সীমাখালি প্রাইমারি স্কুল কিছু স্মৃতি
সীমাখালী স্কুলে আমি প্রধান শিক্ষিকা পদে চাকরী করেছিলাম দুই বছর। তার আগে ছিলাম কাটিগ্রাম প্রাইমারি স্কুলে। ২০০১ সালে আমি জয়েন করি কাটিগ্রাম স্কুলে । ঐ স্কুলে থাকতেই আমি একবার বাংককে চলে আসি, ছিলাম ৮ মাস। ২০০১ সালের আগস্টে আমি যখন ফিরে যায় পেটে তখন আবীর। যা হোক দেশে যাবার দুই মাস পর আবার চাকরীতে জয়েন করলাম। আমার শ্বশুর বাড়ি আড়পাড়া থেকে কাটিগ্রাম অনেক দুরের পথ, প্রথমে বাসে তারপর ভ্যান, যদি ও রাস্তা ভাল ছিল। খুব কস্ট হত আমার। শেষ দিকে ওখানেই ছিলাম স্কুল এর সামনে এক টিচার এর বাসায়। আমার তখন ৯ মাস চলছে, জানুয়ারী মাসে ডিসিশন নিলাম ফেব্রুয়ারী ১ তারিখ থেকে ছুটিতে যাব। এরই মধ্যে জানলাম সীমাখালি স্কুল এ যে প্রধান শিক্ষক আছেন তার মাত্র ১ মাস আছে অবসর নিতে। স্কুল টা অনেক বড়, টিচার ও অনেক। আর ওই স্কুল এর সব টিচার রা আমাকে চাচ্ছেন। ঊনারা সবাই মিলে প্রধান শিক্ষক কে রাজী করিয়েছেন যে আমার জন্য উনি অবসরের শেষ ২০ দিনের জন্য কাটিগ্রাম বদলী হবেন, কারন এই ২০ দিনের যে কোন একদিন আমার কোল জুরে আমার বাচ্চা আসবে। অতএব যা করতে হবে এই ২০ দিনের আগেই করতে হবে। ঊনার জন্য আমার অনেক খারাপ লাগছিল, যে মানুষটা ২০ বছর ধরে এই স্কুলে চাকরী করেছেন,শুধু মাত্র আমার জন্য উনাকে ওখান থেকে ২০ দিনের জন্য আরেকটা স্কুলে যেতে হবে । কিন্তু ঊপায় ও ছিল না।
সেই সময় আমাদের থানায় নতুন টি, ই, ও জয়েন করেছেন । ওই দিনই প্রথম দেখলাম। তো অফিসে বসে আছি, সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে, বসে আছ সীমাখালী স্কুল এর প্রধান শিক্ষক মুন্সি সিরাজ স্যার এর জন্য। ওই দিনই আমাদের দুজনের কম্প্রোমাইজ সাইন করার কথা, যে আমরা সেচ্ছায় স্কুল বদল করছি। এর মাঝে নতুন টি, ই ,ও সাহেব পঞ্চানন বালার সাথে পরিচয় হল। খুব বিনয়ী লোক। খুব সুন্দর গুছিয়ে কথা বলেন। কথায় কথায় বললেন ঊনার ওয়াইফ ও প্রেগন্যান্ট। আমাকে বললেন আমার বাসায় যান, আমার ওয়াইফ এর সাথে একটু কথা বলে আসেন, কোথায় কোন ডাক্তার দেখাবে, আমি এখানে নতুন। আমি ভাবলাম পরে যাব। বৃষ্টি হচ্ছিল, তাই ভয় পাচ্ছিলাম বাইরে যেতে। প্রায় দুই ঘন্টা পর উনি এসে জিজ্ঞাসা করলেন আমি গিয়েছি কিনা। আমি বললাম না। বললেন যান ঘুরে আসেন, ওই যে দেখা যাচ্ছে বাসা। কি আর করব, তখন ও সিরাজ স্যার আসেন নি। আমি আস্তে আস্তে হাটা শুরু করলাম উনার বাসার দিকে। গিয়ে কলিং বেল চাপ দিতেই দেখি পরিচিত মুখ আমার রোকেয়া হলের এক সময়ের রুম মেট সৃতি দিদি। আমি তো উনাকে জরিয়ে ধরলাম। দিদি বললেন ও তুমি তাহলে সেই যার বাচ্চা হবে, আবার সীমাখালী স্কুলে মিঊচুয়াল ট্র্যান্সফার হবে। আমি বললাম হুম। তারপরে দিদির বাসায় ভাত খেলাম, খেয়ে আবার অফিসের দিকে রওনা দিলাম। আমি যখন অফিসে পোছালাম তখন দেখি সিরাজ সার এসে গেছেন । সম্পর্কে উনি আমার চাচা শশুর হোন। ঊনাকে দেখে খুব মায়া লাগছিল। এই ২০ দিনের জন্য উনার একটু ও ইচ্ছা নেই বদলী হবার, কিন্তু ঊনি নিরুপায়। অফিসে এসে দিদির গল্প বলতেই টি, ই, ও সাহেব বললেন তাহলে তো আমার জন্য এটা ফরয কাজ হয়ে গেল।