ঊত্তর জানা নেই
আমার বড় ছেলে আবীর, আমি যখন কম্পিঊটার ব্যবহার করি ও আশে পাশেই থাকে।
হয়ত দেখে আমি কি করি।
সাভারে রানা প্লাজায় যখন অনেক মানুষ মারা গেল, সেই বীভৎস কিছু ছবি ও দেখেছিল।
বার বার জিজ্ঞাসা করছিল, কেন এমন হল? এত মানুষ বিল্ডিং চাপা পড়ে মারা গেল, ও যেন বিশ্বাস করতে চাচ্ছিলনা।কয়েকদিন ধরেই জিজ্ঞাসা করছিল আম্মু কতজন জীবিত পাওয়া গেল, কতজন মৃত।
তারপর বিরতি......
কিছুদিন আগে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের যখন রায় হল, আমি কম্পিঊটারে বসে হায়দার হোসেনের সেই মন ছুয়ে যাওয়া গানটা বারবার শুনছিলামঃ
“কতটুকু অশ্রু গড়ালে
হৃদয় জলে সিক্ত,
কত প্রদীপ শিখা জ্বালালে
জীবন আলোয় দীপ্ত,
কত ব্যাথা বুকে চাপালে
তাকে আমি বলি ধরয,
নির্মমতা কতদুর হলে
জাতি হবে নির্লজ্” ।
"আমি চিত্কার করে কাদিতে চাহিয়াও
করিতে পারিনি চিত্কার
বুকের ব্যাথা বুকে চাপা দিয়ে
নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার "
পাশ থেকে ও দেখছিল…।
জিজ্ঞাসা করল আম্মু এটা কিসের গান, ঘটনাটা সংক্ষেপে ওকে বললাম,
শুনে ও বলল, আম্মু বাংলাদেশ এর মানুষ এমন কেন, এরা কি গুড ম্যানার শেখেনি, এরা কিভাবে এত আর্মি অফিসার কে মেরে ফেলল? বাংলাদেশের সব খবর এরকম ভয়ের কেন? বাংলাদেশ এ কি আইন নেই, বিচার নেই, যে যা কিছু করতে পারে?
জবাব নেই আমার!!!!
চার দিন আগে যখন মুনিরের পুড়ে যাওয়া ছবিটা দেখল, বলে আম্মু ওর কি হয়েছে, কেমন করে পুড়ে গেল?
বললাম বাংলাদেশ এ এখন হরতাল হচ্ছে। বলে হরতাল কি? কেন এই হরতাল। আর কি জন্যই বা এই মানুষ পোড়ানো। কিভাবে মানুষ পারে একজন মানুষকে পুড়িয়ে ফেলতে?
আম্মু আমি বাংলাদেশ এ আর যাবনা। বাংলাদেশ এ সবকিছু ভয়ের। আমি রাতে ভয় পাই, ঘুমের ভেতর স্বপ্ন দেখি। আমি জানিনা বাংলাদেশ এর শিশুরা কিভাবে সহ্য করে এসব।
বললাম বাবা, বাংলাদেশ এর শিশুরা এই ভাবেই, এই সব দেখেই বড় হচ্ছে। সাথে সাথে উত্তর আম্মু তাহলে তো ওরা ও একদিন বড় হয়ে এই সব করবে, কারন ওরা এর ভেতর দিয়েই বড় হচ্ছে, টি ভি দেখে, চারপাশ থেকে শিখছে।
আসলেই তো তাই, একটা শিশু তার চারপাশ থেকে কত কিছুই না শেখে, আমাদের দেশের শিশুরা ভাল দিকগুলোর চাইতে খারাপ দিকগুলো মনে হয় বেশী শিখছে, আর এর প্রভাব একদিন পরিবার, গ্রাম, শহর এবং দেশের উপর পড়বে। আমরা কি কখন তা ভেবে দেখেছি?
