চুরি করে দেখা বাংলা ছবিঃ
সিনেমা হলে গিয়ে আমার দেখা প্রথম বাংলা ছবি ছুটির ঘন্টা। বয়স কত ছিল মনে নেই। টিকিটের দাম মনে হয় ছিল দুই টাকা। পাশের বাড়ীর এক বড় বোনের সাথে ছবিটা দেখতে গিয়েছিলাম। এখন ও সেই ছবির কিছু দৃশ্য আমার চোখে ভাসে। "একদিন ছুটি হবে অনেক দূরে যাব" এই গানটা এখনও আমার প্রিয় গান । সেই সময় এরকম বাড়ীতে বাড়ীতে টি ভি ও ছিল না। স্কুল থেকে বাড়ি আসার পথে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পোস্টার দেখতাম। যখন ক্লাস মনে হয় ৮ এ পড়ি , বান্ধবী সোহানা সোহেলী আর কমা বলল সিনেমা দেখতে যাবে। আমার কাছে কোন টাকা নেই। ওরা বলল ওরা দিয়ে দেবে। মাগুরার পূর্বাশা সিনেমা হলে তখন এক টিকিটে দুই ছবি, তার মধ্যে একটা ছবির নাম মনে আছে "ভেজা চোখ " । ইলিয়াস কাঞ্চন ছিল নায়ক। কি কারনে যেন স্কুল আগে ছুটি হয়ে গিয়েছিল, তাই এই প্লান। ছবি দেখছি আর মনে মনে চিন্তা করছি আজ খবর আছে আমার!!!! যা হোক ডাবল শো দেখে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা, তখন তো আর মোবাইল ছিলনা যে ফোনে জানিয়ে দিব। তাই ভয়ে ভয়ে ঘরে ঢুকলাম, ঢুকেই বড় আপার তোপের মুখে, জেরা শুরু হয়ে গেল কোথায় ছিলাম, বড় আপাকে বুঝিয়ে বললাম সারাদিনের কথা। বড় ভাইকে যেন না বলে। আমার বড় ভাই আবার হলে যাওয়া পছন্দ করতেন না।আব্বা তখনও স্কুল থেকে বাসায় ফেরেন নি, তাই আব্বাকে নিয়ে আর ভয় নেই। যা হোক সেদিনের মত মা, আর বড় আপা বাঁচিয়ে দিয়েছিল। ভেবেছিলাম আর কোন্দিন সিনেমা হলে যাবনা। তা কি আর হয়!! ক্লাস নাইন এ থাকতে হাইজ্যাক সিনেমা ( ববিতার) দেখতে গেলাম বান্ধবী নিতার সাথে। সেদিন অবশ্য আমরা অনেকে ছিলাম। ভি আই পি সিটে বসেছিলাম, মজাও করেছিলাম অনেক। আর নির্দিষ্ট সম্যে বাসায় পৌঁছেছিলাম।
আরো পরে যখন কলেজে উঠলাম, তখন যেতাম বড় আপা আর ছোট খালার সাথে। তখন সব হলে সুধু শাবানার ছবি আর সব সামাজিক ছবি। আমার নানী বাড়ি ছিল মাগুরার পূর্বাশা হলে পিছনের দিকে নদীর এপাড়ে। আমরা নানী বাড়ী যাওয়ার নাম করে বাড়ী থেকে বের হতাম। দুপুরে নানী বাড়ী খেতাম। টার্গেট ৩ টার শো দেখা। বড় মামা যখন ঘুমিয়ে পড়তেন আমরা এক জন এক জন করে পা টিপে টিপে ঘর থেকে বের হতাম। তারপর নদীর কুল দিয়ে হেটে সিনেমা হলে প্রবেশ করতাম। এই ভাবে আমরা শাবানা আপার সব ছবি দেখতাম। ( বিরোধ, স্বামী স্ত্রী), কি যে ভাল লাগত তখন এই সব ছবি দেখতে!!!!! দেখতে দেখতে কখনও কখনও শাবানা আপাই হয়ে যেতাম যেন।
