মোঘল হেরেম মমতাজ রাণী ও তার দুনিয়া কাঁপানো প্রেম
মোঘল সম্রাজ্যের ইতিবৃত্ত নানা কারণেই বীরত্ব ও রোমাঞ্চকর সমৃদ্ধ ইতিবৃত্ত হয়ে আছে মানুষের হৃদয় গহীনে। সেই সময়ে পারস্য (বর্তমান ইরান) ছিল বিশ্ব মানচিত্রে শৌর্য-বীর্যতে সেরা, এক কথায় পৃথিবীর পরাশক্তি। আর এই মহাশক্তির সাথে মোঘল সম্রাজ্যের ছিল অবাধ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এই মোঘল সম্রাজ্যেরই অন্যতম একজন বীরত্বপূর্ণ সম্রাট হলেন সম্রাট শাহজাহান। সম্রাট শাহজাহানের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল- ১৬০৭ খ্রি. মাত্র ১৫ বছর বয়সে তার বাবা সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে প্যারস্যের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের অতি রুপসী ও বহুমুখীপ্রতিভাধারিনী ১৪ বছরের কনে ''আরজুমান্দ বানু বেগম' এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার অপরীসীম মেধা, দক্ষতা ও রুপে-গুনে মুগ্ধ হয়ে সম্রাট ভালবেসে তাকে ''মমতাজ মহল'' ("Jewel of the Palace") তথা মহলের রানী বা রাণীদের রাণী নামে ডাকতেন। পরবর্তীতে সম্রাটের অনেক স্ত্রী থাকলেও তাদের সাথে শুধুমাত্র বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়া আর তেমন কোন সম্পর্ক ছিলো না। মমতাজ রানীই তাঁর অপরীসীম ভালবাসার কারণে্ (সম্রাট শাহজাহান এর) হৃদয় গহীনের সব জায়গা দখল করে নিয়েছিলেন। এই আরজুমান্দ বানু বেগম বা মমতাজ রানীর পিতা ছিলেন আব্দুল হাসান যিনি সম্রাট জাহাঙ্গীর কর্তৃক আসাফ খান (Asaf Khan) উপাধিতে ভূষিত হন এবং ১৬২৫ সালে মোঘল সম্রাজ্যের লাহোরের গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন। মমতাজ রাণী ১৫৯৩ সালের ১৭ই এপ্রিল (বর্তমান ইন্ডিয়ার আগ্রাতে) জন্ম নিলেও প্যারস্যের রাজকীয় রক্তধারা, রুপ, গুন আর রাজকার্য ও বিচারিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। ১৬২৭ খ্রি. সম্রাট শাহজাহান সিংহাসনে আরোহন করলে রানী মমতাজের গুরুত্ব তার কাছে আরো বেড়ে যায়। রাজ্যের যাবতীয় দৈন্যতার একমাত্র সঠিক সমাধান তিনি সঠিক সময়েই প্রদান করতেন এবং সম্রাট শাহজাহানকে দেখলেই তিনি পাগলপাড়া হয়ে যেতেন। সম্রাটকে বিশ্রাম দিয়ে তিনি সমস্যার সঠিক সমাধান দিতেন। এতে সম্রাট এখন তাকে ছাড়া আর কিছুই যেন ভাবতে পারছেন না। এক জন আরেকজনকে যেন বেঁধে নিয়েছেন-
মনের গহীনে হৃদয়ের টানে
সুরে সুরে বাহুডোরে।
সম্রাট গোলাপ ভালবাসতেন আর তাই রাণী মমতাজ সম্রাটের এই ভাললাগার কথা বিবেচনা করে ততকালীর প্যারস্যের (বর্তমান ইরানী) গোলাপ জলে স্নান করতেন। একান্ত মুহুর্তগুলিতে নিজে তার ঠোট দুটিকে মনের মতন ইরানী গোলাপ জল দ্বারা ভিজিয়ে রাখতে। এতে সম্রাট শাহজাহান তাঁর কাছে আসলে রাজ্যের সব দুঃখের যেন অবসান পেতেন। প্রিয় স্বামীকে চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে তুলতেন আর ভালবাসার সব জলরংয়ে আঁকা স্বর্গীয় সব ছবি সম্রাটের সামনে তুলে ধরতেন। আর এরকম নিস্বার্থ ভালবাস মমতাজ রাণী ছাড়া কেউ যেন আর তাঁকে দিতে পারতেন না। সম্রাটের সুপ্ত শিহরণ যেন একমাত্র এই সম্রাজ্ঞীই জাগিয়ে তুলতে পারতে আর তাইতো সম্রাট তাকে জগদ্বিখাত করে রেখেছেন।
কিন্তু এই সুখ যেন সম্রাট শাহজাহানের কপালে বেশিদিন টিকল না। সম্রাটের সিংহাসন আরোহণের প্রায় ৪ বছরের মধ্যেই (17 June 1631) মাত্র ৩৮ বছর বয়সেই তাদের ১৪ তম সন্তানের জন্ম দান করতে গিয়ে পরোপারে পারি জমালেন এই সম্রাজ্ঞী।
আরজুমান্দ বানু বেগম বা মহলের রাণী তথা মমতাজ রাণীর মৃত্যুতে সম্রাট গভীর শোঁকে শোঁকাহত ও মর্মাহত হয়ে পড়লেন। মমতাজকে ছাড়া যেন এই সম্রাজ্য এখন তাঁর কাছে মূল্যহীন। তিনি যেন মানতেই পারছিলেন না যে রাণী আর এ্ ধরা ধামে নেই। এবার সম্রাট যেন মমতাজকে আরো জীবন্ত করে তুলতে চাইছেন। তিনি ঠিক করলেন ভালবাসার নিদর্শন স্বরুপ মমতাজের জন্য তিনি মমতাজ মহল বা তাজ মহল নির্মান করবেন। ভালবাসার মানুষের জন্য যে সত্যিই কল্পনাকেও বাস্তবে রুপদান করা যায় তার প্রকৃত উদাহরন হচ্ছে সম্রাট শাহজাহানের মমতান রাণীর প্রতি এই প্রতি দান এই :তাজ মহল: ("Taj Mahal")। ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে যে সম্রাটের মনের মত করে এই :তাজ মহল: ("Taj Mahal") কে বিশ্বের সবচেয়ে সুদর্শন ও মনোমুগ্ধকর স্থাপত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ২২০০০ লোকের একটি নির্মাণ শ্রমিক দলের প্রায় ২২ বছর সময় লেগেছিল।
এই সেই মমতাজ রাণীর জন্য গড়া সম্রাটের তাজ মহল যা বিশ্বের সপ্তাশ্চার্যের এক অনন্য প্রতীক যার পেছনের দুনিয়া কাঁপানো প্রেমের গল্প শুনলে প্রেমিক হৃদয়ে শিহরণ না জাগিয়ে পারবে না। প্রিয পাঠক হৃদয়, মোঘল হেরেমের আরো গল্প শোনার জন্য হয় ব্যাকুল হয়ে আছেন। আজ আর পারছি নারে, তবে আবারো কোন কাহিনী নিয়ে আবারো এরকম কোন গল্প নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সবাইর জন্য রইল শুভকামনা।
মনের গহীনে হৃদয়ের টানে
সুরে সুরে বাহুডোরে।
সম্রাট গোলাপ ভালবাসতেন আর তাই রাণী মমতাজ সম্রাটের এই ভাললাগার কথা বিবেচনা করে ততকালীর প্যারস্যের (বর্তমান ইরানী) গোলাপ জলে স্নান করতেন। একান্ত মুহুর্তগুলিতে নিজে তার ঠোট দুটিকে মনের মতন ইরানী গোলাপ জল দ্বারা ভিজিয়ে রাখতে। এতে সম্রাট শাহজাহান তাঁর কাছে আসলে রাজ্যের সব দুঃখের যেন অবসান পেতেন। প্রিয় স্বামীকে চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে তুলতেন আর ভালবাসার সব জলরংয়ে আঁকা স্বর্গীয় সব ছবি সম্রাটের সামনে তুলে ধরতেন। আর এরকম নিস্বার্থ ভালবাস মমতাজ রাণী ছাড়া কেউ যেন আর তাঁকে দিতে পারতেন না। সম্রাটের সুপ্ত শিহরণ যেন একমাত্র এই সম্রাজ্ঞীই জাগিয়ে তুলতে পারতে আর তাইতো সম্রাট তাকে জগদ্বিখাত করে রেখেছেন।
