আমি আর স্কুলে যাব না মা
ঘটনাটি দুঃখজনক।
কিন্তু একেবারে সত্যি ঘটনা।
আমরা হয়তো অনেকেই রবীন্দ্রনাথের সেই ছুটি গল্পের ফটিক কে চিনি।
এই ঘটনা গুলো কোনো অংশেই তার থেকে কম মর্মান্তিক নয়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ড। ৬ নম্বর বিছানায় কাঁথা গায়ে চুপচাপ শুয়ে আছে শিশুটি। কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই ভয়ে একটু তাকাল। এরপর চুপচাপ মুখ গুঁজল মায়ের আঁচলে। যেন কথা বলার শক্তি নেই। ফিস ফিস শব্দে বলতে লাগল, ‘মা, আমি আর স্কুলে যাব না।’
চিকিৎসাধীন ওই শিশুটির নাম আজমাইন আমিন (১০)। সে পাবনা পৌর সদরের শালগাড়িয়া মহল্লার শিমুল হোসেনের ছেলে। একই মহল্লার সাদ নূরানি প্রি-ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। স্কুল পালিয়ে বাড়ি যাওয়ার অপরাধে এক শিক্ষক শিশুটিকে পিটিয়ে আহত করেছেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় গত রোববার বিকেলে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় একটি মামলা করেছেন।
শিশুর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্কুলটিতে আবাসিকভাবে শিশুদের পড়ানো হয়। কিন্তু ঈদুল আজহার ছুটিতে বাড়িতে এসে শিশুটি আর স্কুলে যেতে চায় না। পরিবারের লোকজন কয়েকবার তাকে স্কুলে রেখে এলেও সে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। শেষ পর্যন্ত গত রোববার সকালে স্কুলের উপাধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ শিশুটিকে বাড়ি থেকে ধরে আনেন। এরপর একটি কক্ষে আটকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক পেটান। শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট চিকিৎসক জাহেদী হাসানী বলেন, শিশুটিকে খুব মারধর করা হয়েছে। মাথা, কান, হাত-পা, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শিশুটি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছে।
শিশুটির মা আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার সন্তান স্কুলে যায় না, সে জন্য আমি শাসন করতে বলেছিলাম। কিন্তু এভাবে মারপিট করবে সেটা ভাবতেও পারি নাই। আমি ওই শিক্ষকের বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে বুধবার বিকেলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। দুজন শিক্ষক উপস্থিত থাকলেও তাঁরা কিছু বলতে রাজি হননি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
তুহিনা সীমা ১১/১১/২০১৪আমার কাছে খুবই খারাপ লাগলো ঘটনাটি। এতে করে শিক্ষকদের উপর থেকে তো মানুষের বিশ্বাস ভক্তি ভালোবাসা উঠে যাবে।
-
রইসউদ্দিন গায়েন ০২/১১/২০১৪'এ বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের একটি উক্তি এখানে খুবই প্রাসঙ্গিক:- 'যাদের উচিত ছিল পুলিশ সার্জেন্ট বা ভূতের ওঝা হওয়া,তাদের কখনও উচিত হয় না শিক্ষার ভার নেওয়া।'...অত্যন্ত সংবেদনশীল লেখা। এখানে পোস্ট করার জন্য লেখককে ধন্যবাদ!
-
শিমুল শুভ্র ৩০/১০/২০১৪ওটা শিক্ষক নামে কলঙ্ক বলে মনে করছি -
-
কোয়েল ২৭/১০/২০১৪শিক্ষাব্যবস্থার এমন মর্মান্তিক পরিণতির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়াই বাঞ্ছনিও। নিজেকে আধুনিক সমাজের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে গেলে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য, কিন্তু এভাবে শিক্ষাদানের নামে শিশুমনে ভীতি সঞ্চার, মতেই কাম্য নয়।
-
মঞ্জুর হোসেন মৃদুল ২৭/১০/২০১৪এমনও হয়।
-
মল্লিকা রায় ২৭/১০/২০১৪এমন শিক্ষকদের কে নিয়োগ করে-----জানি আমরা সহযেই,কিন্তু জেনেও না জানার ভান করে ভালো সাজার চেষ্টা করি যেন আমরা কারুর সাতে পাঁচে নেই-----কত ভাল আমরা।
এতে করে ক্ষতিটা কার হয় তা খানিক বাদেই বোঝা যায়। -
অনিরুদ্ধ বুলবুল ২৬/১০/২০১৪বড়ই মর্মান্তিক!
-
একনিষ্ঠ অনুগত ২৬/১০/২০১৪এরা কি ধরণের শিক্ষক? শাসন করা আর শায়েস্তা করার মাঝে তফাৎ বোঝে না...
-
মুহা, লুকমান রাকীব ২৬/১০/২০১৪হালারে নেংটা কিইরা মারা উচিত!!!!!!!!!!!!