কলেজে থাকতে বান্ধবীদের সাথে কলেজ ফাঁকি দিয়ে একটা ছবি দেখেছিলাম, নাম অবুঝ হৃদয় । ( ববিতা, চম্পা, জাফর ইকবাল এর) খুব ভাল লেগেছিল। এখন ও ওই সিনেমার গানগুলো আমি গুন গুন করে গাই, " তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন"। আর একটা গান ছিল "সাথী আমার জনম জনমের সাথী, দুটি হৃদয়ে একটি গান, দুটি হৃদয়ে একটি প্রান" । আমার প্রিয় বাংলা সিনেমার গান। এর পরে তো ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম। উঠলাম রোকেয়া হলে। তখন আবার শাবনুর, সাল্মান, মৌসুমির ছবি মুক্তি পাওয়া শুরু করেছে মাত্র। আমার রুম মেট মুক্তি ছিল এদের ভক্ত। আমরা মানে আশে পাশের রুমের মোটামুটি ১০, ১২ জন মিলে বলাকা হলে সিনেমা দেখতে যেতাম। খুবই মজা করে আমরা প্রায়ই সিনেমা দেখতে যেতাম। কেয়ামত থেকে কেয়ামত, স্বপ্নের ঠিকানা আরো অনেক ছবি দেখেছি বলাকা সিনেমা হলে। তখন ডিশ চালু হয়নি। আমরা যখন অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ি তখন হলে নতুন ডিশ লাগানো হল। শুরু হল হিন্দি সিনেমা, আর রাত ১০ টায় টপ টেন গান দেখা। হিন্দি কথা তখন ভাল বুঝতাম না, আমার বান্ধবী কেয়া আবার ভাল বুঝত। ওর সহায়তা নিয়ে হিন্দি ছবি দেখতাম। সেই সময় বাজিগর, ফের তেরি কাহানি ইয়াদি ইয়াহ, রোজা, আরো এরকম অনেক ছবি দেখলাম। সেখান থেকেই শাহরুখ খানের ভক্ত হয়ে গেলাম। বাংলা ছবি দেখা বন্ধ হয়ে গেল। শেষ ছবি দেখেছিলাম মনে হয় আগুনের পরশমণি। সাথে ছিল বন্ধু জব্বার , মজিদ, কেয়া, নাজমুন, সাজ্জাদ। এর পরে বাংলাদেশ এ আর সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা হয়নি।
বাংকক এ অবশ্য অনেক হলিঊড ছবি দেখেছি। এ সি রুমে, পপ কর্ণ খেতে খতে সিনেমা কমপ্লেক্স এ স্বামী সন্তান সাথে নিয়ে। কিন্তু চুরি করে, সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে রোদ্র দুপুরে সিনেমা হলে গিয়ে ৫ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বাদাম খেতে খেতে যে সিনেমাগুলো দেখেছি তা আজো সৃতিতে অম্লান হয়ে আছে। অনেক চেস্টা করে ও সেই সব দিন আর ফিরে পাবনা!!
