কাব্য ঝরা মোহিনী
এস. এস. সি পরীক্ষার পর কম্পিউটার শিখবে মেয়েটা। স্থানীয় কয়েকটা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার ভিজিট করে প্রশিক্ষকদের ইন্টারভিউ নেয়ার কাজ শেষ তার। এবার বাকী কাজ হল-তার সব বান্ধবীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে ঠিক করা আসলে সে কোন প্রশিক্ষন সেন্টারে শিখবে।
মেয়েটা তার বান্ধবীদের থেকে সাক্ষাৎকার নেয়ার পর যথারীতি তার বাবাকে একটা রিপোর্ট দিল- কোন সেন্টারে সে শিখবে এবং কোন প্রশিক্ষকের কাছে শিখবে।
মেয়েটার বাবা একদিন হাজির হল আমার অফিস কক্ষে। এসে প্রশিক্ষনের ব্যাপারে ইতি + আদি = ইত্যাদি ইত্যাদি জানল।
একজন শিক্ষক হিসেবে ব্যস্ততার পর যতটুক সময় পাই তা আমি উজার করে ঢেলে দেই এই কম্পিউটার সেন্টারে। আমার এলাকার যুব উন্নয়নে আমার চিন্তা-গবেষণা এই সেন্টারকেন্দ্রিক। কারণ, অনেক সময় খারাপ লাগত, যখন শুনতাম শুধুমাত্র কম্পিউটার না-জানার কারণে ওই ছেলেটার বা মেয়েটার চাকরি হয়নি। শুধুমাত্র এই সমস্যা নিয়ে ভাবনার ফসলটাই হচ্ছে আজকের আমার এই সেন্টারটি। এলাকায় আমার সফলতা দেখে আরও অনেকেই আমার মত প্রশিক্ষন সেন্টার চালু করেছে বটে কিন্তু ততটা সফলতার মুখ দেখেনি।
কথা-বার্তার মধ্যেই মেয়েটার বাবার সাথে চা পর্বটা সেরে নিলাম। এর মধ্যে আমার মোবাইলের কয়েকটা কলও রিসিভ করা হয়নি সৌজন্যবোধের জন্য। তারা বাবা শুধু জানতে চাইছে আমি কখন সময় দিতে পারব মেয়েটাকে। কারণ, মেয়েটা নাছোরবান্দা! সে কম্পিউটার আমার কাছেই শিখবে। তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করলাম আমি কি আপনার মেয়েটাকে চিনি? ভদ্রলোক জবাব দিলেন- 'তুমি না চিনলেও তোমাকে সে চিনে এবং ইতোমধ্যেই তোমার ইন্টারভিউ নেয়ার কাজ সে সমাপ্ত করেছে'। ভদ্রলোক আরো বললেন- 'আপনাকে ওর জন্য একটু সময় বের করতেই হবে, প্লিজ!!! ''আমি কাল আবার জানতে আসব'' - এই বলে সে হাত মিলিয়ে চলে গেল।
ভদ্রলোক পরের দিন সকালে আবার আসলে ভর্তির সব কাগজপত্র ঠিক করে একটা রশিদ ধরিয়ে দিলাম এবং বললাম সবাইকে তো সপ্তাহে তিন দিন সময় দেই, ওকে আমি বিকেলে পুরো সপ্তাই সময় দেব, যাতে করে ওর কোর্সটা তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। ভদ্রলোক আমার কথা শুনে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে দিলেন। কাউন্টারে টাকাটা জমা দিয়ে বললেন- ''আমি আজ বিকেল থেকেই পাঠাচ্ছি"। কথা বলতে বলতে আমার হাতে হাত মিলিয়ে চরে গেলেন।
আজ বিকেল নতুন ছাত্রী আসবে বলে বাসা থেকে একটু সেন্টারের উদ্দেেশ্য একটু তাড়াতাড়িই বের হলাম। ও আসবে বলে একটা কম্পিউটার অন করে ওর প্রথম পাঠটার একটা সামারি করলাম। কাজ শেষে আমি ওর জন্য অপেক্ষা করতে করত চায়ের অর্ডার করলাম। চা খেতে খেতে ভাবলাম- ওর বাবার কথা-বার্তায় বুঝলাম যে মেয়েটা নাছোড়বান্দা টাইপের। কি জানি বাবা! আসবে কি আসবে না বোঝা মুশকিল!
অবশেষে মেয়েটা আসল। নিঃশব্দে একটা হাসি দিয়ে বলল - আমি আসছি, ভাইয়া! কেমন আছেন??
=ঃ ভাইয়া??