আম্মু আমি বাংলাদেশ এর আর কোন নিউজ দেখব না। কেমন জানি সব কিছু ভয়ের।
মনে মনে ভাবলাম বাবা তুমি দেশ থেকে দূরে তাই না দেখে ও থাকতে পারো, কিন্তু কোটি কোটি অবুঝ শিশু রয়েছে দেশে, তারা কিভাবে এর থেকে দূরে থাকবে। পত্রিকা , টি ভি যাই নিয়ে তারা বসুক না কেন এই সব বীভৎস দৃশ্য তাদের যে সব সময় দেখতে হয়।আমরা কি ইচ্চা করলেই তাদের কে এর থেকে দূরে রাখতে পারি?
হায়দার হোসেনের গানের কথায় আবার মনে পড়লঃ
“ যার চলে যায় সেই বোঝে হায়
বিচ্ছেদে কি যন্ত্রনা
অবুঝ শিশুর অবুঝ প্রস্ন
কি দিয়ে দেব সান্ত্বনা”।
বিধাতা তোমার ডাকি বারে বারে
কর তুমি মোদের মার্জনা,
দুঃখ সহিতে দাওগো শক্তি
তোমারে সকাশে প্রার্থনা।
চাহিনা সহিতে আমার মাটিতে
মজলুমের আর্তনাদ!!!
বিষাদ অনলে পুড়ে বারে বারে
লুণ্ঠিত হবে স্বপ্নসাদ”।
হয়ত দেখে আমি কি করি।
সাভারে রানা প্লাজায় যখন অনেক মানুষ মারা গেল, সেই বীভৎস কিছু ছবি ও দেখেছিল।
বার বার জিজ্ঞাসা করছিল, কেন এমন হল? এত মানুষ বিল্ডিং চাপা পড়ে মারা গেল, ও যেন বিশ্বাস করতে চাচ্ছিলনা।কয়েকদিন ধরেই জিজ্ঞাসা করছিল আম্মু কতজন জীবিত পাওয়া গেল, কতজন মৃত।
তারপর বিরতি......
কিছুদিন আগে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের যখন রায় হল, আমি কম্পিঊটারে বসে হায়দার হোসেনের সেই মন ছুয়ে যাওয়া গানটা বারবার শুনছিলামঃ
“কতটুকু অশ্রু গড়ালে
হৃদয় জলে সিক্ত,
কত প্রদীপ শিখা জ্বালালে
জীবন আলোয় দীপ্ত,
কত ব্যাথা বুকে চাপালে
তাকে আমি বলি ধরয,
নির্মমতা কতদুর হলে
জাতি হবে নির্লজ্” ।
"আমি চিত্কার করে কাদিতে চাহিয়াও
করিতে পারিনি চিত্কার
বুকের ব্যাথা বুকে চাপা দিয়ে
নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার "
পাশ থেকে ও দেখছিল…।
জিজ্ঞাসা করল আম্মু এটা কিসের গান, ঘটনাটা সংক্ষেপে ওকে বললাম,
শুনে ও বলল, আম্মু বাংলাদেশ এর মানুষ এমন কেন, এরা কি গুড ম্যানার শেখেনি, এরা কিভাবে এত আর্মি অফিসার কে মেরে ফেলল? বাংলাদেশের সব খবর এরকম ভয়ের কেন? বাংলাদেশ এ কি আইন নেই, বিচার নেই, যে যা কিছু করতে পারে?
জবাব নেই আমার!!!!
চার দিন আগে যখন মুনিরের পুড়ে যাওয়া ছবিটা দেখল, বলে আম্মু ওর কি হয়েছে, কেমন করে পুড়ে গেল?
বললাম বাংলাদেশ এ এখন হরতাল হচ্ছে। বলে হরতাল কি? কেন এই হরতাল। আর কি জন্যই বা এই মানুষ পোড়ানো। কিভাবে মানুষ পারে একজন মানুষকে পুড়িয়ে ফেলতে?