আরো পরে যখন কলেজে উঠলাম, তখন যেতাম বড় আপা আর ছোট খালার সাথে। তখন সব হলে সুধু শাবানার ছবি আর সব সামাজিক ছবি। আমার নানী বাড়ি ছিল মাগুরার পূর্বাশা হলে পিছনের দিকে নদীর এপাড়ে। আমরা নানী বাড়ী যাওয়ার নাম করে বাড়ী থেকে বের হতাম। দুপুরে নানী বাড়ী খেতাম। টার্গেট ৩ টার শো দেখা। বড় মামা যখন ঘুমিয়ে পড়তেন আমরা এক জন এক জন করে পা টিপে টিপে ঘর থেকে বের হতাম। তারপর নদীর কুল দিয়ে হেটে সিনেমা হলে প্রবেশ করতাম। এই ভাবে আমরা শাবানা আপার সব ছবি দেখতাম। ( বিরোধ, স্বামী স্ত্রী), কি যে ভাল লাগত তখন এই সব ছবি দেখতে!!!!! দেখতে দেখতে কখনও কখনও শাবানা আপাই হয়ে যেতাম যেন।
কলেজে থাকতে বান্ধবীদের সাথে কলেজ ফাঁকি দিয়ে একটা ছবি দেখেছিলাম, নাম অবুঝ হৃদয় । ( ববিতা, চম্পা, জাফর ইকবাল এর) খুব ভাল লেগেছিল। এখন ও ওই সিনেমার গানগুলো আমি গুন গুন করে গাই, " তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন"। আর একটা গান ছিল "সাথী আমার জনম জনমের সাথী, দুটি হৃদয়ে একটি গান, দুটি হৃদয়ে একটি প্রান" । আমার প্রিয় বাংলা সিনেমার গান। এর পরে তো ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম। উঠলাম রোকেয়া হলে। তখন আবার শাবনুর, সাল্মান, মৌসুমির ছবি মুক্তি পাওয়া শুরু করেছে মাত্র। আমার রুম মেট মুক্তি ছিল এদের ভক্ত। আমরা মানে আশে পাশের রুমের মোটামুটি ১০, ১২ জন মিলে বলাকা হলে সিনেমা দেখতে যেতাম। খুবই মজা করে আমরা প্রায়ই সিনেমা দেখতে যেতাম। কেয়ামত থেকে কেয়ামত, স্বপ্নের ঠিকানা আরো অনেক ছবি দেখেছি বলাকা সিনেমা হলে। তখন ডিশ চালু হয়নি। আমরা যখন অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ি তখন হলে নতুন ডিশ লাগানো হল। শুরু হল হিন্দি সিনেমা, আর রাত ১০ টায় টপ টেন গান দেখা। হিন্দি কথা তখন ভাল বুঝতাম না, আমার বান্ধবী কেয়া আবার ভাল বুঝত। ওর সহায়তা নিয়ে হিন্দি ছবি দেখতাম। সেই সময় বাজিগর, ফের তেরি কাহানি ইয়াদি ইয়াহ, রোজা, আরো এরকম অনেক ছবি দেখলাম। সেখান থেকেই শাহরুখ খানের ভক্ত হয়ে গেলাম। বাংলা ছবি দেখা বন্ধ হয়ে গেল। শেষ ছবি দেখেছিলাম মনে হয় আগুনের পরশমণি। সাথে ছিল বন্ধু জব্বার , মজিদ, কেয়া, নাজমুন, সাজ্জাদ। এর পরে বাংলাদেশ এ আর সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা হয়নি।
বাংকক এ অবশ্য অনেক হলিঊড ছবি দেখেছি। এ সি রুমে, পপ কর্ণ খেতে খতে সিনেমা কমপ্লেক্স এ স্বামী সন্তান সাথে নিয়ে। কিন্তু চুরি করে, সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে রোদ্র দুপুরে সিনেমা হলে গিয়ে ৫ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বাদাম খেতে খেতে যে সিনেমাগুলো দেখেছি তা আজো সৃতিতে অম্লান হয়ে আছে। অনেক চেস্টা করে ও সেই সব দিন আর ফিরে পাবনা!!
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আবু আফজাল মোহাঃ সালেহ ১২/১১/২০১৩বেশ জমে উঠছিল।থামলেন কেন? ধন্যবাদ আপু।
-
সায়েম খান ১১/১১/২০১৩বাব্বাহ সিনেমার উপর PHD করেছেন দেখি। আমিও সিনেমা দেখতাম স্কুল ফাঁকি দিয়ে। সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। আমার ব্লগে দাওয়াত রইলো...
-
দাদা মুহাইমিন চৌধূরী ১০/১১/২০১৩আমার জীবনে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা হলনা
-
আফিয়া খাতুন মলি ১০/১১/২০১৩ভালো লাগলো ভীষণ।