দায়মুক্তিঃ
শহীদ বুদ্ধিজীবী ডাক্তার আলীম চৌধুরীর মেয়ে নুজহাত চৌধুরী নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করেছেন আজ কি বাতাসে অক্সিজেন একটু বেশী? বুকের ভেতর এত হালকা লাগছে কেন?
নিজের প্রশ্নের উত্তর নুজহাত নিজেই দিয়েছেন “ মা, এবার শান্তিতে ঘুমাও, আমি কাঁদি, কাঁদি তোমার জন্য, কাঁদি আমার জন্ন,এই অভাগা দেশের জন্য, এ বীর জাতির জন্য, এই দায়বুক্তির সুযোগের জন্য”।
১৪ ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস, আর এবারই প্রথম বুদ্ধিজীবি হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় হাতে নিয়ে দিনটি পালন করছে দেশবাসী। যুদ্ধ অপরাধী কাদের মোল্ল্যার ফাসির রায় কার্যকর হয়েছে ১২ ই ডিসেম্বর, দেশ ও জাতি একটু ও হলে ও এই ফাঁসির কার্যকর করার মধ্য দিয়ে দায়মুক্তি হয়েছে।
বুদ্ধিজীবিদের নিধন শুরু হয়েছিল ২৫ শে মার্চ ১৯৭১ রাতে। এই দিন পাকিস্তানীরা অনেক বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করেছিল, ভেবেছিল দেশের এই সব বুদ্ধিজীবিদের মেরে ফেললে, বাঙ্গালী পঙ্গু হয়ে যাবে, স্বাধীন দেশ, পতাকার কথা ভুলে যাবে, কিন্তু বাঙ্গালী জাতি ২৫ শে মার্চের পর আরো ফুসে উঠেছিলো। তাইতো দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের শেষে পাকিস্তানী বাহিনী বুঝে গিয়েছিল তাদের পরাজয় নিশ্চিত, তাই এই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই স্বাধীনতার মাত্র দুই দিন আগে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবিদের এমন নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিল। একটাই কারন ছিল বাংলাদেশ নামক ছোট দেশটা যাতে জ্ঞানে বিজ্ঞানে, শিক্ষা, দীক্ষায় পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
কিন্তু এই হত্যাকাণ্ড কারা করেছিল? পাকিস্তানীরা কি এই সব বুদ্ধিজীবীদের চিনত? না তারা চিনত না? ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের চুড়ান্ত পর্যায়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনীর সহযোগীতায় বাঙ্গালী জাতিকে মেধা শূণ্য করার জন্য জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। পরিকল্পিতভাবে বাঙ্গালী জাতিকে মেধাশূন্য ও পঙ্গু করার নিমিত্তে জাতির এইসব শ্রেষ্ঠ সন্তানদের (বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক,প্রকৌশলী, সাংবাদিক,কবি ও সাহিত্যিকদের) নিজ বাড়ী থেকে রাতের অন্ধকারে পৈশাচিক কায়দায় ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে এনে, দুই চোখ বেঁধে , দুই হাত পিছনে বেঁধে নিয়ে গিয়েছিল আলবদর বাহিনীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকার মোহাম্মাদপুর শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে । (তৎকালীন ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট)। এটি ছিল আল বদরদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ১৯৭১ সালের ১০ ই ডিসেম্বর থেকে সেটা হয়ে ওঠে বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবিদের হত্যাকেন্দ্র। সাধীনতাগামী বুদ্ধিজীবিদের বেশীর ভাগকে আল বদর রা সেখানে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর রায়ের বাজার ও মিরপুরের বধ্য ভূমিতে নিয়ে হত্যা করেছিল। হত্যা করার পর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে চোখ গুলো তুলে ফেলেছিল । মহিলা বুদ্ধিজীবিদের নারী অঙ্গগুলো কেটে দেহ থেকে আলাদা করেছিল। সবগুলো মৃত দেহ, আর যন্ত্রনায় কাতরানো জীবিত দেহগুলোকে একসাথে দলা করে মাটির গর্তে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল।
বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ড একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধগুলোর মধ্যে ঘৃণ্যতম অপরাধ। এসব হত্যাযজ্ঞে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন, তাঁদের শাস্তি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়েই আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারি। সব ঘাতকের বিচারের মাধ্যমেই জাতি দায়মুক্ত হতে পারে।দেরীতে হলে ও স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে আমরা সেই সব রাজাকারদের বিচারের কাঠ গড়ায় দাড় করাতে পেরেছি।
আজ পুরো জাতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করবে সেসব সূর্যসন্তানকে; যাদের আত্মত্যাগে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, আমরা পেয়েছি স্বাধীন মানচিত্র। আমরা তোমাদের ভুলব না, তোমরা অমর, এই দেশের মাটির প্রতিটি কনায় তোমরা মিশে আছো। নতুন প্রজন্ম শ্রদ্ধার সাথে আজীবন তোমাদের স্মরণ করবে।