আর সিরাজ চাচা এই কথা শুনে বললেন সব কিছুই তোমার ফেবারে, আমি যদি এখন না ও বলি আমি যাবনা, তাও কেমন দেখাবে, এখন দেখছি আমার যেতেই হবে। টি ই ও সাহেব বললেন যেভাবেই হোক ছুটিতে যাবার আগেই ডি পি ও অফিস থেকে এটা পাস করে আনতে হবে। ওই দিনই থানার সব কাজ হয়ে গেল।
পরের দিন আমি বদলীর অর্ডার নিয়ে আমার আব্বার সাথে করে ডি পি ও সাহেবের অফিসে গেলাম। এখানে বলে নিই আমার আব্বা পিটি আই স্কুল এর সুপারেন্টেন্ডেন্ট ছিলেন, ডি পি ও সাহেব আমার আব্বকে চেনেন। আমি ভেবেছিলাম আব্বাকে সাথে নিয়ে গেলে উনি হয়ত তাড়াতাড়ি সাইন করে দেবেন। আমি বদলির অর্ডারের সব কাগজ নিয়ে উনাকে দিলাম। উনি ঘুষ নেবেন আমরা জানতাম কিন্তু কিভাবে দিব সেটা ও বুঝতে পারছিলাম না। আমার আব্বাকে দেখার পর ও কিন্তু উনি সাইন করলেন না। ঊনার ইচ্ছা উনি আরেকজনকে নাম আতাঊর স্যার কে দেবেন। কিন্তু সীমাখালী স্কুল কেঊ আতাঊর সার কে চান না। ওই সময় আমাদের টি ই ও ছিলেন, এবং এ টি ও হরসিত বাবু দুজনই উনাকে অনুরোধ করলেন সাইন করার জন্য, এর জন্য যে টাকা ( ঘুষ) লাগে তা দেওয়া হবে, তাও উনি করলেন না। শেষে আমি আর আব্বা বাড়ী ফিরে আসলাম। ভাবলাম আমার তো ট্রান্সফার হচ্ছেনা, তাই মেটারনিটি ছুটি নিয়ে নিলাম। ফেব্রুয়ারীর ১০ তারিখ , আমি অলরেডি ১০ দিন ছুটি ভোগ করেছি। আমার অনাগত সন্তানের আসার অপেক্ষা করছি। বিকাল ৫ টা বাজে দেখি টি, ই, অ আর এ , টি, ও আমাদের মাগুরার বাসায়। ট্রান্সফারের কাগজ হাতে, ঊনারা ডি পি ও অফিস থেকে এলেন, বিল পাশ করিয়ে এনেছেন। আমাকে বললেন, তুমি শুধু আগামিকাল দুপুর ১২ টায় গিয়ে সীমাখালী স্কুলে জয়েন করে ছুটির দরখাস্ত দিয়ে আসবে। আমি যে কিভাবে উনাদের কৃতজ্ঞতা জানাব তার ভাষা আমার জানা ছিল না। পরে শুনেছি এই বদলির পিছনে সৃতি দিদির অবদান ছিল অনেক বেশী। ঊনি উনার স্বামীকে বলেছিলেন ইয়াসমিন কে বদলী না করতে পারলে তোমার খবর আছে। যা হোক ঊনারা ওই বদ মেজাজী ডি পি ও কে কিভাবে মানেজ করেছিলেন আমরা জানি না। উনাকে ঘুষ দিতে হয়েছিল ৪০০০ টাকা।
পরের দিন দুপুরে আব্বার সাথে আমি প্রথম সীমাখালী স্কুলে গেলাম। এক ঘন্টার জন্য। ওখানে আব্বার এক ছাত্র আছেন নাম সাধন, ঊনি ১৯৭৩ সালে আমার আব্বার অধীনে পি টি আই ট্রেনিং নিয়েছিলেন, তখন আমার জন্ম ও হয়নি। যা হোক সভাপতি ও এলেন, সবার সাথে পরিচিত হলাম, তারপর ছুটির দরখস্ত দিয়ে বাড়ীর উদ্দেসে রওনা দিলাম। চারমাস পর আমি স্কুলে জয়েন করলাম। ঊনাদের সাথে আমার সখ্যতা গড়তে সময় লাগল মাত্র দুই দিন। স্কুল এর ৬ জনই শিক্ষিকা, আর তিনজন শিক্ষক। ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৫৫০। অনেক বড় স্কুল। দুইটা বিল্ডিং, স্কুল টা রাসাতার ধারে, বাজারের পাশে। আড় পাড়া থেকে বাসে যেতে সময় লাগে মাত্র ১৫ মিনিট। যেহেতু রাস্তার ধারে স্কুল তাই ফাঁকি দেবার কোন উপায় ছিল না। ওই থানায় কোন স্কুল ভিজিট করা মানেই সীমাখালী স্কুল ভিসিট করা। এর পেছনে আরো একটা কারন আছে, সেটা হল অফিসারদের জন্য দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা, যেটা অন্য স্কুলে হত না। জয়েন করার এক মাস পরেই আমি পি টি আই ট্রেনিং চলে আসি, পি টি আইতে আসার উদ্দেশ্য ছিল আমার দুধের বাচ্চাটাকে সময় দেওয়া। কারন পি টি আই তে সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ক্লাস। বাদ বাকী সময় আমার ছেলেকে দিতে পারব তাই। সীমাখালী স্কুল এ আমি আবার জয়েন করি পি টি আই ট্রেনিং শেষে ২০০৩ সালের জুলাই এর ১ তারিখে। স্কুল এর সবাই আমাকে কয়েক দিনের মধ্যে আপন করে নিল। আমরা সবাই একটা পরিবারের মত ছিলাম।স্কুল শুরু হত সকাল ৯ টায়। এবং সবাই সময় মত আসত। একটা ক্লাস এর পরেই আমাদের চা পর্ব শুরু হত, আমাদের সাধন স্যার ছিলেন এর উদ্যোগ তা । আমরা মাসে সবাই মিলে চা এর জন্য ৬০ টাকা দিতাম, তখন দুই টাকায় এক কাপ চা পাওয়া যেত। মাঝে মাঝে চিড়া আর দই ও খাওয়া হত। সাধন স্যার সবার জন্মদিন আর বিয়ের দিন মনে রাখতেন, ওই বিশেষ দিনে স্পেশাল খাবারের বাবস্থা হত। আমরা ১১ টা বা ১২ টার দিকে এই সব স্পেশাল খাবার খেতাম, সাথে থাকত চা। স্কুল এর অনেক কাজ ছিল যার অনেক কিছুই আমি বুঝতাম না। তার মধ্যে উপবৃত্তি অন্যতম। এ কাজের আমি কিছুই বুঝতাম না। সাধন স্যার বলতেন তোমার কিছুই করতে হবেনা, সব আমি করে দিব, তুমি সুধু সাইন করবা। এখানে বলে নিই উনি আমার পারমিশন নিয়েই আমাকে তুমি বলতেন। কিন্তু বাইরের লোকের সামনে না। উনি এই সব কাজ রাশিদা আপা, সাল্মা, এদেরকে দিয়ে করিয়ে নিতেন। আমি শুধু সাইন করতাম। আসলে এই সব কাজে অনেক সমস্যা ছিল। যেমন কেউ উপবৃত্তি পাবে কিন্তু তাকে ভাল ভাবে পাশ করতে হবে, ৯৫ % উপস্থিতি থাকতে হবে, আবার গরীব ও হতে হবে। ঊনারা ওই এলাকার ছিলেন, আর উনারা ভাল জানতেন কে গরীব, আবার দেখা গেল সে পাস করেনি কিন্তু যেভাবেই হোক তাকে পাশ দেখিয়ে তাকে টাকা দেবার বাবস্থা করে দিত। অফিস থেকে ও আমাকে বাইরের কোন ডিউটি দিত না। যেমন প্রাইমারি টিচার দের অনেক বাইরের কাজ যেমন, শিশুদের পোলিও খাওয়ানো, ভোটার লিস্ট করা, ভোট গ্রহন করা আরো অনেক কাজ করতে হত। কিন্তু আমাকে কোনদিন এই সব করতে হয়নি, ওই দিন সবাই বাইরে থাকত , আমরা যারা দু একজন স্কুলে থাকতাম উনাদের কে দেখতে যেতাম উনারা কি করছেন। সবচেয়ে বয়স্ক টিচার ছিলেন বাবর আলী স্যার। ঊনি যখন আমাকে আপা বলে ডাকতেন আমার সত্যি লজ্জা লাগত। সবার নাম ধরে ডাকতেন। শুধু আমাকে আপা বলে ডাকতেন। গাছের প্রতি ঊনার অসম্ভব মায়া ছিল। ঊনার বাড়ির বাগানে ঊনি সব ধরনের গাছ লাগিয়েছিলেন। বেবি আপা যশোর থেকে আসতেন, খুবই ভাল একটা টিচার,পড়াতেন খুব মন দিয়ে। সবাই মিলে বেবি আপার পিছনে খুব লাগত। যদি বেবি আপার মন একটু খারাপ দেখত তাহলে সবাই বলত খোকন ভাইয়ের সাথে ( ঊনার হাজবেন্ড)কিছু হয়েছে নাকি? ঊনি খুবই চঞ্চল ছিলেন, কোন কথা পেটে রাখতে পারতেন না। আক্লিমা আপা আর রাশিদা আপা দুই বোন। এই আক্লিমা আপা এস এস সি তে অংক পরীক্ষার দিনে সকালে বাচ্চা প্রসব করে দুই ঘন্টা পরেই পরীক্ষার হলে গিয়েছিলেন, এবং সুন্দর ভাবে পরীক্ষায় পাশ ও করেছিলেন। খুব শান্ত এবং সেক্রিফাইস মনের অধিকারী ছিলেন এই আক্লিমা আপা। ছিলেন উদার মনের মানুষ। চা বন্টনের কাজ বেশীর ভাগ সময় উনি করতেন। তাছাড়া স্কুলে যদি খাওয়া দাওয়ার আয়োজন হত আক্লিমা আপা রান্না করতেন। সবাইকে বেড়ে খাওয়াতেন। ঊনারা দুই বোন এই স্কুল এ পড়েছেন, আবার এই স্কুলে চাকরী করছেন, উনারা সাধন আর বাবর আলী স্যার এর ছাত্রী ছিলেন। এই সীমাখালী তেই উনাদের বাবার বাড়ী। সাধন স্যার তাই উনাদের আদর করে মনি বলে ডাকতেন। যদি ওরা কোন ভুল করত তাহলে বেবী আপা বলত স্যার আপনার মনি ওই করেছে। শাহিনা আপা ছিলেন খুব ধার্মিক, আমাদেরকে মাঝে মাঝে ধর্মীয় বিশয়ে জ্ঞান দিতেন। আমরা তা সাদরে গ্রহন করতাম। রাশিদা আপা ও অনেক ভাল পড়াতেন। আর সবচেয়ে ছোট ছিল সাল্মা। ওর বাড়ি ও সীমাখালী, এই স্কুল এর ছা ত্রী ছিল। সাধন স্যার ওকে ও মনি বলে ডাকত। আর ছিলেন শহীদ স্যার। স্কুল খোলা আর বন্ধের দায়িত্ত ছিল ঊনার। তবে ওই দুই বছরের সময় আমি বুঝেছি যে বাংলাদেশ এর প্রাইমারী স্কুল এ আসলে মেয়ে শিক্ষক দরকার। কারন একটা মেয়ে অনেক ধরয নিয়ে বাচ্চাদের কথা শোনে, আবার পড়ায় ও ভাল। বাচ্চাদের কাছাকচাহি আসার সুযোগ পায়। ছেলে মেয়েরা শুধু নালিশ দিত। আমরা মজা করে ছাত্র ছাত্রী দেরকে বললাম তোমাদের সব নালিশ শহীদ স্যার কে বলবে , এর পর থেকে নালিশ শুনতে শুনতে বেচারা পাগল হয়ে যেত। আমরা দেখে শুধু হাসতাম। ২০০৩ সালের স্পোর্টস এ আমরা সবাই এক শাড়ি পড়েছিলাম গোলাপী কালারের। মনে পড়ে সিগ্ধা, ফাহ মিদা , কেয়ার কথা।, খুব ব্রিলিয়ান্ট ছাত্রী ছিল। হয়ত এখন কোন মেডিকেল বা ইউনিভারসিটিতে পড়ছে।
সীমাখালী স্কুল থেকে আমি চলে আসি ২০০৪ সেপ্টেম্বর মাসে বাংককে। আর ফিরে যায়নি, আমাকে চাকরী থেকে ডিসচার্জ করে ২০০৬ সালে। ২০০৭ সালে আমি বেড়াতে গিয়েছিলাম সীমাখালী স্কুলে। যখন আমি স্কুলে যায়, বাচ্চারা জানালা থেকে সরছিল না, আমার জন্য সবার কত ভালবাসা সেদিন বুঝেছিলাম। বাচ্চাদের জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম চকলেট, আর শিক্ষক দের জন্য মিস্টি আর থাইল্যান্ড এর তেতুল। খাবার রান্না করা হয়েছিল আমার জন্য, আমাকে ছবি দেখাল ও ই বছরের স্পোর্টস এর, সবাই নীল সাড়ি পরা। আমি বললাম আমার শাড়ি কই, আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার জন্য কিনে আনা নীল শাড়িটা বের করে দিল, সাধন স্যার বললেন তুমি কি করে ভাবলে তোমার জন্য আমরা শাড়ী কিনবনা? সবাই ওই দিন নীল শাড়ী পড়ে এসেছে, আমি ও পড়লাম সেই নীল শাড়ী, কেমন একটা উৎসব উৎসব ভাব সবার ভেতরে আপা এসেছেন তাই। সেদিন ভালবাসায় আমার চোখে পানি এসে গিয়েছিল, তাই তো আসার সময় সবাইকে জড়িয়ে ধরে কেদেছিলাম। অনেক ভালবাসা পেয়েছি আমি সীমাখালী স্কুল থেকে তাই হয়ত আমি ভুলতে পারিনা ওই স্কুল এর কথা, বার বার আমি ফিরে ফিরে যাই, ফোন করি খবর নিই কে কেমন আছে।
