তোর মুখটা দেখেছি ওতেই আমার শান্তি। শুধু মনে হচ্ছিল মনে একটু ঘুমাই। কতক্ষণ পর জানিনা আমাকে কেবিনে আনা হয়েছে।যখন চোখ খুললাম তোকে আবার দেখলাম তোর নানুর কোলে।আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি তোর দিকে।তখন কেউ যদি বলতো, এই বিশ্ব আপানার এক হাতে, অন্য হাতে এই শিশুটি আপনি কাকে চান?
“ আমি তাকে ধমক দিয়ে বলতাম, আপনি কি পাগল নাকি। আমার কাছে এই বিশ্বের সবকিছু এখন তুচ্ছ। আমি এই দুনিয়ার কিছুই চায়না, শুধু এই শিশুকে চায়”।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আবিদ আল আহসান ০৩/১২/২০১৪
-
তাহসিনা ফেরদৌস শান্তা ২৯/১১/২০১৪অসাধারণ লিখনী।
-
অনিরুদ্ধ বুলবুল ০৮/১১/২০১৪দম বন্ধ করে একটানে গল্প পড়তে বাধ্য হলাম। বেশ লিখেছেন। গল্পের হাত বেশ পরিস্কার। ছোটখাট দু'একটি বানান ঠিক করতে হবে ব্যস্।
অভিনন্দন রইলো। -
ইঞ্জিনিয়ার সজীব ইমাম ০৮/১১/২০১৪একটা অন্যরকম অনুভুতি পেলাম। একটু ভয় একটু ভালোবাসা অনেকগুলো আবেগ। বাট এই জিনিসটা আমার কাছে বরাবরাই যথেষ্ট ভয়ের।
ইসমাত নামের একটি মেয়ে এর নায়িকা। নাম না জানা একজন নায়ক, আর কেন্দ্রবিন্দু এক ছোট্ট বাবু। যার বয়স এখন ১৪, হ্যাঁ. খুব ভালো লাগলো...