নিজের প্রশ্নের উত্তর নুজহাত নিজেই দিয়েছেন “ মা, এবার শান্তিতে ঘুমাও, আমি কাঁদি, কাঁদি তোমার জন্য, কাঁদি আমার জন্ন,এই অভাগা দেশের জন্য, এ বীর জাতির জন্য, এই দায়বুক্তির সুযোগের জন্য”।
১৪ ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস, আর এবারই প্রথম বুদ্ধিজীবি হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় হাতে নিয়ে দিনটি পালন করছে দেশবাসী। যুদ্ধ অপরাধী কাদের মোল্ল্যার ফাসির রায় কার্যকর হয়েছে ১২ ই ডিসেম্বর, দেশ ও জাতি একটু ও হলে ও এই ফাঁসির কার্যকর করার মধ্য দিয়ে দায়মুক্তি হয়েছে।
বুদ্ধিজীবিদের নিধন শুরু হয়েছিল ২৫ শে মার্চ ১৯৭১ রাতে। এই দিন পাকিস্তানীরা অনেক বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করেছিল, ভেবেছিল দেশের এই সব বুদ্ধিজীবিদের মেরে ফেললে, বাঙ্গালী পঙ্গু হয়ে যাবে, স্বাধীন দেশ, পতাকার কথা ভুলে যাবে, কিন্তু বাঙ্গালী জাতি ২৫ শে মার্চের পর আরো ফুসে উঠেছিলো। তাইতো দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের শেষে পাকিস্তানী বাহিনী বুঝে গিয়েছিল তাদের পরাজয় নিশ্চিত, তাই এই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই স্বাধীনতার মাত্র দুই দিন আগে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবিদের এমন নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিল। একটাই কারন ছিল বাংলাদেশ নামক ছোট দেশটা যাতে জ্ঞানে বিজ্ঞানে, শিক্ষা, দীক্ষায় পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
কিন্তু এই হত্যাকাণ্ড কারা করেছিল? পাকিস্তানীরা কি এই সব বুদ্ধিজীবীদের চিনত? না তারা চিনত না? ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের চুড়ান্ত পর্যায়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনীর সহযোগীতায় বাঙ্গালী জাতিকে মেধা শূণ্য করার জন্য জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে। পরিকল্পিতভাবে বাঙ্গালী জাতিকে মেধাশূন্য ও পঙ্গু করার নিমিত্তে জাতির এইসব শ্রেষ্ঠ সন্তানদের (বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক,প্রকৌশলী, সাংবাদিক,কবি ও সাহিত্যিকদের) নিজ বাড়ী থেকে রাতের অন্ধকারে পৈশাচিক কায়দায় ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে এনে, দুই চোখ বেঁধে , দুই হাত পিছনে বেঁধে নিয়ে গিয়েছিল আলবদর বাহিনীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকার মোহাম্মাদপুর শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে । (তৎকালীন ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট)। এটি ছিল আল বদরদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ১৯৭১ সালের ১০ ই ডিসেম্বর থেকে সেটা হয়ে ওঠে বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবিদের হত্যাকেন্দ্র। সাধীনতাগামী বুদ্ধিজীবিদের বেশীর ভাগকে আল বদর রা সেখানে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর রায়ের বাজার ও মিরপুরের বধ্য ভূমিতে নিয়ে হত্যা করেছিল। হত্যা করার পর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে চোখ গুলো তুলে ফেলেছিল । মহিলা বুদ্ধিজীবিদের নারী অঙ্গগুলো কেটে দেহ থেকে আলাদা করেছিল। সবগুলো মৃত দেহ, আর যন্ত্রনায় কাতরানো জীবিত দেহগুলোকে একসাথে দলা করে মাটির গর্তে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল।
বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ড একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধগুলোর মধ্যে ঘৃণ্যতম অপরাধ। এসব হত্যাযজ্ঞে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন, তাঁদের শাস্তি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়েই আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারি। সব ঘাতকের বিচারের মাধ্যমেই জাতি দায়মুক্ত হতে পারে।দেরীতে হলে ও স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে আমরা সেই সব রাজাকারদের বিচারের কাঠ গড়ায় দাড় করাতে পেরেছি।
আজ পুরো জাতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করবে সেসব সূর্যসন্তানকে; যাদের আত্মত্যাগে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, আমরা পেয়েছি স্বাধীন মানচিত্র। আমরা তোমাদের ভুলব না, তোমরা অমর, এই দেশের মাটির প্রতিটি কনায় তোমরা মিশে আছো। নতুন প্রজন্ম শ্রদ্ধার সাথে আজীবন তোমাদের স্মরণ করবে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ১৫/১২/২০১৩তবুও এদেশের কিছু পাকিস্তানী জারজ সন্তানদের কাছে এই সব ইতিহাস ই ভুল। ধিক্কার দিতে ইচ্ছে করে নিজেকে কিভাবে এই জারজগুলোর. সাথে আমরা একই দেশে বাস করছি।
-
אולי כולנו טועים ১৪/১২/২০১৩অসাধারণ লেখনী
এ কখোনোই ভুলবার মত নয় l -
ফয়জুল্লাহ সাকি ১৪/১২/২০১৩কতই না মধুর এ অনুভূতি
ছড়ালো প্রেমের আলোকদ্যুতি