হ্যাঁ, ভাইয়া। ঐ যে আমি, বাবা, কম্পিউটার, ভর্তি ........ (মেয়েটা যেন কিচ্ছু বোঝেনা এমন ভান করে বলতে লাগল)।
=ঃ ও হ্যাঁ, হ্যাঁ মনে পড়েছে। আমি তো তোমার জন্যই ওয়েট করছিলাম।
Sorry ভাইয়া! লেট করে ফেললাম তাই না?
=ঃ না, না!! it's ok. Please sit down there.
Thanks a lot of ভাইয়া, এখানে বসব ভাইয়া??
=ঃ না, না! ওখানে!!
তাহলে আপনি??
=ঃ Are you ready to start your course??
Sure ভাইয়া........
মেয়েটা একটা কালো শাড়ির সাথে ম্যাচ করা কালো রংয়ের থ্রি-কোয়াটার ব্লাউজ পড়া। একটা কন্ট্রাস্ট কালার হিজাব দিয়ে চুল ঢাকা। পায়ে রুপালী নোলক। কালো রংয়ের শাড়ির উপর কন্টাষ্টকালারের গোলাপগুচ্ছ যেন সমস্ত শাড়িটাকে একটা ফুলের বাগান বানিয়ে রেখেছে আর মেয়েটা যেন সেই ফুলগুলির ভেতর থেকে ফুলপরির মত উঁকি দিয়ে আমাকে বলছিল- '- আমি আসছি, ভাইয়া! কেমন আছেন??'
মেয়েটা কম্পিউটারের সামনে বসতেই- আমি ওর দিকে তন্ময় হয়ে তাকিয়ে রইলাম!!
মেয়েটা হাসিমাখা ঠোটে বলল- ভাইয়া!!
আমাকে কিন্তু স্পেশালভাবে শিখাতে হবে, সবকিছু।
আচমকা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলাম- হ্যাঁ, হ্যাঁ, স্পেশাল সবকিছু, শাড়ি, ফুল, নোলক, কবিতা, ভাললাগা সবকিছু তোমার ..............
Sorry, Sorry কম্পিউটার,
হ্যাঁ, কম্পিউটার, স্পেশাল সবকিছু।
Yes, পেয়ে গেছি!!
এই বলে মেয়েটা শাড়ির আঁচল ওড়ায়
আর বলে, টাইপ করো আরও স্পীডে-
একটা কবিতা-
একটা ভালবাসার কবিতা.......
মেয়েটা তার বান্ধবীদের থেকে সাক্ষাৎকার নেয়ার পর যথারীতি তার বাবাকে একটা রিপোর্ট দিল- কোন সেন্টারে সে শিখবে এবং কোন প্রশিক্ষকের কাছে শিখবে।
মেয়েটার বাবা একদিন হাজির হল আমার অফিস কক্ষে। এসে প্রশিক্ষনের ব্যাপারে ইতি + আদি = ইত্যাদি ইত্যাদি জানল।
একজন শিক্ষক হিসেবে ব্যস্ততার পর যতটুক সময় পাই তা আমি উজার করে ঢেলে দেই এই কম্পিউটার সেন্টারে। আমার এলাকার যুব উন্নয়নে আমার চিন্তা-গবেষণা এই সেন্টারকেন্দ্রিক। কারণ, অনেক সময় খারাপ লাগত, যখন শুনতাম শুধুমাত্র কম্পিউটার না-জানার কারণে ওই ছেলেটার বা মেয়েটার চাকরি হয়নি। শুধুমাত্র এই সমস্যা নিয়ে ভাবনার ফসলটাই হচ্ছে আজকের আমার এই সেন্টারটি। এলাকায় আমার সফলতা দেখে আরও অনেকেই আমার মত প্রশিক্ষন সেন্টার চালু করেছে বটে কিন্তু ততটা সফলতার মুখ দেখেনি।
কথা-বার্তার মধ্যেই মেয়েটার বাবার সাথে চা পর্বটা সেরে নিলাম। এর মধ্যে আমার মোবাইলের কয়েকটা কলও রিসিভ করা হয়নি সৌজন্যবোধের জন্য। তারা বাবা শুধু জানতে চাইছে আমি কখন সময় দিতে পারব মেয়েটাকে। কারণ, মেয়েটা নাছোরবান্দা! সে কম্পিউটার আমার কাছেই শিখবে। তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করলাম আমি কি আপনার মেয়েটাকে চিনি? ভদ্রলোক জবাব দিলেন- 'তুমি না চিনলেও তোমাকে সে চিনে এবং ইতোমধ্যেই তোমার ইন্টারভিউ নেয়ার কাজ সে সমাপ্ত করেছে'। ভদ্রলোক আরো বললেন- 'আপনাকে ওর জন্য একটু সময় বের করতেই হবে, প্লিজ!!! ''আমি কাল আবার জানতে আসব'' - এই বলে সে হাত মিলিয়ে চলে গেল।
ভদ্রলোক পরের দিন সকালে আবার আসলে ভর্তির সব কাগজপত্র ঠিক করে একটা রশিদ ধরিয়ে দিলাম এবং বললাম সবাইকে তো সপ্তাহে তিন দিন সময় দেই, ওকে আমি বিকেলে পুরো সপ্তাই সময় দেব, যাতে করে ওর কোর্সটা তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। ভদ্রলোক আমার কথা শুনে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে দিলেন। কাউন্টারে টাকাটা জমা দিয়ে বললেন- ''আমি আজ বিকেল থেকেই পাঠাচ্ছি"। কথা বলতে বলতে আমার হাতে হাত মিলিয়ে চরে গেলেন।
আজ বিকেল নতুন ছাত্রী আসবে বলে বাসা থেকে একটু সেন্টারের উদ্দেেশ্য একটু তাড়াতাড়িই বের হলাম। ও আসবে বলে একটা কম্পিউটার অন করে ওর প্রথম পাঠটার একটা সামারি করলাম। কাজ শেষে আমি ওর জন্য অপেক্ষা করতে করত চায়ের অর্ডার করলাম। চা খেতে খেতে ভাবলাম- ওর বাবার কথা-বার্তায় বুঝলাম যে মেয়েটা নাছোড়বান্দা টাইপের। কি জানি বাবা! আসবে কি আসবে না বোঝা মুশকিল!
