www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ভাবিয়া করি ও কাজ করিয়া ভাবি ও না

আমি একটা হোটেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট  সেলস ম্যানেজার পদে চাকরী করি। হোটেল টা থাইল্যান্ড এর পাতাইয়াতে কিন্তু আমি কাজ করি ব্যাংকক এ বসে। সব কাজ কম্পিউটার এর মাধ্যমেই হয়।
কাজটা হল হোটেলের রুম সেল করা এবং তা অনলাইনে।যেমনঃ (Agoda, Booking.com, Expedia, Hotel Bed, Hostel world, Orbitz, Asia Room, Late Rooms, Hotel Info) এরকম আরো অনেক কোপানী আছে। ওদের সাথে অনলাইনে আমাদের চুক্তি  হয়, চুক্তি অনুযায়ী ওদেরকে ২৫% কমিশন দিতে হয়।
আমি অনলাইনে সব করি, ওদেরকে রুম দিই, যখন হোটেল ফুল থাকে তখন বন্ধ করে দিই, মানে সারাদিনই আমার অনলাইনে চোখ রাখতে হয়।
এছাড়া হোটেল এর ইমেইলে যেসব ইমেইল আসে তার উত্তর দিই। হোটেল  এর বেশীর  ভাগ গেস্ট জার্মানি, না হয় রাশিয়ার। আবার অনেক ইন্ডিয়ান, বাংলাদেশ এবং মিডল ইস্ট থেকে ও আসে।
থাইল্যান্ড এ সাধারণত এ্যাল্কোহল ও্পতিতা ফ্রী। ( মানে টাকা থাকলে পাওয়া যায়।) অনেকেই আছে এটা পেশা হিসাবে নিয়েছে। বিশেষ  কিছু জায়গা আছে তারা সেখানে সেজে গুজে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার বিভিন্ন বারে গেলে ও এদেরকে পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে ওদের দেখে আমার একটু করুনা হয়, ভাবি এত সুন্দর সুন্দর মেয়েগুলো এই পেশা কেন বেছে নিল। অনেকেই দেখা যাই দিনে কাজ করে কিন্তু রাতে আবার পতিতা বৃতি করে।
সাদারনত ইউরোপীয় দেশের লোকজন এ নিয়ে কোন ইমেইল করেনা। ওদের কাছে এগুলো কোন ব্যাপার না। ওরা অনেকেই এখানে আসে ওই লোভে।ওরা এসে ৪/৫ মাস থাকে।  অনেক ইউরোপিয়ান  বুড়ো কে দেখা যায় দুই টা মেয়ে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।কেউ কেউ আবার দেশে ফিরে যাবার সময়  সাথে করে নিয়ে যায়। ওদের টাকা আছে, টাকার  বিনিময়ে ওরা সব করে।দেশে বউ থাকলে ও ওদের কোন সমস্যা নেই। ওদের কালচার এরকম।
কিন্তু সমস্যা হল এশিয়ান আর মিডল ইস্টদের নিয়ে। ওরা আসার আগে ইমেইল করে,
“আমি যদি কোন মেয়েকে আমার রুম এ নিয়ে আসি তাহলে কি আরো মানি  দিতে হবে?
( এখানে বেশীর ভাগ হোটেলে গেস্ট ফ্রী করে দেয়, কারন অধিকাংশ গেস্ট এটা চায়, তাই)
তো আমাদের হোটেলে ও ফ্রী। আমি সানন্দে লিখে দিই, “ Guest is free of charge”.
আমি এটুকুই জানি। তারপর হয়ত ওই লোকের নামে হোটেল রুম বুক করি , আমি ভুলে যাই। আমার সাথে সবার কথা শুধু ইমেইল এ। প্রতিদিন কত ইমেইল এর উত্তর দিই আমি, সব তো আর মনে রাখা যায় না । যেহেতু আমি ব্যাংকক  এ। কাউকে আমি চিনিনা। ভার্চুয়াল ভাবেই সবাই  আমাকে চেনে।
কিছুদিন আগে মোহাম্মাদ তাজ  নামে  লোক ইমেইল পাঠিয়েছে , একটা  না তিনটা ইমেইল।একই লেখা। ইসমাত আমি তোমাদের হোটেলে এই তারিখে ছিলাম, আমি একটা মেয়ে এনেছিলাম আমার সাথে, রিসেপশান  সেই মেয়েটির আই ডি কার্ড ফটোকপি করে রেখেছিল, সাথে মোবাইল নাম্বার ও। তুমি কি  আমাকে মোবাইল নাম্বার টা একটু দিতে পারবে।“
আমি হোটেলে ফোন দিলাম, মোবাইল নামাবার নিয়ে উনাকে ইমেইল করলাম।
বিকালে দেখি আবার ইমেইল, ইসমাত আমি মেয়েটার সাথে কথা বলছি কিন্তু ও ইংরেজী  বোঝেনা, তুমি কি ওকে একটু জিজ্ঞাসা করবে ওর এইচ আই ভি ( acquired immune deficiency syndrom)আছে কিনা”।
আমি একটু ভাবলাম তারপর উত্তর দিলাম
“ দিস  ইজ নট মাই ডিউটি ্টু  আস্ক সাম্বডি সি হ্যাজ  এইচ  আই ভি অর নট” হোয়াই ইঊ ডোন্ট থিঙ্ক বিফোর”
আই এম সরি আই  কেন নট হেল্প ইঊ  এনিমোর এবাঊট দ্যাট”।
লোকটা  উত্তরে লিখেছিল, আই এম সরি, একচুয়ালি আই এম এফ্রেড এবাউট দ্যাট নাও। ইফ ইউ ডোন্ট হেল্প ইজ ওকে।
জানিনা পরে কি হয়েছিল। হয়ত দেশে ফিরে গিয়ে তার এই ব্যাপারটা মনে পড়েছে। তাই জানতে চেয়েছে। মনে মনে ভাবলাম ব্যাটা তুই আগে ভাবিস নি কেন?