সেই সময় আমাদের থানায় নতুন টি, ই, ও জয়েন করেছেন । ওই দিনই প্রথম দেখলাম। তো অফিসে বসে আছি, সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে, বসে আছ সীমাখালী স্কুল এর প্রধান শিক্ষক মুন্সি সিরাজ স্যার এর জন্য। ওই দিনই আমাদের দুজনের কম্প্রোমাইজ সাইন করার কথা, যে আমরা সেচ্ছায় স্কুল বদল করছি। এর মাঝে নতুন টি, ই ,ও সাহেব পঞ্চানন বালার সাথে পরিচয় হল। খুব বিনয়ী লোক। খুব সুন্দর গুছিয়ে কথা বলেন। কথায় কথায় বললেন ঊনার ওয়াইফ ও প্রেগন্যান্ট। আমাকে বললেন আমার বাসায় যান, আমার ওয়াইফ এর সাথে একটু কথা বলে আসেন, কোথায় কোন ডাক্তার দেখাবে, আমি এখানে নতুন। আমি ভাবলাম পরে যাব। বৃষ্টি হচ্ছিল, তাই ভয় পাচ্ছিলাম বাইরে যেতে। প্রায় দুই ঘন্টা পর উনি এসে জিজ্ঞাসা করলেন আমি গিয়েছি কিনা। আমি বললাম না। বললেন যান ঘুরে আসেন, ওই যে দেখা যাচ্ছে বাসা। কি আর করব, তখন ও সিরাজ স্যার আসেন নি। আমি আস্তে আস্তে হাটা শুরু করলাম উনার বাসার দিকে। গিয়ে কলিং বেল চাপ দিতেই দেখি পরিচিত মুখ আমার রোকেয়া হলের এক সময়ের রুম মেট সৃতি দিদি। আমি তো উনাকে জরিয়ে ধরলাম। দিদি বললেন ও তুমি তাহলে সেই যার বাচ্চা হবে, আবার সীমাখালী স্কুলে মিঊচুয়াল ট্র্যান্সফার হবে। আমি বললাম হুম। তারপরে দিদির বাসায় ভাত খেলাম, খেয়ে আবার অফিসের দিকে রওনা দিলাম। আমি যখন অফিসে পোছালাম তখন দেখি সিরাজ সার এসে গেছেন । সম্পর্কে উনি আমার চাচা শশুর হোন। ঊনাকে দেখে খুব মায়া লাগছিল। এই ২০ দিনের জন্য উনার একটু ও ইচ্ছা নেই বদলী হবার, কিন্তু ঊনি নিরুপায়। অফিসে এসে দিদির গল্প বলতেই টি, ই, ও সাহেব বললেন তাহলে তো আমার জন্য এটা ফরয কাজ হয়ে গেল।আর সিরাজ চাচা এই কথা শুনে বললেন সব কিছুই তোমার ফেবারে, আমি যদি এখন না ও বলি আমি যাবনা, তাও কেমন দেখাবে, এখন দেখছি আমার যেতেই হবে। টি ই ও সাহেব বললেন যেভাবেই হোক ছুটিতে যাবার আগেই ডি পি ও অফিস থেকে এটা পাস করে আনতে হবে। ওই দিনই থানার সব কাজ হয়ে গেল।
পরের দিন আমি বদলীর অর্ডার নিয়ে আমার আব্বার সাথে করে ডি পি ও সাহেবের অফিসে গেলাম। এখানে বলে নিই আমার আব্বা পিটি আই স্কুল এর সুপারেন্টেন্ডেন্ট ছিলেন, ডি পি ও সাহেব আমার আব্বকে চেনেন। আমি ভেবেছিলাম আব্বাকে সাথে নিয়ে গেলে উনি হয়ত তাড়াতাড়ি সাইন করে দেবেন। আমি বদলির অর্ডারের সব কাগজ নিয়ে উনাকে দিলাম। উনি ঘুষ নেবেন আমরা জানতাম কিন্তু কিভাবে দিব সেটা ও বুঝতে পারছিলাম না। আমার আব্বাকে দেখার পর ও কিন্তু উনি সাইন করলেন না। ঊনার ইচ্ছা উনি আরেকজনকে নাম আতাঊর স্যার কে দেবেন। কিন্তু সীমাখালী স্কুল কেঊ আতাঊর