কিন্তু এই সুখ যেন সম্রাট শাহজাহানের কপালে বেশিদিন টিকল না। সম্রাটের সিংহাসন আরোহণের প্রায় ৪ বছরের মধ্যেই (17 June 1631) মাত্র ৩৮ বছর বয়সেই তাদের ১৪ তম সন্তানের জন্ম দান করতে গিয়ে পরোপারে পারি জমালেন এই সম্রাজ্ঞী।
আরজুমান্দ বানু বেগম বা মহলের রাণী তথা মমতাজ রাণীর মৃত্যুতে সম্রাট গভীর শোঁকে শোঁকাহত ও মর্মাহত হয়ে পড়লেন। মমতাজকে ছাড়া যেন এই সম্রাজ্য এখন তাঁর কাছে মূল্যহীন। তিনি যেন মানতেই পারছিলেন না যে রাণী আর এ্ ধরা ধামে নেই। এবার সম্রাট যেন মমতাজকে আরো জীবন্ত করে তুলতে চাইছেন। তিনি ঠিক করলেন ভালবাসার নিদর্শন স্বরুপ মমতাজের জন্য তিনি মমতাজ মহল বা তাজ মহল নির্মান করবেন। ভালবাসার মানুষের জন্য যে সত্যিই কল্পনাকেও বাস্তবে রুপদান করা যায় তার প্রকৃত উদাহরন হচ্ছে সম্রাট শাহজাহানের মমতান রাণীর প্রতি এই প্রতি দান এই :তাজ মহল: ("Taj Mahal")। ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে যে সম্রাটের মনের মত করে এই :তাজ মহল: ("Taj Mahal") কে বিশ্বের সবচেয়ে সুদর্শন ও মনোমুগ্ধকর স্থাপত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ২২০০০ লোকের একটি নির্মাণ শ্রমিক দলের প্রায় ২২ বছর সময় লেগেছিল।
এই সেই মমতাজ রাণীর জন্য গড়া সম্রাটের তাজ মহল যা বিশ্বের সপ্তাশ্চার্যের এক অনন্য প্রতীক যার পেছনের দুনিয়া কাঁপানো প্রেমের গল্প শুনলে প্রেমিক হৃদয়ে শিহরণ না জাগিয়ে পারবে না। প্রিয পাঠক হৃদয়, মোঘল হেরেমের আরো গল্প শোনার জন্য হয় ব্যাকুল হয়ে আছেন। আজ আর পারছি নারে, তবে আবারো কোন কাহিনী নিয়ে আবারো এরকম কোন গল্প নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সবাইর জন্য রইল শুভকামনা।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
০।।০ ১৮/০৪/২০১৭বাহ! বেশ দারুন গল্প।
-
ফয়জুল মহী ২৯/০৩/২০১৭সুরুচিসম্পন্ন লেখা উপস্থাপন করেছেন।
-
মধু মঙ্গল সিনহা ২৫/০৩/২০১৭খুব ভালো লাগল।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৪/০৩/২০১৭ইতিহাসের একটি অধ্যায়।
-
মোঃ ইমরান হোসেন (ইমু) ২৪/০৩/২০১৭বন্ধুরা, পড়ুন এবং আপনাদের মূল্যবান পরামর্শ/ মতামত কিংবা মন্তব্য পেশ করুন।
এর ভাললাগা সম্পর্কিত মমামত ভবিষ্যতে মোঘল হেরেমের আরো অনেক গল্প আপনাদের সামনে নিয়ে আসতে আমাকে সহায়তা করবে।
ধন্যবাদ সবাইকে।।।