এক পাকিস্তানি প্রায়ই আসে, আমি জানি তার দেশে বউ আছে, একবার সে একদিন ফোন করেছে, ইসমাত তুমি বললে  গেস্ট ফ্রী অফ চার্জ তাহলে কেন গত রাতে আমার কাছ থেকে ৫০০ বাথ চার্জ করেছে রিসেপশান। আমি হোটেলে ফোন দিলাম, জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি এই গেস্ট কমপ্লেইন করছে, রিসেপ শান লেডি বলল ও একজন না দুইজনকে  এনেছে, সাধারনত আমরা এলাউ করিনা দুই জনকে, কিন্তু ও আমাদের নিয়মিত গেস্ট তাই এলাউ করেছি, কিন্তু একজন বেশী আনার জন্য ওকে চার্জ করেছি।
মনে মনে ভাবলাম আরো বেশী চার্জ করলে ভাল হত। দেশে বউ বাচ্চা থাকতে এখানে এসেছে ফুর্তি করতে। আমার খারাপ লাগে যদি এই সব লোক মুসলিম হয়। মনে হয় এরা মুসলিম নামের কলঙ্ক।
এখানে অনেক মেয়ে আছে যাদের এইচ আই ভি আছে, কিন্তু বাইরে থেকে দেখার উপায় নেই, ওরা কোন ছেলের সাথে রাত কাটাবে,ছেলেটা যখন ঘুমিয়ে পড়বে মেয়েটা  বড় বড় করে দেয়ালে লিখে রেখে যাবে “ আমার এইচ আই ভি আছে, আমি কেন একা মরব, তোর ও হোক” এরকম গল্প আমরা থাই মেয়েদের কাছ থেকে শুনি।
আবার অনেক  মেয়ে ভাল, তারা সত্যি বলে দেয় যে এইচ আই ভি আছে, কিন্তু অনেকেই আছে বিশ্বাস করেনা। কারন বাইরে থেকে বুঝার উপায় নেই, এত সুন্দর করে সেজে থাকে, মনে হয় ফুলদনিতে রাখা ফুল,বাইরের সেই রুপ দেখে ভুলে যায়, তারপর যা হবার হয়। পরিনাম এইচ আই ভি।
তাই বন্ধুরা ভাবিয়া করি ও কাজ করিয়া ভাবি ও না।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ১২৩৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৯/১১/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সায়েম খান ১০/১১/২০১৩
    যেমন কর্ম তেমন ফল।
  • আপনাকে ধন্যবাদ এতো সুন্দর পোষ্ট করার জন্য। অনেকেরই উপকার হবে আশা করি। থাইল্যান্ডে ছোট বেলা গিয়েছিলাম চমৎকার লেগেছে ব্যাংকক। আবার ও যাওয়ার ইচ্ছা আছে। তবে অবশ্যই শুধু ঘোরতে :p
  • মহিউদ্দিন হেলাল ০৯/১১/২০১৩
    বিষয়টা বেশ সুন্দর! মুসলমানের কথাটা যখন বললেন, আমার এখানে অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা লেখা পোস্ট করার ইচ্ছা জেগে গেল।
    ভাল থাকবেন।
  • যাদের দরকার তাদের জন্য খুবই উপকারী একটি বিষয়। ধন্যবাদ তাদের পক্ষ থেকে একটি ভালো বিষয় পোস্ট করার জন্য। ভালো লাগলো আপা।
    • ইসমাত ইয়াসমিন ১০/১১/২০১৩
      সাখাওয়াত ভাই সুন্দর কমেন্ট লিখেছে, " যাদের দরকার তাদের জন্য" ধন্যবাদ আপনাকে, শুভকামনা রইল।
 
Quantcast