সার কে চান না। ওই সময় আমাদের টি ই ও ছিলেন, এবং এ টি ও হরসিত বাবু দুজনই উনাকে অনুরোধ করলেন সাইন করার জন্য, এর জন্য যে টাকা ( ঘুষ) লাগে তা দেওয়া হবে, তাও উনি করলেন না। শেষে আমি আর আব্বা বাড়ী ফিরে আসলাম। ভাবলাম আমার তো ট্রান্সফার হচ্ছেনা, তাই মেটারনিটি ছুটি নিয়ে নিলাম। ফেব্রুয়ারীর ১০ তারিখ , আমি অলরেডি ১০ দিন ছুটি ভোগ করেছি। আমার অনাগত সন্তানের আসার অপেক্ষা করছি। বিকাল ৫ টা বাজে দেখি টি, ই, অ আর এ , টি, ও আমাদের মাগুরার বাসায়। ট্রান্সফারের কাগজ হাতে, ঊনারা ডি পি ও অফিস থেকে এলেন, বিল পাশ করিয়ে এনেছেন। আমাকে বললেন, তুমি শুধু আগামিকাল দুপুর ১২ টায় গিয়ে সীমাখালী স্কুলে জয়েন করে ছুটির দরখাস্ত দিয়ে আসবে। আমি যে কিভাবে উনাদের কৃতজ্ঞতা জানাব তার ভাষা আমার জানা ছিল না। পরে শুনেছি এই বদলির পিছনে সৃতি দিদির অবদান ছিল অনেক বেশী। ঊনি উনার স্বামীকে বলেছিলেন ইয়াসমিন কে বদলী না করতে পারলে তোমার খবর আছে। যা হোক ঊনারা ওই বদ মেজাজী ডি পি ও কে কিভাবে মানেজ করেছিলেন আমরা জানি না। উনাকে ঘুষ দিতে হয়েছিল ৪০০০ টাকা।
পরের দিন দুপুরে আব্বার সাথে আমি প্রথম সীমাখালী স্কুলে গেলাম। এক ঘন্টার জন্য। ওখানে আব্বার এক ছাত্র আছেন নাম সাধন, ঊনি ১৯৭৩ সালে আমার আব্বার অধীনে পি টি আই ট্রেনিং নিয়েছিলেন, তখন আমার জন্ম ও হয়নি। যা হোক সভাপতি ও এলেন, সবার সাথে পরিচিত হলাম, তারপর ছুটির দরখস্ত দিয়ে বাড়ীর উদ্দেসে রওনা দিলাম। চারমাস পর আমি স্কুলে জয়েন করলাম। ঊনাদের সাথে আমার সখ্যতা গড়তে সময় লাগল মাত্র দুই দিন। স্কুল এর ৬ জনই শিক্ষিকা, আর তিনজন শিক্ষক। ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৫৫০। অনেক বড় স্কুল। দুইটা বিল্ডিং, স্কুল টা রাসাতার ধারে, বাজারের পাশে। আড় পাড়া থেকে বাসে যেতে সময় লাগে মাত্র ১৫ মিনিট। যেহেতু রাস্তার ধারে স্কুল তাই ফাঁকি দেবার কোন উপায় ছিল না। ওই থানায় কোন স্কুল ভিজিট করা মানেই সীমাখালী স্কুল ভিসিট করা। এর পেছনে আরো একটা কারন আছে, সেটা হল অফিসারদের জন্য দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করা, যেটা অন্য স্কুলে হত না। জয়েন করার এক মাস পরেই আমি পি টি আই ট্রেনিং চলে আসি, পি টি আইতে আসার উদ্দেশ্য ছিল আমার দুধের বাচ্চাটাকে সময় দেওয়া। কারন পি টি আই তে সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ক্লাস। বাদ বাকী সময় আমার ছেলেকে দিতে পারব তাই। সীমাখালী স্কুল এ আমি আবার জয়েন করি পি টি আই ট্রেনিং শেষে ২০০৩ সালের জুলাই এর ১ তারিখে। স্কুল এর সবাই আমাকে কয়েক দিনের মধ্যে আপন করে নিল। আমরা সবাই একটা পরিবারের মত ছিলাম।