আম্মু আমি বাংলাদেশ এ আর যাবনা। বাংলাদেশ এ সবকিছু ভয়ের। আমি রাতে ভয় পাই, ঘুমের ভেতর স্বপ্ন দেখি। আমি জানিনা বাংলাদেশ এর শিশুরা কিভাবে সহ্য করে এসব।
বললাম বাবা, বাংলাদেশ এর শিশুরা এই ভাবেই, এই সব দেখেই বড় হচ্ছে। সাথে সাথে উত্তর আম্মু তাহলে তো ওরা ও একদিন বড় হয়ে এই সব করবে, কারন ওরা এর ভেতর দিয়েই বড় হচ্ছে, টি ভি দেখে, চারপাশ থেকে শিখছে।
আসলেই তো তাই, একটা শিশু তার চারপাশ থেকে কত কিছুই না শেখে, আমাদের দেশের শিশুরা ভাল দিকগুলোর চাইতে খারাপ দিকগুলো মনে হয় বেশী শিখছে, আর এর প্রভাব একদিন পরিবার, গ্রাম, শহর এবং দেশের উপর পড়বে। আমরা কি কখন তা ভেবে দেখেছি?
আম্মু আমি বাংলাদেশ এর আর কোন নিউজ দেখব না। কেমন জানি সব কিছু ভয়ের।
মনে মনে ভাবলাম বাবা তুমি দেশ থেকে দূরে তাই না দেখে ও থাকতে পারো, কিন্তু কোটি কোটি অবুঝ শিশু রয়েছে দেশে, তারা কিভাবে এর থেকে দূরে থাকবে। পত্রিকা , টি ভি যাই নিয়ে তারা বসুক না কেন এই সব বীভৎস দৃশ্য তাদের যে সব সময় দেখতে হয়।আমরা কি ইচ্চা করলেই তাদের কে এর থেকে দূরে রাখতে পারি?
হায়দার হোসেনের গানের কথায় আবার মনে পড়লঃ
“ যার চলে যায় সেই বোঝে হায়
বিচ্ছেদে কি যন্ত্রনা
অবুঝ শিশুর অবুঝ প্রস্ন
কি দিয়ে দেব সান্ত্বনা”।
বিধাতা তোমার ডাকি বারে বারে
কর তুমি মোদের মার্জনা,
দুঃখ সহিতে দাওগো শক্তি
তোমারে সকাশে প্রার্থনা।
চাহিনা সহিতে আমার মাটিতে
মজলুমের আর্তনাদ!!!
বিষাদ অনলে পুড়ে বারে বারে
লুণ্ঠিত হবে স্বপ্নসাদ”।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
দাদা মুহাইমিন চৌধূরী ১০/১১/২০১৩এই গান শুনলেই আমার চোখে পানি আসে। আপনার ছেলে সত্যি কথাই বলেছে।
-
রাখাল ০৯/১১/২০১৩নেপোলিয়ন বলেছিল, "আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব ।"
আমরা মমতাময়ী পা পেয়েছি, এতে সন্দেহ নেই, কিন্তু আমাদের মায়েরা শিক্ষিত নয় । তার তাই আমাদের মাঝে গড়ে উঠেনি নীতি নৈতিকতা, মানবিকতা, মূল্যবোধ । একাডেমিক শিক্ষা সেতো লেবেল মাত্র । আমি আর লিখতে পারছিনা.......... -
আফিয়া খাতুন মলি ০৯/১১/২০১৩লেখাটা পড়ে খুব ভালা লাগলো।তোমার লেখা পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে আমিও একটা লেখা দিলাম। তোমার লেখাটার সাথে রিলেটেড। তোমার যে উত্তর জানা নেই সেই উত্তর আমারও জানা নেই।
-
মীর শওকত ০৯/১১/২০১৩সত্যি উত্তর খুঁজে বেড়ালেও এর উত্তর কারে জানা নেই । এটা আমাদের জীবনে অনেক বড় প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে
-
সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী. ০৯/১১/২০১৩আসলেই শিশুদের এই উত্তর আমাদের জানা নেই। আমরা কি পারি না তাদের জন্য সুন্দর সমাজ দেশ গঠন করতে? আমাদের আগামী ভবিষ্যৎ এভাবেই বড় হবে? জানি এর উত্তর কারো জানা নেই। যেন আমাদের কিছুই করার নেই।
-
qazi mitul ০৯/১১/২০১৩লেখক কে ধন্যবাদ। অনেক ভাল লাগল