অবশেষে মেয়েটা আসল। নিঃশব্দে একটা হাসি দিয়ে বলল - আমি আসছি, ভাইয়া! কেমন আছেন??
=ঃ ভাইয়া??
হ্যাঁ, ভাইয়া। ঐ যে আমি, বাবা, কম্পিউটার, ভর্তি ........ (মেয়েটা যেন কিচ্ছু বোঝেনা এমন ভান করে বলতে লাগল)।
=ঃ ও হ্যাঁ, হ্যাঁ মনে পড়েছে। আমি তো তোমার জন্যই ওয়েট করছিলাম।
Sorry ভাইয়া! লেট করে ফেললাম তাই না?
=ঃ না, না!! it's ok. Please sit down there.
Thanks a lot of ভাইয়া, এখানে বসব ভাইয়া??
=ঃ না, না! ওখানে!!
তাহলে আপনি??
=ঃ Are you ready to start your course??
Sure ভাইয়া........
মেয়েটা একটা কালো শাড়ির সাথে ম্যাচ করা কালো রংয়ের থ্রি-কোয়াটার ব্লাউজ পড়া। একটা কন্ট্রাস্ট কালার হিজাব দিয়ে চুল ঢাকা। পায়ে রুপালী নোলক। কালো রংয়ের শাড়ির উপর কন্টাষ্টকালারের গোলাপগুচ্ছ যেন সমস্ত শাড়িটাকে একটা ফুলের বাগান বানিয়ে রেখেছে আর মেয়েটা যেন সেই ফুলগুলির ভেতর থেকে ফুলপরির মত উঁকি দিয়ে আমাকে বলছিল- '- আমি আসছি, ভাইয়া! কেমন আছেন??'
মেয়েটা কম্পিউটারের সামনে বসতেই- আমি ওর দিকে তন্ময় হয়ে তাকিয়ে রইলাম!!
মেয়েটা হাসিমাখা ঠোটে বলল- ভাইয়া!!
আমাকে কিন্তু স্পেশালভাবে শিখাতে হবে, সবকিছু।
আচমকা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলাম- হ্যাঁ, হ্যাঁ, স্পেশাল সবকিছু, শাড়ি, ফুল, নোলক, কবিতা, ভাললাগা সবকিছু তোমার ..............
Sorry, Sorry কম্পিউটার,
হ্যাঁ, কম্পিউটার, স্পেশাল সবকিছু।
Yes, পেয়ে গেছি!!
এই বলে মেয়েটা শাড়ির আঁচল ওড়ায়
আর বলে, টাইপ করো আরও স্পীডে-
একটা কবিতা-
একটা ভালবাসার কবিতা.......
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
জানবক্স খান ২৭/০৬/২০২০মজা েপলাম
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ১১/১১/২০১৯অনন্যসাধারণ।
চালিয়ে যান লেখকবন্ধু। -
শেখ চপল ইসলাম সাকিব ২৩/০৩/২০১৯বাহ! কি অসাধারণ ভাবে লিখলেন।
-
মোঃ নূর ইমাম শেখ বাবু ২৩/০৩/২০১৯দারুণ
-
মোঃ মুসা খান ০৪/০৩/২০১৯ইংরেজি শব্দ ব্যবহার
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ০৩/০৩/২০১৯অনেকদিন পর!
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ০৩/০৩/২০১৯অনেক দিন পরে এলাম, বন্ধুরা!!
সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি!!!