স্কুল শুরু হত সকাল ৯ টায়। এবং সবাই সময় মত আসত। একটা ক্লাস এর পরেই আমাদের চা পর্ব শুরু হত, আমাদের সাধন স্যার ছিলেন এর উদ্যোগ তা । আমরা মাসে সবাই মিলে চা এর জন্য ৬০ টাকা দিতাম, তখন দুই টাকায় এক কাপ চা পাওয়া যেত। মাঝে মাঝে চিড়া আর দই ও খাওয়া হত। সাধন স্যার সবার জন্মদিন আর বিয়ের দিন মনে রাখতেন, ওই বিশেষ দিনে স্পেশাল খাবারের বাবস্থা হত। আমরা ১১ টা বা ১২ টার দিকে এই সব স্পেশাল খাবার খেতাম, সাথে থাকত চা। স্কুল এর অনেক কাজ ছিল যার অনেক কিছুই আমি বুঝতাম না। তার মধ্যে উপবৃত্তি অন্যতম। এ কাজের আমি কিছুই বুঝতাম না। সাধন স্যার বলতেন তোমার কিছুই করতে হবেনা, সব আমি করে দিব, তুমি সুধু সাইন করবা। এখানে বলে নিই উনি আমার পারমিশন নিয়েই আমাকে তুমি বলতেন। কিন্তু বাইরের লোকের সামনে না। উনি এই সব কাজ রাশিদা আপা, সাল্মা, এদেরকে দিয়ে করিয়ে নিতেন। আমি শুধু সাইন করতাম। আসলে এই সব কাজে অনেক সমস্যা ছিল। যেমন কেউ উপবৃত্তি পাবে কিন্তু তাকে ভাল ভাবে পাশ করতে হবে, ৯৫ % উপস্থিতি থাকতে হবে, আবার গরীব ও হতে হবে। ঊনারা ওই এলাকার ছিলেন, আর উনারা ভাল জানতেন কে গরীব, আবার দেখা গেল সে পাস করেনি কিন্তু যেভাবেই হোক তাকে পাশ দেখিয়ে তাকে টাকা দেবার বাবস্থা করে দিত। অফিস থেকে ও আমাকে বাইরের কোন ডিউটি দিত না। যেমন প্রাইমারি টিচার দের অনেক বাইরের কাজ যেমন, শিশুদের পোলিও খাওয়ানো, ভোটার লিস্ট করা, ভোট গ্রহন করা আরো অনেক কাজ করতে হত। কিন্তু আমাকে কোনদিন এই সব করতে হয়নি, ওই দিন সবাই বাইরে থাকত , আমরা যারা দু একজন স্কুলে থাকতাম উনাদের কে দেখতে যেতাম উনারা কি করছেন। সবচেয়ে বয়স্ক টিচার ছিলেন বাবর আলী স্যার। ঊনি যখন আমাকে আপা বলে ডাকতেন আমার সত্যি লজ্জা লাগত। সবার নাম ধরে ডাকতেন। শুধু আমাকে আপা বলে ডাকতেন। গাছের প্রতি ঊনার অসম্ভব মায়া ছিল। ঊনার বাড়ির বাগানে ঊনি সব ধরনের গাছ লাগিয়েছিলেন। বেবি আপা যশোর থেকে আসতেন, খুবই ভাল একটা টিচার,পড়াতেন খুব মন দিয়ে। সবাই মিলে বেবি আপার পিছনে খুব লাগত। যদি বেবি আপার মন একটু খারাপ দেখত তাহলে সবাই বলত খোকন ভাইয়ের সাথে ( ঊনার হাজবেন্ড)কিছু হয়েছে নাকি? ঊনি খুবই চঞ্চল ছিলেন, কোন কথা পেটে রাখতে পারতেন না। আক্লিমা আপা আর রাশিদা আপা দুই বোন। এই আক্লিমা আপা এস এস সি তে অংক পরীক্ষার দিনে সকালে বাচ্চা প্রসব করে দুই ঘন্টা পরেই পরীক্ষার হলে গিয়েছিলেন, এবং সুন্দর ভাবে পরীক্ষায় পাশ ও করেছিলেন। খুব শান্ত এবং সেক্রিফাইস মনের অধিকারী ছিলেন এই আক্লিমা আপা। ছিলেন উদার মনের মানুষ। চা বন্টনের কাজ বেশীর ভাগ সময় উনি করতেন। তাছাড়া স্কুলে যদি খাওয়া দাওয়ার আয়োজন হত আক্লিমা আপা রান্না করতেন। সবাইকে বেড়ে খাওয়াতেন। ঊনারা দুই বোন এই স্কুল এ পড়েছেন, আবার এই স্কুলে চাকরী করছেন, উনারা সাধন আর বাবর আলী স্যার এর ছাত্রী ছিলেন। এই সীমাখালী তেই উনাদের বাবার বাড়ী। সাধন স্যার তাই উনাদের আদর করে মনি বলে ডাকতেন। যদি ওরা কোন ভুল করত তাহলে বেবী আপা বলত স্যার আপনার মনি ওই করেছে। শাহিনা আপা ছিলেন খুব ধার্মিক, আমাদেরকে মাঝে মাঝে ধর্মীয় বিশয়ে জ্ঞান দিতেন। আমরা তা সাদরে গ্রহন করতাম। রাশিদা আপা ও অনেক ভাল পড়াতেন। আর সবচেয়ে ছোট ছিল সাল্মা। ওর বাড়ি ও সীমাখালী, এই স্কুল এর ছা ত্রী ছিল। সাধন স্যার ওকে ও মনি বলে ডাকত। আর ছিলেন শহীদ স্যার। স্কুল খোলা আর বন্ধের দায়িত্ত ছিল ঊনার। তবে ওই দুই বছরের সময় আমি বুঝেছি যে বাংলাদেশ এর প্রাইমারী স্কুল এ আসলে মেয়ে শিক্ষক দরকার। কারন একটা মেয়ে অনেক ধরয নিয়ে বাচ্চাদের কথা শোনে, আবার পড়ায় ও ভাল। বাচ্চাদের কাছাকচাহি আসার সুযোগ পায়। ছেলে মেয়েরা শুধু নালিশ দিত। আমরা মজা করে ছাত্র ছাত্রী দেরকে বললাম তোমাদের সব নালিশ শহীদ স্যার কে বলবে , এর পর থেকে নালিশ শুনতে শুনতে বেচারা পাগল হয়ে যেত। আমরা দেখে শুধু হাসতাম। ২০০৩ সালের স্পোর্টস এ আমরা সবাই এক শাড়ি পড়েছিলাম গোলাপী কালারের। মনে পড়ে সিগ্ধা, ফাহ মিদা , কেয়ার কথা।, খুব ব্রিলিয়ান্ট ছাত্রী ছিল। হয়ত এখন কোন মেডিকেল বা ইউনিভারসিটিতে পড়ছে।
সীমাখালী স্কুল থেকে আমি চলে আসি ২০০৪ সেপ্টেম্বর মাসে বাংককে। আর ফিরে যায়নি, আমাকে চাকরী থেকে ডিসচার্জ করে ২০০৬ সালে। ২০০৭ সালে আমি বেড়াতে গিয়েছিলাম সীমাখালী স্কুলে। যখন আমি স্কুলে যায়, বাচ্চারা জানালা থেকে সরছিল না, আমার জন্য সবার কত ভালবাসা সেদিন বুঝেছিলাম। বাচ্চাদের জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম চকলেট, আর শিক্ষক দের জন্য মিস্টি আর থাইল্যান্ড এর তেতুল। খাবার রান্না করা হয়েছিল আমার জন্য, আমাকে ছবি দেখাল ও ই বছরের স্পোর্টস এর, সবাই নীল সাড়ি পরা। আমি বললাম আমার শাড়ি কই, আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার জন্য কিনে আনা নীল শাড়িটা বের করে দিল, সাধন স্যার বললেন তুমি কি করে ভাবলে তোমার জন্য আমরা শাড়ী কিনবনা? সবাই ওই দিন নীল শাড়ী পড়ে এসেছে, আমি ও পড়লাম সেই নীল শাড়ী, কেমন একটা উৎসব উৎসব ভাব সবার ভেতরে আপা এসেছেন তাই। সেদিন ভালবাসায় আমার চোখে পানি এসে গিয়েছিল, তাই তো আসার সময় সবাইকে জড়িয়ে ধরে কেদেছিলাম। অনেক ভালবাসা পেয়েছি আমি সীমাখালী স্কুল থেকে তাই হয়ত আমি ভুলতে পারিনা ওই স্কুল এর কথা, বার বার আমি ফিরে ফিরে যাই, ফোন করি খবর নিই কে কেমন আছে।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
দাদা মুহাইমিন চৌধূরী ১৫/১১/২০১৩আপনার স্মৃতিচারন চোখে ভাসচিল পড়ার সময়।
-
আবু আফজাল মোহাঃ সালেহ ১২/১১/২০১৩বেশ লাগল।
-
জহির রহমান ১২/১১/২০১৩আপু, সত্যি করে একটা কথা বলেনতো! আপনি যখন স্মৃতিচারণ করছেন তখন কি আপনি একটুও আবেগাপ্লুত হননি? চোখের কোণায় কি একটুও আনন্দ অশ্রু আসেনি?
-
suman ১২/১১/২০১৩দারুণ স্মৃতিময় ...মনে হয় আমিও হাট্ছিলাম আপনার সাতে সাথে ...মাঝে মাঝে আমি সকুল পরিদর্শনে যাই...তাই ছবিটা বেশ দেখতে পেলাম ...
-
জহির রহমান ১২/১১/২০১৩রাতে শুয়ে শুয়ে পড়া ছাড়া এতবড় লেখা পড়তে পারবো না।
-
আরজু নাসরিন পনি ১২/১১/২০১৩অর্ধেক পড়েছি । পড়তে ভালো লাগছিল বেশ ...পরে বাকীটা শেষ করবো ।
অনেক শুভকামনা রইল ।